somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রাকৃতিক মাছের খনি দুবলার চরে একদিন

২২ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সুন্দর বনের শেষ সীমানায় সাগর আর কুঙ্গা ও মরা পশুর নদের মোহনায় দুবলার চর। হিন্দু পৌরানিক মতে রাস হচ্ছে রাধা-কৃষ্ণের মিলন, যা বর্তমানে রাস মেলা নামে পরিচিত। প্রতিবছর অগ্রহায়ণের শুক্লাদ্বাদশী তিথিতে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা পার্থিব জীবনের সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি ও কামনা-বাসনা পূরণের লক্ষ্যে দুবলারচরের রাস মেলায় হাজির হন। এই চরের মোট আয়তন ৮১ বর্গমাইল, আলোরকোল, কোকিলমনি, হলদিখালি, কবরখালি, মাঝেরকিল্লা, অফিসকিল্লা, নারকেলবাড়িয়া, ছোট আমবাড়িয়া, মেহের আলির চর এবং শেলার চর নিয়ে দুবলার চর গঠিত। শীত মৌসুমের শুরুতে হাজার হাজার জেলে দলে দলে এই চরে মাছ ধরতে এসে অস্থায়ী আবাস গড়ে তোলে। জেলেরা দিনভর সাগরে মাছ ধরে সন্ধ্যায় আগেই তারা ফিরে আসে।চরে মাছ শুকিয়ে তারা শুঁটকি মাছ তৈরি করে। এ দৃশ্যও অত্যন্ত উপভোগযোগ্য। গত ৬/১১/২০১৪ সালে গিয়েছিলাম রাস মেলায়, তা নিয়েই আমার আজকের পোষ্ট।


(২) খানজাহান আলী সেতু, রূপসা নদীর উপর নির্মিত এই সেতুকে খুলনা শহরের প্রবেশদ্বার বলা যায় কারণ এই সেতু খুলনার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলির বিশেষত মংলা সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। এই সেতুর নিচ দিয়াই লঞ্চে করে আমরা দুবলার চরের উদ্দেশ্যে ছুটে চলি।


(৩/৪) নদিতে জেলেরা মাছ ধছে।




(৫) খুলনা থেকে সকালে ছেড়ে আসা লঞ্চ প্রায় ১২৫ কিলোমিটার দুরত্বের দুবলার চরে পৌছে শেষ বিকেলে।


(৬) দুবলার চরে একটা জেলে নৌকাকে ঘিরে আছে সীগার্লগুলো।


(৭) দুবলার চরে রাস মেলাকে ঘিরে পূণ্যার্থী বা দর্শনার্থীদের নিয়ে আশেপাশে অনেক লঞ্চ ও ট্রলার এসে ভীড়েছিলো।


(৮) দুবলার চর আমাদের বরণ করে নিয়েছিলো এমন চমৎকার লাল রঙা আকাশ দিয়ে।


(৯) দুবলার চরে দাড়িয়ে রাশ পূর্ণিমার এমন ছবি তোলার সময় যে রোমাঞ্চিত ছিলাম তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।


(১০) দুবলার খুব কাছেই রাতে আমরা লঞ্চেই অবস্থান করেছিলাম, কারণ খুব ভোড়েই নাকি লগ্ন, আর পূণ্যার্থীরা সএবং সেই সাথে আমরাও ক'জন সেই লগ্নের অপেক্ষায় ছিলাম।


(১১/১২) রাস মেলায় পূণ্যার্থীরা সারিবদ্ধভাবে নদীর কিনারায় শুকনো স্থানে দেবতার উদ্দেশ্যে ভেট নিয়ে বসে নানা রকম ঐশ্বরিক বাণী পড়তে থাকে, নদী বা সাগরে তখন জোয়ার থাকায় কিছুক্ষণের মধ্যেই পূণ্যার্থীদের পায়ে এসে সাগর বা নদীর পানি আছড়ে পড়ে। তখনি তারা ছুটে যায় কোমড় সমান বা আরো বেশী পানিতে, ওখানে তাদের হাতে থাকা দেবতার ভেট ( ডাব, মিঠাই, মন্ডা) পানিতে ছুড়ে ফেলে নিজেরা ডুব দিয়ে পবিত্র হয়ে ডাঙ্গায় ফিরে আসে। দেবতাদের জন্য ভেট হিসাবে জীবন্ত খাশিও আমি পানিতে ছুড়ে ফেলতে দেখেছি।




(১৩) দুবলার চরে রাস মেলা দেখতে অনেক বিদেশীদের ও আগমন ঘটে।


(১৪) দুবলার চড়ে প্রচুর হরিণ থাকায় রাস মেলাটা সত্যিই ওদের জন্য খুব বিপদের কারণ হয়ে দাড়ায়, এই সময়ে কিছু লোক শুধু হরিণের মাংস খাওয়ার জন্যও পূণ্যার্থী বা দর্শনার্থীর বেশে এখানে আসে, যা সত্যিই দুঃখজনক।


(১৫) মাছ যেহেতু আছে মাছ রাঙ্গা তো থাকবেই, তবে এমন রঙের মাছ রাঙ্গা আমি আগে আর অন্য কোথাও দেখিনি।


(১৬) বানরগুলো পানির ধারে কি খুটে খাচ্ছে কে জানে?


(১৭) ট্রলার থেকে মাছ নামানো হচ্ছে।


(১৮/১৯) কতো রকমের মাছ যে এখানে আছে তার ইয়ত্তা নাই।




(২০) ওরা মাছ নিয়ে যাচ্ছে শুটকী পল্লীর দিকে।


(২১/২২) এই সময়ে শুটকী পল্লীর বাসিন্দাদের কোন ফুরসৎ থাকেনা। আর গোলপাতায় তৈরী শুটকী পল্লীর এই ঘরগুলো দেখতেও বেশ চমৎকার!




(২৩) ঢেড়ার ভেতরে শুকিয়ে রাখা শুটকী।


(২৪) ফিরে আসার সময় দুঃখ পল্লী বাণীশান্তার পাশ দিয়া যখন আমাদের লঞ্চ আসছিলো তখন তোলা একটি ছবি।


এই চমৎকার শুটকী পল্লীর গোল পাতার ঘরে গিয়ে কয়েকদিন থাকার একটা পরিকল্পনা আমার আছে, জানিনা কোনদিন সেটা আদো হয়ে উঠবে কিনা। তবে ওখানে মাছের সাথে সাথে প্রচুর কাকড়া এবং অপ্রয়োজনীয় জলজ কীট পতঙ্গ যেভাবে জেলেরা নষ্ট করছে তাতে আমি শংকিত, আর হরিণ শিকারীদের কথাটা নাইবা বললাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৭:০৯
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×