শব্দ দুষন কি, কাকে বলে, ক্যামনে হয় এইডা দুধের শিশুও ভাল মত জানে বিশেষ করে আমাদরে দেশে ।
গত কিছুদিন ধরে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে এই শব্দ দুষন নামক নাগরিক সুবিধাটি ভোগ করছি। আমরা কত অভাগা তাই না অনেক দরকারী সুবিধা চাইতে চাইতে মুখের ফ্যানা বের করে ফেলি কিন্তু পাইনা আর এই ধরনের সুবিধার কত ছড়াছড়ি যার তালিকা তৈরি করার দুঃসাহস আমার নাই।
বাসার পাশে নতুন বাড়ি তৈরি হচ্ছে।যার প্রারম্ভিক কাজ পাইলিং চলছে আজ ১৫ দিনের মত । ভোর ৬ টার দিকে ২ইটা ভয়ানক যন্ত্র চালু করে যার শব্দ মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কতগুন বেশী এটা ঢাকা শহরের বাসিন্দা হিসেবে কারই অজানা নয়।
এমনিতেই রাত ১২ টার আগে ঢাকায় ট্রাক ঢুকতে পারেনা। সুতরাং নির্মান সামগ্রী নিয়ে ট্রাকগুলা প্রায় রাত ২ইটার দিকে ঢোকে। প্রচন্ড উচ্চ শব্দে ট্রাকের কভার খোলে এবং ইট, বালু, রড এত সজোরে শব্দ করে নিচে নিক্ষেপ করে যে সারাদিনের ক্লান্তির পর ঘুমিয়ে পরা মানুষগুলার স্ট্রোক হবার মত অবস্হা হয়। শিশু, বৃদ্ধ, হৃদরোগের / উচ্চ রক্তচাপের রোগীগুলার কথা চিন্তা করেন?
রাতের এই অত্যাচার শেষ হবার পর একটু ঘুমে মননিবেশ করলে মাঝরাতে চলে যায় বিদ্যুৎ। বিদ্যুতের কথা নাইবা বল্লাম । সকাল ৬ টায় পাইলিং করার ২ইটা যন্ত্র চালু করে তখন সত্যিই মরে যেতে মন চায়। একয়দিন ঘুমরে কষ্টে আমার রক্তচাপ বেড়ে ১৪০/১১০ হয়ে গেছে যেখানে আমার স্বাভাবিক রক্তচাপ ছিল ১২০/৮০।
কাজে কর্মে মননিবেশ তো দুরের কথা শব্দদুষনের সবগুলা ক্ষতি কমবেশী প্রতিফলিত হচ্ছে আমার মধ্যে। এই সাত সকালে এই প্রকান্ড অত্যাচারে ঘুম থেকে উঠলাম। মাথা ভন ভন করছে।
আশেপাশে যত বাড়িওয়ালা আছেন, ভাবলাম তারা যদি এটার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন তাহলে হয়ত কোন সুফল পেতে পারি, পরক্ষনে ভাবলাম ওনারাইতো এককালে
আপনারা কোন বুদ্ধি দিতে পারেন ?? এটার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্হা কি নেয়া যায় কি না ?? জানি অনেক সমস্যা। এবং একটার সাথে আরেকটা চেইনের মত যুক্ত। তাই বলে এমন তো না যে কিছুই করার নাই
[এই ভটভটি যন্ত্রগুলার সাথে একটু উন্নত সাইলেন্সার লাগালে আশাকরি শব্দের মাত্রা অনেকটা সহনশীল হবে।]
পরিশেষে বাসার পাশে আরও ৩ টা ফাকা প্লট পড়ে আছে। যেটার কাজ চলছে সেটা সহ ৪ টা ছিল। বাকি গুলার যদি কাজ শুরু হয় একের পর এক তাহলে এই অধম সামু ফাঠকের মৃত্যু অনিবার্য। এক মৃত্যুপথযাত্রী সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১১ বিকাল ৫:৪২