somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে যেভাবে

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৮৭ সালের ৪ জানুয়ারী প্রতিষ্ঠিত হয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। এটি দেশের নবম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৮৯ সালের ৯ মার্চ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষ থেকে মাত্র ৪টি ডিসিপিস্ননে ৮০ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে ১৮টি ডিসিপিস্নন এবং ১টি ইন্সটিটিউট দিয়ে চলছে খুবির শিক্ষা কার্যক্রম। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, নতুন ১৪টি ডিসিপিস্নন এবং ২টি ইন্সটিটিউট চালুসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে আস্তে আস্তে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা কার্যক্রম চালুর পর থেকে এই একটি মাত্র দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যে ক্যাম্পাসে ধারাবাহিকভাবে সেশনজট, সন্ত্রাস ও রাজনীতিমুক্ত পরিবেশের ধারা অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত ক্যাম্পাসে ছাত্র সংঘর্ষ কিংবা ছাত্র-কর্মচারী কিংবা কোন ছাত্রের রক্তে রঞ্জিত হয়নি ক্যাম্পাসের সবুজ ঘাস। বলা যায় দেশের সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে দেশের অন্যতম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যার ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের ঐতিহ্যের ধারা এখনো অক্ষুণ্ন রয়েছে।

এখানে প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু করে একাডেমিক ভবন, হল, ক্যাফেটেরিয়া কোথাও কোন ভবনের গায়ে লেখা নেই। নেই লেখা কোন রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের শেস্নাগান। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে যদি কেউ সারাদিন কাটান তবুও শুনতে পাবেন না কোন শেস্নাগান, কোন উচ্চৈঃস্বরে শব্দ। যে যার মত ব্যস্ত। সময়মতো ক্লাস হচ্ছে, পরীক্ষা হচ্ছে এবং নির্ধারিত চার বছর মেয়াদেই শিক্ষাকোর্স শেষ করে শিক্ষাথর্ীরা বের হয়ে যাচ্ছে।

১৯৯১ থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলেও খুবিতে মোট হলের সংখ্যা ৩টি। ২টি ছাত্রদের এবং একটি ছাত্রীদের। তিনটি হলে মোট সিটের সংখ্যা ১০৪৬টি। যা ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যার তুলনায় খুবই কম। খুবিতে ছাত্রীরা প্রায় সবাই সিট পায়। ছাত্রীদের তেমন কোন আবাসন সঙ্কট নেই। কিন্তু ছাত্রদের সিট সংকটের কারণে ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশর্্ববতর্ী এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকে। এ সুযোগে ছাত্রদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে বাড়ি মালিকরা। ছাত্রদের জন্য আছে খানজাহান আলী হল ও খান বাহাদুর আহসানউলস্নাহ হল। খানজাহান আলী হলের আবাসিক আসন সংখ্যা ৪০৪ এবং খান বাহাদুর আহসানউলস্নাহ হলের আবাসিক আসন সংখ্যা ২৮৮ এবং অপরাজিতা হলের আসন সংখ্যা ৩৭২ অনাবাসিক ছাত্র সংখ্যা প্রায় তিন সহস্রাধিক। এত বিপুল পরিমাণ অনাবাসিক ছাত্রদের খুবি কতর্ৃপক্ষ সিট দিতে পারছে না । তবে সমপ্রতি খুবির জন্য ৮০ কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট একনেক অনুমোদন করেছে। যার মধ্যে একটি ছাত্র হল এবং একটি ছাত্রী হল নির্মাণের বরাদ্দ রয়েছে। সংশিস্নষ্ট সূত্র জানায় এ দুটি হল নির্মিত হলে আবাসন সংকট অনেকাংশে দূর হবে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান,পরিবেশ ও সুখ্যাতির জন্য প্রতি সেশনে অনেক অতিথি শিক্ষাথর্ী ভর্তি হয় খুবিতে। বিশেষ করে নেপাল, মালদ্বীপ, ভুটানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে অতিথি শিক্ষাথর্ীদের আগমন উলেস্নখযোগ্য। প্রতি বছর গড়ে ৪০/৫০ জন অতিথি শিক্ষাথর্ী ভর্তি হয় স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমফিল এবং পিএইচডি কোর্সে।

এদিকে গবেষণায় একের পর এক সাফল্য লাভ করছে খুবির গবেষকরা। খুবির ফরেষ্ট্রি এ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপিস্ননের ছাত্র অতনু কুমার দাশ কচুরিপানা, কলাগাছ এবং ধঞ্চে গাছ থেকে আবিষ্কার করলেন কাগজ তৈরীর মন্ড। যা গেওয়া ও বাঁশ গাছের মত কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহূত হতে পারে। এ মন্ড ব্যবহারের ফলে রাসায়নিক দ্রব্য তুলনামূলকভাবে কম প্রয়োজন হবে এবং নতুন কোন যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হবে না। এছাড়া এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপিস্ননের গবেষকরা আগামী দুই-এক বছরের মধ্যে বিভিন্ন ফসলের উন্নত জাত উদ্ভাবন করতে সক্ষম হবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

নতুন ১৪টি ডিসিপিস্ননঃ অপরদিকে সমপ্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনবলের সাংগঠনিক কাঠামো বা অর্গানোগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সুপারিশক্রমে সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাভ করেছে। যাতে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫টি স্কুলের অধীনে আরও ১৪টি নতুন ডিসিপিস্নন এবং ২টি ইন্সটিটিউট খোলার প্রসতাব রয়েছে। ডিসিপিস্ননগুলো হল- ল' ডিসিপিস্নন, এডুকেশন ডিসিপিস্ন ভেটেরেনারী এন্ড এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রী, মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি এবং পাবলিক হেলথ, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট এবং টু্যরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, বাংলা ডিসিপিস্নন এবং ড্রামা এন্ড মিউজিক ডিসিপিস্নন, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ডিসিপিস্নন এবং ম্যাস কমিউনিকেশন এন্ড জার্নালিজম ডিসিপিস্নন এবং ইন্সটিটিউট ২টি হল- ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইআইসিটি) এবং ইনস্টিটিউট অব কোস্টাল জোন এন্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট। আগামী ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে মোট ডিসিপিস্ননের সংখ্যা দাঁড়াবে ৩২টি। এ সময় বর্তমান ৫ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১১,০৯৫ জনে উন্নীত হবে এবং শিক্ষক সংখ্যা ৩শ'র স্থলে দাঁড়াবে ৮২১ জনে। অর্গানোগ্রামের ভিশন হিসাবে যুগের চাহিদা উপযোগী ডিসিপিস্নন চালুর মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সমপ্রসারণ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু ও শানতিপূর্ণ শিক্ষাধারার পরিবেশ অক্ষুণ্ন রেখে আরও গুণগতমান অর্জন ও উৎকর্ষ সাধনে জোর দেয়ার কথা উলেস্নখ করা হয়েছে। আগামী ১০ বছরের জন্য প্রণীত এ অর্গানোগ্রাম বাসতবায়িত হলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ পরিগ্রহের পথে অনেক দূর এগিয়ে যাবে এবং দেশের উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে সবিশেষ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।

লাইব্রেরী ডিজিটালাইজেশনঃ গত ৬ জুন '০৯ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ ীয় লাইব্রেরী সর্বপ্রথম অটোমেশন কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে গোটা বিশ্ববিদ্যালয়কে অটোমেশনের আওতায় আনা হবে। এ ব্যাপারে খুবির উপাচার্য বলেন, বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে যার কাছে যত বেশী তথ্য আছে সে তত বেশী শক্তিশালী। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ ীয় লাইব্রেরী অটোমেশন কার্যক্রমের আওতায় আসায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এটা মাইলষ্টোন হিসাবে পরিণত হবে। যা বর্তমান সরকার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে। তিনি জ্ঞানের তথ্যভাণ্ডার হিসাবে আরও বেশী মাত্রায় লাইব্রেরী ব্যবহারে শিক্ষক, শিক্ষাথর্ীসহ সংশিস্নষ্ট সকলকে আহবান জানান।

লেখাটি নেয়া হয়েছে এখান থেকে।
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×