আল্লামা শফীর ‘খোলা চিঠি’ নিয়ে তোলপাড়
ডেস্ক রিপোর্ট : দেশের শীর্ষ আলেম, বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের (বেফাক) চেয়ারম্যান আল্লামা আহমদ শফী’র একটি খোলা চিঠি নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক তোলপাড় চলছে। এতে নড়েচড়ে বসেছেন সারা দেশের আলেম-ওলামা ও দ্বীনদার মুসলমানরা। নতুন বার্তা
সরকার ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আল্লামা শফী’র ‘ইসলাম বিদ্বেষের প্রতিবাদে গর্জে উঠুন’ শিরোনামের ওই খোলা চিঠিটি মঙ্গলবারের কয়েকটি দৈনিকের প্রথম পাতায় ছাপা হয়েছে। শাহবাগ আন্দোলনে ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড, নিহত রাজীবসহ ব্লগারদের ইসলামবিরোধী ও আপত্তিকর ব্লগ, এই আন্দোলনে কাদিয়ানী সম্পৃক্ততা এসব বিষয় উল্লেখ করে দেশবাসী ও সরকারের কাছে তা প্রতিরোধের আহ্বান জানানো হয়েছে।
হেফাজতের ইসলাম বাংলাদেশের নামে প্রচারিত ওই খোলা চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, শাহবাগ আন্দোলনে ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড হচ্ছে। অগ্নিপূজক ও পৌত্তলিকদের অনুকরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, মাইকে অনবরত গান-বাজনা, নারী-পুরুষ মিলে অশ্লীলতা, দাড়ি-টুপির অবমাননা, ইসলামি রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি এসবকে ইসলামবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
খোলা চিঠিতে দাবি করা হয়, এই আন্দোলনের পেছনে মুসলিম নামধারী আহমদিয়া জামাত কাদিয়ানিদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। একই মঞ্চে ঘাদানিক নেতা শাহরিয়ার কবির ও আহমদিয়া জামাতের নায়েবে আমির আব্দুল আউয়াল খান পাশাপাশি বসে অনুষ্ঠান করেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে কাদিয়ানীদের পক্ষো অংশ রয়েছে।
খোলা চিঠিতে কয়েকটি ব্লগের নাম উল্লেখ করে এসবে ইসলামবিরোধী ও কটূক্তিমূলক যেসব লেখা প্রকাশিত হয় তা উল্লেখ করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়।
আল্লামা শফী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন,‘সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে চলমান সব আন্দোলনের প্রতি যেভাবে ব্যাপক সহানুভূতি প্রদর্শন করেছে অনুরূপভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশের জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে ইসলাম অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আল্লাহ, রাসুল, কোরআন, দাড়ি-টুপি, পর্দা-হিজাব প্রভৃতি ইসলামি প্রতীক অবমাননার মাধ্যমে বিরাজিত সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি বিনষ্ট করে দেশে সা¤প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
বাংলাদেশের বর্ষীয়ান ও শীর্ষ এই আলেম জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘শাহবাগকেন্দ্রিক আন্দোলনকে রাজনৈতিক দৃষ্টিতে বিচার না করে, বিশেষ কোনো দল/গোষ্ঠীর পক্ষে-বিপক্ষে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হিসেবে সরলীকরণে না গিয়ে, এর অন্তর্নিহিত রূপ ও চরিত্র অনুধাবন করুন। শাহবাগ চত্বরের কথিত জাগরণ মঞ্চের বিগত দুই সপ্তাহের কার্যক্রমকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে পরিষ্কার হয়ে গেছে-এটা মোটেও স্বাধীনতার পক্ষে-বিপক্ষের লড়াই নয়। তাই দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে নিজের ঈমান, আকিদা-বিশ্বাস ও ইসলামের প্রতীকসমূহের সংরক্ষণের পক্ষে সোচ্চার ও জোরালো ভূমিকা রাখুন।’
উল্লেখ্য, শাহবাগ আন্দোলনের ব্যাপারে প্রথম থেকে মুখ না খুললেও ব্লগার রাজীব হত্যার পর তার ইসলামবিদ্বেষী ব্লগের কথা প্রচার হওয়ায় সারা দেশের কওমি মাদরাসার আলেম-ওলামা নড়েচড়ে বসেছেন। যুদ্ধাপরাধের বিচারের পক্ষে-বিপক্ষে কিছু না বললেও ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠছেন আলেমরা।
আমাদের সময়
স্থানীয় সময় : ১৪৫০ ঘণ্টা, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩