somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রানু ও তার লাল নীল সংসার

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একরাশ ফুল, পাতা, জরি, চুমকির ঝালর সজ্জিত বাসরশয্যার ঠিক মধ্যিখানে বসে আছে রানু। লাল টুকটুকে শাড়ি ও সোনালী ফুল তোলা রাঙ্গা চেলীতে সে এখন সুসজ্জিতা নববিবাহিতা কনে বঁধু। একগাদা গয়নাগাটিতে তার অবস্থা জবুথবু । মফস্বল শহরের প্রায় পাড়াগা এই উপশহরটিতে ঘড়ির কাঁটা তখন মধ্যরাত পেরিয়েছে । অন্যান্য দিন এ সময় চারপাশে নেমে আসে ভুতুড়ে নিস্তব্ধতা। কিন্তু বিয়ে বাড়িটির আলো ঝলমল উৎসব মুখর পরিবেশের কারণে ও উৎসব বাড়িতে নেমন্তন্নে আসা আত্মীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীদের সরব পদচারনায় চারিপাশ আজ মুখরিত। বারান্দা, খিড়কি পুকুর ও আশপাশ থেকে এখনও টুকটাক কথাবার্তা, হাসি তামাশার শব্দ ভেসে আসছে।

আমাদের অপূর্ব সাহেবের এই বিয়েতে একেবারেই মত ছিলো না। নিতান্তই মায়ের পীড়াপীড়ি ও দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত তিরাশী বছর বয়স্কা দাদীমার মাথার দিব্যদাব্যিতে অতিষ্ঠ হয়েই সে এই বিয়েতে রাজী হয়েছে। আর সাথে ছিলো বাবার হঠাৎ বিরাট রকমের অসুস্থ্য হয়ে পড়া ও একমাত্র সন্তানের বিয়েটা দেখে যাবার শেষ ইচ্ছার ব্যাপারটাও। বিদেশ থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে ও কিছুকাল সেখানে চাকুরী শেষে দেশে ফেরার পর কোন অজ্ঞাত কারনে যে অপূর্ব সাহেবের চিরকুমার থেকেই বাকী জীবনটা কাটিয়ে দেবার সাধ জাগলো প্রানে সে রহস্য অজ্ঞাত।এমন উদ্ভট ইচ্ছার কারণ বা হেতু তার অতি ঘনিষ্ঠ বন্ধু বান্ধব থেকে শুরু করে পরম প্রিয় বাবা, মা, আত্মীয় স্বজনদের কেউই উৎঘাটন করতে পারলোনা।

দীর্ঘদিন বিদেশে থাকার কারনে সে কোনো বিজাতীয় বিদেশিনীর পাল্লায় পড়েছে কিনা নাকি সেখানে একটি সংসারই পেতে বসেছে এ ব্যাপারে কেউ কেউ সন্দেহও প্রকাশ করে বসলো। মা তো মাথায় হাত দিয়ে বসলেন তার বংশ রক্ষার কি উপায় হবে ভেবে।শেষ পর্যন্ত অপূর্বের বাবা তার বিশাল অভিনয় দক্ষতার পরিচয় দিয়ে হার্টের পেশেন্ট সেজে তার আর্মি ডক্টর বন্ধু এর সহায়তায় সোজা ঢাকায় সি এম এইচে নিজেকে চালান করে দিলেন। আর মৃত্যু পথযাত্রী বাবার শেষ ইচ্ছা টুকু অপূর্ণ রাখবার শক্তি ও সাহস আর যার থাক আমাদের একমাত্র সন্তান অপূর্ব সাহেবের অন্তত ছিলোনা।

কাজেই অল্পদিনের মাঝেই খুব তড়িঘড়ি করে মায়ের কোনো এক ছোটবেলার বান্ধবী রেহনুমা খালার মেয়ে রানুর সাথে বিয়ে হয়ে গেলো মিঃ অপূর্ব সাহেবের।অপূর্ব এখন ২৭ বছরের যুবাপুরুষ আর মেয়েটি কেবল ১৯। এ ব্যাপারটিও অপূর্ব সাহেবের বিশেষ পছন্দ হলোনা। বউ হবে বন্ধুর মত মানে সমবয়সী যার সাথে সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করে নেওয়া যায়, রসিকতা করা যায় তা নয় কোথাকার কোন ফিচকাঁদুনে কচিখুকীকে মানুষ করতে করতে জীবন যাবে এইবার তার।

সে যাইহোক খুব তড়িঘড়ি বিয়ে বলা হলেও তাতে আয়োজনের কোনো কমতিই ছিলোনা।আদরের একমাত্র সন্তানের বিয়েতে পানচিনি থেকে শুরু করে আইবুড়ো ভাত, গায়ে হলুদ, বৌভাত বলতে গেলে এই মফস্বল শহরে সর্বোচ্চ যতটুকু করা যায় তাই করা হলো।

আবার ফিরে আসি বিয়ের রাতে। যথারীতি সেই মধ্যরাত্রিতে কিছু অতি উৎসাহী খালাতো, চাচাতো, পাড়াতো ভাই ভাবীদের সহায়তায় বাসর ঘরে অপূর্ব সাহেবের অনিচ্ছা প্রবেশ ঘটলো। ফুল্ল সজ্জিত শজ্জায় জবুথুবু কনেবঁধু। ঘরে ঢুকে অপূর্ব সেদিকে এক নজর তাকিয়ে বঁধুর কাছে না গিয়ে সোজা হেঁটে জানালার ধারে গিয়ে দাঁড়ালো। বউ এর চাঁদ বদন দর্শনের চাইতে আকাশের পূর্নিমা চাঁদের সৌন্দর্য্য দর্শনই বুঝি তার মনের উদ্দেশ্য ছিলো।সেরোয়ানীর
পকেট থেকে সিগারেট বের করে লাইটার অন করতে গিয়ে কনে বঁধুর দিকে চোখ পড়তেই খানিক চমকে উঠলো সে। কনেবঁধু ঘোমটা ফেলে কটমট করে তাকিয়ে আছে তার দিকে। অপুর্বের হাতের লাইটার হাতেই রয়ে গেলো। সে সেদিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসু নেত্রে "কি হয়েছে" বা কিছু এমনটা বলতে গেলো। তার আগেই কনে বউ গট গট করে শজ্জা থেকে নেমে এসে অপূর্বের হাত থেকে সিগারেট লাইটারটা কেড়ে নিলো।

-বিদেশ থেকে পড়ালেখা করে এই অজ মফস্বল শহরের একটা গাঁইয়া মেয়ে বিয়ে করেছেন বলে যা ইচ্ছা তাই করবেন, স্বপ্নেও যেন তা ভাববেন না। বাসর রাতে কেউ সিগারেট খায়? আর তাছাড়া সিগারেটের গন্ধ আমি মোটেও সহ্য করতে পারিনা।একদম সিগারেট খাবেন না এখন।আসেন এখুনি আসেন । আপনার জন্য বাদামের শরবৎ করা আছে বরফ কুঁচি দিয়ে। আমি নিজে হাতে বানিয়েছি। এখুনি খাবেন ।

ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ভ অপূর্ব! তার হা করা মুখ আর বন্ধ হলোনা । কনেবউ তার হাত ধরে টেনে এনে শজ্জায় বসালো।সাইড টেবিলের উপর থেকে সুদৃশ্য কাঁচের গ্লাসের ঢাকা সরিয়ে গাঢ় জাফরাণী রঙের অদ্ভুত মায়াবী মায়াবী চেহারার আশ্চর্য্য এক পানীয় তুলে ধরলো তার মুখে। অপূর্ব সাহেবের মুখে মিটিমিটি হাসি ফুটে উঠলো। যদিও এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনার বিহ্ববল ভাবটা তার মুখ থেকে এখনও মিলিয়ে যায়নি। তারপরও অতি মোহনীয় মেহেদী কারুকার্য্যমন্ডিত ও একগাদা স্বর্নালঙ্কার শোভিত নরম কোমল একখানি হাতে ধরা মায়াবী মায়াবী চেহারার জাফরানী রং বাদামের শরবৎ এর গ্লাসখানি হাত দিয়ে একটু সরিয়ে দিয়ে সে বললো, একটু অপেক্ষা করো।
এরপর সে উবু হয়ে বিছানার তলায় কি যেন খুঁজতে শুরু করলো।বিছানার তলায় উঁকি দিয়ে দেখে, চাদর উল্টিয়ে দেখে, ঘরের এদিকে যায়, ওদিকে যায়। কনে বউ তো হাতে গেলাস ধরা অবস্থায় চক্ষু ছানাবড়া করে তাকিয়ে রইলো।তারপর অধৈর্য্য হয়ে স্বভাবসুলভ মুখরতায় জিগাসা করলো।
- কি খুঁজছেন শুনি? আমাকে বলেন আমি খুঁজে দিচ্ছি। আপনি কি ঘরে পরা চপ্পল চাচ্ছেন?
অপূর্ব করুন মুখে উত্তর দিলোনা- না, চপ্পল চাচ্ছিনা।
কনেবউ ভীষন বিরক্ত হয়ে আবার জিগাসা করলো, তাহলে কি খুঁজেন ওমন আতি পাতি করে? টেবিলের তলায়, বিছানার নীচে?
অপূর্ব মুখ গম্ভীর করে বললো- বেড়াল।
-বেড়াল!!!!!কনে বউ বুঝি তার কথা শুনে আৎকে উঠলো।চোখ উঠলো কপালে তার।
-কেনো বেড়াল কেনো ? আপনার পোষা বেড়াল বুঝি? বড় আদরের?আমি কিন্তু একদম বেড়াল টেড়াল সহ্য করতে পারিনা। এইসব এই রুমে একেবারেই চলবেনা।কনে বউ একেবারেই বেঁকে বসলো আর তার সেই বেঁকে বসা মনোবৃত্তির ছায়া ফুটে উঠলো তার আত্মপ্রত্যয়ী চোখে মুখে। অপূর্ব মনোক্ষুন্ন গলায় বললো,
- আরে না।সেসব না। সবাই বলে বিয়ের রাতে বেড়াল না মারলে সারাজীবন বউ এর তাবেদারী করে জীবন কাটাতে হয়। আমি সেই বেড়ালটা খুঁজছি কারণ আমি তো মনে হচ্ছে এমন এক গুন্ডি বউ এর পাল্লায় পড়েছি, মনে তো হচ্ছে.....

অপূর্বের কথা শেষ হতে পারেনা তার আগেই খিলখিল হাসিতে ভেঙ্গে পড়ে রানু। অপূর্ব মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে। কি অপরূপা সুন্দর মেয়েটি! নাহ বিধাতা মনে হয় তার উপর মোটেও অবিচার করেননি। মনে মনে বিধাতাকে একটা থ্যাংকস দিয়ে ফেলে সে। মনে হচ্ছে এই অতি মুখরা স্বভাবের, চপলা, খবরদারী করা, ভীতিহীন, মজার মেয়েটাকে নিয়ে তার জীবন মন্দ কাটবেনা।

অপূর্বের আকাশ কুসুম কল্পনায় ফের বাদ সাধলো রানু। হাসি থামিয়ে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে সে অপূর্বের দিকে। অপূর্বের হুস তখনও ফেরেনি। মুগ্ধতা ও কল্পনার রাজ্যে তখনও সে বিরাজমান। সম্বিৎ ফিরলো বউ এর কটকট বাক্যে,
- হা করে কি দেখছেন? শরবৎটা শেষ করেন তাড়াতাড়ি। এই শরবৎ আমার দাদী গত তিনমাস ধরে আমাকে রোজ তিনবেলা করে প্রাকটিস করিয়েছেন। অপূর্ব বেশ অবাক হলো।
- কেনো এই শরবতের মাহাত্ম কি?
-এই শরবৎ বাসর রাতে খেলে সারাজীবন স্বামীরা বউদের উপর যখন তখন অসন্তুষ্ট হতেই পারেনা।মুখে আঁচল দিয়ে আবার খিলখিল হাসতে থাকে রানু।
- তাই নাকি? আর বউরা যখন তখন যেন অসন্তুষ্ট হয়ে পড়তে না পারে তার জন্য কোন শরবৎ?
রানু আবার খিলখিল হাসিতে ভেঙ্গে পড়ে । তারপর কোনো উত্তর দেবার প্রয়োজন বোধ না করেই হঠাৎ গম্ভীর মুখ করে হনহন করে হেঁটে গিয়ে আলমারীর থেকে একপ্রস্থ রাতের পোষাক নিয়ে ফিরে আসে।
-যান চেন্জ করে আসেন এইবার। এই মেয়েকে অপূর্ব যত দেখছে ততই অবাক হচ্ছে। একে যে জীবনে কোনোদিন চর্মচক্ষু, দিব্যচক্ষু, তৃতীয় নয়ন, চতুর্থ নয়ন কোথাও কখনও দেখেনি মনেই হচ্ছেনা তার। বরং তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে যেন কত দিনের চেনা। বিশেষ করে রানুর ভাবভঙ্গি মোটেও নর্মাল না।একেবারে অজ পাড়াগা না হোক এই রকম মফস্বল এলাকার এইটুকু পিচকি একটা মেয়ের তো বিয়ের রাতে মুখ থেকে কথা বের হবারই কথা না। আর এই মেয়ে হড় বড় করে বলে যাচ্ছে যা মনে আসে তাই।মনে হচ্ছে এই বাড়ি, ঘর দূয়ার, আলমারী, খাট পালঙ্ক সব তার চেনা, এক্কেবারে জলের মত মুখস্থ। কি বিপদে পড়া গেলোরে বাবা। মাথায় গন্ডগোল নেই তো আবার! বালিশটা উঁচু করে তাতে ঠেস দিয়ে বসে সাত পাঁচ ভাবতে লাগলো অপূর্ব!

রানু হাত মুখ ধুয়ে, পোষাক পাল্টে একটা নীল জরীপাড় সুতীর শাড়ি পরেছে। ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে সব চুলগুলো বুকের এক পাশে এনে খুব দ্রুত হাতে অসীম দক্ষতায় ঝপঝপ করে বেণী বেঁধে চলেছে। কয়েক সেকেন্ডের মাঝেই সেই একঢাল চুল সাপের মত ইয়া লম্বা এক বেনী হয়ে গেলো।আগায় রাবার ব্যান্ড টাইপ কি যেন একটা বেঁধে মোটা বেনীটাকে পিঠের দিকে ছুড়ে দিয়ে উঠে ঘুরে দাড়ালো রানু। অবাক হয়ে দেখছিলো অপূর্ব! মেয়েদের লম্বা চুলের বেনী বাঁধা দেখতে এত সুন্দর! কখনও খেয়াল করেনি তো সে।

বিস্ময়ের পর বিস্ময়! রানু ফিরে এসে খাটের উপর পা তুলে বসলো। সোজা অপূর্বের মুখোমুখি। তারপর স্মিত বদনে অতি আশ্চর্য্য এক প্রস্তাব করে বসলো সে,
-চলেন আজ রাত জাগি। অপূর্ব ভীত চোখে তাকালো।
- মানে?
- মানে আমরা আজ রাতে এক ফোটাও ঘুমাবোনা, সারারাত জেগে থাকবো আচ্ছা? অপূর্বের চোখ কপালে উঠলো। সে এইবার মোটামুটি নিশ্চিৎ এই মেয়ের মাথায় কোনো না কোনো গন্ডগোল অবশ্যইআছে।সে ভয়ে ভয়ে জিগাসা করলো,
- ঘুমাবো না! তাহলে কি করবো? আবারও মুখে আঁচল গুজে খিলখিল হাসিতে ভেঙ্গে পড়লো রানু। তারপর তার হাত ধরে বললো,
-চলেন ছাঁদে যাই। অপু বাধ্য ছেলের মত সুড় সুড় করে কেনো যেনো বিছানা থেকে নেমে এলো। তারপর দুজন চুপি চুপি সকলের অলক্ষে ছাঁদে উঠে এলো। ভাগ্যিস ওদের রুমের লাগোয়া বারান্দাটাতেই ছাঁদের সিড়ি ছিলো কাজেই বিয়ে বাড়ির পরিশ্রমে ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে ততক্ষনে ঘুমিয়ে পড়া কারুর নজরেই তারা পড়লো না।

ছাঁদে উঠে মন ভরে গেলো অপূর্বের। এমন আকাশ ভাঙ্গা জ্যোৎস্না বহুদিন দেখা হয়নি তার। কি যেন একটা ফুলের মন মাতাল করা মিষ্টি ঘ্রানে প্রায় ঘোর লেগে যাচ্ছে অপুর। সে বউকে জিগাসা করলো, এটা কোন ফুলের ঘ্রান যেন? বউ বরাবরের মত অবাক হলোনা।সে এখন বেশ চুপচাপ আর একটু উদাস যেন। সেই ভাবেই উত্তর দিলো, এটা হাস্নাহেনা ফুল। ছাদের কোনায় বিরাট টবের দিকে আঙ্গুল তুলে দেখালো সে।

পুরোনো দিনের বাড়ি। ছাদে সিমেন্ট দিয়ে বসার জন্য জায়গা করা আছে। ওরা গিয়ে পাশাপাশি বসলো তাতে।অপু বললো,
-রানু তুমি গান জানো? রানু চমকে উঠলো।চোখ বড় বড় করে তাকালো অপূর্বের দিকে। ঝকঝকে জ্যোস্নায় পরিস্কার দেখা যাচ্ছে তার উজ্বল চোখ, খাড়া নাক আর পান পাতার মত মুখ। অপূর্বের কথা শুনে কিছুক্ষন ওর দিকে তাকিয়ে থেকে আবার শুরু হলো তার পাগলী হাসি। নিস্তব্ধ নিঝঝুম রাত্রীতে সেই হাসি খান খান হয়ে ছড়িয়ে পড়লো চারিদিকে আর তারপর মিলিয়ে গেলো ধীরে ধীরে সেই মায়াবী জ্যোস্নায়।রানু হাসি থামিয়ে সত্যিই গুন গুন শুরু করলো তারপর, কি গান? এই জ্যোৎস্নায় প্রথমেই একটা বাঙ্গালী মেয়ের মনে কোন গান আসতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।
চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙ্গেছে, উছলে পড়ে আলো
ও রজনীগন্ধা তোমার, গন্ধ সুধা ঢালো ............
যদিও তখন চারদিকে হাস্নাহেনা মৌমিতাল গন্ধ ছড়াচ্ছিলো।কিন্তু শেষরাতের হিম হিম হাওয়া, সেই মন মাতাল করা গন্ধ আর রানুর গান সবকিছু মিলিয়ে ফুলের নাম বিষয়ক কোনো অসঙ্গতি ঠিক ধরা পড়লোনা। বরং তা চমৎকার মানিয়ে গেলো নিশিরাতের মন উদাস করা চৈতালী হুহু হাওয়ার প্রকৃতির সাথে। অপূর্বের মনে হলো এমন একটি সুন্দর নাটকীয় ভালোলাগার মায়াবী মুহুর্ত আসলে কারো জীবনে কখনও আসেনা। আজ সে যা পেলো তার তুলনা বুঝি স্বর্গের কোনো মহার্ঘ্যের সাথেও চলেনা।


পরদিন অপূর্ব এর ঘুম ভাঙলো বেশ দেরীতে। ঘুম ভেঙ্গেই তার মনে পড়লো কাল রাত থেকে তার জীবনটা এক্কেবারেই বদলে গেছে। এখন সে আলাদা মানুষ। এক্কেবারের আগের সে থেকে আলাদা কেউ। অকারণ এক আনন্দে তার মন ভালো লাগতে শুরু করলো। রানু কখন উঠেছে ঘুম থেকে কিছুই জানেনা সে।
এমন সময় রুমে ঢুকলো রানু। তার দিকে তাকিয়ে হাসি মুখে উঠে বসলো অপূর্ব!
- সাড়ে বারো বাজে। ডেকে তুলোনি কেনো রানু? রানু অবাক হয়ে তার দিকে চেয়ে রইলো। রাতের ছাদের সেই জ্যোস্নাকন্যা রানুর সাথে এই রানু যেন একেবারেই আলাদা।এখন তাকে দেখাচ্ছে একটু গিন্নীবান্নী গোঁছের পুরোনো বউদের মত। কানে বড় ঝুমকা আর গলায় বিছাহারটা না থাকলে নতুন বউ বলে তাকে বোঝাই যেত না। এই মেয়ে দেখছি বহুরূপী। সকালে এক রঙ বিকালে আরেক রঙ। রানু পরেছে কচিকলাপাতা রঙ লাল পাড় শাড়ি। সবুজটা আর একটু গাঢ় হলেই তাকে মনে হত বাংলাদেশের জীবন্ত পতাকা। তবে এই রঙের একটা লাল টুকুটুক বউ। ধুর উপমাটা ঠিক হলোনা। লাল টুকটুক বউ এর পরণে থাকতে হবে লাল টুকটুক শাড়ি। সে যাই হোক রানুকে লাগছে যেন একটা সজীব ঘাসফুলের মত সতেজ আর সুন্দর।
রানু তাকে অবাক করে দিয়ে বললো,
-উঠে হাত মুখ ধুয়ে গোসল সেরে একবারে টেবিলে আসেন।নাস্তার টাইম আর নেই। এখন দুপুরের খাবারের সময় হয়েছে।আমি অনেক যত্ন করে আপনার জন্য গরুর মাংস ঝাল ঝাল রান্না করেছি। এই রান্নাটাও আমার দাদীর কাছে শেখা। দাদী বলে যে একবার আমার হাতের গরুর মাংস খাবে সে জীবনে আর কোনোদিন তার স্বাদই ভুলতে পারবেনা। কি সব অনর্গল বলে যায় মেয়েটা। কিন্তু অপূর্বের চোখ তখন আকাশে। বলে কি এই মেয়ে।গতকাল রাতে যে এই বাড়িতে এসেছে। সদ্য বিয়ে হওয়া নতুন বউ সে কিনা আজ সকালেই কোমরে আঁচল পেঁচিয়ে হেসেলে গিয়ে ঝাল ঝাল গরুর মাংস রান্না করতে বসে গেলো! তার হা করে চেয়ে থাকা দেখে আবারও তাড়া দেয় রানু।অপূর্ব ওঠে শেষ পর্যন্ত তবে তার বিহ্ববল ভাব কাটেনা ।


খাবার টেবিলে বাবা, মা আর বিয়ে বাড়ি হতে এখনও বিদায় না হওয়া দু একজন মুরুব্বী শ্রেনীর লোকজন বসে। রানু পাকা গিন্নীর মত তাদেরকে তুলে খাওয়াচ্ছে। মায়ের প্রফুল্ল মুখ আর বাবার অকারণ বাচালতা দেখে বুঝা যাচ্ছে তারাও রানুর একদিনেই পুরো দস্তর গৃহিনী হয়ে ওঠা আর পাকা পাকা কথা বার্তা নজরদারীতে মজা পাচ্ছেন খুব। তবে একদিনের মাঝেই যে সে বাড়ির সকলের মনের অন্দর মহলে ঢুকে পড়েছে তা বুঝতে আর বাকী রইলোনা অপুর।

অল্প কয়েকদিনের মাঝেই পুরো বাড়িতেই রানু রানু ভাব ছড়িয়ে পড়লো ।তিরাশী বছরের দাদী হতে শুরু করে বাবা, মা এমনকি বাড়ির পুরোনো রান্নার ঝি সুফিয়া বিবি পর্যন্ত কি এক অজ্ঞাত যাদুমন্ত্রে রানুর মহা ভক্ত হয়ে গেলো। অথচ দুমদাম চলাফেরা ও ধমকের সুরে কথা বলা কোনো মেয়েকেই এত সহজে শ্বসুর বাড়ির কারো পছন্দ হবার কথা নয়। তবে রানুর মাঝে রয়েছে এই কঠিন আবরণের মাঝে এক আশ্চর্য্য মমতা ও আন্তরিকতার মায়াজাল। যে জাল কাটিয়ে কেউই তাকে কোনোরকম দোষারোপ তো দূরের কথা একটা কটু বাক্যও বুঝি বলতে পারেনা। বরং বাবা তার বৌমা বলতে অজ্ঞান। মাও তার সংসারের চাবী রানুর আঁচলে বেঁধে দিয়ে বল্লেন, তোমার সংসার তুমি বুঝে নাও বৌমা,এইবার আমি একটু আরাম করি। বোঝা গেলো রানু খুবই সংসারী টাইপ মেয়ে। বাড়ির কোথায় কি হচ্ছে না হচ্ছে, কোন ড্রয়ারে সুই আছে আর কোন বারান্দার কোন কোনাতে শ্বশুর মশায় তার ছাতা ভুলে ফেলে রেখেছেন সবই তার নখদর্পনে ম্যাজিকের মত ভেসে ওঠে। রান্নাবান্না, ঘরদোর গুছিয়ে রাখা,বয়স্কা দাদীমার পরিচর্যা,শ্বশুর শ্বাশুড়ির এতটুকু অসুবিধা হতে না দেওয়া। কাজের লোকজন সকলের প্রতি ধমক ধামকের আড়ালে কি এক মোহনীয় ভালোবাসার দাবী।এককথায় সে এখন বাড়ির সর্বময় কত্রী।

সেদিন ছুটির দুপুরে পাশাপাশি শুয়ে ওরা দুজন। রানু হাত পা নেড়ে তার বাবার বাড়ির ঠিক পাশের বাসার বক্কর চাচার বউকে ধরা মহা বিস্ময়কর এক জ্বীন দেখার ঘটনা বর্ণনা করছে।অপূর্বের সেসবে মন নেই সেই অবাস্তব গল্পের চাইতে রাণুর ভেজা ভেজা দীঘল চুলের গোছা নিজের বুকের উপর টেনে নিয়ে চুল হতে ভেসে আসা মিষ্টি এক গন্ধের গবেষনাতেই সে লিপ্ত বেশী।ওর চুল থেকে এক অপূর্ব মিষ্টি গন্ধ আসছে। নিশ্চয় কোনো শ্যাম্পুর হবে। সে হঠাৎ জিগাসা করে,
- রানু তুমি আমাকে কতটুকু ভালোবাসো?
রাণু গল্প থামিয়ে কিছুক্ষন চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে ওর দিকে তারপর সেই পাগল পাগল হাসিতে ভেঙ্গে পড়ে। অপূর্ব খানিক লজ্জা পেয়ে যায়।
- আরে হাসছো কেনো? আমি কি হাসির কথা বললাম নাকি? রানু উঠে বসে তারপর মাথার বালিশটা তুলে দুমদাম মারতে থাকে তাকে।
- আরে কি হলো? পাগলী হয়ে গেলে নাকি? আমি কি জানতে চাইতে পারিনা? কতখানি ভালোবাসো আমাকে তুমি?
- না পারোনা। তুমি জানতে চাইতে পারোনা কিছুতেই। ঝর ঝর করে দুহাতে মুখ ঢেকে কেঁদে ফেলে রানু।অপূর্বের চোখে বিস্ময়!
- আরে আরে কি হলো পাগলীটার? রানু ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলে,
- ভালোবাসা কি মাপা যায়? বলে দিতে হয়? আমি কাকে ভালোবাসি, কতটুকু বাসি এসব মেপে মেপে বলতে হবে? কেনো কেনো তুমি জানতে চাইলে ? কেনো জানতে চাইবে তুমি? জানোনা তুমি? বুঝতে পারোনা? অপূর্ব লজ্জা পেয়ে যায়। পরম মমতায় বুকে টেনে নেয় ওকে।

---------------------------------------------------------

ঢাকার বৃহত্তম প্রাইভেট এক বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী হয়েছে অপুর। সে জয়েন করে সাত দিনের মাঝে ফিরে এলো। বউকে নিয়ে ঢাকাতেই নতুন ভাড়া বাসায় তুলবে।কিন্তু বাসায় ফিরে শুনতে পায় রানু গতকাল কোনো কারন ছাড়াই হুট করে তার বাবার বাড়িতে চলে গেছে। কবে আসবে বলে যায়নি। এমনকি যাবার পর থেকে ফোনে পর্যন্ত একটা যোগাযোগ করেনি। ঢাকায় চাকুরী নিয়ে ছুটোছুটিতে গত দুদিন রানুর সাথেও যোগাযোগ হয়নি অপুর।মা খুবই মনোক্ষুন্ন তবে তাকে দেখে মনে হলো রানুর চাইতে তিনি অপূর উপরেই যেন বেশ খানিকটা বিরক্ত। সব প্রশ্নের উত্তর কেমন যেন কাটা কাটা করে দিলেন। বাবাও যেন এড়িয়ে যাচ্ছে তাকে। খুব অবাক হলো অপু। শ্বসুরবাড়ি বেশী দূরে নয়।পরদিন সকালেই শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলো অপু।

--------------------------------------------------------

মুখোমুখি বসে অপু আর রানু। দুজনই গম্ভীর। চুপচাপ। ওদের সামনে খোলা পড়ে রয়েছে অপুর কন্ঠলগ্না একটি বিদেশী মেয়ের হাসিমুখে নানা ভঙ্গিতে তোলা বেশ কিছু ছবি।বেশ খানিকটা নীরবতার পর অপূর্ব জানতে চায়।
- তুমি কি সত্যি আর ফিরবেনা? দৃঢ়কন্ঠে রানু জানায়,
-না।
-তুমি যা ভাবছো তা কিন্তু সত্যি না। এই মেয়ের সাথে আমার সম্পর্ক ছিলো বটে তবে আমরা বিয়ে করিনি। এমনকি লিভ টুগেদারও না।
- আমি কিছু জানতে চাইনা।
- প্লিজ রানু। একটাবার বোঝার চেষ্টা করো।
- আমি আর একটা কথাও বাড়াতে চাইনা। আমি ডিভোর্স চাই। তুমি আমাকে বলতে পারতে। তা না করে কেনো লুকাতে গেলে? কেনো আমাকে তোমার ড্রয়ার গুছাতে গিয়ে লুকানো ছবিগুলি দেখতে হলো? উত্তরের অপেক্ষা বা করেই ফের রানু বলে, কোনো কেনোর জবাব আমার প্রয়োজন নেই। আমি আর কখনই তোমাকে সহ্য করতে পারবোনা। তুমি চলে যাও। আজ বেশ রাত হয়েছে । খাবার দিচ্ছি কাল সকালেই ফিরে যেও।অবাক করা এক শীতল কন্ঠ রানুর। রানু উঠে দাঁড়ায়। অপূর্বের চোখ ফেটে কান্না আসতে চায়।

-------------------------------------------------------

শেষ রাতের দিকে দরজা খুলে বেরিয়ে আসে রানু। বসার ঘরে পায়চারী করছে অপূর্ব। তার জন্য গুছিয়ে দেওয়া ঘরে ঘুমাতে যায়নি সে। সারারাত একফোটা ঘুমায়নি। রানুর দিকে চোখে তুলে তাকায় সে।অস্বাভাবিক গলায় জিগাসা করে।
- ঘুমাওনি রানু?
-না।
-ঘুম আসেনি।
-না। সাপের শীতলতা রানুর গলায়। অপূর্ব এগিয়ে আসে। দুহাত ধরে টেনে এনে মুখোমুখি সোফাতে বসায় ওকে।
- আসো রানু একটু গল্প করি। আর মাত্র তো কয়েকটা ঘন্টা বাকী।তারপর তো আর কোনোদিন কথা হবেনা আমাদের। শেষ মুহুর্তটুকু সুন্দরভাবে কাটাই এসো। রানু নির্বিকার। চুপ করে বসে আছে সে। অপূর্ব বলে চলে,

-মনে আছে রানু? সেই প্রথম দিনের কথা? আমার হাত থেকে সিগারেট লাইটার কেড়ে নিয়ে ফেলে দিয়েছিলে তুমি? আমি তা কোনোদিনও ভুলবোনা।তোমার সেই জাফরান মেশানো অদ্ভুত স্বাদের বাদামের শরবৎ যা তোমার দাদী তিনমাস ধরে শিখিয়েছিলেন তোমাকে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে অপু, ফের বলতে থাকে,
- তোমার সাথে কাটানো এই সাত মাস ছিলো আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়।আ গোল্ডেন এজ। আমি নিশ্চিৎভাবে জানি এমন কোনো সময় আর আমার জীবনে কখনও আসবেনা। তোমার হাতের সেই ঝাল ঝাল করে রাঁধা গরুর মাংস, জ্যোস্নারাতে গাওয়া তোমার গানগুলি ওমন করে কেউ পারবেনা কোনোদিন। আমার দূর্ভাগ্য আমি ধরে রাখতে পারলামনা তোমাকে। হয়তো আমার ভালোবাসায় খাঁদ ছিলো রানু অথবা আমার ভাগ্যের দোষ। যেটাই হোক বিধাতার অভিশাপ...........পারলাম না আমি ধরে রাখতে তোমাকে ...........তোমার মত একটা মেয়ে...... রানু তুমি খুব ভালো একটা মেয়ে। তোমার মত মেয়ে সহজে কারো ভাগ্যে জোটে না ..... আমাকে তুমি ক্ষমা করে দিও রানু..............তোমার মত একটা মেয়ের জীবনে আমার জন্য একটা বাজে স্মৃতি থাকবে এটা খুব খারাপ লাগছে আমার ..................আমি ...
থেমে যায় অপূর্ব। হঠাৎ খেয়াল করে রানুর চোখ দিয়ে পানি ঝরছে অনর্গল।ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে রানু। ওর পিঠে হাত রাখে অপূর্ব! ওর বুকের মধ্যে মুখ লুকিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে রানু। অপূর্ব কিছু বলেনা। চুপচাপ জড়িয়ে ধরে বসে থাকে ওকে।

কত অনন্তকাল.............................
কেউ জানেনা .........................................
তারা নিজেরাও না..............................................


উৎসর্গঃ রাফাভাইয়াকে....................রানুর মত একটা লক্ষী বউ জুটুক তার কপালে খুব তাড়াতাড়ি।:P
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৬
১৮৭টি মন্তব্য ১৮৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×