মধু হচ্ছে ওষুধ এবং খাদ্য উভয়ই। বিভিন্ন সময় আমরা নানা জায়গা থেকে মধু খেয়ে থাকি। প্রঠম বার যখন সুন্দর বনে গিয়েছিলাম তখনো দুই রঙ্গের মধু এনেছিলাম। একটার কালার ছিল লালচে ওটা নাকি গরান ফুলের মধু, অন্যটা ছিল হলুদ কালার ওটাকে বলেছিল কেওড়া ফুলের মধু। এনেছি খেয়েছি, কিন্তু মনের ভেতরের খুতখুতি ভাবটা কাটেনি, মধুটা আসল না নকল?
আসল মধু খাওয়ার জন্য সরিষা ক্ষেতে মধু সংগ্রহকারি চাষিদের কাছে যাওয়ার পরিকল্পনায় আছি কম কয়েক বছর যাবৎ। কিন্তু সময় করে উঠতে পারলাম ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি। খোজ খবর নিয়ে সব থেকে কাছের ঠিকানা পেলাম মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থানার হাঁসাড়া গ্রামে। হাঁসাড়া গ্রাম থেকে একেবারে আসল মধু আহরণের সেই ছবি নিয়াই আজকের ছবি পোষ্ট সাজাইলাম।
(২) পূর্বের নেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী মুন্সিগঞ্জের হাঁসাড়া গ্রামে প্রবেশ করতেই বাম পাশে দেখা গেল হলুদের বন্যা। একটু আগাতেই পেয়ে গেলাম আমার সেই কাঙ্খিত মধুবন।
(৩/৪) মধুর দাম চাইল ৪০০ টাকা কেজি। সেই সাথে এও বললো মধু আমার যতটা চাই রেডি আছে। আমি বললাম না আমাকে সরাসরি বাক্স থেকে আমার সামনেই মধু বের করে দিতে হবে। মৌচাষি শাহ আলী বললো ওরা সাত দিন পর পর মধু সংগ্রহ করে, মাত্র দুই দিন আগেই ওরা মধু বের করে নিয়েছে। এখন মধু পাতলা হবে, আমি বললাম পাতলা মধুই নেবো। এবার শুরু হলো ওদের মধুর হাড়ি (বাক্স) খোলা। আমার হাতে মৌমাছি সহ একটা বাক্সে রাখা অনেকগুলো কাঠের ফ্রেমের একটা। পরে আমরা অবশ্য দরদাম করে ৩০০ টাকা কেজিতে মধু নিয়া আসলাম।
(৫/৬) মৌমাছিগুলো যাতে আগ্রাসী হতে না পারে তার জন্য বাক্স খুলেই ওদের ওপর একটা ধোয়া স্প্রে করা হয়।
(৭) এমন অবারিত হলুদ দেখলে মনটা এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।
(৮) ওদের সাথে ভালোবাসা আমার খুব একটা সুখের হয়নি। সুযোগ পেয়ে চোখের পাশেই একজন হুল ফুটিয়ে আপ্যায়ন করলো। এবার ওদের দেওয়া হেলমেড পড়ে নিলাম, ব্যস মুখটা তো নিরাপদ হলো।
(৯) মধু সংগ্রহের জন্য ওরা মাঠের এক পাশে মশারি টানিয়ে নিল যাতে করে নিরাপদে কাজটি করা যায়।
(১০) সর্ষে ক্ষেতের পাশেই একটা জলাশয়ে পাখির ডাক শুনে এগিয়ে গিয়ে ওনার কয়েকটি ছবি তুললাম। সম্ভবত এটা কোড়া পাখি।
(১১) অন্য দিকে আশেপাশে উড়াউড়ি করে খাবার ধরছিল এই কসাই পাখিটি।
(১২) মশারীর ভেতর একটা ড্রাম বসিয়ে মধু যুক্ত কাঠের ফ্রেমগুলো ওটাতে রেখে হেন্ডেলটা জোড়ে ঘুরালেই মধুগুলো ড্রামে জমা হয়ে যায়।
(১৩) কাঠের ফ্রেমে জমা হওয়া মধু।
(১৪) অতপর ড্রামের নিচে থাকা পাইপ লাইন দিয়ে ড্রাম থেকে মধুগুলো বের করে নেওয়া হয়।
(১৫) এবার বলা যায়এই বোতল গুলোতে এখন ১০০% খাটি মধু।
(১৬) পাশের সিম গাছে দেখলাম অন্য রকম মধু সংগ্রহের দৃশ্য।
(১৭) মধু সংগ্রহের পর বাক্সগুলোকে আবার যথাস্থানে ঠিক ভাবে রেখে দেওয়া হয়, আর মৌমাছিরাও হয়ে উঠে কর্মব্যস্ত।
(১৮) ফিরে আসার আগে মধু বনে শেষ ক্লিক।
(১৯) সিদ্ধান্ত নিলাম দুপুরের খাবারটা মাওয়া ঘাটে টাটকা গিয়ে ইলিশ দিয়েই সেরে আসি।
(২০) ফেরার পথে রাস্তার পাশে চমৎকার এই মসজিদটা দেকে খুব ভালো লাগলো, তাই কয়েকটা ছবি নিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪১