somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এইচ এস সি এবং আমরা ২

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের লিখাটায় আমি প্রশ্নের এভুলেশন দিয়েছিলাম।নবিশ পোস্ট
এ প্লাস কেন্দ্রিক। অনেক বড় ভাইয়ারা কমেন্ট করেছেন।আসলে আমার পোস্ট লিখার উদ্দেশ্যটা এখানে,এই লিখায় বলছি।নাম্বার ফ্যাক্ট না। ফ্যাক্ট গুলা বলি একটা স্টুডেন্টের মধ্যে ক্রিয়েটিভিটি জন্মগতভাবেই থাকে।স্টুডেন্ট বাদ দিই,মানুষই বলি
।প্রমথ চৌধুরী বলেছিলেন আমাদের যেটুকু প্রাণ আছে তা শিক্ষাব্যবস্থাতেই নিষ্কাশিত হয়ে যায়।আমি কিছু পয়েন্ট তুলে ধরতে চাই।আগে বললাম এই এইচ এস সি র কথা। এবার আস্তে আস্তে মূল বেপারগুলায় আসি।কেন আমি এই লিখা লিখতে বসলাম।
#ঘটনা-১
আমি ফেসবুক ব্যবহার করি না অনেকদিন।ভালো লাগে না আমার এই জিনিস।কিন্তু সেদিন এক বন্ধুর আইডি থেকে দেখলাম নামকরা এক কলেজের স্যার স্ট্যাটাস আপডেট দিলেন।বাংলার শিক্ষক তিনি।তিনি স্ট্যাটাসে লিখলেন একটা ছাত্রকে ৬০ এ ০ দিলেন।তিনি নাকি এত আনন্দ আগে খাতা কেটে কখনো পান নাই।আমার সমস্যাটা এই জায়গায়।একজন শিক্ষক খাতা কাটছেন, তিনি তাঁর মর্জিমত নাম্বার দিবেন।ছেলে ভালো লিখলে ভালো,খারাপ লিখলে খারাপ। কিন্তু স্টুডেন্টকে শত্রু মনে করলে স্টুডেন্টরা যাবে কই?তিনি খাতা কেটে পৈশাচিক আনন্দ পাচ্ছেন,এটা কি সুস্থ মানসিকতার লক্ষণ আদৌ।আরেকজন ম্যাডাম প্রশ্নের ব্যাখ্যা করে ঐ স্যারকে সাপোর্ট করে বললেন উনি ঠিক।আচ্ছা আসেন এবার উনার লজিক গুলা একটু কাটি।আমি ক্লাস সিক্স থেকে স্যারের সাথে থেকে থেকে সৃজনশীল পদ্ধতি শিখসি।বলা যায় শিক্ষাবোর্ডের একটা প্রশ্নের নাম্বার দেয়ার নীতিগুলা একটু আকটু জানি।তো যেটা বলছিলাম।পদ্ধতিটার নাম কিন্তু সৃজনশীল।তোমার কাছে যা মনে হয় তুমি তা লিখবা।এখানে অনেক বড় ভাইয়া আপুরা আছেন। যারা এই পদ্ধতি ফেইস করেন নাই।তাঁদের জন্য পদ্ধতিটার সম্পর্কে একটু বলি।এখানে চারটা প্রশ্ন থাকে।প্রথমটা জ্ঞানমূলক, ১ নম্বরের প্রশ্ন।দ্বিতীয়টা অনুধাবন, ২ নম্বরের।তৃতীয়টা প্রয়োগ, ৩ নম্বরের, চতুর্থটা উচ্চতর দক্ষতা, ৪ নম্বরের। এবার এর বিশ্লেষণে যাই,

১. জ্ঞানমূলক একটা অ্যাকুরেট এন্সার।এখানে যা প্রশ্নে চাওয়া হয় বইয়ের মত হুবহু লিখতে হয়।সো ভুল হলে সোজা ০.
২.অনুধাবনে একটা লাইন দিয়ে তা ব্যাখ্যা করা বলা হয়।কেন,কি এই মার্কা প্রশ্ন।এখানে একটা চ্যাপ্টারের সম্পর্কে সূক্ষ্ম ধারণা দিতে হয় লাইনের ব্যাখ্যায়।
৩. প্রয়োগ।ধরুন একটা গল্প পড়লেন, এরপর আপনাকে একটা উদ্দীপক দিয়ে সেই গল্পের অনুরূপ একটা চিত্রকল্প দেয়া হল।এরপর সেখান থেকে আপনার মিল খুজে বের করতে বলল।এখানে দেখুন দুইটা গল্পে একাধিক মিল থাকতেই পারে।সুতরাং শিক্ষক যেকোন একটা এন্সার ধরে কাটতে পারবেন না।
৪. উচ্চতর দক্ষতাতেও একই।মিলগুলো বা অমিলগুলো বিশ্লেষনন কর।এখানে প্রশ্নে প্রায় সময় থাকে "তোমার মতামত দাও".

এবার মোদ্দাকথায় আসেন। জ্ঞানমূলক নাহয় ভুল গেল অ্যাকুরেসির কারননে,অনুধাবন ও ধরেন গেল চ্যাপ্টারের লিংকিং করতে না পারায়।কিন্তু প্রয়োগ আর উচ্চতর দক্ষতায় কিভাবে শুন্য দিবেন? প্রয়োগে স্যার যে মিলটা বা অমিলটা ধরলেন স্টুডেনট অন্যটাও ত ধরতে পারে।আর সবচেয়ে বড় বেপার হল সে মিল বা অমিল ধরার পর তাকে সেটা সম্পর্কে বিস্তারিত লিখতেও হচ্ছে, ব্যাখ্যাও দিতে হচ্ছে।সেই ব্যাখ্যা যদি সঠিক হয়, তাহলে স্যারের উত্তরের সাথে না মিললে স্টুডেন্ত কেন নাম্বার পাবে না একটু বলবেন? আর উচ্চতর দক্ষতায় ত বললামই, "তোমার মতামত দাও" থাকে।আমার মতামত কেন স্যারের মত হবে? আমি যে মতামত দিচ্ছি তার পক্ষে সলিড লজিক ত দাঁড় করাচ্ছিই পরবর্তী লিখায়।এবার আপনারা বলেন আমি নাম্বার বা এপ্লাস নিয়ে কথা বলব না কেন? আপনারা বলেন ৬০ এ ০ যুক্তিযুক্ত কিনা?


#ঘটনা ২

যারা নতুন শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে অবগত তাঁরা জানেন যে প্রশ্ন ফাঁস রোধে সরকার গতবার থেকে ৩২ সেট প্রশ্ন নীতি চালু করেছেন।সাধুবাদ জানাই এই নীতিকে।কিন্তু ফাঁকফোকর যে রয়েই গেল।এই নীতিতে বলা আছে নিজ বোর্ডের প্রশ্ন নিজ বোর্ডে করা যাবে না।ফাইন, প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ হলো।আচ্ছা একটা বেপার ইন্টারে যে নির্দিষ্ট কোনো বোর্ড বই নাই তা কি নীতিনির্ধারক ভুলে গিয়েছিলেন?আমি নীতির সমালোচনা করছি না। শুধু কিছু বাস্তবতা তুলে ধরতে চাই।এই ধরুন একেকটা সাব্জেক্টে যখন স্যারেরা প্রশ্ন করতে যান তখন চার পাঁচটা বই নিয়ে যান প্রশ্ন করার জন্য।এরপরের ঘটনাটা আরো ভয়াবহ।কারণ প্রত্যেক বোর্ডে একই বই ফলো করা হয় না।তার মানে হল যে অন্যন্য বোর্ডের স্যার যখন আরেকটা বোর্ডের প্রশ্ন করবেন তিনি নিশ্চয় তাঁর শহর বা বোর্ডে প্রচলিত বই থেকে করবেন।তাঁর মানে বেপার সম্পূর্ণ অনিশ্চিত।কারণ দেড় বছরের একটা সময়ে একটা ছাত্র কিভাবে একটা, সর্বোচ্চ দুইটার বেশি বই পড়বে একটা সাব্জেক্টে? "!" প্রতীকটা ম্যাথের ভাষায় ফ্যাক্টোরিয়াল। একটা প্রশ্ন হওয়ার 32C8 ধরনের উপায় রয়েছে।একটা ছাত্র বইটা জানার জন্য পড়বে না এই ওত রকমের প্যাটার্নের প্রশ্ন ফাঁদ থেকে বাঁচার জন্য?অনেকে বলবেন অব্জেক্টিভ তো সব বইয়ে যা কমন তা ই দিতে হবে প্রশ্নে।তাঁদের জন্য চট্টগ্রাম বোর্ডের বায়োলজি ১ম প্রশ্নটা দ্রষ্টব্য।


এই সব বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে যখন একটা ছাত্র পরীক্ষায় গোল্ডেন পায় সে সত্যিই অনেক মেধাবী।যারা পায় না তারা তার চেয়েও মেধাবী,আমি বলব।কারণ এই বইয়ের পড়া তোমার আর কয়েকটা মাসের জন্যই।এরপর শুরু হবে জীবনের আসল খেলা।একজন ছাত্র হিসেবে,একজন পরিক্ষার্থী হিসেবে, একজন লেখক হিসেবে এইগুলো আমার কথা।হয়তবা অনেকের মনের কথাও।এই কথাগুলো শেয়ার করার জন্যই ব্লগে আসা আসলে।আশা করি আমরা পারব ভাঙতে এই নিয়মের বেড়াজাল।শুধুই সময়ের অপেক্ষা।দিন আসছে।। :-)

ধন্যবাদ সবাইকে
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:০১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ফাঁদ (The Middle Class Trap): স্বপ্ন না বাস্তবতা?

লিখেছেন মি. বিকেল, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৪৫



বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত কারা? এই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে কিছু রিসার্চ এবং বিআইডিএস (BIDS) এর দেওয়া তথ্য মতে, যে পরিবারের ৪ জন সদস্য আছে এবং তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×