সরকার পতনের দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ। মতিঝিলে জামায়াতের। বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে চলছে আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ। আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দলের আন্দোলনে রাজপথ প্রকম্পিত। বিভিন্ন বাহিনী ব্যস্ত জানমাল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়। জনমনে আতঙ্ক কখন কী হয়!
ইতিমধ্যে দাঙা-হাঙ্গামা শুরু হয়ে গেছে। মারপিটও চলছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুর হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে অনেক গাড়ি। গ্রেপ্তার হয়েছেন অনেকেই। এর মধ্যে বয়স্ক লোকজনও আছেন। কী লাভের আশায় এতকিছু? আবার আন্দোলন না করেও কি স্বস্তি আছে?
অনার্সে ভর্তি হওয়ার পর একবার আন্দোলন শুরু হলো ক্যাম্পাসে। ছাত্রছাত্রীরা সেমিস্টার ফি কমানোর দাবিতে আন্দোলন করছিল। হুটহাট নেতৃত্ব তৈরি হলো। সড়ক-অবরোধ করলাম আমরা। হলো গণপরিবহণ ভাঙচুরও। মর্মাহত হলাম। কেউ কেউ বলল, দাবি আদায় করতে হলে এসব করতেই হবে। দাবি আদায় হলো বটে, কিন্তু মন থেকে এসব হামলা-মামলা-ভাঙচুর মেনে নিতে পারিনি।
দেশের কথা ভাবি, জাতির কথা ভাবি। দেশটার কি এমন পরিস্থিতি হওয়ার কথা ছিল? সুশাসন নেই, জবাবদিহিতা নেই। আকাশচুম্বি জিনিসপত্রের দাম। এমন পরিস্থিতিতে এক কানায় আরেক কানাকে লাথি সারে, এক বুড়ি আরেক বুড়িকে ডাকে নানি শাশুড়ি।
শুভানুধ্যায়ী একজন ফোন দিয়ে হিতোপদেশ দিয়েছিলেন; বলেছিলেন, “নিজের কথা ভাবুন। পরিবারের কথা ভাবুন।” তার কথা শুনে মনে হলো, আসলেই। আগে নিজের আর পরিবারের কথা ভাবতে হবে। নিজের বিপদ হলে পরিবারের কী হবে? স্বার্থপরের মতো নিজের কথা ভাবতে হয়। নূর হোসেনের কথা তো কেউ মনে রাখেনি, মনে রাখেনি বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের কথা। আজকের দিনে শহিদ হয়েছিলেন তিনি। সবাই নিজের পেটের ধান্দায় আছে। কে কাকে গুঁড়িয়ে দিতে পারে এটাই লক্ষ্য।
মানুষের ভালো করতে গিয়ে কটূক্তি শুনতে হয়। কেউ ভাবে কোনো স্বার্থসিদ্ধির অভিপ্রায় আছে। মানুষ কেবল ক্ষমতার দাসত্ব করে। ক্ষমতাবান ভুল বললেও ঠিক। কাঙাল ঠিক বললেও ভুল। মন খারাপ হয় কিন্তু প্রকাশ করে লাভ কী? এ সংসারে অন্যের অনুভূতির দাম দুই পয়সাও না।