somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

প্যারিস থেকে আমি
স্বপ্ন দেখি সত্য ও সুন্দরের।আহত হই সত্যের পরাজয়ে।মনের মাঝে কতশত এলোমেলো ভাবনা এসে জড়ো হয়।ভাবনা গুলো চাই সকলের সাথে শেয়ার করতে,কিন্তু সীমাহীন অযোগ্যতায় আর লিখা হয়না।ভাবনা গুলো গুমড়ে মরে সমাধিত হয় নীরবে।

গল্প : যুবক পুরুষ (পর্ব তিন)

২০ শে নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমার কথায় সে চোখ মেলে তাকালো। বললো, আমি ভয়ে কাঁদছিনা। আমি কাঁদছি এজন্য যে, আজ তোমরা আমাকে দিয়ে এমন কিছু কাজ করিয়ে নেবে যা আমার ধর্মে সম্পুর্ণ নিষিদ্ধ। আমার আল্লাহ আমাকে হয়তো এজন্য পাকড়াও করবেন না,যেহেতু তোমাদের এই ঘৃন্য কাজে আমার সামান্যতম সায় নেই। কিন্তু যে পৌরুষত্ব আমি আমার স্ত্রীর জন্য পবিত্র রেখে আসছি আজ তোমরা তা অপবিত্র করে দেবে । আমি আমার স্ত্রীর কাছে একজন পবিত্র মানুষ হিসাবে যেতে পারবো না। আমি তার কাছে যাব আরো আট দশজন অপবিত্র মানুষের মত। আমার কান্না আসছে সেই জন্য। তোমাদের জন্যতো এই কাজ কিছুই না। তোমরা আজ আমার সাথে, কাল অন্য আরেকজনের সাথে তোমাদের এই খেলা চালিয়ে যাবে।

তার এমন কথা আমার বুকে তীরের মত বিধলো। আমার বিবেকের দরজায় যেন কেও একজন কড়া আঘাত করলো। আমার টনক নড়ে উঠলো । আমার বিবেক কথা বলতে শুরু করলো। বিবেক যেন বলে উঠলো, এ আমি কি করছি। এই ধরনের কাজ করে আমি আমার মনের ইচ্ছা পূরণ করতে পারি বঠে । কিন্তু আমি এভাবে একজন মানুষকে নষ্ট করে দিতে পারিনা। যে তার সৃষ্টিকর্তার ভয়ে ভীত এবং যে তার পৌরুষত্ব একমাত্র তার স্ত্রীর জন্য বরাদ্ধ করে রেখেছে।

আমি সোফার মধ্যে বসে পড়লাম। তার মুখের দিকে তাকালাম। দেখলাম, এখনো চোখ দিয়ে পানি ঝরছে। খুব মায়া হলো। শ্রদ্ধায় মাথা নুয়ে এলো। বান্ধবীদের বললাম, ওকে ছেড়ে দাও। আমার এমন কথায় ওরা দুজনে মুখ চাওয়া চাওয়ী করলো। আমি আবার বললাম, ওকে ছেড়ে দাও। এবার আমার কথায় একটু জোর ছিলো। একজন গিয়ে তার হাত পায়ের বাধন খুলে দিলো। সে চলে যেতে উদ্যত হলে বললাম, আজকের দিনের এই ঘটনার জন্য আমরা দুঃখীত, আমাদের ক্ষমা করে দিবেন। আর আমি চাইনা, এই ঘটনার জানাজানি হোক। সে একবার আমার মুখের দিকে তাকিয়েই বেরিয়ে গেল।

সেইদিন থেকে আমার মনের মাঝে একটা ঝড় বইতে শুরু করেছে। প্রথমত, তার ধর্ম নিয়ে মনের মধ্যে নানান প্রশ্ন উঁকিঝুকি দিতে লাগলো। যে ধর্ম একজন মানুষকে এই পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। যে ধর্ম মানুষের এমন উন্নত চরিত্র গড়ে দিতে পারে। যে ধর্ম তার সৃষ্টিকর্তার প্রতি এতটা ভয় ও বিশ্বাস তৈরী করে দিতে পারে। দ্বিতীয়ত, তার প্রতি ভালবাসা,শ্রদ্ধা ও ভরসা সৃষ্টি হলো। এধরনের একজন পুরুষের উপরইতো শুধু ভরসা করা যায়, যে জানেনা তার স্ত্রী কে হবে, অথচ স্ত্রীর জন্য সে পবিত্র থাকার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। মনে মনে বললাম, তাকেই আমার চাই।

শুরু হলো তার ধর্ম ইসলাম নিয়ে পড়াশুনা করা। মনের মাঝে যত প্রশ্ন আসে তাকে ছোট ছোট করে করতে লাগলাম। সে যথাসম্ভব উত্তর দিতে লাগলো। সে যেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনা সেটার জন্য সময় নেয় এবং দু'চারদিন পর সেই প্রশ্নের সুন্দর জবাব দেয়। সে কোন গোজামিলের আশ্রয় নেয় না। এটা আমার কাছে আরো একটা বিস্বয় মনে হলো। সাধারণত আমরা সকলেই পারি বা না পারি জোড়াতালি দিয়ে একটা জবাব দেয়ার চেষ্টা করি। পাছে আবার আমি জানিনা এটা প্রকাশ হয়ে পড়ে, এই ভয়ে। কিন্তু তার মাঝে এরকম কোন লক্ষণ দেখলাম না। সে তার সম্পূর্ণ বিপরীত।

একবার আমরা সহকর্মীরা সকলে মিলে সমুদ্র পাড়ে বেড়াতে গেলাম। সে প্রথমে যেতে চায় নি আমাদের সাথে। পরে যখন বলা হলো সে তার মত করে থাকতে পারবে তখন সে রাজি হয়। ওখানেও দেখলাম,সে যতটা সম্ভব মেয়েদের এড়িয়ে চলছে। যেদিকে মেয়ে ও ছেলেরা অর্ধ উলংগ হয়ে সাগরের নোনা পানিতে শরীর ভাসিয়ে খেলা করছে সে আছে তার বিপরীত দিকে।

আমার মনে আবার একটা কু-বাসনা জেগে উঠলো। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৪৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×