মুস্লিম,হিন্দু,খ্রিস্টান পারিবারিক আইনের অধীনে এই তিন ধর্মের লোকেরা বিয়ে করতে পারে। এছাড়াও এই তিনটি পারিবারিক আইনের বাইরে আরো একটি আইন রয়েছে যার মাধ্যমে বিয়ে করা যায়। এই আইনতই হল বিশেষ বিবাহ আইন ১৮৭২।
এই আইনের উদ্দেশ্য ঃ
এই আইনের মুল উদ্দেশ্য হলো দুটি ভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে বিয়েকে আইনসংগত করা। প্রচলিত ধর্মীয় আইনে ভিন্ন ধর্মের দুই ব্যক্তির বিয়ে করার ক্ষেত্রে কিছু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, যেমন-মুসলিম আইনে মুসলিম পুরুষ কিতাবিয়া অর্থাৎ খ্রিস্টান বা ইহুদি মেয়েকে বিয়ে করতে পারে।কিন্তু প্রতিমা উপাসিকাকে অর্থাৎ হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ বা জৈন মেয়েকে বিয়ে করতে পারে না, অন্য যে কোন ধর্মের মানুষকে বিয়ে করলে তা বাতিল হবে । খ্রিস্টান আইন অ হিন্দু আইনেও ভিন্ন ধর্মের মধ্যে বিয়ে সম্ভব নয় । ধর্মীয় পারিবারিক আইনে এই নিষেধাজ্ঞা থাকায় ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের মধ্যে যারা বিয়ে করতে চান তারা বিশেষ বিবাহ আইন ১৮৭২ এর অধীনে বিয়ে করতে পারেন ।
১৮৭২ সালের বিশেষ বিবাহ আইনে বলা আছে, যে ব্যক্তি খ্রিস্টান, ইহুদি, হিন্দু, মুসলিম, পারসি, শিখ অথবা জৈন কোন ধর্মই পালন করে না সে এই আইনের অধীনে বিয়ে করতে পারবে । তবে বিশেষ বিবাহ আইনে বিয়ে করতে হলে বিয়ের দু’পক্ষই উল্লিখিত কোন ধর্মের অনুসারী হতে পারবে না । কিন্তু বিয়েটি যদি হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ অ জৈনদের মধ্যে হয় তারা নিজ নিজ ধর্ম পালন অনুসরন করতে পারে ।
বিশেষ বিবাহ আইনে শর্ত ঃ
বিশেষ বিবাহ আইনে ছেলে ও মেয়ে দু’জনকেই --
১। অবিবাহিত থাকতে হবে । অর্থাৎ তাদের অন্য কোন স্বামী বা স্ত্রী বর্তমান থাকতে পারবে না ।
২। বাংলাদেশি আইন অনুযায়ী দু’জনকেই বিয়ের জন্য যে বয়স আছে তা হতে হবে অর্থাৎ ছেলের বয়স ২১ বছর ও মেয়ের বয়স ১৮ বছর হতে হবে।
৩। বিয়ের দু’ পক্ষ পরস্পরের সাথে রক্ত সম্পর্ক বা আত্মীয়তার কারনে নিষিদ্ধ স্তরের কেউ হতে পারবে না।
বিয়ের রেজিস্ট্রেশন
বিয়ের যে কোন এক পক্ষ রেজিস্ট্রারের কাছে বিয়ের জন্য লিখিত নোটিশ পাঠাবে । এই বিয়ে সরকার নিয়োজিত রেজিস্ট্রার সম্পাদন করবেন। নোটিশ দেয়ার ১৪ দিন পর বিয়ে সম্পাদন করা হবে । এই বিয়েতে কারো আপত্তি থেকে থাকলে দেওয়ানী আদালতের শরণাপন্ন হতে পারে । এই বিয়েতে তিনজন সাক্ষী এবং রেজিস্ট্রার উপস্থিত থাকবেন ।
বিবাহ বিচ্ছেদ
১৮৬৯ সালের ডিভোর্স অ্যাক্ট , যা খ্রিস্টানদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তা এই বিয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে ।