কিছুদিন থেকে আমরা সবাই হয়ত দেখছি কিছু লোক আমাদের ছাত্র আন্দোলনকে দলীয় পরিচয়ে আবদ্ধ করতে চায়তেছে ।কিন্তু আজ সকলের অবগতির জন্য আমরা শিক্ষার্থীরা আমাদের অবস্থান বারবরের মত সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করছি।কিন্তু কিছু দলকানা ব্যক্তি আমাদের আন্দোলনকে দলীয় পরিচয়ে আবদ্ধ কোরে আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চাচ্ছে ।
জনাব আমি আপনাদের বলছি আমরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী। আমরা কোনো রাজনৈতিক দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করছি না। আমাদের আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধেও নয়, সরকারের অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত ভ্যাটের বিরুদ্ধে। আমাদের দাবি আদায়ের জন্য কোনো রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর সমর্থন আমরা চাইনি বা প্রয়োজন নেই। আমরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিক্ষায় সরকারের অযৌক্তিক ভ্যাট আরোপের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছি । তার প্রমাণ আমরা কোন ধ্বংসাত্বক কর্মকান্ড করিনি। আমদের ছাত্ররা অ্যাম্বুলেন্স এবং ছাত্রছাত্রীর পরিবহণ গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে ।আমরা কোন পলিটিক্যাল স্লোগান,কিংবা সরকার বিরোধী কথা বলিনি।আমাদের চাওয়া এবং বলাটা ছিল শান্ত।কোনো রাজনৈতিক দল দূরে থাক , বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা কোনো শিক্ষক কারো কোনো প্রকার উসকানি নেই। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় শিক্ষায় ভ্যাটের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি।
জনাব আপনাদের বলছি, আপনার সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি আমরা হুঁট করে রাস্তায় নামি নাই। আমাদের এই ভ্যাট বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছিল অনেক আগেই। যখন বাজেট পাস করা হয়। বাজেট পাসের কিছু দিনের মধ্যে আমরা ভ্যাট প্রত্যাহারের জন্য অর্থমন্ত্রনালয়ে চিঠি দেই, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা করি। কিন্তু তখন আমাদের দাবি মানা তো দূরে থাক ন্যূনতম সম্মানটুকুও দেয়া হয়নি। কিন্তু আজ দেয়ালে পিঠ ঠেঁকে যাওয়ায়, ঠেঁকানো পিঠ নিয়ে মৌলিক অধিকার শিক্ষার উপর যখন অন্যায়ভাবে অযৌক্তিক ভ্যাট চাপানো হয় এবং আমাদের ন্যায্য দাবি শোনার মত কেও থাকে না; তখন স্বাধীন দেশের সন্তান হয়ে রাস্তায় নামা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় থাকে না। তাই অনুরোধ করছি, দয়া করে উদ্ভট প্রলাপ বকবেন না।
গত ৪ দিন ঢাকা অবরুদ্ধ। কই জনাব, আমরা তো একটা গাড়ির গায়ে একটা আঁঁচড় দেই নি।যে আন্দোলনে গাড়ি না চলায় পায়ে হেঁটে পথ চলা ষাটোর্ধ আঙ্কেল, অবরুদ্ধ বাসে বসে থাকা যাত্রীরা সমর্থন জানান তা কি গণ মানুষের আন্দোলন না??যে আন্দোলনে রিক্সা থেকে নেমে আচেনা কোন মধ্য বয়ষ্কা আন্টি পানির বোতল কিনে দিয়ে আন্দোলনরতদের পানি পান করান তা কি গণ মানুষের আন্দোলন না??যে আন্দোলনে আন্দোলনরতরা নিজে এম্ব্যুলেন্স, স্কুল বাস যাওয়ার জন্য রাস্তা করে দেন, সাহায্য করেন সেই আন্দোলন কি সহিংস??
যদি আমাদের আন্দোলন গণমানুষের অহিংস আন্দোলন না হয় তাহলে দয়া করে গণ মানুষের অহিংস আন্দোলন কাকে বলে এর সংজ্ঞাটা কি জানাবেন জনাব আপনি।আমাদের অবস্থান সুস্পষ্ট আমাদের ব্যাপারে উদ্ভট বক্তব্য দিয়ে উস্কানি দিবেন না।আমরা অহিংস, শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালাচ্ছি শুধু ভ্যাট মুক্ত শিক্ষার জন্য।
সবশেষে দেশবাসীকে বলব, আমরা আপনার ছেলে ,ভাই ,বন্ধু আমরা কে কেমন আপনারা জানেন ।তারপরও আপনাদের বলব ,আমরা রাজনৈতিক ছায়ার বাহিরে থেকে আপনার ছেলে-মেয়ের ভ্যাট মুক্ত শিক্ষার আধিকার নিশ্চিত করতে আজ রাজপথে।আপনারা আমাদের এই আন্দোলনের জন্য যে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন আমরা তার জন্য আপনাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমরা চাই না আমাদের পরবর্তী প্রজন্মগুলো শিক্ষায় লজ্জাজনক ভ্যাটের কালিমা লেপে নিয়ে স্বাধীন দেশে শিক্ষা গ্রহণ করুক। আমরা আপনাদেরই সন্তান। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে হলেও আপনারা এই কষ্টটুকু করুন। আমরা আজ হেরে গেলে ভুক্তভোগী হবে আমাদের পরের প্রজন্মগুলো হেরে যাবে আমদের শিক্ষা ব্যবস্থা হেরে যাবে আমাদের শিক্ষার মৌলিক অধিকার।
আসুন আমাদের সংগে সমস্বরে বলুন ,শিক্ষা কোন পণ্য নয় ভ্যাট মুক্ত শিক্ষা চাই ।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:৫৯