somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রাচীন ভারতে আয়ুর্বেদ চিকিৎসা

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রোগ একটা সার্বজনীন অভিজ্ঞতা। মানবজাতির ইতিহাস যতটুকু জানা যায় তাতে দেখা গেছে সর্বকালের ইতিহাসে মানুষের রোগের অভিজ্ঞতা আছে। মানুষের ইতিহাস যতদিনের রোগের ইতিহাসও তার সমসাময়িক। সেই সাথে এও দেখা গেছে সর্বত্রই মানুষ এই রোগ মোকাবিলার নানা পন্থা অবলম্বন করেছেন। রোগ নিরাময়ের এই ব্যাবস্থায় দুইটা বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। একটা হচ্ছে স্থানিয় প্রকৃতির নানা উপাদানের উপর এবং দ্বিতীয়ত রোগমুক্তির পুরো প্রক্রিয়াটি প্রভাবিত হয়েছে স্থানিয় ধার্মিক এবং সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল দিয়ে। ফলে চিকিৎসা ব্যাপারটা হয়ে উঠেছে জাগতিক এবং আধ্যাতিক এই দুইয়ের সমন্বিত কর্মকান্ড। একটা ধর্মীয় ও সংকৃতিক কাঠামোর ভিতর দিয়েই মানব সভ্যতার বিভিন্ন অঞ্চলের রোগ নির্নয়ের পদ্ধতি, চিকিৎসার নানা স্বতন্ত্র গড়ে উঠে। এই ধারাগুলোর অন্যতম হছে ভারতীয় আয়ুর্বেদ।

প্রাচীন ভারতের অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি ছিল আয়ুর্বেদ। সেই সুত্রে বলা বাহুল্য, প্রাচীন বাংলাতেও আয়ুর্বেদই ছিল চিকিৎসার মূল ধারা। আয়ুর্বেদ মুলত একটি ধর্মগ্রন্থই। বেদ শাস্ত্রেরই একটি শাখা এটি। আয়ু বৃদ্ধির বেদ। হিন্দু পুরানে দেবতাদের চিকিৎসক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ‘ধনন্তরীকে’ ।তাকেই বিবেচনা করা হত আয়ুর্বেদের জনক হিসেবে। ভারত বর্ষের আয়ুর্বেদ চিকিৎসার ইতিহাস দুহাজারের বছরেরেও অধিক। কথিত আছে আয়ুর্বেদের মূল নীতিগুলো পদ্ধতি আকারে সংরক্ষন করেছিলেন ‘কনিষ্ক’ রাজার চিকিৎসক ‘চরক’। যা ‘চরক সংহিতা’ নামে বিখ্যাত। আয়ুর্বেদ মনে করে দেহের ভিতরের বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্যহীনতাই তৈরী করে রোগ। আয়ুর্বেদ চিকিৎসার মূল লক্ষ্য হচ্ছে শরীরের সেই ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা। ঔষধ পথ্য ও জীবনযাপনের নানা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে চলে আয়ুর্বেদের চিকিৎসা। ঔষধের উৎস হচ্ছে ভেষজ উদ্ভিদ আর জীবনযাপনের অভ্যাসের মধ্যে রয়েছে যোগব্যায়াম, ধ্যান সহ নানা চর্চা। ধরনা করা হয় বৌদ্ধ দর্শনের নানা উপদান আয়ুর্বেদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিশেষ করে ধ্যান মগ্ন হোয়াকে আয়ুর্বেদ চিকিৎসার অংশ হবার পিছনে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ভুমিকা আছে বমে মনে করা হয় । আয়ুর্বেদ সম্পর্কে এতটুকু নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, হাজার বছর আগে মানুষের দেহ ও রোগকে বুঝার যে চেষ্ঠা আয়ুর্বেদে হয়েছে তা এখনো প্রাসংগিক । বিশেষ করে মানুষের দেহকে মহাবিশ্বের একটা অংশ হিসেবে দেখবার একটা দৃষ্টিভঙ্গী , কিম্বা দেহ ও অনুভূতির সমন্বিত চিকিৎসা আধুনিক যুগেও নান ভাবে সমাদৃত। চিকিৎসা হিসেবে ধ্যান বা মেডীটেশন নতুন করে সমাদৃত হয়ে উঠেছে সারা পৃথিবীতে । উল্লেখ্য প্রাচীন ভারতে বিশেষ করে বাংলা অঞ্চলে শল্য চিকিৎসারও ব্যাপক প্রসারের খোজ পাওয়া যায়। চরকের মত ‘সশ্রত’ নামের একজন শল্য চিকিৎসক সশ্রত সঙ্ঘিতা রচনা করেন । যিনি কাশীর অধিবাসী ছিলেন বলে ধারনা করা যায়। তাকে ভারতবর্ষের সার্জারীর জনক বলে বিবেচনা করা হয়। বিস্নয়ের ব্যাপার হচ্ছে ‘শস্রত’ তাঁর বইয়ে অসংখ্য সার্জারীর প্রক্রিয়ার বর্ননা দিয়ে গেছেন । সেই সঙ্গে দিয়ে গেছেন অসংখ্য সার্জিকাল যন্ত্রপাতির বিবরন। কামারদের কাছ থেকে কি করে অতি সূক্ষ সেইসব যন্ত্র গুলো বানিয়ে নিতে হবে তারো বিবরন আছে সেই বইয়ে ।

তবে আয়ুর্বেদ মনে করে মানুষের জীবন– দেহ, অনুভুতি ও আত্নার একটা সমন্বয়। মানুষের শরীরের ধাতুগুলো — রস,রক্ত, মাংস,অস্থি,মজ্জা,মেদ ও শুক্র নানা কারনে ভারসাম্যহীনতায় পড়তে পারে। তাই ভেষজ ঔষদ, নানাবিধ খাদ্য ও জীবন যাপনের অভ্যাস পরিবর্তনের(যোগ ব্যায়াম , ধ্যান) ইত্যাদির মাধ্যমে আমরা পেতে পারি সুস্থ ও সাফল্যমন্ডিত দীর্ঘ জীবন।

সূত্রঃ এই জনপদে চিকিৎসাচর্চাঃ ডাঃ শাহাদুজ্জামান]
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৬
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার বাকস্বাধীনতা সব সময়ই ছিলো, এখনো আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৯



ছোটকালে ক্লাশে অপ্র‌য়োজনীয় কথা বলে, অকারণ অভিযোগ করে, অন্যকে কটু কথা বলে শিক্ষকের মার খেয়েছিলেন নাকি? আমি অপ্রয়োজনীয় কথা বলে ক্লাশে কিংবা সহপাঠিদের বিরক্তির কারণ হইনি; ইহার পেছনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিডলাইফ ক্রাইসিস: বাঁচতে হলে জানতেই হবে

লিখেছেন মন থেকে বলি, ১৩ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:০০



"ধুর ছাই!
কিচ্ছু ভাল্লাগে না।
বা**, কী করলাম এতোদিন।
সব ফালতু।"


ক্যালেন্ডার কী বলছে? চল্লিশ পেরিয়েছে?

তাহলে দশটা মিনিট দিন। কারণ ব্যাপক সম্ভাবনা ৯৯% যে এই মুহূর্তে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের বাড়ির কাজের বুয়া যদি ব্লগে আসত ! :D

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:২৩

কয়েক বছর আগের কথা। আমাদের বাড়ির দীর্ঘদিন এক মহিলা কাজ করেছেন । তারপর তার ছেলেদের অবস্থা একটু ভাল হয়ে গেলে আর তাকে কাজ করতে দেয় নি। তবে অভ্যাসের কারণে বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ লিখেছি ১১ বছর ১ সপ্তাহ

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:৪২


গত কয়েকমাস যাবত চাকরিগত ঝামেলায় ব্লগে তেমন সময় দিতে পারিনি। দেশের পরিস্থিতির মতো আমার পরিস্থিতিও ছিল টালমাটাল। আগের চাকরি ছেড়ে নতুন চাকরি টিকিয়ে রাখতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় চলেছি। অফিসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ এবং কিছু কথা......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৩০

আমাদের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ এবং কিছু কথা.........

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমাদের সফলতার চেয়ে ব্যর্থতার বিষাদময় গ্লানির সঙ্গেই বোধকরি বেশি সম্পর্ক। কদাচিৎ কোনো বড় দলকে পরাজিত করার পর আমরা পুরো বাংলাদেশ এখনো আবেগে আপ্লুত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×