বেসরকারী সংস্থার খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক প্রকল্পে কাজ করার সুবাদে আইলা আক্রান্ত এলাকা কয়রাতে গিয়েছিলাম অফিসের নিয়মিত কাজে। আমাদের প্রকল্পের অর্ন্তভুক্ত আমাদী ইউনিয়নের এক নং ওয়ার্ডের একটি পরিবার পরিদর্শন কালে দেখতে পেলাম বাড়িতে নি:সন্তান দম্পতি যাদের দু'জনের বয়স ৮০-র উপরে। তাদের উপার্জন করার ক্ষমতা নাই, কোন সম্পদও নাই। আেশপাশের লোকজন দুএকমুটো খাবার দেয় তা খেয়েই এবং একে অপরের প্রতি ভালবাসার সম্পদটুকু নিয়ে না ফেরার দেশে যাবার জন্য অপেক্ষা করছে। তাদের নেই কোন আশা আকাংখা, নেই কোন উচ্চ বিলাসিতা। শুধু তিন বেলা খেতে পারায় তাদের একমাত্র চাওয়া। আমাদের দেখেই বৃদ্ধা মহিলার সে কি আর্তনাদ। তার স্বামীর মাথায় একবার ফু দেয়, একবার হাত বুলিয়ে দেয় এবং অধিক ভালবাসার পরশ ছড়িয়ে দেয় এবং বলে উঠে আমার এই পাগলটার জন্যে তোমরা কিছু কর, যাতে আমি ওকে তিনবেলা খাওয়াতে পারি। আমারা দু'জনে আর কোন প্রশ্ন করতে পারলাম না। সাথে সাথে আমাদের প্রকল্পে প্রাথমিক অর্ন্তভুক্ত করে নিলাম। এবং তাৎক্ষনিকভাবে সামান্য পরিমাণে কিছু সহায়তা ব্যক্তিতগতভাবে প্রদান করলাম।
এদের ভালবাসা দেখে মনে হল কিসের লাইলী মজনু কিসের শাজাহান মমতাজ! এই অভাবের মধ্যেও তাদের এই ভালবাসা দেখে সত্যি মুগ্দ্ধ হলাম, যেখানে প্রতিনিয়ত সংবাদপত্রে দেখতে পাই স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন, স্ত্রীর হাতে স্বামী খুন, সেখানে এই নির্ভেজাল ভালবাসা অমাদের উজ্জীবিত করল।