somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সার্টিফিকেটের ট্রাংক

১৯ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৩২৬-ক। গণরুম ।একটা নতুন মেম্বারকে নিয়ে ক্যাচাল লেগে গেল গণরুমে। একটা বাচ্চা টিনের ট্রাংক নিয়ে যত গন্ডগোল। হাতে কাঁথা-বালিশের একটা পুঁটলি,একটা টিনের ট্রাংক আর একটা ব্যাগ- মোটামুটি এই জিনিসগুলা নিয়ে একেকজন নতুন মেম্বার রুমে উঠে । কিন্তুু সাগর নামের এক নতুন মেম্বার এইগুলার সাথে আরেকটা বাড়তি বাচ্চা ট্রাংক নিয়ে এসেছে। গণরুম হওয়ার কারণে এমনিতেই রুমে বাড়তি জিনিস উপচে পড়ছে , তারমধ্যে আরেকটা বাড়তি জিনিস মানেই উটকো আপদ । এ'দিকে সাগর কিছুতেই বাচ্চা ট্রাংক হাতছাড়া করবে না । এটা নাকি তার সার্টিফিকেটের ট্রাংক ।

কাহিনী কী? সার্টিফিকেটের জন্য গোটা একটা ট্রাংক লাগে নাকি? হোক বাচ্চা ট্রাংক, তাই বলে সার্টিফিকেটের জন্য আলাদা ট্রাংক? কই, আমাদেরও তো সার্টিফিকেট আছে, মার্কশিট আছে; মেট্রিক-ইন্টার-জাতীয়তা-চারিত্রিক সনদ- সব মিলিয়ে গোটা দশেক সার্টিফিকেট হবে । আমরাতো জাস্ট একটা ফাইলে পুরে বড় ট্রাংকেই সব রেখে দিয়েছি, এইটার জন্য আলাদা ট্রাংক লাগবে কেনো?

সাগর আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করল- আসলে ট্রাংক লাগার কথা না, ফাইলেই সব হয়ে যেত । কিন্তু সব মিলিয়ে তার সার্টিফিকেট সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিনশো । নাচের সার্টিফিকেট, গানের সার্টিফিকেট, আবৃত্তির সার্টিফিকেট, বিতর্কের সার্টিফিকেট, স্কাউটের সার্টিফিকেট- কোনটা নেই? এত সার্টিফিকেটের জন্যতো একটা ট্রাংকা লাগেই- না কি? এখন আমরা, রুমের পুরনো মেম্বাররা যদি একটা বাড়তি ট্রাংক রাখার অনুমতি দিই- তাহলে ভাল হয়।

সাগরের সার্টিফিকেটপ্রেম আমাদের আপ্লুত করল। সহশিক্ষাক্রমিক কার্যক্রম আমাদের মুগ্ধ করল।তাই একটা বাড়তি ট্রাংক রুমে রাখার অনুমতি সাগরকে দেয়া হল।

দু-চারদিন পরের কথা। সাগরের কাছে তার বিভিন্ন সার্টিফিকেট পাওয়ার গল্প শুনছিলাম । কথায় কথায় সাগর আফসোস করল, ইশ, আরো ছোটবেলাতেই যদি বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় নাম লেখাতাম- তাহলে আরো শ'খানেক সার্টিফিকেট বেশী থাকতো। বেচারাকে স্বান্তনা দিলাম- থাক ! যা যাওয়ার গেসে । তোমার বাচ্চার বেলায় আর এই ভুল করো না ।

সাগর আমার কথা শুনেছে । ওর বাচ্চার বেলায় আর ভুলটা করেনি। তার ছোট্ট মেয়ে আরিশা জন্মের পর বার্থ-সার্টিফিকেট দিয়ে যাত্রা শুরু করেছে । আর গতকাল জাপানের ''শিশু-মডেল'' প্রতিযোগীতায় বাগিয়ে নিয়েছে আরেকটি সার্টিফিকেট, বয়স এক পেরুনোর আগেই ।

আরিশা ! মা! অভিনন্দন ! আর তোর বাপকে বল একটা ফাইল ক্যাবিনেট অর্ডার করতে । বাপ-বেটির সার্টিফিকেট কী আর এক ট্রাংকে আঁটবে?
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×