somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

প্যারিস থেকে আমি
স্বপ্ন দেখি সত্য ও সুন্দরের।আহত হই সত্যের পরাজয়ে।মনের মাঝে কতশত এলোমেলো ভাবনা এসে জড়ো হয়।ভাবনা গুলো চাই সকলের সাথে শেয়ার করতে,কিন্তু সীমাহীন অযোগ্যতায় আর লিখা হয়না।ভাবনা গুলো গুমড়ে মরে সমাধিত হয় নীরবে।

গল্প: যুবক পুরুষ (পর্ব এক)

১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পয়লা দিনই ওর চাকরীটা নট করে দিতাম।যদি চাকরী নট আর ইয়েস করার ক্ষমতা আমার হাতে থাকতো। তবে রাগে, দুঃখে, ক্ষোভে আমার সারা শরীর কাঁপতে লাগলো। আমার খুব বেশি রাগ হলে হাতের কাছে যা পাই তা ছুড়ে মারি। জিনিষটা ভেংগে টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লে আমি সে দিকে তাকিয়ে থাকি , আমার রাগ দমিত হয়। আর হাতের কাছে কিছু না পেলে চোখ দিয়ে পানি আসে। আমি আড়ালে গিয়ে কেঁদে চোখের পানির সাথে সবটুকুন রাগ ভাসিয়ে দিয়ে আসি। মানুষের সামনে তো আর কাঁদা যায়না। লজ্জা হয়। সেদিনও আমি তাই করেছি। যখন বুঝতে পারছি আমার চোখ দিয়ে রাগ ঝরতে শুরু করেছে আমি বাথরুমে ঢুকে রাগ ঝেড়ে ফেলে চোখ-মুখ ধুয়ে তবেই ফিরেছি। ওখানে হাতের কাছে কিছু থাকলেও ছুড়ে মারিনা। ওটা কাজের যায়গা। এটা সেটা যখন তখন ছুড়ে মেরে ভেংগে দিলে আমার চাকরীটাও যে ভেংগে যাবে সেটা বুঝার মত বয়স আমি পেরিয়েছি। তাই সাবধান।

একটা কে এফ সিতে আমরা চাকরী করি। বিশাল ফাস্ট ফুডের দোকান। বিশ থেকে ত্রিশ বছর বয়সের মধ্যে বাইশজন যুবক যুবতী দুই পর্বে কাজ করি। অবশ্য একজন চল্লিশোর্ধ মানুষ আছেন যিনি কে এফ সির পরিচালক। কাজের যায়গায় কার কি কাজ, আর কার কত বেতন সেটা নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা নেই। সকলেই বন্ধু, সহকর্মী, সহযোদ্ধা। একে অপরের পরিপুরক হিসাবে কাজ করি। তাই কাজের অবসরে সকলে মিলে আড্ডা মারতে মোটেই কার্পন্য করিনা।

সেদিন মাত্র যুবকটি চাকরীতে যোগ দিয়েছে। সকলের সাথে হাত মেলালো, শুধু বেচে বেচে মেয়েদের ছাড়া। মেয়েদের কাছে এলে একটা সুন্দর হাসি দিয়ে হ্যালো বলে সম্ভাসন জানিয়েই সরে পড়ে। সে যে মেয়েদের সাথে হাত মেলাবেনা এটা যেন অন্য মেয়েরা জানতো। তাই তারা হাত বাড়ানোর ইশপিশ করে কান্তি দিয়েছে। আমি শুধু বোকারমত করে লম্বা একটা হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। ও অত্যন্ত বিনয়ের সাথে বললো, আমি মেয়েদের সাথে হাত মিলাই না। আমার মাথায় যেন বাঁজ পড়লো। কি বলে মানুষটা । বয়স কত হবে ? বড়জোড় পঁচিশ। এই বয়সের যুবকেরা মেয়েদের সাথে হাত মেলানোর জন্য পারলে একসাথে দু'হাত বাড়িয়ে দেয়। আর সে বলে হাত মেলায় না !

আমার নাম সিনথিয়া । আমি খ্রীস্টান । তবে ধর্মকর্ম খুব একটা মেনে চলিনা। আমার বয়স মাত্র একুশ। আমার গায়ের রবং ফর্সা, যা সচরাচর আমাদের দেশের মানুষের হয়ে থাকে। চেহারা-সুরতে আমি অবশ্যই অন্য মেয়েদের ইর্ষা করার মত সুন্দরী। অনেকেই মনে করে এই দেশে বুঝি কে সুন্দরী আর কে অসুন্দরী তা নিয়ে কেও ভাবেনা। আমি এটা মানিনা । যদি কেও না ভাবতো তবে সকলেই সাজুগুজু করে অন্য পুরুষের সামনে নিজকে উপস্হাপনের চেষ্টা করতো না। সকলেই নিজেকে সুন্দরী করে ফুটিয়ে তুলতে চায়। আর মেয়েদের মনের গহীনে সুন্দরের ইর্ষাটা জন্মগত ভাবে লুকিয়ে আছে। আমিও আমার থেকে বেশি সুন্দরী কাওকে দেখলে ইর্ষা করি। তবে আমি যে সুন্দরী তা নিয়ে আমার একটা গর্বও আছে। তাই সব যুবকই আমাকে চাইবে, আমার সাথে হাত মেলানোর চেষ্টা করবে, আমার শরীরের ঘ্রান নেবে, আমার রুপ-যৌবন পিয়ে তার তৃষ্ণা মেটাবে, এই বিশ্বাস আমার অনেক দিনের।

শুধু যে বিশ্বাস,তা নয়। বাস্তবতাও আমি নিরিখ করেছি। যুবকেরা আমার মোবাইল নাম্বার চায়, আমার সাথে কথা বলতে চায়, আমাকে নিয়ে একসাথে বসে রেস্টুরেন্টে খেতে চায়, আমার নরম তুলতুলে হাতে তার হাতখানা রাখতে চায়, প্রয়োজনে- অপ্রয়োজনে গায়ের সাথে ঠেসে দাড়িয়ে কথা বলে আর ভেতরে ভেতরে তার মনের ক্ষুধা মেটাতে চায়, এটা তো আমি হরহামেশা দেখি। শুধু আমি না। সকলেই এরকম করছে। এই দেশে এটা দোষের নয়। বরঞ্চ এটা না করলে তাই হবে দোষের, লজ্জার। আপনাকে নিয়ে সবাই হাসাহাসি করবে, টিটকারি দেবে। পরবর্তীতে আপনার সাথে কেও মিশতে চাইবে না। কাজের যায়গায় আমরা সকলেই এরকম। কাজের যায়গায় যে কয়জন যুবক আছে তাদের সকলেই আমার সংগটাকে উপভোগ করে।সকলেই আমার সংগ চায়।

শুধু ব্যাতিক্রম হলো সেদিন। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫১
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×