somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক মুঠো ভালবাসাঃ পর্ব ১

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফেসবুকে পরিচয় দুজনের। প্রথম দিকে হালকা কথাবার্তা, কিছুটা দুষ্টুমি।
- কি করছ পরী?
- পড়ি...
- আস্তে পর যেন ব্যাথা না লাগে।
পরী খিলখিলিয়ে হাসে। এই কথায় কথায় দুষ্টুমি পরীর বেশ ভালো লাগে। দিনে দিনে দুজনের বন্ধুত্ব বেশ গভীর হয়। ফেসবুকে পরীর কোন ছবি দেয়া নেই। শুভ্র দেখতে চায়ওনা। ঘুরতে খুব ভালবাসে শুভ্র। ভার্সিটিতে ভর্তি হবার পর ভ্রমণ পাগলের পালে আরও হাওয়া লাগল। এডভেঞ্চার এর নেশায় একদিন বন্ধুরা মিলে ঠিক করল কাল সকালেই তারা কুয়াকাটা রওনা হবে। বাসায় বলে ম্যানেজ করা, ব্যাগ গুছানো আর উত্তেজনায় সেদিন রাত এ আর ফেসবুকে ঢোকা হয়না। পরীর সাথে লম্বা লম্বা মেসেজ এর চ্যাট ও আর হয়না। পরদিন সকালে হইহই করতে করতে বাস এ করে কুয়াকাটা রওনা হয় শুভ্র। আগে সাগর দেখেনি সে। ভাবতেই গা এর মধ্যে কাটা দিয়ে উঠছে তার।
হাসি আড্ডা গানে সময় যে কি করে পার হয়ে গেল টের এ পেলোনা তারা। এমনকি এবড়ো থেবড়ো রাস্তা ও তাদের আনন্দে দাগ ফেলতে পারেনি। রাত ৮ টায় তারা কুয়াকাটা পৌছালো। বাস থামল কুয়াকাটা-ইন হোটেলের সামনে। ওখানেই ২টা রুম নিয়ে কোনমতে ব্যাগ রেখেই সবাই ছুটল সাগরপানে। দৌড়ে সাগরের সামনে এসে থমকে দাঁড়াল ওরা। আকাশভরা মেঘ। চাঁদ তারার চিহ্নও নেই। শুধু আছে অদৃশ্য সাগরের বিরামহীন গর্জন। সাগরের বিশালতা আর অন্ধকারের গভীরতা সম্মহিত করে ফেলে শুভ্র কে। হটাত করে তার মনে হয় ঠিক এই মুহূর্তে তার পাশে আরেকটা মানুষের খুব দরকার ছিল। পরী। হটাত করে পরীকে এত কেন মনে পড়ছে? কেন ওর কথা মনে পড়ে বুকের ভিতর ফাকা লাগছে? শুভ্র’র মনে পড়ে গেল কাল রাত থেকে ওর সাথে কোন যোগাযোগ করা হয়নি। নিজেকে অপরাধী মনে হল তার। মোবাইল দিয়ে ফেসবুকে ঢুকতে গিয়ে আবিষ্কার করল নেটওয়ার্ক ই নেই। হতাশ হল শুভ্র। কিছুই ভালো লাগছে না তার। বন্ধুদের সৈকতে রেখে দৌড়ালো যদি কোন সাইবার ক্যাফে খুজে পাওয়া যায়। বিধিবাম এই বস্তুও নাই আসেপাশে। আনন্দ কেমন যেন মিইয়ে গেল। দুইদিন তারা কুয়াকাটা ছিল কিন্তু শুভ্র এর মনে হল তার চারপাশ ফাকা। মনের আনন্দ যদি পরীর সাথে ভাগই না করা গেল তাহলে লাভ কি?
দুইদিন পর তারা বাড়ীর পথ ধরল। শুভ্র এর মনে নতুন চিন্তার উদয় হল। আচ্ছা পরীকে কখনো তার পারসোনাল জীবন নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়নি। ও কি একা? না অন্য কেউ তার হৃদয় দখল করে বসে আছে। খুবই অস্থির লাগছে শুভ্রর। এ কেমন অনুভূতি??!! মনে হচ্ছে বুকের ভিতর সবই ফাকা হয়ে আছে। হার্টবিট বন্ধ হয়ে যাবে নাকি? বাড়ি ঢুকেই এক ছুটে নিজের ঘরে গিয়ে ফেসবুক খুলল শুভ্র। এত্ত স্লো কেন নেটের লাইন? ধুত্তরি!! পরী ১৭ টা মেসেজ দিয়েছে।
“শুভ্র আজ আসলে না যে, অনেক ব্যস্ত তাই না? বুঝছি পরীর কথা ভুলে গেছ :( :। যাই হোক ভালো থেকো”
“শুভ্র রোজ তোমার সাথে চ্যাট করে অভ্যাস খারাপ হয়ে গেছে। তুমি আজ আসবেনা? আমার ঘুম আসবেনা তোমার মেসেজ না পেলে। ওই গাধা মিস করছিতো কই তুমি”
.
.
“শুভ্র তুমি ভালো আছতো? কি হইছে তোমার? সুস্থ আছতো? আমার অনেক টেনশন হচ্ছে তোমাকে নিয়ে। কি হইছে বল আমাকে। ৩ দিন কোন খবর নাই। পরশু থেকে ঘুমাতে পারছিনা। প্লিজ কিছু বল। আমার উপরে কোন কারনে রাগ করলে সেটা আমায় বল, বকা দাও তবু এমন চুপ করে থেকনা। অনেক মিস করছি তোমাকে।”
শুভ্রর বুকে ঝড় উঠল। পরী তাকে এত মিস করে? সব জানিয়ে মেসেজ লিখল পরীকে। না বলে যাবার জন্য হাজার বার সরি বলল। বুকে এক চিলতে হিমেল বাতাস নিয়ে বের হয়ে আসল সে। একটু পর আবার ফেসবুকে ঢুকল, পরী রিপ্লাই দিয়েছে। কিছুটা বকা, কিছুটা অভিমান, কিছুটা স্বস্তি মেশানো মেসেজ। হাজার বার পড়ল শুভ্র। মেসেজের শেষের লাইনে শুভ্রর ফোন নাম্বার চেয়েছে পরী কিছুটা আদেশের সুরেই। এই কর্তৃত্ব হাসি মুখে মেনে নিয়ে মেসেজ এর উত্তর দিল সে। মনে এখন অনেক প্রশান্তি। সব কিছুই এত্ত ভালো কেন লাগছে কে জানে!!
রাত এ অচেনা নাম্বার এর ফোন। কানে দিয়ে শুভ্র বলল “কে?”। অপাশ থেকে কপট রাগ “কতজনকে নাম্বার দিছ যে বুঝতে পারছনা কে ফোন দিছে??” পরীর কণ্ঠ এত মিষ্টি??!! এত্ত আদুরে??!! কিছু কথা বলে ফোন রেখে দিল শুভ্র। বিছানায় শুয়ে গুনগুন করতে করতে হটাত মনে পড়ল কে যেন বলেছিল যাদের কণ্ঠ অনেক মিষ্টি তারা দেখতে ভালো হয়না। গুনগুন থেমে গেলো তার। পরমুহূর্তেই মনে হল দেখতে যেমনই হোক ওর সাথে শুভ্রর মনের অনেক মিল। এই মেয়েটাকেই সারা জীবন তার পাশে লাগবে।
কিছুদিন কথা বলার পর ওরা ঠিক করল দেখা করবে। সামনে পহেলা বৈশাখ। ওই দিন ই দেখা করবে তারা। পরী শাড়ি পরবে, শুভ্র বলল লাল পাড়ের শাড়ি আর লাল টিপ পড়তে। শুভ্রর সাদা লালের পাঞ্জাবীও পরীর আবদারের।

চলবে.............



২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×