এমন কোনো বিষয় আছে, যা নিয়ে জাতি পুরোপুরি একমত? ৫০% একমত হতে পারে এমন কোনো বিষয়ও চোখে পড়ে না। একপক্ষ রবীন্দ্রনাথের গান জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে মনেপ্রাণে ধারণ করে, আরেক পক্ষ বদলাতে চায়। একপক্ষ একাত্তরকে ধারণ করে, অন্য পক্ষ অস্বীকার করে। যেকোনো বিষয় নিয়ে হাঙ্গামা লেগেই আছে। নিজের মায়ের পেটের ভাইবোনদের মধ্যেও দ্বিধাবিভক্তি। তুচ্ছ ঘটনায় মারামারি, খুনোখুনি পর্যন্ত হয়ে যায়। যদিও ব্যাপারটা একেবারে নতুন না। তবে ইদানীং মহামারি আকার ধারণ করেছে মনে হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া এখন সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে।
একজনের ওপর থেকে আরেকজনের বিশ্বাস বলতে গেলে উঠে গেছে। মা ছেলেকে বিশ্বাস করেন না, বাপ মেয়েকে বিশ্বাস করেন না। সন্তান মা-বাবাকে বিশ্বাস করে না। মাঝেমাঝে দেখা যায় বিপদে পড়লে এক অপরকে অস্বীকার পর্যন্ত করে। প্রকৃষ্ট উদাহরণ বলতে গেলে ছাগলকাণ্ডের সেই মতিউর।
একজন বলল টাকার অভাবে ভাত খেতে পারছে না। মায়া করে তাকে টাকা দিলেন। পরে খোঁজ নিয়ে দেখলেন সে এই টাকায় কক্সবাজার ঘুরতে গেছে বা নেশা করছে। কেমন লাগবে?চিকিৎসার কথা বলে টাকা উঠিয়ে ধান্ধা করার ঘটনা তো হর-হামেশাই ঘটছে।
টাকা-পয়সা জীবনে অনেক দরকার। কিন্তু সুযোগ পেলে লোকজন এমনভাবে টাকার পেছনে ছুটে যে, জীবনে উপভোগ করতেও ভুলে যায়। দেখা যায় সংসারের লোকজনকে সময় পর্যন্ত দেওয়া হয় না। টাকা-পয়সা করলেন, কিন্তু যাদের জন্য করলেন, তারা আপনার ত্যাগ স্বীকার করল না। তখন কেমন অনুভূতি হয়?
ঢুকলেন রাজনীতিতে। নাম-যশ বাড়ল। ধরাকে সরা জ্ঞান করলেন, সবাইকে ভোগালেনও। দিন ফুরাল। এখন? প্রতিপক্ষ সুদে-আসলে পুষিয়ে নেবে। তখন প্রাণ ভিক্ষে চেয়ে লাভ হবে?
ভালো লোকদের একটা ভোগান্তিতে থাকতে হয় সারাজীবন। দরকারে কাউকে কাছে পায় না, অথচ দুষ্টলোকের সঙ্গীর অভাব হয় না। তারা ঠিকই দল পাকিয়ে ফেলে। তাদের ফাঁদে পড়ে ধরাশায়ী হয় ভালো লোকেরা। হয়তো অনুশোচনাও করে এত ভালো থেকে কী লাভ বলে। তবে এই ধৈর্যের ফল কিন্তু অনেকসময় ভালো হয়।
ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় বলে একটা কথা আছে। ১০০% তে ১০০% ভালো তো কাউকে পাওয়া যায় না। সমঝোতা করে চলতে হয়। গায়ের জোর সবসময় খাটে না। 'দিন গেলে আর দিন আসে না, ভাটা যদি লয় যৌবন। থাকতে ক্ষুধা প্রেম-সুধা পান করো রে পাগল মন।'
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:১২