somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

'সখি ভালবাসা কারে কয়'......একটি ভালবাসাময় পোস্ট!

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্লগে সকলের নানারূপ গদ্য-পদ্য ইত্যকার রচনা দেখিতে দেখিতে একদা আমার মনেও সুপ্ত বাসনা জাগিয়া উঠিল, 'আহ!! আমিও যদি এরূপ লিখিতে পারিতাম!
কিন্তুক, ভাবিলেই কি আর কার্জ উদ্ধার হয়, যতই ভাবি এই পোড়া কি-বোর্ড হইতে সেই রদ্যি মার্কা ইতিহাস পাতিহাস ব্যাতিরেকে আর কিছুই বাহির হইলো না।
শেষ কালে একদিন কতিপয় শুভ্যানুধ্যায়ী কিঞ্চিত বিরক্ত হইয়া কহিল "আপনি শুধু এরূপ আতলামী মাতলামী লিখা লিখেন কেন, সৃজনশীল কিছু লিখিতে পারেন না?"
এহেন স্নেহ মিশৃত ভৎসর্না শুনিয়া মরমে মরিয়া গিয়া মারিয়া হইয়া ভাবিলাম আর নয় এইবার আমাকে একখানি গল্প লিখিতেই হইবে, নইলে ইহ জীবন বৃথা।
ভাবিয়া দেখিলাম সাহিত্য জগতে গল্পের মধ্যে কুলিন হইলো বিয়োগান্তক প্রেম উপখ্যান! মোক্ষম মতন একখানি লিখিতে পারিলে, একবার পাঠকের মর্মমূলে আঘাত করিতে পারিলে এই এক গল্পেই ২০০ লাইক, ৪০০ মন্তব্য, হাজার হাজার হিট।
তাই সমস্ত দিবস রজনী জুড়িয়া উঠিতে বসিতে, হাসিতে কাশিতে, নাইতে খাইতে ভাবিতে ভাবিতে শেষ কালে একদিন গল্পের একখানি ছক কাটিয়া ফেলিলাম। ঘটনা এরূপ...একদা গল্পের নায়ক-নায়িকার শিশুপার্কে দেখা হইবে, এরপরে প্রেমে গদগদ হইয়া উাহারা শিশু পার্কের ট্রেনে চড়িয়া, মেরি গো রাউন্ডে ঘুড়িয়া, চিড়িয়াখানায় চিড়ায় দেখিয়া, বাদাম খাইয়া বেড়াইবে।
বিস্তর ঘুরাঘুরি করিয়া সাধ মিটিবার পরে একদিন নায়ক কহিবে, 'অনেক তো হইলো,এইবার তুমি তোমার পথ দেখ, আমি এক্ষনে বিবাহ করিব'.....বলিয়া চলিয়া যাইবে!
এহেন মর্মান্তিক গল্প ফাঁদিয়া নিজের কৃতিত্বে নিজেকেই পিঠ চাপড়াইয়া দিলাম!
কিন্তু কি বলিবো দু:খের কথা, এইটুকুতেই আমার লেখক প্রতিভার অবসান হইলো, গল্পের ছক হইলেই তো হয় না, আরও পাত্র পাত্রী লাগিবে, উহাদের মুখে ভাষা লাগিবে আর সে সব ভাবিয়া আমি নিজেই ভাষাহীন হইয়া পরিলাম!
এক্ষনে আমাকে দয়াপরবশত হইয়া সাহায্য করিলেন দূর্যোধন! তিনি গল্পের নায়ক নায়িকার মুখে কথা যোগাইবার একটা অভূতপূর্ব ফর্দ ঠিক করিয়া দিলেন........

''এই শোনো''

-''বলো গো''

-''শুনছো?''

-''শুনছি গো''

-''না তুমি শুনছো না''

-''কি যে বলো না গো''

-''হ্যাঁ গো''

-''কি গো?''

-''ও গো''

-''মা গো''

শুন্যস্থান পূরনের মতো করিয়া বসের প্রদর্শিত পথে আমি হাটিতে লাগিলাম, আর ভাবিতে লাগিলাম এইবার আমায় আর ঠেকায় কে! এক গল্প দিয়াই হাসান মাহবুব, মাহী ফ্লোরা, ইত্যকার গাল্পিকদের ভাত মারিব!
এমন সময়ে আমার অনুজ আসিয়া, কহিল কি লিখিতেছিস দেখি দেখি বলিয়া আমার খাতা খানি টানিয়া লইল! আমি কহিলাম, একখানা নভেল লিখিতেছিলাম, দেখ তো কেমন হইলো', বলিয়া উদাস হইয়া আড়চোখে তাহার দিকে তাকাইয়া রইলাম!

সে পড়িতে লাগিলো, পড়িতে পড়িতে দেখি বহুরূপি গিরগিটির মতন তাহার গাত্রবর্ন পরিবর্তিত হইয়া রক্ত বর্ন ধারন করিতেছে~

আমি ভাবিলাম, আহা কতইনা ভাল হইয়াছে আমার প্রথম লেখা খানি, পড়িয়া দু:খে ভ্রাতার এই অবস্থা!

স্মিত হাসিয়া জানিতে চাইলাম, কেমন লাগিলো?

উত্তরে সে কহিল "ফের যদি গল্প লিখিবি তো তোকে পোটলা পেটা করিব, মারিতে মারিতে একদম সাবার করিয়া দেবো"......বলিয়া খাতাখানি ফেলিয়া দিয়া চলিয়া গেলো!

কলিকালের ছেলেপুলেরা এমনই হয়, গুরুজনদের সন্মান করিতে জানে না! দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া নিজের অজান্তেই কখন যে খাতাখানি কাঁচি দিয়া হৃদয় আকারে কাটিতে শুরু করিলাম কে জানে!

হঠাৎ আম্মার হুংকারে ধ্যান ভাঙ্গিল! চমকাইয়া উঠিয়া শুনি তিনি বলিতেছেন " এই দূর্মুল্যের বাজার কোন আনন্দে কাগজ কাটিয়া পাহাড় করিতেছো? থাবরা যদি খাইতে না চাহিস তো ভালয় ভালয় সব জোড়া দে আবার"........বুঝিলাম এই বাক্যবান আমাকেই উদ্দেশ্য করিয়া নিক্ষেপিত হইতেছে!

আরেকটা প্রলম্বিত দীর্ঘশ্বাস ছাড়িয়া ভাবিয়া দেখিলাম, এই বয়সে মায়ের হাতে থাবরা খাওয়া কোন কাজের কথা নয়! তাই গ্লু সহযোগে জোড়া লাগাইতে বাসিলাম ছেড়া কাটা হৃদয় গুলা...........




বোকা বেড়াল!



হাস্যমুখি হাতি!



গিয়ানী পেঁচা!



দেঁতো ঘোড়া!



ভ্যাবলা কুকুর!



ভুড়িওয়ালা ভেড়া!



পাজী প্রজাপতি!



সিংহ মামা!



অমায়িক গন্ডার!



লম্বু সারস!




নীল খরগোশ!





সুইট গরু!!

ছবি গুলো পেপার কাটিং ক্রাফট, আঁকা ছবি না! মানে হইলো কিনা, রঙিন কাগজ বিভিন্ন মাপের হৃদয় আকারে কাটিয়া, গ্লু দিয়া জোড়া লাগাইয়া বানানো হইয়াছে
!

সুতরাং বুঝিতেই পারিতেছেন, কবি যতই বলুক 'এ হৃদয় ভেঙ্গে গেলে জানো কি তা, লাগে না লাগে না জোড়া".....সে সকল বাজে কথায় না দিয়া খুব আয়েশেই ভাঙ্গাচোড়া, কাটাছেড়া হৃদয় দিয়া বানাইয়া ফেলিতে পারিবেন গরু, বেড়াল, ভেড়া কিংবা গন্ডার!'




প্রেমিক মৎস যুগল!


শেষ কথা:

আপনাদের জন্য আমার সেই করুন গল্পের কিয়দাংশ তুলিয়া দিলাম
......

''এই শোনো''

-''বলো গো''

-''শুনছো?''

-''শুনছি গো''

-''না তুমি শুনছো না''

-''কি যে বলো না গো''

-''হ্যাঁ গো''

-''কি গো?''

-''ও গো''

-''মা গো''

-''কি আমাকে মা বললে!''

-''না মানে মায়াবতী বলতে গিয়ে মা বলে ফেলেছি''

-''মায়াবতী বলতে গিয়ে মা বলেছো, ফাইজলামি করো আমার সাথে? আমি কি লবন ছাড়া ভাত খাই ভাবছো?''

-''ফাজলামি কি করলাম! আর আমাকে ফাজিল বললে মনে হয়''

-''হ্যাঁ বলেছি, ফাজিল মানুষরে ফাজিল বলবো না তো কি পীর বলবো?''

-''হাঁসের মতো গ্যাক গ্যাক করো না''

-'এত বড় কথা, আমার গলা হাঁসের মতো! ঘুরাইয়া একটা থাবরা দেবো''


আর না আগাই, কি বলেন?




একটি হাউকাউ পার্টি পরিবেশনা!
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫১
১৫২টি মন্তব্য ১৫১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×