somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

প্যারিস থেকে আমি
স্বপ্ন দেখি সত্য ও সুন্দরের।আহত হই সত্যের পরাজয়ে।মনের মাঝে কতশত এলোমেলো ভাবনা এসে জড়ো হয়।ভাবনা গুলো চাই সকলের সাথে শেয়ার করতে,কিন্তু সীমাহীন অযোগ্যতায় আর লিখা হয়না।ভাবনা গুলো গুমড়ে মরে সমাধিত হয় নীরবে।

*** বিজয় দিবসের ভাবনা ***

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


চোয়াল্লিশতম মহান বিজয় দিবস। আজ থেকে চোয়াল্লিশ বছর আগে পৃথিবীর মানচিত্রে দক্ষিন পূর্ব এশিয়ায় বাংলাদেশ নামে একটি দেশ যায়গা করে নেয়। এদিনেই বাংলার দামাল ছেলেরা বিজয়ের পতাকা উড়িয়েছিল।কোটি কোটি মানুষের জন্য একটি ছোট ভূ-খন্ড , একটি পতাকা , একটি নাম বাংলাদেশ পৃথিবীর মানচিত্রে যায়গা করে নিতে পাকিস্তিনী হানাদারদের সহিত লড়াই করতে হয়েছে। অসংখ্য অগনিত মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে।মা-বোনের ইজ্জত লুন্ঠিত হয়েছে,ঘর বাড়ির ধ্বংস হয়েছে । অবশেষে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। বাংলাদেশ কারো দানের নয়, বাংলাদেশ কোন দলের নয় , গোষ্টির নয়,বাংলাদেশ ষোলকোটি মানুষের।

দক্ষিনে বঙ্গপোসাগরের বিশাল জলরাশি , আর ওপর তিন দিকেই বিশাল সাম্রাজ্য ভারতের সীমানা প্রাচীরের ভেতরে এক লক্ষ সাতচল্লিশ হাজার বর্গ কিলোমিটারের এই রক্তাক্ত জনপদ ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের কাছ থেকে বিজয় ছিনিয়ে এনে স্বাধীনতা অর্জন করে । স্বাধীনতার পর মানুষ একটি সুখী সমৃদ্বশালী দেশের স্বপ্ন দেখে । যে দেশে থাকবেনা কোন জুলুম-শোষন, হাহাকার , উচু-নিচুর ভেদাভেদ,ধনী -দারিদ্রের বৈষম্য , দূর্নীতি -দুঃশাসন।কিন্তু আমরা ব্যর্থ হয়েছি, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর বিচক্ষনতার অভাবে । রাজনৈতিক টানাপড়েন ,হাঙ্গামা আমাদের লেগেই আছে। স্বৈরাচারের যাতনায় পিষ্ট হতে হয়েছে এবং হচ্ছে এদেশের হত দরিদ্র মানুষ গুলোকে । রাজনৈতিক দোরাচারিতা আজ অবধি আমাদের ভাগ্যাকাশে লেপটে আছে। প্রতি বছরের প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন আমাদের কপালের লিখন, ঠিক তেমনি রাজনৈতিক দুর্যোগ ও আমাদের আমাদের কপালের লিখন হয়ে দাড়িয়েছে। এর মধ্যেও কিন্তু এ দেশের মানুষ বারবার ঘুরে দাড়িয়েছে। এ দেশের মানুষ যে লড়তে জানে,লড়াই করে যে দেশ পেয়েছে।যতই রাজনৈতিক দুর্যোগ দেখা যাক না কেন দেশের মানুষ রাজনৈতিক দলগুলোকে টেনে হেছড়ে সঠিক যায়গায় এনে দাড় করাবে এই ইতিহাস ও হিম্মত দুটোই আছে।

আমরা যারা প্রবাসে আছি আমাদের কি কোন দায়দায়িত্ব নেই ? একটা দেশ স্বাধীন হয়েছে আজ থেকে চোয়াল্লিশ বছর আগে। সারা দুনিয়ায় সে দেশের মানুষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমাদের দেশকে এখনো পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ চিনেনা । আর যারা চিনে তারা প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ হিসাবে চিনে,মিসকিনদের দেশ হিসাবে চিনে । অথচ আমাদের রয়েছে লড়াই করার ইতিহাস , সাহস শক্তি ও সৌর্যবির্যের ইতিহাস । সে ইতিহাস আমরা পৃথিবীর মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারিনা । এই ফ্রান্সের কথাই ধরুন ।ফ্রান্সের কতজন মানুষ আমাদের দেশকে চিনে ? বাংলাদেশ নামে যে একটি ভূখন্ড আছে তা জানে ? জানে শুধু প্রিফিকচার, অফরা-কমিশন কিংবা দু'চারটা সাহায্যকারী সংস্হায় যারা কাজ করে। তারাও কিন্তু আমাদেরকে জানে নেগেটিভ দৃষ্টিকোন থেকে । রাজনৈতিক হাঙ্গামার দেশ হিসাবে, জুলুম শোষনের দেশ হিসাবে। তার বাইরে রাস্তাঘাটে কারো সাথে কথা বললে ,পরিচিত হলে যখন দেশের নাম বলি তখন তাকে ভাবনায় পড়তে দেখি । কোথায় , কোন দেশের পাশে ইত্যাদি ব্যাখ্যা বিশ্লেষন করে দেশের পরিচয় তুলে ধরতে হয়। কিন্তু কেন ? যারাই আমাদের জানে নেগেটিভ দৃষ্টিকোন থেকে, রাজনৈতিক হাঙ্গামার দেশ হিসাবে আমরা কি সত্যিই শুধু তাই । না কি এর বাইরে ও আমাদের অনেক পরিচয় আছে । আমাদের আছে মায়ের ভাষা প্রতিষ্টার জন্য মরার ইতিহাস । একাত্তরের ইতিহাস ,তার ও আগে গেলে আছে পলাশির ইতিহাস , বাঁশের কেল্লার ইতিহাস ।প্রাকৃতিক সম্পদ আর সৌন্দর্যের বিশাল সমারোহ।কক্সবাজারের বিশাল সমুদ্র সৈকত কিংবা সুন্দর বনের অপার সুন্দর্য। আছে বিস্তৃর্ন সবুজের মাঠ। পাহাড় -ঠিলা । কবি নজরুলের মত বিশ্বমানের কবি, সাহিত্যিক ও গুনিজন। আমাদের সবই আছে ।

আমরা আমাদের এই আছে গুলোকে এদেশের মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারছিনা । যারা তুলে ধরার যোগ্যতা রাখেন তারা দেশের প্রতিনিধি না হয়ে দলের প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করছেন । সকলেই দায়ী। সকলেই নিজ নিজ দলীয় সংকির্নতার বাইরে এসে দেশের প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করতে পারছিনা।সে সদিচ্ছা ও আমাদের মধ্যে নেই। আমরা ভাষা দিবসের মত একটা আন্তর্জাতিক দিবসে ( আমাদের ভাষা দিবসকেই আন্তর্জাতিক করা হয়েছে ) দলীয় ভাবে প্রোগ্রামের আয়োজন করি । অথচ চাইলে এদেশের মানুষকে নিয়ে মাতৃভাষা দিবস পালন করা যায়। যেখানে আমাদের ভাষার ইতিহাস তাদের সামনে সহজেই তুলে ধরা যায়। ঠিক সেভাবে স্বাধীনতা দিবস কিংবা বিজয় দিবসেও। আমরা ৭১ এর ইতিহাস সম্বলিত ছবি দিয়ে প্রদর্শনি করতে পারি। আমাদের দেশের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য দিয়ে প্রদর্শনী করতে পারি। এতে করে এদেশের মানুষ জানবে ,আমাদের দেশে ভ্রমন করবে,দেশ অর্থনৈতিক ভাবে লাভমান হবে। এদেশের সাংবাদিক, জন প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্টান করতে পারি। আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরতে পারি। ছোট্ট করে হলেও যদি এদেশের সাংবাদিকরা তাদের পত্রিকায় আমাদের দেশের কথা লিখে তাহলে আমাদের নিজেদের মধ্যে হাজার প্রোগ্রাম করার চেয়েও তা ফলপ্রসু হবে। অথচ আমরা তা করিনা । আমরা আইফেল টাওয়ারের পাদদেশে গিয়ে দেশের পতাকা নিয়ে টানা হেছড়া করি।

একাজ গুলো করার দায়িত্ব আমাদের সকলের । আমাদের সকলকেই দেশের প্রতিনিধি হতে হবে। আমাদের রাজনৈতি দলের নেতৃবৃন্দ , সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং বিশেষ করে আমাদের দেশীয় দুতাবাসকে এই কাজগুলো করার জন্য এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি। আমরা সকলেই এগিয়ে আসবো। এই হোক এবারের বিজয় দিবসের অন্গিকার।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:১৭
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×