somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আশ্‌শারে মোবাশ্‌শারাঃ ( দশজন সুসংবাদ প্রাপ্ত ব্যক্তি )

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যারা পুর্বেই সবকিছু জেনে গেছে, বুঝে গেছে বলে বিশ্বাস করে ফেলেছেন, যা শিখেছেন তার বাইরে আর কিছু নাই বলে চিন্তা করে ফেলেছেন, এবং আর পদের মনুষ্য জীব যারা অতি বোঝার ভান করেন তারা দয়া করে ইহা পড়বেন না।

নিন্মে বর্নিত যে দশজন সাহাবীকে তাহাদের মৃত্যুর পুর্বেই জান্নাতের সুসংবাদ রাসুল (আ) কর্তৃক দান করা হইয়াছিল বলিয়া উল্লেখিত হইয়া থাকে তাহাদের নাম যথাক্রমেঃ
১। আবুবকর (র)
২। ওমর (র)
৩। ওসমান (র)
৪। আলী (আ)
৫। তালহা (র)
৬। জোবাইর (র)
৭। সায়াদ ইবনে আবি আয়াক্কাস (র)
৮। আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (র)
৯। ওবায়দা ইবনে জারাহ এবং
১০। সাইদ ইবনে জাইদ।

ইহা সম্পুর্ন ভুল, মিথ্যা একটি হাদিস। দলিলগত প্রমান দিয়ে বোঝাতে একজনকে দুই তিন বছর সময় লেগে যাবে শুধু মাত্র দলিল এর মৌলিক জ্ঞান দান করতে। আর একটা প্রমাণ তাই দিতে চাই সেটা হল যুক্তিগত প্রমান। আশা রাখি ইহা পড়লেও যারা জ্ঞানী তারা অনুধাবন করতে পারবে।


১। কোন বুদ্ধিমান নেতা শিষ্যগণের কার্যাবলীর ফলাফল অগ্রিম প্রকাশ করিতে চাইবে না। অবশিষ্ট লোকেরা আত্নত্যাগের কর্মে উৎসাহ হারায় ফেলবে। কাজেই নেতার পক্ষে ইহা মোটেই স্বাভাবিক নহে যে তিনি কৃতকার্যতার সুফল কয়েকজনের জন্য আগেই প্রকাশ করে দিবেন। যদি বলা হয়ঃ আল্লাহ পাঠান এই সুসংবাদ নবীর মাধ্যমে, তা হইলে নবীকে বলিয়া প্রমানিত হতে হয়। ইহাতে নবীকে (আ) খাট করিতে হয়।
২। যে দশজনকে লইয়া এই তথাকথিত “আশশারে মোবাশ্‌শারা” কথাটি পরবর্তিকালে প্রকাশিত হইয়াছে এবং রাষ্ট্রীয় শক্তিশালী প্রচারের সাহায্যে তারা সমাজে বিশ্বাস কথারুপে প্রতিষ্ঠিত করা হইয়াছে তাহাদের মধ্যে একজনও আনসার নাই।সবাই তাহারা মোহাজের। অথচ মোহাজেরগণের সংখ্যা ছিল আনসারদের তুলনায় অতি নগন্য। মদিনাবাসিগণ প্রায় সবাই ছিলেন আনসার।
নবী এবং তাঁর নীতিকে যারা আশ্রয় এবং সাহায্য দিয়েছিলেন সেই সকল মদিনাবাসিগনকে আনসার বলা হয়। ইসলাম এবং তার নবীকে আশ্রয়দাতা আনসারগন ছিলেন বিশেষভাবে সমর্পিত মনোভাব সম্পন্ন। তাদের মধ্য হইতে একজনও মৃত্যুর পুর্বে জান্নাতের সুসংবাদ পাইল না, ইহা অবিশাস্য।
৩। আল্লাহ ও তাঁর রসুল আনসারগনের আত্নত্যাগের প্রশংসায় মুখর। কোরান ও হাদিসে তার ভুরি ভুরি প্রমাণ আছে। সেই সকল কথা মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে হয়।
৪। রাসুল পাক তাঁর রক্তের বংশধরগণের বহির্ভুত যে মহৎ ব্যক্তির নাম উল্লেখ করিয়াছিলেন, তাঁর আহলে বাইতের অন্তর্ভুক্ত বলিয়া, সেই মহান ব্যক্তি হযরত সালমান ফারসীও সুসংবাদপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণের অন্তর্ভুক্ত হইতে পারেন নাই।
৫। যে নামগুলো আমরা পাই তার ভিতরে কোন নারীর নাম নাই। ইহা অস্বাভাবিক। অথচ “খাতুনে জান্নাত” তথা “জান্নাতের প্রধান নেত্রী” কথাটি সমাজের সবাই জানেন কম বেশি। মা ফাতেমা (আ) এর কথা এখানে না বললেই নয়।
৬। মুসা নবীর ভাই হারুন (আ) জান্নাতবাসীর অন্তর্ভুক্ত করিয়া কোনরুপ কথা রচনা করলে তা ধন্য না করে বরং তার অপমান করাই হবে। সেইরুপ মাওলা আলী(আ) এর এর নাম উক্ত লিষ্টে দেয়া তার অপমানই করা হয়েছে।
যাইহোক আলী(আ) এর নাম তাও প্রবেশ করানো হল কিন্তু “জান্নাতের দুই যবক” এই নামে যারা সর্বদলের কর্তৃক আখ্যায়িত আছেন সেই দুই ব্যক্তি উহাতে তালিকাভুক্ত হইলনা কেন?
৭।বিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে কেহ যুদ্ধ করিলে সে নিশ্চয় কাফের হয়ে যাইবে। (৪-৯২,৯৩) এবং (৪৮-২৫) দ্রষ্টব্য। কোরানের এই কথাটির সত্যতা খন্ডন করার জন্য “আশ্‌শারে মোবাশ্‌শারা” নাম সৃষ্টি করিয়া অনেক গুলি হাদিস রচনা করা হয়েছে। মাওলা আলী (আ) এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা জায়েজ প্রমাণ করিবার জন্য এই সকল হাদিস পরবর্তিকালে আব্বাসীয় শাশনামলে রচনা করা হইয়াছিল।
সুসংবাদপ্রাপ্ত দশ ভাগ্যবানের অন্যতম ছিলেন হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ যিনি প্রথম খলীফা নির্বাচনে নির্বাচক মন্ডলীর অন্যতম ছিলেন। তিনি ছিলেন খলীফা মোয়াবীয়ার আদর্শে আদর্শায়িত ব্যক্তি। খলীফা মোয়াবীয়া হলো ইসলামের ধ্বংশের ষড়যন্ত্র কারীর প্রধান নেতা, তবুও এখানে এসে জানলাম তাও তাকে নাকি কিছুই বলা যাবেনা। আজব মুসলিম। যাইহোক এ-ই ধুর্ত আব্দুর রহমান যিনি ছলচাতুরীর অপকৌশল প্রয়োগ করে প্রথমে হযরত আলীকে পদত্যাগ করায় মোয়াবীয়াকে খলীফা ঘোষনা করেছিলেন এবং সিফ্‌ফিনের যুদ্ধে মোয়াবীয়ার বাহিনী যখন পর্যুদস্ত তখন আঃ রহমান বিন আউফের গোপন সহযোগীতায়ু আমন বিন আস এর পরামর্শে বর্শার আগায় কোরান শরীফ বেধে হযরত আলীকে যুদ্ধ বন্ধ করতে বাধ্য করে।

আবার আসি, এই সুসংবাদ প্রাপ্ত ব্যক্তি গুলোর অধিকাংশই গাদিরে খুম নামক স্থানে মাওলা আলী (আ) এর অভিষেক ক্রিয়ার চাক্ষুষ প্রমান পাওয়ার পরেও সেই আলীকে বাদ দিয়ে, নবীজির আদেশ, নির্দেশ অমান্য করা আবু বকর, ওমর, ওসমান, আব্দুর রহমান, জোবায়ের – এর নাম সুন্দর ভাবে দেয়া আছে।
আবার যেই আবু বকর মা ফাতেমার নিকট হতে বাগে ফিদাক নামক বাগান ছিনায়ে নিল রাষ্ট্রের নাম দিয়ে, যার পরে জানা যায় মা ফাতেমা কখনোই আবু বকরের কোন সালামের উত্তর দেন নাই। আবার যেই ওমরের আলথি দরজাইয় লেগে মা ফাতেমার বুকের পাজর ভেঙ্গে যায়, যেই ওমর হযরত আলী (আ) কে কোমরে রশি বেধে টেনে টেনে নিয়ে যায় তারা আগাম সুসংবাদ পাইলো কিভাবে সেটা মানতে ...। যাদের এই রুপ কারনে নবী বংশের উপর এক এক করে যে করুন সময় পার করতে হয়েছে পরিনতিতে কারবালা...।তারা জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ঠিক বিশ্বাস হয়না।
আপনারা কি বলেন???
দোহার
কাদরীয়া শরীফ।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×