কঠিন সময়ের চাপে পরে মাছে ভাতে বাঙ্গালীর দিন প্রায় শেষ হয়ে অনেক দিন হলো, এখন চলছে ডালে ভাতে বাঙ্গালীর সময়।
তারপরও চাল আর অন্যান্য আনুষাঙ্গিকের দাম যে হারে দিনে দিনে বাড়ছে, তাতে করে এখন খাদ্য ক্ষেত্রে নতুন নতুন দিক খুজে দেখতে হবে
সেই দিকে বাঁশ কিন্তু একটা বেশ দারুন খাদ্য হতে পারে। এম্নিতেই বিভিন্ন দিকে থেকে বাঁশ খেতে খেতে আমার বেশ অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি, তাই দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় এটা এখন অন্তর্ভূক্ত করাই যায়
আমরা হতে পারি বাঁশে ভাতে বাঙ্গালী।
বিশেষ ধরনের কঁচি বাঁশ গুলোকেই সব্জী হিসেবে খাওয়া হয়। রান্নার আগে বাশেঁর উপরের সবুজ শক্ত অংশটা সরিয়ে ফেলতে হবে।
এরপরে সাদা অংশটাকে ছোট ছোট করে কেটে নিয়ে পানিতে ঢুবিয়ে রাখতে হয় কিছু সময়। তারপরে পানি থেকে তুলে যে কোন সব্জী, মাছ বা মাংসের সাথে রান্না করা যায়
বাশঁ ভাজি
আমি একটা বাশঁ চিংড়ি রান্নার রেসিপ দিলাম এখানে......
১। মাঝারি আকারের চিংড়ি ১০/১৪ টা।
২। বাশেঁর মোটা কুচি ২ কাপ
৩।পেয়াঁজ কুচি ১ কাপ
৪। বেকিং পাউডার
৫।মেথি আধা চা চামচ।
৬। কাঁচা মরিচ, ধনে গুড়ো, জিরা গুড়ো, লবন, তেল নিজের পছন্দ অনুযায়ি।
প্রথমে বাঁশের টুকরো গুলো পানিতে হালকা ভাপ দিয়ে পানি ঝড়িয়ে তুলে রাখতে হবে। এরপরে প্যানে পরিমান মতো তেল নিয়ে চিংড়ি মাছ গুলো সামান্য হলুদ মাখিয়ে হালকা লাল করে ভেজে আলাদা করে রাখুন। এরপরে ঐ তেলেই পেয়াজ কুচি আর মেথি সোনালি করে ভেজে নিয়ে ওর মধ্যে ভাপ দেয় বাশেঁর গুলো বেকিং পাউডার মাখিয়ে ছেড়ে দিন।
কিছুক্ষন ভাজার পরে এর মধ্যে চিংড়ি আর সামান্য ধনে গুড়ো ছেড়ে দিয়ে আরও কিছু সময় ভাজতে হবে। এরপর সামান্য পানি দিয়ে ঢেকে দিন।
পানি শুকিয়ে যখন তেল উপরে উঠে আসলে ঝিরা গুরো ছড়িয়ে দিন, ঝোল শুকিয়ে মাখ মাখ হয়ে আসলে নামিয়ে ফেলুন।
এরপর ভাতের সাথে মাখিয়ে গপাগপ খেয়ে ফেলুন
আরেকটা কথা, বাঁশ অনান্য মাছ, মাংস বা শুধু ভাজি করেও খাওয়া যায়।
সায়েম মুন ভাই বাঁশ খাবার ব্যাপারে অভি তার মতে এটা খেতে খুবই সুস্বাদু।
এছাড়া বড়, শক্ত বাঁশের খোলের ভেতর মাংস বা মাছ ভরে সেখানে তেল-মশলা দিয়ে বাঁশটিকে পুড়িয়ে বা ঝলসীয়ে আদিবাসিরা রান্না করে যা স্থাণীয় ভাষায় ক্যাবাং নামে পরিচিত।
এবার একটা পানীয়ের রেসিপি, যার নাম রোজ ওয়াইন
বানতে যে জিনিস গুলো লাগবে.......
মিষ্টি আঙুর ১ কিলো;
একটা টাটকা লাল গোলাপের পাপড়ি (বাসি গোলাপ হলে চলবে না)
আতপ চাল কয়েকটি
ভালোভাবে বন্ধ হয় এমন ঢাকনা যুক্ত পরিষ্কার কাচের বোয়াম (১লিটারের চেয়ে বেশি আয়তনের)
পরিষ্কার কাপড়ের ছাঁকনি;
খেয়াল রাখতে হবে যেন আঙুর এতটুকুও টক না থাকে, তাহলে ওয়াইনের বদলে ভিনিগার তৈরী হয়ে যাবে
তাই আঙ্গুর কেনার আগে খেয়ে কিনতে পারেন (দু' তিনটা দোকানে এমন টেস্ট করলে তো আর কথায়ই নাই)
পদ্ধতি:
আঙুর খুব ভালো করে ধুয়ে, বোঁটা ছাড়িয়ে খোসা সহ চটকে নিতে হবে। (মিক্সিতে পেষার দরকার নেই)।
এবার আঙুরের সমস্ত রস, পরিষ্কার বোয়ামে ঢালতে হবে; আঙুরের বিচি বা খোসা বোয়ামের রসে কিছু পরিমান চলে গেলে অসুবিধার কিছু নেই।
এই রসে একটা গোলাপের সমস্ত পাপড়ি দিতে হবে আর গোটা চার পাঁচ আতপ চাল।
এবার বোয়ামের মুখ এয়ার টাইট করে বন্ধ করতে হবে; শুকনো ছায়াচ্ছন্ন জায়গায় ঐ বোয়াম রেখে দিতে হবে। দিন দুই তিন পরে দেখতে হবে বোয়ামের ভেতরের তরলে গ্যাঁজা বেরোচ্ছে কিনা।
দিন সাত আট পরে, গ্যাঁজা বেরিয়ে বোয়ামের ঢাকনায় চাপ সৃষ্টি করবে, ছিটকে খুলেও যেতে পারে।
তখন পরিষ্কার কাপড়ের ছাঁকনি দিয়ে ঐ তরল ছেঁকে নিতে হবে। খুব হালকা গোলাপী রং থাকে ঐ তরলের আর মৃদু গোলাপের গন্ধ।
বেশ কয়েকবার ছেঁকে নেওয়া যেতে পারে।
এতে এতটুকুও মিষ্টত্ব থাকবে না; ব্যাস রোজ ওয়াইন তৈরী হয়ে গেল।
আর বোয়ামের ঢাকনা খুব ভালোভাবে বন্ধ করা যাচ্ছে কিনা দেখে নিতে হবে, ফাঁক থাকলে মদ তৈরী হবে না।
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: যে উৎসাহী ভাই/বোন এই রেসিপিটা করতে চান তাকে নিজ দায়িত্বে করতে হবে, কোন সমস্যা হলে লেখক দায়ি থাকবে না
সকল ছবি আর রোজ ওয়াইনের রেসিপি নেট আর ইমনোপিডিয়া থেকে সংগৃহিত।