খুব ভোরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসাটা আমার প্রতিদিনের অভ্যাস ।আজ ও তার ব্যতিক্রম হয়নি । অফিসে বসে সবে মাত্র পত্রিকাটায় আয়েশ করে চোখ বুলাচ্ছিলাম । এমন সময় মোবাইল ফোনটা বেজে উঠে, চেয়ে দেখি গিন্নীর ফোন । বাড়ি থেকে সবে মাত্র এলাম এখনি আবার ফোন কেন ? নিশ্চয়ই বাজারের ফর্দি ! চোখে বিরক্তি নিয়ে হাসি মুখে বললাম হ্যালো ...
ওপাশের কন্ঠ শুনে বিস্ময়ের ধাক্কায় আমি বিমুঢ় হয়ে গেলাম । গিন্নী বলল তোমার বাবা একসিডেন্ট করেছে, তাড়াতাড়ি বাড়ি আসো । রওয়ানা হওয়ার আগেই আবারো ফোনটা বেজে উঠে, এবার বলল তোমার বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ।
দ্রুত হাসপাতালে গেলাম, কিন্তু তখনো বাবাকে নিয়ে ওরা হাসপাতালে পৌছেনি, একটু অপেক্ষার পরই দুজন লোক একটা রিক্সায় করে বাবাকে নিয়ে এলো । কিন্তু একি হাল বাবার ! তার কান থেকে রক্ত ঝড়ছিল, আর চোখ দুটি ছিল খোলা । সেই খোলা চোখে আবার কিছুটা ধুলির আস্তর । বাবা যেন আমাকে বলছে " আমাকে বাঁচাও বাবা" ।
তাড়াতাড়ি বাবাকে কোলে করে হাসপাতালের বিছানায় শুইয়ে দিলাম, বুকে আলতো চাপ দিলাম, এবার বাবা বড় করে হা একটা শ্বাস নিলেন, সেই সাথে কি আমাকে আরো কিছু বলতে চেয়েছিলেন বা বলেছিলেন যা আমি শুনতে পাইনি !
ডাক্তার এলো পরিক্ষা-নিরিক্ষার পর ঘোষণা করল বাবা আর বেঁচে নেই, বাবার বুকে ঝাপিয়ে পড়লাম, অনেক আকুতি করলাম বাবা একটি বার চোখ খোল । তুমি কি বলতে চেয়েছিলে বুঝতে পারোনি বলে অভিমান করেছ বাবা ? তোমার শেষ আকুতি আমি রক্ষা করতে পারিনি বাবা, ক্ষমা করো তোমার এই অধম সন্তানকে ।
----------------------------------------------------------------------------------
বাবার কবরের পাশে লাগানো পাতা বাহারের গাছগুলো এক বছর বয়সী হয়ে ডাল পালা ছড়িয়ে সুন্দর হয়ে উঠেছে, করবের উপরের ঘাস গুলোতে গোলাপী রঙের ফুল ফুটেছে........আর এসব দেখে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ শুধুই বেড়ে চলছে, জানিনা কবে এর শেষ হবে............

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।

