somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানবাধিকার লঙ্ঘনের পিছনে কি কেবল প্রশাসনই দায়ী?

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের দেশে খুন করার নতুন এক পদ্ধতি আবিষ্কার হয়েছে। এর নাম দেয়া হয়েছে গণধোলাই। একজন চোর এই ডেবিট কার্ড বা চেক বইয়ের যুগে কয়েক হাজার টাকা সহ মানিব্যাগ চুরি করল। হয়ত তার নৈতিকতার অভাব বা পরিবেশের দায়ে সে চোর। কিন্তু কি এত বড় অপরাধ করল যে এর বিনিময়ে একেবারে জানে মারতে হবে! জীবনের মূল্য কি পাঁচ বা কুঁড়ি হাজার টাকা?

মানবাধিকার লঙ্ঘনের পিছনে কি কেবল প্রশাসনই দায়ী? মানবাধিকার রক্ষা করার দায়িত্ব কি কেবল তাদের একার? তবে আমি মনে করি মানবাধিকার লঙ্ঘনের পিছনে যতটা না প্রশাসনের দোষ আছে তার থেকে বেশি আছে আমাদের। যেমন ধরুন খোলা পরিবেশে বা যানবাহনে (বাস, টেম্পো, লঞ্চ) ধূমপান করা। এতে শুধু পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে না, জনগণের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। আমাদের কি অধিকার আছে অন্য কারোর ক্ষতি করা?

আবার অনেকেই আছে প্রতিবন্ধী, গরীব বা হিজড়া দেখলেই অবজ্ঞা করে, মন্দ নামে ডাকে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সনদের অনুচ্ছেদ ১২ অনুযায়ী কারো সুনামের উপর আঘাত করা যাবে না। অর্থাৎ তা যদি করা হয় তবে তা হবে মানবাধিকার লঙ্ঘন। আমার মনে হয় না সসম্মানে জীবিকা নির্বাহের কাজে প্রশাসনে এদের বাধা দিচ্ছে। বরং তারা অন্যান্য মানুষের মত কোন জীবিকা নির্বাহমূলক কাজে অংশগ্রহণ করতে আসলে বাধাপ্রাপ্ত কিছু বিবেকহীন মানুষ দ্বারা। ফলে তারা বাধ্য হয়ে জড়িত হয়ে পরে অপরাধমূলক কাজে। এখানে মূলত তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় আত্মমর্যাদার ক্ষেত্রে। অথচ মানুষ সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয় এই আত্মমর্যাদাকেই।

যেমন একজন সৎ লোক যিনি কখনো চুরি করেননি এবং তিনি চুরি করেছেন বলে প্রমাণিত হয়নি কিন্তু লোকবলের নিকট দুর্নাম রটে যাওয়ার সবার কাছ থেকে তাকে শুনতে হচ্ছে মিথ্যা অপবাদ। অনেকক্ষেত্র তাকে অনেক কিছু হতে বঞ্চিত হতে হয় কেবল এ অপবাদের জন্য। কিন্তু একজন ব্যক্তিকে কখনোই দোষী বলা যাবে না যতক্ষণ না তার দোষ প্রমাণিত হয়। এতে ঐ ব্যক্তির মধ্যে অপরাধ করার প্রবণতা সৃষ্টি হতে পারে।

আমাদের দৃষ্টির অগোচরে কিছু গুপ্ত হত্যাকাণ্ড নিয়মিত হয়ে যাচ্ছে যার সংবাদ আমরা পায় না কোন সংবাদ মাধ্যমে। অসংখ্য হচ্ছে, বার বার হচ্ছে। হতেই আছে। সেই সব জীবনের অস্তিত্ব সম্পর্কে হত্যাকারীরা ব্যতীত অন্য কেউ জানে না বিধায় হয়ত কেউ তেমন প্রতিবাদও জানতে পারছে না। আমি ভ্রূণ হত্যার কথা বলছি। এবং বলছি সেই সব শিশুদের যাদের জন্মের পর হত্যা করা হয় বা ফেলে দেয়া হয় ডাস্টবিনে। কি দোষ ছিল তাদের? শিশু বলে কি এরা মানুষ না? এদের মানবাধিকার কোথায়?

কোন এক পরিবারে কোন সদস্য যদি জনসম্মুখে টিজিং এর বা শালীনতা হানীর স্বীকার হয়, তবে সেই পরিবার যখন তা জানতে পারবে তারা ভাববে, সেখানে কি কোন ভাই ছিল না? কোন পিতা ছিল না? কিভাবে জনসম্মুখে একটি মেয়েকে টিজ করতে পারে! এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে আমাদের দ্বারা। সবসময় প্রশাসনের কর্মচারীরা সকল জায়গায় উপস্থিত থাকতে পারবে এমন না। এধরণের অপরাধীদের জেরা করলে দেখা যায় তারা পূর্ব থেকে এমন কোন কাজ করে আসছে কোন বাঁধা ছাড়া। অর্থাৎ পূর্বে তারা বাধাপ্রাপ্ত হয়নি। এখনও হয়নি তাই হয়ত পরে অন্য কারো মা-বোনের সাথে এমন করবে। আজ টিজ কাল হয়ত ধর্ষণ। ১৯৯২ সালের এক রিপোর্ট অনুযায়ী আমেরিকাতে প্রতি ৩২ সেকেন্ডে ১জন করে ধর্ষিত হয়। আমার পোস্ট সম্পূর্ণ পড়তেই হয়ত অনেক ধর্ষণ ঘটে যাবে। এধরণের অপরাধীদের জেরা করে দেখা গেছে তারা বাধাপ্রাপ্ত হয়নি। অর্থাৎ এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে আমাদের দ্বারা।

সংগ্রাম ব্যতীত কখনো কোন কিছু অর্জন হয় না। মানবাধিকার আদায় এবং রক্ষার স্বার্থে সংগ্রাম করার অধিকার মানুষের আছে। এর জন্য কেবল প্রশাসনের দিকে চেয়ে থাকা বোকামি। যেমন আমাদের সেই মহান মুক্তিযুদ্ধ। দেশের মানুষের অধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে বলেই তারাও সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। কোন বিবেকবান মানুষ কখনোই অন্যায়ের সামনে হাত-পা গুটিয়ে রাখতে পারেন না। অন্যায়ের যদি প্রতিবাদ না করা হয় তবে তা আর প্রশ্রয় পেয়ে প্রকট হয়ে উঠবে। আমাদের নাহয় ভয় হয় মেনে নিলাম। কিন্তু এর জন্য আমরা প্রশাসনের সহায়তা কেন নিই না? প্রশাসন এর ব্যবস্থা করুক না করুক পরের বিষয় কিন্তু আমাদের দায়িত্ব অন্তত আমাদের পালন করা উচিৎ। কুলাঙ্গার সব জাগায় কিছু না কিছু থাকে। প্রশাসনেও আছে। তাই বলে আমি নিজেও প্রতিবাদ করব না আবার প্রশাসনকেও জানাব না এটি কাণ্ডজ্ঞানহীন মনোভাব। বরং মজার ব্যাপার হল প্রশাসন নৈতিক দায়িত্বে বা তাদের নিজ স্বার্থের কারণে হলেও নাক গলাতে আগ্রহী থাকে। এতে অন্তত অপরাধীর মনে ভীতি সৃষ্টি হয় এমনকি অপরাধ ছেড়েও দিতে পারে।

#সাদ
৯-ডিসেম্বর-১৪
#Saad #rights365
ফেসবুক পেজ
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×