somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বনজ্যোৎস্নায় টুইপাখির গান

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বনজ বাতাসে তখন গোধুলীর স্বপ্নীল আভা
আসন্ন সন্ধ্যের বুকে নামছিলো তরল অন্ধকার,
ঘর হারা টিটিপাখির বুকফাটা আর্তনাদ আর
ঘরে ফেরা টিয়াদলের তীক্ষ্ণ ছুরিফলা চিৎকারে,
প্রকৃতির আধখোলা দৃষ্টির মাঝে ছড়িয়ে ছিলো
এক অপার্থীব ও আলৌকিক আবেশ!!

সে মায়ালোকে আমাদের বোধ-বুদ্ধি,কৃষ্টির
তখন ভাঙচুর বেলা, মহা প্রলয়ের কাল!!
খরস্রোতা পাহাড়ী নদীর ক্রমক্ষয়িষ্ণু নুড়ির মত
ভাঙছিলাম আমরা, পাশাপাশি,যুগল মৌনব্রতী,
নিষিদ্ধ অথচ নির্মল আবিষ্ঠতায়, আত্ম-বিলুপ্তিতে
ভাসছিলাম আমরা, ডুবন্ত চাতক-চাতকী !!

গাঢ়হরিৎ উপত্যকায়,পায়ের কাছে বইছিলো নদী
তারই অন্ধকার খোলে ডাকছিলো নিশাচর পেঁচা,
সে ডাক বয়ে গিয়েছিলো অনাবিল অজানায়,
উপেক্ষা আর অনুপেক্ষার অগ্রাহ্য ফাল্গুনী হাওয়ায়,
সান্নিধ্যের মহুল-কোমল গভীর, স্বপ্নালু নেশায়
বুঁদ হয়েছিলাম আমরা অনন্ত মহাকাল!!

ক্রম গাঢ় দৃশ্যমান তখন কোজাগরী চাঁদ
উতাল হুহু সমীরণ আর বুনোফুল সুবাসে
স্বর্গ তখন সায়াহ্নের সবুজ সজীব বনভূমি।
আমরা ছিলাম নীরব-নিরুচ্চার, অস্ফুষ্ঠিত
উন্মুখ মন নাবলা কথায় ছিলো উচাটন
চেতন-অবচেতনের দোলে দোদুল্যমান ক্ষণ!

চিরল সিঁথি-প্রান্তে ছুঁইয়ে রাখলে তুমি
তপ্ত তোমার সুগঠিত চিবুক, বহুযুগ-বহুক্ষণ
তারপর দীর্ঘ নীরবতা আর পুন্জিভুত নিশ্চুপতা
স্বচ্ছ ঝকঝকে চাঁদটা তখন বেশ উপরে উঠেছে,
মহুয়া,করৌন্জ আর শালফুলের গন্ধে গন্ধবিধুর
মৌ-মৌ মৌনীমাতাল পুস্পিত নির্জন চারিধার!!

হিম জংলা হাওয়ায় থেমেথেমে ডাকছিলো কোকিল
সে কুহুতানে ভেসে আসছিলো সঙ্গীনির সাড়া,
শিহর তোলা,হাওয়া লাগা আমলকীশাখের মত
আমরা তখন গ্রহ নক্ষত্রের নির্ভুল নির্বন্ধে-
স্বর্গ নরকের দুর্গম পথের দুঃসাহসী যাত্রী,
সুখ আর দুঃখ ব্যাবচ্ছেদের অজানায় আগুয়ান!!

পাথুরে খাড়াপথ আর ঘুরল পাকদন্ডী বেয়ে
পা বাড়ালাম ঝিরিঝিরি সজল ঝর্ণার পথে
অনভ্যস্থ পিছল পথে,কম্পমান দেহবল্লরী লতা
নদী-অববাহিকায় ডেকেই চলেছিলো তখনও
একটা পিউকাহা, অবিরাম, অন্যদিকে ঢাব পাখি,
গম্ভীর ভুতুড়ে গলায় ডাকছিলো ঢাব!!!

পিউকাহার সুরে ছিলো,আমাদের আসন্ন অজানা
আনন্দের সুর, আর ঢাবপাখির স্বরে ছিলো
গোপন গোপনীয়তা, নির্জন রাত্রীর মুখরিত গানে
আর সরব ব্যান্জনায়,আমোদিত নৃত্যরতা বনদেবী।
চাঁদ আর আকাশের পটভুমিতে আমরা তখন
পৃথিবীর প্রথম নারী ও পুরুষ-!!

উচিৎ-অনুচিৎ,ভূত ভবিষ্যৎ কিছুই মানিনা,
মৃদু-মন্থর বাতাস সাক্ষী রেখে ভেসে যাই,
চাঁদের আলোয়, ফুলের গন্ধে হেসে যাই,
চতুর্দিকে ঝরছিলো রাত, ঝরছিলো চাঁদ আর
চাঁদ ভেজা আসমান জমিনের পথে আমরা
দুজন পৃথিবীর প্রথম নারী ও পুরুষ!!!

চন্দ্রালোকিত সেই রাতে শব্দে, বর্ণে-গন্ধে
ও স্পর্শে ডেকেছিলো একটি ছোট্ট কোমল
ভারী মিষ্টি টুইপাখি.......


এত মন দিয়ে মনে হয় জীবনে কোনোদিন কিছুই লিখিনি। আজ লিখলাম। কারণ আমার অতি প্রিয় দুজন মানুষ ওরফে কবিদ্বয়কে উৎসর্গ করেই কিছু লিখতে বসেছিলাম। লিখতে লিখতে ভাবলাম কার জন্য এটা বেশী প্রযোজ্য? মাহীমনি নাকি রাশেদীন ভাইয়া? রাশেদিন ভাইয়া নাকি মাহীমনি? ভাবতে ভাবতে দুজনকেই দিলাম আমার এই প্রাণপণ প্রচেষ্টাটা।
উফফ গুণবতী আর গুণবানদের কিছু দেওয়াও দেখছি ঝামেলা। :(
যাইহোক আমার প্রিয় প্রিয় অতি প্রিয় কবিদ্বয় মাহীফ্লোরাহানিফ রাশেদীনভাইয়া আমার এই উপহারখানি নিয়ে আমাকে ধন্য করো।:)
অনেক অনেক ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা তোমাদের দুজনকেই। আরও আরও অনেক অনেক ভালো ভালো লেখা দিয়ে আমাদেরকে উৎসাহিত করো আজীবন।:)

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ৮:৪১
১৮৬টি মন্তব্য ১৮৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×