somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ কি ভারত দ্বারা আক্রান্ত নাকি ভারত বাংলাদেশ দ্বারা?

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১৩০ কোটি মানুষের দেশ ভারত, বাংলাদেশ ১৭ কোটি। একথা আমরা ভেবেছি কখনো কে কার দ্বারা আক্রান্ত?? বাংলাদেশ কি ভারত দ্বারা আক্রান্ত নাকি ভারত বাংলাদেশ দ্বারা? ভারত বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে বলতে চাইছে তারা বাংলাদেশ দ্বারা আক্রান্ত। কিন্তু আমি বলবো আমরা ভারত দ্বারা আক্রান্ত। সময় অনেক পাল্টেছে, এখন এর ভূখণ্ড কে বিজয় করতে হয় না, কোন দেশে সংস্কৃতির উপর প্রভাবশালী দেশের সংস্কৃতির আগ্রাসন চালাতে পারলেই সে দেশ টা অনেকাংশে বিজয় করা হয়ে যায়। তারপর আসে অর্থনৈতিক আগ্রাসন। ব্যাবসা বানিজ্য কে এমন ভাবে বিজাতীয় দেশে প্রতিষ্ঠিত করা যে তাদের ছাড়া বিজাতীয় দেশটা নিজেকে পঙ্গু মনে করবে। এসব কিছুর স্পষ্ট আলামত আমরা কিন্তু দেখতে পাচ্ছি। লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া এই ছোট্ট ভূখণ্ড টিকে ভারতের মাঝে বিলীন হতে দেখা এদেশের কোন মানুষেরই কাম্য হতে পারে না। কিন্তু বড় ভাই সাজা মুখোশ ধারী এই চিরশত্রু কে চিনতে কেন আমরা এত ভুল করছি?? কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় অনেকেই বিষয়টা অনুধাবন করলেও কেউ এর প্রতিবাদ করার মাধ্যম বের করতে পারছে না। বারবার প্রতারিত হচ্ছি তারপরেও তাকে বিশ্বাস করেই যাচ্ছি শুধু এই কারনে যে তারা ৭১ এ যুদ্ধের একেবারে শেষ দিকে আমাদের সহযোগিতা করেছিল বলে? অথচ এই সহযোগিতা কি একেবারেই নিঃস্বার্থ ছিল?? না। সেই স্বার্থ যুদ্ধের ৪৩ বছর পরে আমরা দেখতে পাচ্ছি। নিজেদের প্রজা হিসেবে নিয়েছে আমাদের। আমরা অনেকেই হয়তো জানি না যে অভ্যন্তরীণ ভাবে ভারত সে যুদ্ধটাকে এখনো পাক-ভারত যুদ্ধ বলে অবিহিত করে। যাই হোক আমার আলোচনার বিষয় হচ্ছে ভারতের দেয়া সন্ত্রাসবাদের অপবাদ। সম্প্রতি ২৩ জানুয়ারি ভারতে মুক্তি পেয়েছে অক্ষয় অভিনীত মুভি “বেবি”। যেখানে দেখানো হয়েছে ভারত কিভাবে পাকিস্তানি দল গুলোকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে দেখিয়ে সেসব সন্ত্রাসবাদের মোকাবেলা করছে, ভাল কথা। পাশাপাশি বাংলাদেশের নামও কয়েকবার উচ্চারিত হতে দেখলাম! আমার আপত্তি এবং প্রশ্ন এখানেই। নিজের দেশকে সন্ত্রাসবাদ থেকে মুক্ত রাখবে এটা প্রতিটি দেশের সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। নিজের দেশকে সন্ত্রাসবাদ থেকে মুক্ত রাখতে পার্শ্ববর্তী দেশকে সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করার মানে কি?? আমরা যারা দেশকে নিয়ে ভাবি তারা অনেকেই বুঝি আমেরিকার নীতি, প্রবাদ আছে, “ Attacking is the best defense”। নিজেকে আক্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচাতে সে অন্য দেশ গুলো কে সর্বদাই বিভিন্ন রকম চাপে তটস্থ রাখে। বর্তমান সময়ে এটাকেই নিজের প্রভাব বিস্তার ও ধরে রাখার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ধরে নেয়া হচ্ছে। ভারত ও এ নীতি অনুসরন করতে শুরু করেছে। এখন কথা হল, ভারত কেন এমন করছে? ভারতের অভ্যন্তরেই ২০ টি প্রদেশে ৬৫ এর ও অধিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কার্যক্রম। যার মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী শিবশেনা, মাওবাদী, বোরো, উলফা, টিএনএলএ ইত্যাদির আবাস। সেটা তারা কেন ভুলে যায়?? আমরা যদি ভারত কে সন্ত্রাসী দেশ হিসেবে আখ্যা দেই তাহলে কেমন হবে এর রিএকশন? ভারত কি এত সহজেই এটা মেনে নিবে?? না। বরং শুধু এই বলা টুকুর খেসারত দিতে হবে অনেক ভারি রকমের। কারন আমরা আঘাত ভুলে গেলেও তারা ভুলে না। এর প্রমান অনেকবারই আমাদের দেশ পেয়েছে। যে বিষয়টা আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই তা হল ভারত আমাদের এই ছোট্ট প্রিয় সম্ভাবনাময় বাংলাদেশটাকে সন্ত্রাসী দেশ আখ্যা দিয়ে নিজেকে নিরাপদ রাখার ঘৃণ্য চেষ্টা করছে। বিশ্ব দরবারের সামনে ভারতের হাতে নিজেদের মিথ্যা দাবী সত্য প্রমান করার অনেক বড় একটা হাতিয়ার রয়েছে, তাহলো তাদের চলচিত্র মাধ্যম। যার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন মুভির মাধ্যমে বাংলাদেশের জঙ্গি দ্বারা নিজেদের আক্রান্ত দেখিয়ে তারা সেই promoting এর কাজ টুকু শুরু করে দিয়েছে। কেউ আমার সাথে একমত হন আর না হন, পাকিস্তানকে যে এখন ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র হিসেবে ধরা হয় এর অন্যতম কারণ বিশ্ব দরবারের ভারতীয় চলচিত্রের মাধ্যমে এর প্রচার। এটাকে বলতে পারি “র” এর মাইন্ড গেম। আর তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে নিয়েছে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই(ISI-Inter-Service Intelligence) কে। “র” এর প্রতিপক্ষ হিসেবে আই এস আই কে আমার কাছে শিশু মনে হয়। বলে রাখা ভালো ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা “র(RAW-Research and Analysis Wing)” এর সাথে সেদেশের প্রত্যেক বিভাগের কাজের দারুণ একটা সামঞ্জস্য রয়েছে। প্রতিরক্ষা থেকে সংস্কৃতিক মাধ্যম সব ক্ষেত্রেই এটা সমান। তাই এটা যে “র” এর পরিকল্পনা নয় এটা বলা যাচ্ছে না। আর “র” এর মুল কাজ হল অন্যের যা ক্ষতি হয় হোক নিজেকে নিরাপদ করতে হবে। বিশ্ব দরবারের যদি তারা বাংলাদেশ কে সন্ত্রাসবাদী দেশ হিসাবে চিনাতে সমর্থ হয় তাহলে এর পরিণাম অনেক ভয়াবহ হতে পারে। তাই তাদের এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে এখন থেকেই। এজন্য সরকার কেই সবার আগে এগিয়ে এসে এসব ঘৃণ্য সন্ত্রাসবাদী কাজে বাংলাদেশের নাম কে জড়ানোর জন্য তাৎক্ষনিক কড়া প্রতিবাদ জানাতে হবে এবং পরবর্তীতে যাতে এহেন উস্কানি মুলক কাজ না করে তার জন্য ভারত সরকার কে হুঁশিয়ার করে দিতে হবে। তা না হলে আমাদের দেশের একদিন অস্তিত্ব বিলীন হবে ভারতের গর্ভে। আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকট অনেক পুরনো সমস্যা। একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের ভারত প্রীতি ও পরোক্ষ ভাবে রাজনীতিতে প্রবেশ করানোয় এ সংকট কে আরও গভীর করেছে। এ সংকট কাটাতে আমাদের আল্লাহর সাহায্য প্রয়োজন এবং প্রয়োজন একজন একনিষ্ঠ নৈতিকতা সম্পন্ন নেতৃত্বের। যার উপর দেশ আস্থা রাখতে পারে স্থায়িত্ব উন্নতি ও সম্ভাবনার সর্বক্ষেত্রে। সবশেষে একটা কথা বলবো তা হচ্ছে একটা প্রবাদ আছে, “Union is Strength”। এই প্রবাদটাকে আমরা আমাদের মাঝে যদি প্রয়োগ করতে পারি তবে আমরা সব সমস্যাকেই মোকাবেলা করতে পারবো।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×