somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২ টা মেয়ে এভারেস্ট সামিট করে ফেললো আর আমি এখনো পারলাম না!!

১৩ ই জুন, ২০১২ বিকাল ৫:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুরুতেই বি:দ্র:
১. পোস্ট না পড়েই শিরোনামের জন্য গালি দিয়েন না।
২. এটি কনো গবেশনা পেপার না, কাজেই রেফারেন্স দিতে পারবো না।
৩. লেখাটা পুরাটাই আমার নিজের মতভন্গি।


অনেকদিন পর কিছু লিখতে বসলাম। গত কিছুদিন ধরে ব্লগে আর ইমেইলে কিছু ঘটনা দেখে অনেক পুরোনো কিছু কথা মনে পড়ে গেলো।

ভালো কথা আমি এস এস সি পাস করেছি, এইচ এস সি ও করেছি, বিএসসি ও আছে, সাথে এমএসসি ও আছে একটা। আমার বাড়ি রাজশাহী, থাকি ঢাকাতে...... পড়ালেখার প্রমান চাইলে সার্টিফিকেট দেখাতে পারবো কিন্তু সমস্যা হবে বাড়ি ভাড়ার রশিদ দেখাতে, আমার বাড়িওয়ালা রশিদ দেন না, কোন চুক্তিনামাও নাই। সন্দেহ করছেন আমি এসব কথা মিথ্যা বলছি কিনা?

১৯৯৪ সালের কথা, এসএসসি র রেজাল্টের পর বেড়াতে গেছি মতলব থানার এক প্রত্তন্ত গ্রামে। ঢাকা থেকে বাস এ মেঘনা ব্রিজ, সেখান থেকে ছোট লন্চে করে কালিবাজার নামের এক ঘাট, তারপর আবার আরেক লন্চে করে টরকি ঘাট, সেখান থেকে বাধের উপর দিয়ে বেশ কয়েক কিলো হাঁটা। এক বিকালে মাঠে ক্রিকেট খেলার পর খেলার সাথিরা জিগ্গাস করলো আমার রেজাল্ট কেমন হয়েছে? বললাম যে ফার্স্ট ডিভিশনে পাশ করেছি, লেটার আছে সাথে কয়েকটা (ঐ বছর রাজশাহী কলেজিয়েটের মোটামোটি সবারি একই রেজাল্ট), রেজাল্ট শুনে সবাই চোখ গোল গোল করে জিগ্গাস করলো "ফ্যাসিলিটি ছিলো?"। প্রথমে ব্যাপারটা ধরতে পারি নি, বললাম হ্যাঁ, ভালো স্কুল, স্যাররা পড়ায় মন দিয়ে, ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি প্রশ্নটা ঠিকভাবে বুঝিনি দেখে সবাই খোলসা করে দিল যে নকলের ফ্যাসিলিটি ভালো ছিল নিশ্চয়, নাইলে এত মার্ক কিভাবে পেলাম। আমি অবাক হয়েছিলাম, আমার তখন দৌড় পরিক্ষার ৫/১০ মিনিট আগে বেন্চে সুত্র টুত্র লিখে রাখা পর্যন্ত :)
সেইসব বন্ধুরা নিশ্চয় মনে মনে ভেবে রেখেছিলো আমি কতবড় নকলবাজ যে নকল করে স্টার মার্ক পেয়ে গেছি, আমার কপাল যে আমাকে সার্টিফিকেট দেখিয়ে আমার কথা প্রমান করতে হয়নি, মুখের কথাটাই তারা বিশ্বাস করেছিল।

মুসা ইব্রাহিম যখন প্রথম এভারেস্ট বিজয়ের দাবি করলেন তখন ইন্টারনেটে ঝড় বয়ে গেলো, একটা এন্টি গ্রুপ দাড়ায়ে গেলো যারা প্রমান করতে ব্যাস্ত যে মুসা ভাই সামিট করেন নি, অতিতে যারা একি সাথে এই চ্যালেন্জের জন্য তৈরি হচ্ছিলেন তেমন কেউ কেউ পূর্বের থলের বেড়াল বের করে দিলেন, বিভিন্ণ দিকে বিভিন্ন ভাবে গল্প চালু হতে লাগলো.... অনেকেই যারা আমার মতো চায়েরকাপে/ফেসবুকে/ব্লগে হাতি উজির মারে তারা বলতে লাগলো মুসা ভাই সামিট করে নাই কারন তিনি নাকি আগে কোন একটা ছোট পিক সামিট করতে পারেন নাই, বোদ্ধ মুর্তির সাথে ছবি নাই ইত্যাদি নানা যুক্তি। এতকিছুর মাঝে হঠাত শুনতে পেলাম মুহিত ভাই সামিট করেছেন, এইবার অবাক হয়ে দেখলাম কেউ এটা নিয়ে প্রশ্ন করলো না, এই সুজোগে আবারো সেই পুরানো দল নতুন করে প্যাঁচানো শুরু করলো যে মুহিত ভাই প্রথম এভারেস্ট বিজয়ি....... যাই হোক শেষ পর্যন্ত মোটামোটি মাঠ যখন শান্ত আবার এলো এভারেস্ট বিজয়ের খবর, পর পর তিনজন।

ওয়াসফিয়ার সেভেন সামিট এর খবর একটু আকটু রাখতাম, অবাক হলাম শুনে যে মুহিত/নিশাত ও এইবার বেসক্যাম্পে। খারাপ খবর আসা শুরু হলো, নিশাতের দল আটকা পড়েছে, আমরা যারা বাংলাদেশের ছোট্ট পরিশরে টুকটাক এডভেন্চার করার চেস্টা করি বান্দরবনের পাহাড়ে যেয়ে বা কোন নির্জন দ্বিপে ক্যাম্পিং করে তারা সবাই দোয়া করছি অথবা ফেসবুকে ব্লগে দোয়া চাচ্ছি অন্যদের কাছ থেকে যেনো দেশের এই দামাল ছেলে/মেয়েরা ঐ বরফের মাঝে হারিয়ে না যায়, তারা যেনো ফিরে আসে। আমি নিজে অধির আগ্রহে শুনেছি তারা নেমে এসেছে, বুকের মাঝের ভারি পাথর টা নেমে যায়, শস্তির নি:শ্বাস ফেলেছিলাম অফিসের কাজ করতে করতে। মুনতাসির মামুন ইমরান ভাই একদিন বলেছিলেন - এই বছরটা দেশের এডভেন্চার প্রেমিদের জন্য খারাপ একটা বছর। উনি এই কথা বলেছিলেন কারন এই বছরের শুরুতে বান্দরবনে আমরা হারিয়েছি অনেকগুলো প্রান যারা পাহাড়ের প্রেমে পড়েছিল, সময় পেলেই ছুটে যেতো পাহাড়ের কোলে।

আমি খুশি হয়েছিলাম যে সবাই সুস্থ আছে, এভারেস্ট জয় হয়েছে কি হয়নাই সেটা নিয়ে মাথা ঘামাই নি, বেঁচে থাকলে আবার হবে।

এবারো কিছু মানুষ শুরু করলো বিভক্তি করন, ওয়াসফিয়ার আগে নিশাত প্রথম মেয়ে হিসাবে সামিট করেছে এইটা নিয়ে শুরু হলো খোঁচা খুঁচি, পুরা ব্যাপারটা ওয়াসফিয়া সুন্দরভাবে দমন করলেন তার বক্তব্য দিয়ে (স্যালুট টু হার)। মজার ব্যাপার হচ্ছে প্রথম বারের মতো কিন্তু কেউ ছবি দেখতে চাইলো না, মোটামোটি প্রথম সামিটের পর আমরা মেনে নিয়েছি যে আরো অনেকে সামিট করবেন, ব্যাপারটা আর আগের মতো নাড়া দ্যায় না সবাইকে, শুনতে পাই ঢাকা ইউনিভার্সিটির একটা টিম প্রশিক্ষন নিচ্ছে এভারেস্ট সামিটের জন্য, কয়েকদিন পর আরো অনেকে ট্রাই করবেন এটাই স্বাভাবিক।

হঠাত করে দেখলাম ফেসবুক আর ব্লগে শ্রদ্ধেয় রাতুল ভাই ও অন্যান্য** (**আমার জানামতে রাতুল_বিডি, শাহিন গাফ্ফার, নওশাদ তালুকদার একি মানুষের আইডি)উঠে পড়ে লেগেছেন মুহিতের দ্বিতীয়/নিশাতের প্রথম সামিট নিয়ে। বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে বুঝানোর চেস্টা করছেন এই সামিট ভুয়া। মনে করতে পারলাম না মুসা ও মুহিতের প্রথম সামিট নিয়ে উনি কোন গবেষনা করেছিলেন কিনা, কিন্তু এইবার দেখলাম চুলচেরা বিশ্লেশন, যার কিছু কিছু সত্যই হাস্যকর। শুরুতে ব্যাপারটা ছিল উনারা কেইক্রাডং না উঠে কেমনে এভারেস্ট উঠলো টাইপের, পরে শুরু হলো ছবিতে কেনো ছায়া দেখা যায়, ভিডিওটা সামিটের উপরে করা না ইত্যাদি ইত্যাদি।

রাতুল ভাই যদি উনাদের প্রতিদ্বন্ধি হতেন তাহলে ব্যাপারটা বোঝা জেতো, কিনতু যানা মতে উনি তা না, তাহলে সমস্যাটা কোথায়?

ফেসবুকে আমাদের "ট্রাভেলারস অফ বাংলাদেশ" গ্রুপ ওয়ালে আমরা এইরকম বিশাক্ত পোস্ট গুলি মুছে ফেলি দেখা মাত্র। কিন্তু আ্যাডভেন্চার_বিডি গুগল মেইল গ্রুপে দেখি সমানে চলছে এই প্রচারনা, গ্রুপের ক্রিয়টর ও মডারেটর হিসাবে রাতুল ভাই আপনি কি এই গ্রুপের অপব্যাবহার করছেন না?

আশুন আমরা অন্যদের এচিভমেন্টে নিজেরাও খুশি হই, পাহাড়ে চড়াটা পুরাটাই উপোভোগের আর নিজেকে চ্যালেন্জের ব্যাপার, কেউ যদি মিথ্যা কথা বলেও থাকে তাহলে সে তো আর সেই আত্ম তৃপ্তি পাবে না তাই না?
শুধু শুধু কেনো নিজেদের মদ্ধে আমরা কাদা ছুড়াছুড়ি করবো!!

ছবিছাড়া পোস্ট ভালো দেখায় না,
এই ছবিটা আমার প্রিয় একটা ছবি, মাঝরাতে তোলা:

১৯টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×