somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি সেই ঘরে ছিলাম

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি সেখানে ছিলাম যখন তার যোনিকুঁড়ি নিজেকে মেলছিল ।
আমরা সবাই ছিলাম, তার মা, তার স্বামী এবং আমি,
এবং রাবারে মোড়ানো দুই হাত নিয়ে স্থিতধী সেবিকা
যোনির অনুভূতি, বাঁক এবং প্রাসঙ্গিক স্বল্পবাক নিয়ে
যিনি আকস্মিকভাবে একটি মানবকলে পরিনত হয়েছিলেন ।

আমি ঘরটির অদ্ভুত এক বাসিন্দা হয়ে দেখছিলাম
তীব্রতার সঙ্কোচনে মুচড়ে যাওয়া একটি যোনিকে,
যার গহ্বর থেকে অপার্থিব স্বর বেরিয়ে আসছিল
এবং সময়ে সময়ে বুনো চিৎকারে হাতলদুটিকে পিষ্ট করছিল তার ক্রোধের আঙুল ।

আমি সেখানে ছিলাম যখন তার যোনি পরিবর্তিত হছিল
একটি লাজুক যৌন গহ্বর থেকে একটি প্রত্নতাত্ত্বিক সুড়ঙ্গে,
পবিত্র সরোবর থেকে একটি ভেনিশীয় খালে,
একটি গভীর কুয়ায়, যেখানে আটকে পড়া ক্ষুদ্র শিশুটি অপেক্ষা করছিল
তার জীবনের জন্য ।

আমি তার যোনির রং দেখলাম । তারা পরিবর্তিত হয়েছিল ।
দেখলাম ভঙ্গুর আঁচরের মতো নীল,
বিস্ফোরিত টমেটোর মতো লাল,
ধূসর গোলাপী - অন্ধকার;
প্রান্ত বরাবর ঘামের মতো রক্ত,
হলদেটে, সাদা স্রাব, পয়ঃ বিন্দু মিশ্রিত জীবন
গর্ত ঠেলে বেরিয়ে আসছিল, প্রবল আরও প্রবলভাবে
আমি দেখলাম গর্তের ভেতরে শিশুটির মাথা,
আঁকিবুঁকির মতো কয়েক গাছি চুল, ঠিক পিছনেই হাড়ের আড়ালে বৃত্তাকার স্মৃতি,
ওদিকে সেবিকাটি তার পিচ্ছিল হাত নিয়ে ক্রমান্বয়ে ঘুরছিল আর ঘুরছিল ।

আমি সেখানে ছিলাম যখন আমাদের প্রত্যেকেই, তার মা এবংআমি,
আমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে তার পা ধরেছিলাম
কেউ একজন দৃঢ় কণ্ঠে বলছিল, “এক, দুই, তিন"
তাকে বলা হচ্ছিল মনোযোগ আরও কেন্দ্রীভূত করতে
হয়ত তখন তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম ।
সত্যি বলতে ঐ স্থানটি থেকে আমরা নজর সরাতেই পারছিলাম না ।

আমরা যোনিটিকে ভুলেই গেলাম, প্রত্যেকে ...
এর ব্যাখ্যা কি হতে পারে
আমাদের সম্ভ্রমহানির ভয়, নিষ্ঠার অভাব ।

আমি সেখানে ছিলাম যখন চিকিৎসক
এলিসের আশ্চর্য জগতের চামচ নিয়ে এলেন
এবং তার যোনি অপেরা সঙ্গীতে মুখর হয়ে উঠল
প্রানপন;

প্রথমে ছোট্ট মাথাটুকু, তারপর ধূসর আচ্ছাদিত হাত, তারপর দ্রুত সন্তরণশীল শরীর,
দ্রুতই টুপ করে পড়ল আমাদের ক্রন্দনরত বাহুতে ।

আমি সেখানে ছিলাম তারপর যখন ঘুরে তার যোনির মুখোমুখি হলাম ।
আমি দাঁড়ালাম এবং নিজেকে দেখতে দিলাম তাকে, পুরো বিস্তৃত, পুরোপুরি উন্মুক্ত
বিকৃত, স্ফীত এবং বিদীর্ণ,
চিকিৎসকের এর হাত রক্তে মাখিয়ে যাচ্ছিল
যিনি শান্তভাবে তাকে সেলাই করছিলেন ।

আমি দাঁড়িয়ে রইলাম এবং হঠাৎ তার যোনি
প্রশস্ত স্পন্দিত লাল হৃদয়ে রুপান্তরিত হল ।
জানি হৃদয় উৎসর্গ করতে সক্ষম,
সেই মুহূর্তে জানলাম যোনিও তা পারে ।
হৃদয় ক্ষমা ও পুনর্নির্মাণ করতে পারে ।
নিজের আকৃতি পরিবর্তন করে যেন আমরা ভিতরে প্রবেশ করতে পারি ।
প্রসারিত হতে পারে যেন আমরা বাইরেটাকে আলিঙ্গন করতে পারি ।
দুপায়ের মাঝে লজ্জাটিও তা পারে ।
আমাদের জন্য ব্যাথা সহ্য করে, নিজেকে বিদীর্ণ করে, আমাদের জন্য মরে
এবং রক্ত ​​দেয়, রক্তাক্ত হয় এই কঠিন, বিস্ময়কর বিশ্বের ভালোবাসায় ।
আমি ঘরটিতে ছিলাম ।
আমি স্মরণ করতে পারি ।

From “The Vagina monologues” by Eve Ensler
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৩
১৫টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×