somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চট্টগ্রামের ওয়ার সিমেট্রি

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


চারিদিকে সবুজ বৃক্ষরাজি আর মাঝ খানে রঙ্গন ফুলের ঝোপ আর পাতা বাহারের বেড়া দিয়ে দিয়ে ঘেরা সেমিট্টি ইয়ার্ড। নীরব, নির্জন দৃষ্টিনন্দন স্থান হিসেবে এ স্থানটির অতুলনীয়। সৈনিকদের ঘুমিয়ে থাকার জন্য এর থেকে শান্তির জায়গা যেন আর হয়না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে চট্টগ্রাম থেকে বার্মা ফ্রন্টে তৎকালীন বৃটিশ ভারত, বৃটেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, বার্মা, পূর্ব ও পশ্চিম আফ্রিকা, হল্যান্ড এবং জাপানের যেসমস্ত সৈনিক নিহত হন তাদের ৭৫৫ জনের সমাধি আছে এখানে। এই সংরক্ষিত সমাধি কেন্দ্রের সার্বিক তত্বাবধান এবং ওখানকার কর্মচারীদের বেতন ভাতা ইত্যাদি কমনওয়েলথ গ্রেইভস কমিশন থেকে প্রদান করা হয়।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অদূরে গোলপাহাড় মোড়ে যেতে বাম দিকে তাকালে চোখে পড়বে বাদশা মিয়া রোডের পাশে ওই আকর্ষণীয় যুদ্ধ সমাধির অবস্থান। ওয়ার সিমেট্রির প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই সমাধিস্থলের মাঝখান বরাবর একটি অপূর্ব ক্রুশ চিহ্নিত বেদি চোখে পড়বে। তবে আমার মনে হয়েছে এটা ক্রুশ এবং তরবারির সম্মিলিত কোন একটা নকশা। সিমেট্রি ফটকের উভয় দিকে লাল ইটের গাঁথুনি ও কাঠের ছাউনির ছোট্ট দুটি দোচালা কুটির। দক্ষিণ পাশের কুটিরে রাখা হয়েছে মেমোরিয়াল বুক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বাণিজ্যিক নৌবহরে যে সাড়ে ছয় হাজার নাবিক মারা যান, তাদের নাম ও পদবি এই মেমোরিয়াল বুকে লিখিত আছে। পাশের কুটিরে সংরক্ষিত একটি রেজিস্টারে ৭৫৫ জন সৈনিকের নাম, পদবী ও সংক্ষিপ্ত পরিচিতি সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই ওয়ার সিমেট্রিতে ৭৫৫ জন সৈনিকের প্রত্যেককে স্বস্ব ধর্মীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।


(২) মেইন রোড থেকে ঢোকার সময়ই কেমন যেন একটা পবিত্র আবহ মনটাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। বিশেষ করে বাম পাশের কাঠ গোলাপ গাছগুলোর জন্য।


(৩) কাঠ গোলাপে সব সময় কেমন যেন একটা পবিত্র বা আধ্যাত্মিক আবহ থাকে, যদিও এই সময়টাতে গাছগুলো ফুল ছিল কমই।


(৪) ওয়ার সিমেট্রির প্রধান ফটক। সিমেট্রি ফটকের উভয় দিকে লাল ইটের গাঁথুনি ও কাঠের ছাউনির ছোট্ট দুটি দোচালা কুটির। সমাধিস্থলের মাঝখান বরাবর একটি অপূর্ব ক্রুশ বা তরবারি চিহ্নিত বেদি এবং তারপরে রয়েছে আরো একটা লাল ইটের গাঁথুনি যুক্ত কুটির।


(৫) মেইন ফটক পার হলেই পড়বে এই সাইবোর্ড, যাতে লেখা রয়েছেঃ এখানে ৭৫৫ জনের কবর শায়িত আছে। দৌড়াদৌড়ি করা, কাপড় বদলানো, গাছে উঠাও পাথরের চিহ্ন বস্তু নষ্ট করা যাবে না। বসে থাকা এবং গল্প করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সম্মানের সাথে শান্ত ব্যবহার করুন তাদের প্রতি যাহারা এখানে শায়িত আছেন।


(৬) তারপর মাঝখানে ফাকা মাঠের মতো। দুইপাশে সৈনিকদের কবরের নাম ফলক ওপারে ক্রুশ বেদি।


(৭) বেদির মাঝে এটা ক্রুশ বা তরবারি দুটোই চিহ্নিত করা হয়েছে কিনা আমি নিশ্চিৎ না।


(৮) বেদির পাশে সবুজ ঘাসগুলোকে পাইপ দিয়ে ভিজিয়ে দিচ্ছিল একজন।


(৯) অন্য একজন কাজের ফাকে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিল।


(১০/১১) ফুল গাছের ফাকে ফাকে নাম ফলকগুলো যেন বেশ চমৎকার দেখা যাচ্ছিল।




(১২/১৩) মুসলিম নাম ফলকগুলো এমন।




(১৪) খৃষ্টানদের নাম ফলক।


(১৫) নাম ফলকগুলো এবং পুরো সেমিট্রিতেই রয়েছে শৈল্পিকতার ছাপ।


(১৬) দক্ষিণ পশ্চিম কর্ণার থেকে তোলা ছবি এটি।


(১৭) আমার অতি পরিচিত ও প্রিয় ফুল ল্যান্টানা, ওদের ছবি না তুলে কি আমি পারি? :)


(১৮) এখানে ছোট এই বেদিটিতে লেখা রয়েছেঃ ১৯৩৯-১৯৪৫ যে ৬৫০০ নাবিক ও বাণিজ্য জাহাজের লস্কর দেশ মাতৃকার সেবায় মৃত্যু বরণ করিয়াছে সমুদ্রের অতল তল ভিন্ন যাহাদের আর কোথাও সমাধি নাই এই পুস্তকে তাহাদের নাম রহিল।......এমনটা পড়ে সত্যিই মনটা খারাপ হয়।


(১৯) বইটার একটা পৃষ্ঠা এমন।


(২০) ফিরে আসার আগে শেষ ক্লিক।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:২৬
৪২টি মন্তব্য ৪২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আমার ড্রোন ছবি।

লিখেছেন হাশেম, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩

বৃহত্তর প্যারিস তুষারপাত।

ফ্রান্সের তুলুজ শহরে বাংলাদেশের প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার।

হ্যাসল্ট, বেলজিয়াম।

ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী ফ্রান্সের ফ্রিওল আইল্যান্ড।


রোডেসিয়াম এম রেইন, জার্মানি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮

(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×