আমাদের দেশে একটি প্রচলিত ধারনা হলো কোর্টের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়া যায় এবং এটি একটি বৈধ বিয়ে । কিন্তু সাধারন মানুষের এ ধারনাটি সম্পূর্ণ ভুল ।এ ধরনের আদালতের এখতিয়ার বা যেটাকে "কোর্ট ম্যারেজ" বলা হয় (সাধারনত এ নামেই বেশি পরিচিত ) আসলে তা কোন বিয়ে নয়-এটি কেবল একটি ঘোষণা(declaration) বা অনুমতি মাত্র। এই অনুমতির পরেও 'মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইন ১৯৭৪' এবং বিধিমালা ১৯৭৫ অনুসারে কাজির মাধ্যমে নির্দিষ্ট ফরমে ফি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করার মাধ্যমেই কেবল বাংলাদেশে মুসলিম বিয়ে বৈধতা লাভ করে এবং আইনগত স্বীকৃতি লাভ করে ।
কেবল নারি ও পুরুষের স্বেচ্ছায় প্রদানকৃত অনুমতিতে কোন এক রকম বিয়ে হলেই সেটা বৈধ বিয়ে হবে না। বিয়ে হতে হবে নির্ধারিত আইনি পন্থায়। যেমন- সাদা কাগজে কিছু লিখে দিলেই বিয়ের কাজ সম্পূর্ণ হয় না বা কাবিননামার ফটোকপি ফরম পূরণের মাধ্যমেও বিয়ে হয় না। বিয়েটি অবশ্যই রেজিস্ট্রি হতে হবে, ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের ভলিউম বুকের কাবিননামার সমস্ত ঘর পুরন হওয়ার পর যেন স্বাক্ষর করা হয় সেদিকে নজর দিতে হবে এবং অবশ্যই তা কাজির সামনে হতে হবে । অনেকেই কাবিন নামার ফরম টি পড়ে দেখে না। বিয়ের দু'পক্ষেরই উচিত বিয়ের আগে কাবিননামার সব ঘর গুলি পড়া ও নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বৈধ উপায়ে বিয়ে সম্পাদন করা।
মুসলিম আইন অনুসারে বিয়ে একটি দেওয়ানী চুক্তি। এতে আচার ও আনুষ্ঠানিকতার ওপর তেমন জোর দেয়া হয় না । অন্যান্য চুক্তির মতোই এতে দুটি পক্ষ থাকে । একপক্ষ বিয়ের প্রস্তাব করে অপরপক্ষ তা গ্রহন করে। তবে দু'পক্ষেরই কিছু আইনগত শর্ত পুরন করতে হয়। অন্যান্য চুক্তি পালনের ক্ষেত্রে আইনানুসারে যেমন কিছু যোগ্যতার দরকার হয়, সে রকম কিছু যোগ্যতা বিয়ের জন্যও প্রয়োজন হয় ।