somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেনা কর্মকর্তাদেরর পরিকল্পনা নেয়া হয় এক বছরেরও আগে

২০ শে এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৫:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সেনা কর্মকর্তাদেরর পরিকল্পনা নেয়া হয় এক বছরেরও আগে
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার পরিকল্পনা নেয়া হয় এক বছরেরও আগে। ওই সময়ই সিদ্ধান্তনেয়া হয়- দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ, দাবি দাওয়া, অভাব-অভিযোগ ও অসনেত্মাষকে সামনে রেখেই এ বিদ্রোহ ঘটানো হবে। আর ওই সুযোগে হত্যা করা হবে বিডিআর-এ দায়িত্বরত চৌকস ও দক্ষ সেনা কর্মকর্তাদের। লক্ষ্য ছিল ২শ’ বছরের পুরনো প্রতিষ্ঠান বিডিআরকে ধ্বংস করা, সীমান্তঅরড়্গিত করা, সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করে সেনাবাহিনীর মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি করা- যাতে বিপুল সংখ্যক সেনা কর্মকর্তা চাকরি ছেড়ে দেয়। আর সেনাবাহিনীতে তৈরি হয় এক ধরনের শূন্যতা। এমন এক গভীর ষড়যন্ত্র নিয়েই ওই পরিকল্পনা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্ত সংশিস্নষ্ট কর্মকর্তারা। সূত্র জানায়, এই বিদ্রোহের অন্তরালে আরও সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য রয়েছে বলে তারা ধারণা করছেন। বিদ্রোহের পরিকল্পনা বছর খানেক আগে হওয়ার কারণে এটা নিশ্চিত হয়ে গেছে এখানে দাবিদাওয়ার বিষয়টি ছিল গৌণ। অপারেশন ডাল-ভাতের জন্য বিডিআর-এর সদস্যদের জন্য খাদ্য ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে কোন টাকা বরাদ্দ দেয়া না হলেও পরিকল্পনাকারীরা সদস্যদের মধ্যে এই ধারণা বদ্ধমূল করেছে যে, অপারেশন ডাল-ভাতের টাকা সেনা কর্মকর্তারা খেয়ে ফেলেছেন। এভাবে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিডিআরের সদস্যদের মধ্যে ড়্গোভ তৈরি করা হয়- যাতে তারা তাদের স্যারকে সম্মান না করে। ড়্গোভে, রাগে, দুঃখে অস্ত্র ধরে। ওদিকে সেনা কর্মকর্তাদের কিলিং মিশনে অংশ নেয়া কিলাররা মাথা পিছু ৩-৪ লাখ টাকা পেয়েছে বলে তথ্য রয়েছে। কিলিং মিশনে অংশ নেয়া তিনজন জওয়ান ও তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তিন লাখ টাকা করে উদ্ধার করেছে। অন্য কিলাররা টাকা পাওয়ার পর তা অন্য কোথাও সরিয়ে নেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিডিআরের ভেতরে দাবিদাওয়া আদায়ের জন্য বিদ্রোহ হবে এমন ধারণা সাধারণ জওয়ানদের দেয়া হলেও এর পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছিল কিলিং মিশনের পরিকল্পনা। কারা কারা অংশ নেবে, কারা নেতৃত্ব দেবে- অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে নেয়া সে পরিকল্পনা ষড়যন্ত্রকারীরা সফল করেছে। বিডিআর বিদ্রোহের পর পিলখানা থেকে মুক্তি পাওয়া এক কর্মকর্তা বলেছিলেন- এক একজন অফিসারকে হত্যার জন্য কিলাররা নগদ অর্থ পেয়েছে চার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা। ঘটনার পর ওই তথ্যের ভিত্তিতেই র‌্যাব ও সিআইডি অনুসন্ধান শুরু করে- বিদ্রোহের পেছনে তাদের দাবিদাওয়া ও অভাব-অভিযোগই একমাত্র কারণ ছিল কিনা তা জানতে। এ ক’দিনের তদনেত্মর পরও বিভিন্ন দিক থেকে পাওয়া তথ্য এবং বিডিআর জওয়ানদের কাছ থেকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী তারা প্রমাণ পেয়েছেন, বিডিআরের কর্মকর্তা ও জওয়ানদের মধ্যে নানারকম অভাব-অভিযোগ রয়েছে। তাদের দাবিদাওয়া ও অভাব-অভিযোগগুলো থাকলেও তা পূরণ হয়নি যথাযথভাবে। তারা আরও জানতে পেরেছেন- বিডিআরের ডিজি মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ বিডিআরের সদস্যদের দাবিদাওয়া নিয়ে গত চার বছর ধরেই দায়িত্ব পালন করা তিনটি সরকারের কাছে তুলে ধরেছেন এবং তা পূরণ করার জন্য যতটা সম্ভব চেষ্টা করেছেন। কিন' কোন সরকারের পক্ষ থেকেই সেসব দাবিদাওয়া চাওয়া-পাওয়া পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ মেলেনি। চ্যানেল আইকে দেয়া শেষ সাড়্গাৎকারে তিনি বলেছিলেন অনেক কথা। বিডিআর সদস্যদের দাবিদাওয়ার বিষয়টি চলতি বছরেও তিনি জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরও জানিয়েছেন। সূত্র জানায়, তদন্তসংশিস্নষ্ট কর্মকর্তারা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছেন সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করার জন্যই পরিকল্পিতভাবে ২৫শে ফেব্রম্নয়ারি বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। পরিকল্পনাকারী ও অংশগ্রহণকারী অনেকেই জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। ওই ঘটনা ঘটানোর জন্য তারা অনেক মিটিংয়ে অংশ নিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করে অপারেশন সফল করা হয়েছে। তদন্তকর্মকর্তারা বিভিন্ন জনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছেন, ৪-৫ মাস আগে ২৫শে ফেব্রুয়ারি ঘটনার মূল পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়। এছাড়াও তারা আরও জানতে পেরেছেন, এক বছরেরও আগে ওই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইন্ধনকারী ও পরিকল্পনাকারীরা গোপনে বৈঠকে করেছে। ওই সময়ে ইন্ধন কারীরা কাকে কাকে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্লানিং মিশনের সদস্য করা হবে তা বেছে নেয়। ওই হিসেবে তারা ডিএডি তৌহিদসহ আরও দু’জন ডিএডিকে নির্বাচন করে। তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর তারা গ্রাউন্ড ওয়ার্ক শুরু করে। এরপর পরিকল্পনাকারীরা বেশ কয়েক দফা বৈঠক করে। বিডিআরের যে ৩০-৩৫ জন পরিকল্পনাকারী ২৫শে ফেব্রম্নয়ারি বিদ্রোহের জন্য কাজ করেছে তারা অপারেশন সম্পর্কে জানতো। তবে কবে হবে তা ৪-৫ মাস আগেও জানতো না। তদন্ত কর্মকর্তারা আরও জানতে পেরেছেন, পরিকল্পনাকারীরা এই জন্য পিলখানা বিডিআর সদর দপ্তরের ভেতরেও প্রবেশ করেছে। সেখানকার অবস্থান সম্পর্কেও ধারণা নিয়েছে। তারা ভেতরের অপারেশন ম্যাপও তৈরি করেছিল। সেখানে কোথায় কোন কোন স্থাপনা রয়েছে তা-ও তারা সুনির্দিষ্ট করেছিল। কোন কোন পয়েন্টে অপারেশন চালাতে হবে, কি করতে হবে, কিভাবে করতে হবে এসব ব্যাপারে তারা সিদ্ধান্তনিয়েছিল। অপারেশনের আগে পিলখানায় রেকিও হয়েছে। রেকি করে পরিকল্পনাকারীরা দেখেছে অপারেশনে কোন ভুলত্রুটি থাকতে পারে কিনা। ওইসব সম্ভাবনা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েই তারা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। বিডিআরের অপারেশনে গত ১১ই জানুয়ারি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে কয়েকজন কমান্ডো দেশে এসে বেশ কয়েকটি বৈঠকে অংশ নিয়েছে বলে যে তথ্য মিলেছে তা খতিয়ে দেখছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। এখনও ওই সব কমান্ডোর ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেননি তারা। একজন তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, বাইরে থেকে কমান্ডো এসে অপারেশন করেছে, অপারেশনের পর চলে গেছে নিরাপদে এমন তথ্য তারা পেয়েছেন। আরও পেয়েছেন ওই কমান্ডোরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। ওই সব বৈঠকের ব্যাপারে তারা খোঁজখবর করছেন। বিডিআর বিদ্রোহের জন্য কয়েকজন ব্যবসায়ী টাকা দিয়েছেন বলে তদন্ত কারীরা তথ্য পেলেও এখনও কোন প্রমাণ পাননি কোন কোন ব্যবসায়ী টাকা দিয়েছেন। তারা খতিয়ে দেখছেন দেশী ও বিদেশী কারা এই বিদ্রোহের জন্য গত বছর খানেক ধরে কত টাকা খরচ করেছেন।
সূত্রঃ নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ঠিকানা, ০৬.০৪.০৯ সংখ্যা ।

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×