বরগুনার আমতলী উপজেলায় মরণব্যাধি ডিএমডিতে (ডুশেন মাসকুলার ডিসট্রফি) আক্রান্ত দুই ভাই শিপন ও সোলায়মান । এর আগে একই রোগে মারা গেছে তাদের দুই সহোদর । দুই ভাইয়ের এ বিরল রোগ নিয়ে সংবাদ প্রচারিত হয় প্রথমআলো, ইত্তেফাক, জনকণ্ঠ,সংবাদ ,যমুনা টিভি সহ সকল ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় । বিষয়টি মূল ধারার গণমাধ্যমের পাশাপাশি বরগুনা জেলা প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত ফেসবুক গ্রুপ সিটিজেন ভয়েজে বরগুনাতেও আলোচনায় আসে। সংবাদ কর্মীরা ও সিটিজেন জার্নালিস্টরা এ নিয়ে একাধিক পোস্ট করলে জেলা প্রশাসন সহ সকলের নজরে আসে। সিটিজেন জার্নালিস্ট টিম বরগুনা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে তুলে ধরার উদ্যোগ নেয় বিষয়টি । দুই ভাইয়ের এ বিরল রোগের বিষয়টি নিয়ে পোস্ট দেয়া হয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই-এর একটি ওপেন ফেসবুক গ্রুপে ।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের আলোচনায় অংশ নিতে অনুরোধ করা হয়। পাল্টে যেতে থাকে চিত্র। একে একে মন্তব্য করতে শুরু করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব সিরাজুল ইসলাম খান ও স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ ,সমাজ সেবা অধিদপ্তরের ডিজি গাজী কবির, জেলা প্রশাসক বরগুনা ড.মুহাঃ বশিরুল আলম সহ সংশ্লিষ্টরা ।
বরগুনা জেলা প্রশাসক পাবলিক সার্ভিস ইনোভেশন ফেসবুক গ্রুপে তার মন্তব্যে জানান , প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিবেন তিনি । কথা মত পরের দিন জেলা প্রশাসক শনিবারে চলে যান বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছেলে দুটি ও পরিবারের খোঁজ নিতে, করেন আর্থিক সহায়তা। সমাজ সেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও আর্থিক সহায়তা ও প্রতিবন্দি ভাতা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয় । ফেসবুক প্রতিটি পদক্ষেপের আপডেট দিতে থাকেন বরগুনার নাগরিক সাংবাদিকেরা।
জানা যায় এ রোগের কোন চিকিৎসা নেই । তবে অনেকেই মতামত দেয় জিনগত এ রোগ নিয়ে হতে পারে গবেষণা। অবশেষে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ডাঃ মাহবুব সজিব এর একটি মন্তব্যে খুলতে থাকে সম্ভাবনার দুয়ার । তিনি জানান, “জাতীয় নিউরোসাইন্স ইন্সটিটিউট হাসপাতালের একজন কর্মকর্তার সাথে কথা বললাম।উনি বললেন এ ধরণের রোগীর ব্যাপারে চিকিৎসা বিষয়ক গবেষণার বিষয়ে তারা আগ্রহী এবং কর্তৃপক্ষ তাদের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।রোগটি নিরাময়যোগ্য না হলেও নিউরোসাইন্সের এ সর্বোচ্চ ইনস্টিটিউটে উপযুক্ত গবেষণার মাধ্যমে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে”। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য সচিব মহোদয় তার মন্তব্যে জানান,আমরা অবশ্যই এ বিষয়ে দায়িত্ব নিতে চাই। সিভিল সার্জন বরগুনা নিউরোসাইন্স ইনস্টিউটের সাথে যোগাযোগ করে রোগীটিকে ঢাকাতে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন। নিউরোসাইন্স ইনস্টিটিউট প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। আমি বিশ্বাস করি সঠিক ডায়াগনিস-এর মাধ্যমে এই রোগকে নিরাময় করা সম্ভব হবে। আমাদের চিকিৎসকগণ এটাকে চ্যালেজ্ঞ হিসেবে নিয়ে রোগ নিরাময়ে সক্ষম হবে।[/sb
ফেসবুকের পোস্ট দেখে সরকারের সর্বচ্চো মহলের এমন সাড়া দেয়ার খবর ছড়িয়ে পরে বরগুনা জেলার সর্বত্র । অবশেষে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখ ছেলে দুটিকে নিয়ে ঢাকার পথে যাত্রা করেছে তার পরিবার।
সরকারের ডিজিটাল সেবার সুবিধা ভোগ করছে বাংলাদেশের প্রতিটি জনগণ, সেবা আজ হাতের মুঠোয় ।
যে পোস্টটির মাধ্যমে এটি সমাধান হয়েছে তার লিংক ঃসোশ্যাল মিডিয়ার কল্যানেই উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা হয়েছে বরগুনা আমতলী উপজেলার দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত দুই ভাইয়ের।
যে পোস্ট এর মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধানটি হয়েছে তার লিংক দেখতে পারেন :
https://www.facebook.com/groups/publicserviceinnovationblog/permalink/664223857112838/
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:৪৯