somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাইগ্রেনের ওষুধ

০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জীবনকে বড্ড ভালবাসি আমি । জানালা গলে আসা ভোরের আলো, ঘুলঘুলিতে লুকোচুরি খেলা রাতের জোসনা ভীষণ প্রিয় । অন্ধকারে একা একা কোন একজনের কথা ভেবে খুব বাঁচতে ইচ্ছে করে । কিন্তু মাইগ্রেনের ব্যাথা উঠলে এই ভালবাসা কোথায় যে যায় । নিজের ভিতরে একজন শীতল খুনি নিজেকেই শেষ করে দিতে চায় । গলায় দড়ি দেয়া বা হাতের শিরা কেটে ফেলা বা একঝাক ঘুমকে গলাধঃকরণ .. মনে হয়.. জীবনের চেয়ে উত্তেজক, শান্তির একমাত্র পথ । ব্যাথার তীব্রতার সাথে পাল্লা দিয়ে কমে মৃত্যুভয় । অবশ্য ভয়কে অনুভব করার মত বোধও থাকেনা । শুধু যন্ত্রণার সাগরে ঢেউয়ের পর ঢেউ ।

ব্যাথার শুরুতেই ওষুধ খেয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করতে বলা হয়েছে । যন্ত্রণারা যখন দিনের পর দিন স্থায়ী হয় তখন এ ধরনের পরামর্শ মেনে চলা কঠিন । আমি তাই টিক টিক যন্ত্রণাঘড়ি নিয়েই চলার চেষ্টা করি । কখনো পারি কখনো পারি না । যখন পারি না তখন তার সাথে কথা বলি .. আমার গোপন ওষুধ । সে যন্ত্রণা কমাতে পারে না কিন্তু ভোলাতে পারে । এটাও তো কম না । বেশিরভাগ কষ্টই আমরা তাড়াতে পারি না, ভুলে থাকি ।

আজকে ব্যাথা টা কতদুর যাবে বুঝতে পারছি না । বমি করতে পারলে কষ্টের তীব্রটা একটু কমে আসে, বমনভাব টের পাচ্ছি কিন্তু বের হচ্ছে না । উজ্জ্বলতা সহ্য হয় না বলে ঘর অন্ধকার করে বিছানায় এপাশ ওপাশ করলাম কিছুক্ষণ । ঘুম তো আসবে না তাই ফোন দিলাম ওষুধের কাছে ..

হ্যালো .. আমার মাথাব্যাথা উঠছে ।
আমাকে ফোন দিছিস ক্যান .. আমি কি ডাক্তার .. চুপ করে শুয়ে ঘুমানোর চেষ্টা কর ।
ঘুমাতে পারলে কি তোমাকে ফোন করি ?
খবরদার কাঁদবি না ।
আমি কাঁদছি না .. খুব ব্যাথা করতেছে তাই চোখ দিয়ে পানি পড়ছে .. তুমি কি মনে কর তুমি বকলেই আমি ভ্যা ভ্যা করে কান্না করি .. মোটেই না .. আর তুমি তো আমাকে ঠিকমত বকাও দিতে পার না ।
হইছে.. আমার কাছে মিথ্যে বলতে হবে না .. ব্যাথা খুব বেশি করতেছে ?
না .. তোমাকে যতটা ভালবাসি তারচে এখনো অনেক কম ।
আমি কি করব বল .. কাছে থাকলে না হয় চুল বিলি করে দিতাম ।
তুমি বুঝি আমার কাছে নেই .. এইতো তোমার হাতের মধ্যে আমার হাত .. কপালের ওপর ব্যাকুল নয়ন .. আমার হৃদয়ে তোমার বুকের কাঁপন ।
তোর কি সত্যি মাথাব্যাথা নাকি ঢঙ করতেছিস ?
আমাকে কি সেরকম মেয়ে মনে হয় ?
তাহলে এরকম কাব্য করিস কেমন করে .. আমার তো সামান্য মাথাব্যাথা হলেও ঠিকভাবে চিন্তা করতে পারি না ।
আমিও পারি না .. কিন্তু যখন তুমি থাক আমার তখন দুইটা জগত থাকে .. আমিময় জগত টা কষ্ট দিতে শুরু করলে তুমিময় জগত টাতে চলে যাই ।
তুই তো দিন দিন পাগল হয়ে যাচ্ছিস দেখি !
যদি হয়েই যাই .. তুমি আমাকে দেখবে না .. বলো দেখবে না ..
এক থাপ্পর দিব .. তোকে নিয়ে আমি যে কি করি !
আমাকে বিয়ে করে ফেলো ।
ধুর .. তাই হয় নাকি ।
কেন হয় না ? তুমি কি আমাকে ভালবাস না ?
জানি না ।
হু তার মানে হয়ত বাসো .. শতকরা ৫০ ভাগ সম্ভাবনা .. আমার দিক থেকে ৯৯ ভাগ .. ৭৪.৫ ভাগ সম্ভাবনা আমরা একসাথে সুখি হব ।
১ ভাগ আবার বাদ দিলি ক্যান ?
ওইটা হল অনিশ্চয়তা .. মরে যেতে পারি .. হারিয়ে যেতে পারি ।
এই অবাস্তব স্বপ্নের বাস্তবায়নের উপায় জানা আছে তোর ?
বিয়ে তো একটা চুক্তিপত্র .. আমরা রাজি থাকলে দুজনের মধ্যে যেকোনো চুক্তি সম্পাদিত হতে পারে । আমার তরফ থেকে কোন শর্ত নেই .. তুমি যেভাবে চাইবে সেভাবেই হবে ।
নিজের ভাল চাইলে স্বপ্নের জগত থেকে বেরিয়ে আয় ।
কোন জগতে যাব বল আমার কোন জগত নেই .. তুমি ছাড়া আমার মাঝে আমার কোন আমি নেই ।
ন্যাকামি করিস না .. অনেক রাত হইছে .. ঘুমা এখন ।
ঘুম পাড়িয়ে দাও ..
ঠিক আছে স্পিকার অন করে মোবাইল বালিশের পাশে রাখ ।
রাখছি ..
চোখ বন্ধ কর ।
করছি .. শোনো আমি না ঘুমানো পর্যন্ত যাবা না কিন্তু ..
চুউপ .. এক রাজকন্যারে খুব ভালবাসত একজন । সে জানত না কেমন করে ভালবাসতে হয় । তাই সে একদিন রাজকন্যারে জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা তুমি কি জান কেমন করে ভালবাসে । রাজকন্যা উত্তর দিল, হ্যা আমি জানি তুমি চাইলে শেখাতেও পারি । আমি শিখতে চাই, সম্মতি জানাল সে । ঠিক আছে তোমার হৃদয়টা বের করে আমার হাতে দাও, রাজকন্যা মুচকি হাসল । সে তার বুকে হাত দিল .. আরে আমার হৃদয় কই ..
২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×