somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা যারা দল করিনা, তাদের চাকরি কে দেবে(পর্ব-১)

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিষয়টি এখন বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি মৌলিক প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে। এ সংস্কৃতির সূচনা প্রায় দেড় দশক আগে থেকে। এর আগে কমবেশি কিছু থাকলেও এখন ব্যাপরটা অনেক বেশি খোলামেলা হয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে পেয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ। দেশে রাজনৈতিক দল আছে, থাকবেও। এগুলোর নেতা, কর্মী, সমর্থকও আছেন অনেকে। তবে সব নাগরিকই কিন্তু সরাসরি দলগুলোর কর্মী বা সমর্থক নন। হওয়ার বাধ্যবাধকতা কিংবা প্রয়োজনীয়তাও নেই। তাঁরা দলনিরপেক্ষ। নির্বাচন এলে দলগুলোর পূর্বাপর ভূমিকা, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে প্রার্থীর গুণাগুণ বিবেচনায় ভোট দেন। প্রভাব থাকে আঞ্চলিকতা, সম্প্রদায় ও গোত্রের। বলা অসংগত নয় যে কোনো কোনো স্থানের নির্বাচনে ফলাফলে দলের ভূমিকা গৌণই হয়ে যায়। এভাবে প্রকৃতপক্ষে বেশ কিছু স্থানে দল বা ব্যক্তির নির্বাচনের ফলাফলে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করেন দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিরাই।
তবে যারা কোনো দলের সদস্য বা স্থায়ীভাবে সমর্থকও নন। তাঁরা কিন্তু এখন মহা মসিবতে আছে। সরকার প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধায় তাঁরা পেছন কাতারে। চাকরির বাজারে তাঁদের প্রবেশাধিকার সীমিত। বেসামরিক চাকরিতে পিএসসির মাধ্যমে পরীক্ষায় মেধার কিছুটা ভূমিকা থাকে। তবে তা–ও সময়ান্তরে প্রান্তিক পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। আর অন্যান্য চাকরিতে দলের নাম করে নেতা-কর্মীদের সনদ ছাড়া প্রবেশ প্রায় অসম্ভব। সেই সনদ অবশ্য ভিন্ন দলের লোকেরাও ক্ষেত্রবিশেষে জোগাড় করেন নানা কৌশলে। কোথাও কোথাও টাকাপয়সার লেনদেন বড় রকম ভূমিকা রাখে বলে অভিযোগ আছে।একশ্রেণির সরকারি কর্মকর্তাও আখের গুছিয়ে নিচ্ছেন। ন্যায়নিষ্ঠ ব্যক্তিরা হয়ে পড়ছেন অচ্ছুত। তাঁদেরও আজ দুঃসময় চলছে।
কিছুদিন আগে একটা খবর বের হয়ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগ প্রসঙ্গে। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি দাবি করেছেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি আওয়ামী লীগ করেন বলেই এ পদ লাভ করেছেন। তাঁর এ বক্তব্য যথার্থ বলেই ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয়। শুধু রাজশাহীতে নয়, অনেক ক্ষেত্রেই তা হয়েছে এবং হচ্ছে। আর এ নিয়মটাই এখন অনেকটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, গত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে এক দফাতেই ৫১১ দলীয় সদস্যকে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তাঁর এ বক্তব্য নিশ্চয় তথ্যের ভিত্তিতে বলছে। পাশাপাশি তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করেছেন, বর্তমানে পাঁচ শতাধিক শূন্য পদের মধ্যে ‘স্বাধীনতার পক্ষের দেড়-দুই-আড়াই শ ছেলেকে কি চাকরি দেওয়া যায় না?’
এখন যাঁরা বিরোধী দলে আছেন, তাঁরাও হয়তো রাজনৈতিক পালাবদলের আশায় অপেক্ষা করছেন। ‘সুদিন’ এলে সুদাসলে পুষিয়ে দেবেন!

যিনি এ বক্তব্যটি দিয়েছেন, তিনি শুধু ক্ষমতাসীন দলের মহানগর কমিটির সভাপতি নন, পাঁচ বছর এ মহানগরীর নির্বাচিত মেয়রও ছিলেন। তিনি জেলহত্যার শিকার স্বাধীনতাসংগ্রামের অগ্রনায়ক চার নেতার একজনের সন্তান। এসব বিবেচনায় অতি সম্মানিত ও দায়িত্বশীল নাগরিক তিনি। সুতরাং তাঁর বক্তব্যও গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্লেষ করলে ।
তিনি স্বাধীনতার পক্ষের লোক বলতে কাদের বোঝাতে চাইছেন। এ বিষয়ে খুব গভীরে না গেলেও বলা চলে, সম্ভবত তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের কথাই বলতে চেয়েছেন। অনস্বীকার্য, তাঁর দল স্বাধীনতাসংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে। স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করে রাখতেও তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য। এর বাইরে যেসব লোক আছেন, তাঁদের পাইকারিভাবে নিশ্চয়ই স্বাধীনতাবিরোধী বলা যাবে না। দেশপ্রেমিক যে-কেউ হতে পারেন। এমনকি নেতারা যাঁদের চেনেন না বা জানেন না, তাঁরাও। দেশের স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্বের বিপরীতে কারও অবস্থান থাকলে তাঁর স্থান তো আইনানুগভাবে প্রমাণ সাপেক্ষে হওয়ার কথা কারাগার। এভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কেউ এ ধরনের বিভাজনের কর্তৃত্ব নিতে পারেন না। আজ স্বাধীনতার পক্ষের নাম দিয়ে যাঁদের চাকরি দেওয়ার কথা উঠেছে, তাঁরা নিশ্চিতভাবেই ক্ষমতাসীন দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী বা তাঁদের আশীর্বাদপুষ্ট ব্যক্তি। অবশ্য তিনি পুরো শূন্য পদের বিপরীতে তাঁর তালিকা দেননি। তবে নিয়োগপর্ব শুরু হলে তাঁর দলের এমনকি অঙ্গসংগঠনের অন্য নেতারাও বসে থাকবেন না। সক্রিয় হবেন জোটের অন্য দলের কোনো কোনো নেতাও ।
চলবে........
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২৩
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×