somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘ক্বদরের রাত্র হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ’

০৮ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ৯:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘ক্বদরের রাত্র হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।’

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ‘তোমরা রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিনের বেজোড় রাত্রগুলোতে ‘লাইলাতুল ক্বদর’ তালাশ করো।’

তাই সকলের জন্য দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিনের বেজোড় রাত্রগুলোতে শবে ক্বদর তালাশ করা।

পাশাপাশি প্রত্যেক জামে মসজিদে কমপক্ষে একজন পুরুষকে অবশ্যই ই’তিকাফ করা।

কারণ রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিন ই’তিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়া।

এ বছর অর্থাৎ ১৪৩৩ হিজরী সনের ই’তিকাফের জন্য রমাদ্বান শরীফ-এর বিশ তারিখ অর্থাৎ ইয়াওমুল খামীসি বা বৃহস্পতিবার সূর্য ডুবার পূর্বেই মসজিদে প্রবেশ করতে হবে এবং শাওয়াল মাসের চাঁদ উঠার সংবাদ পাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত মসজিদে অবস্থান করতে হবে।

যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই আমি ক্বদরের রাত্রিতে কুরআন শরীফ নাযিল করি। অর্থাৎ কুরআন শরীফ ক্বদরের রাত্রিতে লৌহমাহফুজ থেকে সামায়ে দুনিয়া বা পৃথিবীর আকাশে বাইতুল ইজ্জত নামক কুদরতী ঘর মুবারক-এ এক সাথে নাযিল করেন। আপনি তো জানেন ক্বদরের রাত্রির ফযীলত কি? ক্বদরের রাত্রি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ রাত্রিতে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরসহ অবতীর্ণ হন মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশে সকল বিষয়ের প্রতি সালাম বর্ষণ করেন ছুবহে ছাদিক পর্যন্ত।”

আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “ক্বদরের রাত্রিতে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি একদল হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরসহ যমীনে অবতীর্ণ হন। অতঃপর দাঁড়ানো, বসা ইত্যাদি অবস্থায় যিকিরকারী ও ইবাদতকারী সকলের প্রতি ছলাত বর্ষণ করেন।”

হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে, “পাঁচ রাতে নিশ্চিতভাবে দোয়া কবুল হয়- ১. রজব মাসের পহেলা রাত, ২. বরাতের রাত, ৩. ক্বদরের রাত ও ৫. দুই ঈদের দুই রাত্র।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, শবে বরাত বা অন্যান্য রাত্রিগুলো যেরূপ নির্দিষ্ট শবে ক্বদর তদ্রূপ নির্দিষ্ট নয়। শবে ক্বদর রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিনের বেজোড় রাত্রগুলোর যেকোন রাত্রিতেই হতে পারে। তাই শেষ দশ দিনের প্রত্যেক বেজোড় রাত্রিতে শবে ক্বদর তালাশ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিন ই’তিকাফ করতঃ বেজোড় রাত্রিগুলোতে শবে ক্বদর তালাশ করতে বলেন।

যেমন এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রমাদ্বান শরীফ-এর প্রথম দশ দিন ই’তিকাফ করলেন; অতঃপর রমাদ্বান শরীফ-এর দ্বিতীয় দশ দিন একটি তুরকী তাঁবু মুবারক-এর নিচে ই’তিকাফ করলেন, অতঃপর তিনি তাঁবু মুবারক থেকে মাথা মুবারক বের করে বললেন, আমি লাইলাতুল ক্বদর তালাশ করার জন্য প্রথম দশ দিন অতঃপর দ্বিতীয় দশ দিন ই’তিকাফ করেছি।

হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে বললেন, অর্থাৎ মহান আল্লাহ তিনি আমাকে জানালেন, লাইলাতুল ক্বদর রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিনের মধ্যে। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “(হে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম!) আপনারা যারা আমার সাথে ই’তিকাফ করছেন আপনারা শেষ দশ দিনও ই’তিকাফ করুন। এবং লাইলাতুল ক্বদর শেষ দশ দিনের বিজোড় রাত্রগুলোতে তালাশ করুন।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ-এ উল্লেখ আছে, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিছাল শরীফ গ্রহণ করা পর্যন্ত প্রতি বছরই রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিন ই’তিকাফ করতেন। উনার বিছাল শরীফ-এর পর উনার আহলিয়া আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ই’তিকাফ করেন বা করতেন।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, প্রত্যেকটা মসজিদকেই পবিত্র রাখতে হবে ই’তিকাফ এবং ছলাত-এর জন্যে। ই’তিকাফের জন্য রমাদ্বান শরীফ-এর বিশ তারিখ সূর্য ডুবার পূর্বেই মসজিদে প্রবেশ করতে হবে। যা এ বছরের অর্থাৎ ১৪৩৩ হিজরী সনের জন্য আগামী ইয়াওমুল খামীসি বা বৃহস্পতিবার মাগরীবের পূর্বে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ই’তিকাফ-এর ফযীলত সম্পর্কে বলেন, হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, কোন ব্যক্তি যদি এক দিন মাত্র ই’তিকাফ করে মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি-রেযামন্দির জন্য; তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি ই’তিকাফকারী আর জাহান্নামের মধ্যে তিন খন্দক পার্থক্য সৃষ্টি করে দিবেন। (এক খন্দক হচ্ছে পৃথিবীর পূর্বপ্রান্ত হতে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত) অর্থাৎ সে জান্নাতী হয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে, ‘রোযা ব্যতীত ই’তিকাফ হবে না এবং মসজিদ ব্যতীত ই’তিকাফ হবে না।’

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ই’তিকাফ সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়া। অর্থাৎ এক মসজিদে কমপক্ষে একজনকে ই’তিকাফ করতেই হবে অন্যথায় সকলকে ওয়াজিব তরক্বের গুনাহে গুনাহগার হতে হবে। অনেকে বলে থাকে, পাঁচ/সাত দিন ই’তিকাফ করলেই চলবে। কিন্তু না, বিশ রমাদ্বান শরীফ সূর্য ডুবার পূর্বে মসজিদে প্রবেশ করতে হবে এবং ঈদের চাঁদ অর্থাৎ শাওয়াল মাসের চাঁদ উঠা পর্যন্ত তাকে ই’তিকাফ করতে হবে। এর এক বিন্দু সময় কম করলেও হবে না। এটা সুন্নত তথা সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়া। আর ওয়াজিব ই’তিকাফ হচ্ছে মান্নতের ই’তিকাফ। নফল ই’তিকাফ হচ্ছে মসজিদে প্রবেশ করে ই’তিকাফের নিয়ত করে অবস্থান করা; এতে ই’তিকাফের ছওয়াব পাওয়া যাবে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে, মু’তাক্বিফ গুনাহ থেকে বেঁচে থাকবে আর যিকির-আযকার, তওবা-ইস্তিগফার, ইবাদত-বন্দিগী অর্থাৎ নেক কাজে মশগুল থাকবে। একজন লোক বাইরে থেকে যতটুকু নেক কাজ করবে মু’তাকিফের আমলনামায় মহান আল্লাহ পাক ততটুকু নেকী লিখে দিবেন। সুবহানাল্লাহ।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মু’তাকিফ ব্যক্তি কোন অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যেতে পারবে না, জানাযায় শরীক হতে পারবে না, আহলিয়ার নিকটবর্তী হতে পারবে না। কারণ, মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেন, মু’তাকিফ ব্যক্তির জন্য তার আহলিয়ার নিকটবর্তী হওয়া নিষিদ্ধ; এটাই সীমা।’ হাজত ব্যতীত মসজিদ থেকে বের হতে পারবে না। ওযু-ইস্তিঞ্জা ব্যতীত এক সেকেন্ডের জন্যে বের হলেও ই’তিকাফ ভেঙে যাবে। মু’তাকিফ গোসল করতে পারবে না। তবে গোসল জরুরী হলে বা প্রচ- অস্বস্তিবোধ করলে মাজুর হিসেবে ওযু-ইস্তিঞ্জা করতে যতটুকু সময় লাগে ততটুকু সময়ের মধ্যে গোসল করে আসতে পারবে। মু’তাকিফ হয়ে এদিক-সেদিক অহেতুক তাকানো বা দেখা, লোকদের সাথে অপ্রয়োজনীয় আলাপ-আলোচনা ইত্যাদি নিষিদ্ধ রয়েছে। এমন যদি হয় যে খাবার পৌঁছানোর লোক নেই; তবে সে তার খাবার নিয়ে আসতে পারবে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মূলকথা হলো- শরীয়তের দৃষ্টিতে রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিন ই’তিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ কিফায়া। অর্থাৎ প্রতি মসজিদে কমপক্ষে একজন পুরুষকে অবশ্যই ই’তিকাফ করতে হবে। যদি একজনও ই’তিকাফ না করে তবে সকলেই ওয়াজিব তরকের গুনাহে গুনাহগার হবে। তাই সকলের উচিত রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিন ই’তিকাফ করা ও বেজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল ক্বদর তালাশ করা।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি সকলকে যথাযথ হক্ব আদায়ের মাধ্যমে শরীয়ত নির্দেশিত পন্থায় খাছ সুন্নতী ই’তিকাফ করে শবে ক্বদর তালাশের মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি-রেযামন্দী হাছিলের আহবান জানান।
-০-

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘ক্বদরের রাত্র হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।’

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ‘তোমরা রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিনের বেজোড় রাত্রগুলোতে ‘লাইলাতুল ক্বদর’ তালাশ করো।’

তাই সকলের জন্য দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিনের বেজোড় রাত্রগুলোতে শবে ক্বদর তালাশ করা।

পাশাপাশি প্রত্যেক জামে মসজিদে কমপক্ষে একজন পুরুষকে অবশ্যই ই’তিকাফ করা।

কারণ রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিন ই’তিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়া।

এ বছর অর্থাৎ ১৪৩৩ হিজরী সনের ই’তিকাফের জন্য রমাদ্বান শরীফ-এর বিশ তারিখ অর্থাৎ ইয়াওমুল খামীসি বা বৃহস্পতিবার সূর্য ডুবার পূর্বেই মসজিদে প্রবেশ করতে হবে এবং শাওয়াল মাসের চাঁদ উঠার সংবাদ পাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত মসজিদে অবস্থান করতে হবে।

যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই আমি ক্বদরের রাত্রিতে কুরআন শরীফ নাযিল করি। অর্থাৎ কুরআন শরীফ ক্বদরের রাত্রিতে লৌহমাহফুজ থেকে সামায়ে দুনিয়া বা পৃথিবীর আকাশে বাইতুল ইজ্জত নামক কুদরতী ঘর মুবারক-এ এক সাথে নাযিল করেন। আপনি তো জানেন ক্বদরের রাত্রির ফযীলত কি? ক্বদরের রাত্রি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ রাত্রিতে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরসহ অবতীর্ণ হন মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশে সকল বিষয়ের প্রতি সালাম বর্ষণ করেন ছুবহে ছাদিক পর্যন্ত।”

আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “ক্বদরের রাত্রিতে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি একদল হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরসহ যমীনে অবতীর্ণ হন। অতঃপর দাঁড়ানো, বসা ইত্যাদি অবস্থায় যিকিরকারী ও ইবাদতকারী সকলের প্রতি ছলাত বর্ষণ করেন।”

হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে, “পাঁচ রাতে নিশ্চিতভাবে দোয়া কবুল হয়- ১. রজব মাসের পহেলা রাত, ২. বরাতের রাত, ৩. ক্বদরের রাত ও ৫. দুই ঈদের দুই রাত্র।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, শবে বরাত বা অন্যান্য রাত্রিগুলো যেরূপ নির্দিষ্ট শবে ক্বদর তদ্রূপ নির্দিষ্ট নয়। শবে ক্বদর রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিনের বেজোড় রাত্রগুলোর যেকোন রাত্রিতেই হতে পারে। তাই শেষ দশ দিনের প্রত্যেক বেজোড় রাত্রিতে শবে ক্বদর তালাশ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিন ই’তিকাফ করতঃ বেজোড় রাত্রিগুলোতে শবে ক্বদর তালাশ করতে বলেন। যেমন এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রমাদ্বান শরীফ-এর প্রথম দশ দিন ই’তিকাফ করলেন; অতঃপর রমাদ্বান শরীফ-এর দ্বিতীয় দশ দিন একটি তুরকী তাঁবু মুবারক-এর নিচে ই’তিকাফ করলেন, অতঃপর তিনি তাঁবু মুবারক থেকে মাথা মুবারক বের করে বললেন, আমি লাইলাতুল ক্বদর তালাশ করার জন্য প্রথম দশ দিন অতঃপর দ্বিতীয় দশ দিন ই’তিকাফ করেছি।

হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে বললেন, অর্থাৎ মহান আল্লাহ তিনি আমাকে জানালেন, লাইলাতুল ক্বদর রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিনের মধ্যে। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “(হে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম!) আপনারা যারা আমার সাথে ই’তিকাফ করছেন আপনারা শেষ দশ দিনও ই’তিকাফ করুন। এবং লাইলাতুল ক্বদর শেষ দশ দিনের বিজোড় রাত্রগুলোতে তালাশ করুন।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ-এ উল্লেখ আছে, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিছাল শরীফ গ্রহণ করা পর্যন্ত প্রতি বছরই রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিন ই’তিকাফ করতেন। উনার বিছাল শরীফ-এর পর উনার আহলিয়া আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ই’তিকাফ করেন বা করতেন।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, প্রত্যেকটা মসজিদকেই পবিত্র রাখতে হবে ই’তিকাফ এবং ছলাত-এর জন্যে। ই’তিকাফের জন্য রমাদ্বান শরীফ-এর বিশ তারিখ সূর্য ডুবার পূর্বেই মসজিদে প্রবেশ করতে হবে। যা এ বছরের অর্থাৎ ১৪৩৩ হিজরী সনের জন্য আগামী ইয়াওমুল খামীসি বা বৃহস্পতিবার মাগরীবের পূর্বে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ই’তিকাফ-এর ফযীলত সম্পর্কে বলেন, হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, কোন ব্যক্তি যদি এক দিন মাত্র ই’তিকাফ করে মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি-রেযামন্দির জন্য; তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি ই’তিকাফকারী আর জাহান্নামের মধ্যে তিন খন্দক পার্থক্য সৃষ্টি করে দিবেন। (এক খন্দক হচ্ছে পৃথিবীর পূর্বপ্রান্ত হতে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত) অর্থাৎ সে জান্নাতী হয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে, ‘রোযা ব্যতীত ই’তিকাফ হবে না এবং মসজিদ ব্যতীত ই’তিকাফ হবে না।’

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ই’তিকাফ সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়া। অর্থাৎ এক মসজিদে কমপক্ষে একজনকে ই’তিকাফ করতেই হবে অন্যথায় সকলকে ওয়াজিব তরক্বের গুনাহে গুনাহগার হতে হবে। অনেকে বলে থাকে, পাঁচ/সাত দিন ই’তিকাফ করলেই চলবে। কিন্তু না, বিশ রমাদ্বান শরীফ সূর্য ডুবার পূর্বে মসজিদে প্রবেশ করতে হবে এবং ঈদের চাঁদ অর্থাৎ শাওয়াল মাসের চাঁদ উঠা পর্যন্ত তাকে ই’তিকাফ করতে হবে। এর এক বিন্দু সময় কম করলেও হবে না। এটা সুন্নত তথা সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়া। আর ওয়াজিব ই’তিকাফ হচ্ছে মান্নতের ই’তিকাফ। নফল ই’তিকাফ হচ্ছে মসজিদে প্রবেশ করে ই’তিকাফের নিয়ত করে অবস্থান করা; এতে ই’তিকাফের ছওয়াব পাওয়া যাবে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে, মু’তাক্বিফ গুনাহ থেকে বেঁচে থাকবে আর যিকির-আযকার, তওবা-ইস্তিগফার, ইবাদত-বন্দিগী অর্থাৎ নেক কাজে মশগুল থাকবে। একজন লোক বাইরে থেকে যতটুকু নেক কাজ করবে মু’তাকিফের আমলনামায় মহান আল্লাহ পাক ততটুকু নেকী লিখে দিবেন। সুবহানাল্লাহ।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মু’তাকিফ ব্যক্তি কোন অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যেতে পারবে না, জানাযায় শরীক হতে পারবে না, আহলিয়ার নিকটবর্তী হতে পারবে না। কারণ, মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেন, মু’তাকিফ ব্যক্তির জন্য তার আহলিয়ার নিকটবর্তী হওয়া নিষিদ্ধ; এটাই সীমা।’ হাজত ব্যতীত মসজিদ থেকে বের হতে পারবে না। ওযু-ইস্তিঞ্জা ব্যতীত এক সেকেন্ডের জন্যে বের হলেও ই’তিকাফ ভেঙে যাবে। মু’তাকিফ গোসল করতে পারবে না। তবে গোসল জরুরী হলে বা প্রচ- অস্বস্তিবোধ করলে মাজুর হিসেবে ওযু-ইস্তিঞ্জা করতে যতটুকু সময় লাগে ততটুকু সময়ের মধ্যে গোসল করে আসতে পারবে। মু’তাকিফ হয়ে এদিক-সেদিক অহেতুক তাকানো বা দেখা, লোকদের সাথে অপ্রয়োজনীয় আলাপ-আলোচনা ইত্যাদি নিষিদ্ধ রয়েছে। এমন যদি হয় যে খাবার পৌঁছানোর লোক নেই; তবে সে তার খাবার নিয়ে আসতে পারবে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মূলকথা হলো- শরীয়তের দৃষ্টিতে রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিন ই’তিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ কিফায়া। অর্থাৎ প্রতি মসজিদে কমপক্ষে একজন পুরুষকে অবশ্যই ই’তিকাফ করতে হবে। যদি একজনও ই’তিকাফ না করে তবে সকলেই ওয়াজিব তরকের গুনাহে গুনাহগার হবে। তাই সকলের উচিত রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিন ই’তিকাফ করা ও বেজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল ক্বদর তালাশ করা।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি সকলকে যথাযথ হক্ব আদায়ের মাধ্যমে শরীয়ত নির্দেশিত পন্থায় খাছ সুন্নতী ই’তিকাফ করে শবে ক্বদর তালাশের মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি-রেযামন্দী হাছিলের আহবান জানান।
-০-
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ৯:২৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০, কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×