প্রশ্ন ফাঁস হয় নাই।স্মরণ কালের সবচেয়ে বড় মিথ্যাচার।প্রজেক্টরের মাধ্যমে ‘ফাঁস’ হওয়া প্রশ্নপত্র দেখানো হয়। তাদের দাবি ভর্তি পরীক্ষা যে প্রশ্নপত্র দিয়ে হয়েছে সেটির সঙ্গে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের ৭৭টির মিল রয়েছে। একই সঙ্গে ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে পাস করা এক শিক্ষার্থীর মোবাইল কথোপকথন (রেকর্ড) শোনানো হয়। ওই শিক্ষার্থী ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আজ এই প্রমাণগুলো তুলে ধরেছে।এইটাই হয়ত প্রমাণ হিসাবে অনেক
ছিল ।আমাদের মন্ত্রণাময়ের কর্তা ব্যক্তিরা 'ফাঁস হয় নাই, ফাঁস হয় নাই ' কোরাস গাওয়া ছাড়া দিন দুনিয়ার আর কোনো খবর রাখেন না ।
যারা আন্দোলন করছে, তারা সবেমাত্র এইচএসসি পাস করেছে, কিশোর -কিশোরি। আন্দোলন করছে, পুলিশি নির্যাতন সহ্য করছে, প্রমাণ হাজির করছে। তারা যা করছে তা অনেক ছিল ।কিন্তু আমাদের কর্তা ব্যক্তিদের কানে সেই কথা পৌঁছায় না ।তারা দাবি করছে স্বাধীন কমিশন দিয়ে তদন্তের।
এই দাবির কোনো অংশটি অযৌক্তিক?
এদের আর কি করতে হবে প্রশ্ন যে ফাঁস হয়েছে এই কথাটা সরকারের রুই কাতলাদের বুঝানোর জন্য ?সব প্রমাণ আন্দোলনকারীদের দিতে হবে, রাষ্ট্রের কি কোনো দায়িত্ব নেই?
'ভর্তি হয়ে গেছে, আর কিছু করার নেই '- কর্তৃপক্ষের এই বক্তব্যের মধ্যে কি সামান্যতম কোনো যুক্তি আছে?
প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ আসার পরও, এত দ্রুত ভর্তি প্রক্রিয়া কিভাবে সম্পন্ন করা হল? এটা কি অপরাধ আড়াল করার কৌশল না একটা আপরাধকে মাথা চাড়া দিবার ব্যবস্থা করে দেয়া ?
শিক্ষার্থীদের এই সম্পূর্ণ যৌক্তিক আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করা বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের কর্তব্য কিনা এইটা আমাদের নিজের বিবেককে প্রশ্ন করলে উত্তর পাওয়া যাবে ।আজ আমি পরীক্ষাথী না কিন্তু কাল আমার কেউ এই জুলুমের শিকার হবেনা তার কি বিশ্বাস ।আসুন না একটা অন্যায়কে না বলি ।
সবশেষে একটা দৃষ্টান্ত তুলে ধরব, এ বছরের জুনে ভারতে মেডিকেলের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল। মোট পরীক্ষা দিয়েছিল ৬ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী। তদন্তে পাওয়া যায় ৭০০ শিক্ষার্থী প্রশ্ন ফাঁসের সুবিধা পেয়েছে। এর মধ্যে চান্স পেয়েছে ৪৪ জন। বিষয়টি আদালতে যায়। কর্তৃপক্ষ আদালতকে বলে মাত্র ৪৪ জন শিক্ষার্থীর জন্যে ৬ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল হতে পারে না। আবার পরীক্ষা নেয়া বিশাল বড় সমস্যা।বিজ্ঞ আদালতের মতামত ছিল -'একজন শিক্ষার্থীও যদি ফাঁস হওয়া প্রশ্নের কারণে ভর্তির সুযোগ পায় এবং একজনও যদি সুযোগ পাওয়া থেকে বঞ্জিত হয় তবে সেই পরীক্ষা বাতিল করতে হবে'। ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট পরীক্ষা বাতিল এবং ৪ সপ্তাহের মধ্যে নতুন করে পরীক্ষা নেয়ার আদেশ দেয়।সেই নির্দশ অনুযায়ী ৬ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী আবার পরীক্ষা দেয়।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:১৩