somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালো মানুষদের দেশে ( ভুটান ভ্রমণ ) -- ১

০৪ ঠা জুন, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ভালো মানুষদের দেশে বলার কারণ একটাই ভুটানের মানুষরা এতো বেশী হেল্পফুল ওদেরকে ভালোমানুষ উপাধী না দিলে রীতিমতো অন্যায় হবে । ইন্ডিয়ার কাছে ট্রানজিট ভিসা নিয়াছিলাম, একবার ইন্ডিয়ার উপর দিয়া ভুটানে প্রবেশ করবো আরেকবার বের হয়ে বাংলাদেশে ফিরবো । কিন্তু ফেরার পথে বিমানে চলে আসায় আর ইন্ডিয়াতে দ্বিতীয়বার প্রবেশ করা হয়নি । আমার এই পোষ্ট মূলত ফটোব্লগ তাই ছবির মাধ্যমেই আমি যতটুকু সম্ভব তুলে ধরার চেষ্টা করবো, বিস্তারিত বিশ্লেষণে আমি যাবো না ।


এই বাসে করেই আমরা ঢাকা থেকে বুড়িমারী পৌছি খুব ভোরে ।


বুড়ির হোটেলে সকালের নাস্তাটা সারি ভরপেট ভাপ উঠানো ভাত, রুই মাছ , বেগুন ভাজি আর আরো কিছু সবজি দিয়ে । বুড়ির হোটেলের রান্নাটা অতি চমৎকার, আর মানুষ হিসাবে বুড়ি আরো বেশী চমৎকার । ওখানে গিয়ে বুতির হোটেলে না খেলে পস্তাইবেন :D


বুড়ির হোটেলের খাবারের মূল্য তালিকা ।


বুড়ির সাথে একটা পোজ না দিলে কি চলে ? বুড়া বুড়ি বলে কথা :P


ভোরে গিয়ে সীমান্তে অবস্থান করলে কি হবে, আমাদের ইমিগ্রেশনের লোকদের ঘুম ভাঙ্গতে সকাল ১০টা, তাই কি আর করা ঘুরেফিরে খালি ছবি তোলা । বুড়িমারীতে ভারতের সাথে আমাদের জিরো পয়েন্ট ।


দুই দেশের ইমিগ্রেশন পার হয়ে ট্যাক্সি নিলাম জয়গাঁ এর উদ্দেশ্যে । মাঝপথে জলপাইগুড়ির চা বাগান। কী মনোরম দৃশ্য।
পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার জয়গাঁতে ভারতের শেষ সীমানা, এবং এখান থেকেই ভুটান শুরু। শুরুতেই পড়ছে ভুটানের ফুন্টসলিং এবং এই ফুন্টসলিং-এই আমরা দুপুর দুইটা নাগাদ পৌঁছাই । চলন্ত গাড়িতে বসে তোলা ছবি ।


এটা কি ফুল জানি না, মাঝপথে এক জায়গায় আমাদের গাড়ি থামে তেল নেওয়ার জন্য, তখন তুলি এই ছবিটা ।


হাসিমারা রেলষ্টেশন, রেল লাইনের প্রতি আমার বিশেষ দূর্বলতা আছে তো তাই চলন্ত গাড়িতে থেকেই ছবিটা তুলে নেই ।


ফুন্টসলিং জিরো পয়েন্ট, মানে ইন্ডিয়ার সীমানা শেষ, আর ভুটান শুরু ।


একই রাস্তার উপর দাড়িয়ে এই গেইটের বাহিরে ইন্ডিয়া আর ভেতরে ভুটান । তবে একই রাস্তার উপর হলেও ভেতরে আর বাহিরে রাত-দিন তফাৎ, ইন্ডিয়ার পাশটা নোংরা অপরিচ্ছন্ন আর ভুটানের পাশটা ঝকঝকে তকতকে । যেন দেশ দুইটার মানুষেরই প্রতিচ্ছবি ।


কৃষ্ণচুরা গুলো কিন্তু আমদের দেশেই মতো :) তবে ভুটান এতো বেশী ফুল, ওটাকে ফুরের রাজ্য বললেও বেশী বলা হবে না ।


সামনে ট্যাক্সি ষ্টান্ড, থিম্পু যেতে হবে ওখান থেকেই, অবশ্য থিম্পু যাওয়ার বাস ও আছে....কিন্তু আমরা ট্যাক্সিতে যাওয়ারই সিদ্ধান্ত নিলাম ।


আর ফুন্টসলিং থেকে ট্যাক্সি করে রওয়ানা হই ভুটানের রাজধানী থিম্পুর উদ্দেশ্যে । দুরত্ব ১৭২ কিলোমিটার । পাহাড়ি রাস্তা। পাহাড় ঘুরে ঘুরে যেতে হচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন একই জায়গায় আমরা ঘুরপাক খাচ্ছি। বাঁদিকে ভীষণ খাদ, কখনো সেই খাদ আবার চলে যাচ্ছে ডান দিকে । তাকাতেই ভয় করে। অবশ্য দৃশ্য দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। মনে হতে থাকে, আর যেন চোখের দেখা বিশ্বাস করতে পারছি না। যেন স্বপ্ন দেখছি। রূপকথার গল্পের দেশে ভাসছি। পাহাড়ের ঢালে যেন প্রকৃতিকে ছড়িয়ে দিয়েছে বা কেউ যেন গেঁথে সাজিয়ে দিয়েছে ।

একটা আশ্চর্য্য ব্যপার হল এতদূর রাস্তায় এলাম, কোনও হর্ন শুনিনি। এত বাঁক, এত ঘুরপথ, তবু কোনও হর্ন দরকার হয় না। সবাই নিজের সাইডে যাতায়াত করছে। রাস্তায় গাড়িও অবশ্য কম। পাঁচটা বাজতেই ঘোর অন্ধকার নেমে আসছে পাহাড়ের গায়ে। সূর্য আড়াল হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে চোরাবালির মতো পাহাড়ের শীর্ষে দেখা গেছে সূর্যকে। আর যতই উচ্চতায় উঠতে লাগলাম শীত ও ততই বাড়তে লাগলো ।

বুঝলাম কেনো ভুটান কে এশিয়ার সুইটজারল্যান্ড বলে ।




পুলিশ চেকপোষ্ট, পুলিশরা এতো ভদ্র হয় এই প্রথম জানলাম ।


চলন্ত অবস্থায় তোলা পাশের পাহাড়ের তোলা ছবি ।


পাহাড়ি রাস্তার বাঁকে বাঁকে পাবেন এমন ভাসমান দোকান । এখানে খাদ্য আর পাণীয় পাওয়া যাবে ।


এক সময় আমরা পৌছে গেলাম ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে । তখন রাত ১০টা । অতঃপর গরম পানিতে গোসল করে ঘুম ।


এটা নাকি ওদের পাপ মোচন করে, ভেতরে অনেকগুলো ঘুড়ির নাটাইয়ের মতো চাকতি, এগুলো ডান দিকে ঘুরাতে হয় আর কিছু একটা জপতে হবে ।




মাঝে মাঝে মেঘগুলো এমনিভাবে থিম্পুর মাটিতে নেমে আসে ।


আগেই বলেছি, ভুটানকে ফেলের রাজ্য ও বলা যায়,,,,,,,,





থিম্পুতে যে হোটেলে ছিলাম ।


থিম্পুর নদী, নাম জানা হয়নি ।


এই বৌদ্ধ মুর্তিটি অনেক উঁচু পাহাড়ে বসানো আছে, থিম্পু শহরের যে কোন স্থানে থেকে এটা দেখা যায় । রাতে খুব ভালো লাইটিং হয় । মুর্তিটার উচ্চতা ১৬৯ফুট ।


থিম্পুর জিরো পয়েন্ট, এই স্থাটির নাম ক্লক টাওয়ার ।


পাহাড়ের উপর থেকে থিম্পু শহর ।


রাতের থিম্পু নগরী ।


চলবে...................

২৬টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×