somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি মেয়ে ভূত (তৃতীয় পর্ব)

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভূতের মা রান্না জানে! আগে কখনো শুনুনি। ভয়ে একবার আপনি বলছি আরেকবার তুমি, কিন্তু সে আমাকে আপনি বলে যাচ্ছিলো। আমি বললাম-
: আজ কিছু খাননি?
: না চাহিদা গুলো গত রাতে’ই মিটে গেছে।
অবাক হচ্ছি মেয়েটা মানুষের মত রহ্যসের জাল বুনে যাচ্ছে। মেয়েটা যথেস্ট সুন্দর, লম্বায় প্রায় আমার সমান সমান। হাটা শুরু করলাম। সেও আমার সাথে পা বাড়ালো। তাকে বারন করার ক্ষমতা বা সাহস কোনটা নেই আমার। আমার পায়ের সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে পা ফেলছে। তার জন্য মাঝে মাঝে বেশি মিলাতে গিয়ে সামনে ও চলে গেছিলো দু’বার। আমি গতি কমালাম।
: আচ্ছা এতো রাতে আপনি কি কাজে বাইরে?
: ভূতেদের কোন কাজ থাকে না, ভিতর বাহির সব এক।
সোজা সাপ্টা জবাব, আমার ডান পাশে হাটছে। ডান পাশটাও শিরশির করছে। এখনো আমি জানি না মেয়েটা কে মানুষ না ভূত। যদিও সে নিজেকে বার বার ভূত বলে পরিচয় দিচ্ছিলো।
: বুঝলাম,কিন্তু খালি পায়ে কেনো
: আমাদের স্যান্ডেল লাগে না।
: ও!সে ভালো। যে ভাবে খালি পায়ে হাটছেন তাতে কোন সৌখিন পেলে ‘ইয়ে’ভেবে তুলে নিয়ে যাবে।
: ইয়ে’ মানে আপনি আমাকে বেশ্যা ভাবছেন? আমি ভূত।
: না না। প্রথমে ভয় দেখালেন এখন টাস টাস কথা বলে যাচ্ছেন। আপনি মানুষ না ভূত ঠাহর করতে পারছি না।
বেশ্যাদের নিয়ে বেশ ধারনা আছে মেয়েটার ইয়ে বলতে বুঝে গেলো। আমার ও ধারনা আছে, কিন্তু সৌখিন মানুষদের মত না। যতটুকু জানি বেশ্যারা পতিতালয়ে খালি পায়ে থাকে। বাইরে খালি পায়ে বের হয় কিনা জানা নেই। আরেকটা সিগারেট ধরাতে ধরাতে বললাম,
: সিগারেট খাবেন?
: ভূতেরা সিগারেট খায় না।
: হাসালেন! তবে হাসার শব্দ করবা না ভয়ে আছি বলে। আপনাকে আমার ভূত বলে মনে হচ্ছে না। কি রাতে এই ভাবে ভয় দেখিয়ে সব কেরে নেন তাই না?কবে থেকে শুরু করলেন?কিন্তু মরা লাশের পারফিউম কোথায় পেলেন?বিক্রি হয়!
: একদম ফালতু কথা বলবে না। বলছি মরে ভূত হয়েছি। তবে ভূতের আচরন,ভয় দেখানোর স্টাইল এখনো শেখা হয়নি। আপনি প্রথম মানুষ যাকে প্রথম ভয় দেখালাম।
শেষ কথাটায় ভয় দেখাতে না পাওয়ার অসায়ত্বের টের পাচ্ছি। মেয়ে দেখে পুরুষ ভয় পায় কিনা জানি না। কিন্তু আমার জায়গায় কোন মেয়ে আর মেয়েটারর জায়গায় কোন ছেলে থাকলে প্রথম ভয়টা ধর্ষন হওয়ার পেতো। ভূতে ধর্ষন! অনেকটা পথ চলে এসেছি কথা বলতে বলতে। মেয়েটার কথায় কথায় রাগ অভিমান সব ছিলো তাই কথা বলার আগ্রহ আরো বেড়ে গেলো।
: এ রাস্তায় কোথা থেকে? বাসা কি এখানে’ই?
: যাচ্ছিলাম। বাসা এখানে তবে সে বাসা ছেড়ে যাচ্ছিলাম। আপনাকে দেখে নেমে পড়লাম।
: নেমে পড়লেন মানে! আকাশ থেকে?
: না গাড়ি থেকে, সাদা এম্বুলেন্স থেকে।
: কিন্তু এম্বুলেন্সে কেনো ওটাতো লাশবাহি মনে হচ্ছিলো।
: আমার লাশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সে আমার বলতেই বুকের ভেতরটা আবার ধপ করে উঠলো। ভয় পাইনি বলে হয়ত আবার নতুন গল্প বানিয়ে ভয় দেখানোর চেস্টা করছে। তার লাশ গাড়িতে যাচ্ছে আর সে আমার সাথে হাটছে আর কথা বলছে! ভয় পাবো না হাসবো ভেবে পাচ্ছিলাম না।
: প্রথম বারতো ভয় দেখাতে গিয়ে ফেল মারছো,এখন আবার লাশ,মরা, এ শব্দ গুলো বলে ভয় দেখানোর চেস্টা করছো।
: সত্যি আমার লাশ। পিছনের হাসপাতালটার হিমাগারে ছিলো এখন গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
বিশ্বাস হলো না কথা গুলো। সত্যি কি ভূত না মানুষ! আমার সাথে এরকম হওয়ার মানে কি।
: আচ্ছা মানলাম, আপনি ভূত। সুন্দরি ভূত। কোনো প্রমান দিতে পারবেন?ভয় ওতো ঠিক মত দেখাতে পারেন না।
: আপনার সাথে মরার আগে দেখা হলে হয়ত মরার ইচ্ছে হতো না। আপনি একটা মেয়েকে বিশ্বাস করছেন না! তাও আবার মাঝ রাতে। আমার লাশের সাথে আমার চেহারার মিল পেলেতো বিশ্বাস করবেন?
: ভূতে বিশ্বাস! লাশ হয়ত আপনার যমজ বোনের সহজ যুক্তি।
: ভূতের বেলায়ও যুক্তি খোজেন? আমার বোন হলে সে মারা গেছে আর আমি মাঝ রাতে তাকে ফেলে আপনার সাথে হেটে বেড়াবো!
: না আপনি আমার কল্পনা।
: না আমি ভূত। মরে ভূত হয়েছি।
: প্রমান দিতে পারলে বিশ্বাস করবো।
: যাবেন আমার সাথে? যেখানে আমার জন্য কবর খোড়া আছে সকাল থেকে।
(চলব….
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×