আগাচৌ এর কাহিনী দেখি বেশ সিরিয়াস মোড় নিচ্ছে, এমনটা আশা করি নাই। ভেবেছিলাম এই অথর্ব বুড়ার বাকোয়াজ সবাই বুড়া বয়সের ভীমরতি হিসেবে ধরে নিবে। কিন্তু গণজাগরণ মঞ্চ দেখি রীতিমতো কোমর বেঁধে এটাকে ডিফেন্ড করছে। এভাবে তারা থাবা বাবাকেও ডিফেন্ড করেছিল একসময়।
আমার মতে তারা এখন আগের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় আছে, কারণ তাদের হারাবার কিছু নেই। আগেরবার তারা অনেক কিছু হারিয়েছিল, রাজাকারের বিচারের দাবীতে জড়ো হওয়া লাখো মানুষের সমাবেশ চুপসে শ খানেকে এসে নেমেছিল। কিন্তু এখন যারা আছে, প্রায় সবাইকে হার্ডক্যোর ইসলাম বিরোধী বলা যায়। টাকা নিয়ে দ্বন্দে ইমরান সরকার, কামাল পাশা গ্রুপ আলাদা হলেও চৌধুরীর ইস্যুতে সবাই যে এক থাকবে তা নিশ্চিত।
কারণ এই মুহূর্তে বাহির থেকে যেই ফান্ডিং আসে, সেটা আর রাজাকারের বিচারের জন্য আসে না, সেটা আসে ইসলাম বিরোধী স্ট্রং হোল্ড হিসেবেই।
ইমরান এখানে কি কি মওদুদিবাদ, ওহাবি, জামাতি, পাকিস্তানী আবিষ্কার করেছে সেটা কোন ফ্যাক্ট না আমার কাছে, এরা ছিল ব্লগের চিপাগলিতে পড়ে থাকা ট্যাগবাজ। কিন্তু যেটা মজা লেগেছে তা হচ্ছে, ইমরান দাবী করেছে আগাচৌ মাদ্রাসায় পড়ার কারণে তার ইসলামী জ্ঞান বেশ টনটনে।
এরা আগামীকাল মাদ্রাসায় পড়ার সুবাদে আগাচৌকে বায়তুল মোকাররমের খতিব বানানোর দাবী পেশ করলেও অবাক হবো না, কিন্তু আমি নিশ্চিত এই ইমরান সরকার কখনোই তার বাবা মায়ের জানাজা আগাচৌকে পড়তে দিবে না।
আর যদি শিক্ষাটা মাদ্রাসারই হয়, তবে আল্লাহ'র ৯৯টা নাম কাফেরদের দেবতার এবং নবীজির হজ্বের তাওয়াফ, রাহমান, রাহিম শব্দগুলা ধার করা; এগুলো কোন মাদ্রাসায় আগাচৌকে শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল তা জানতে চাই??
হতে পারে, এর পিছে একটা সুক্ষ রাজনীতি আছে তথাকথিত মধ্যবর্তী নির্বাচনকে ঘিরে। কিন্তু মুসলমানদের রক্ত দিয়ে শাপলা চত্বর ভাসানোর ভয় দেখিয়ে আর কতোদিন??
আরেকটা কথা,
গাফফার চৌধুরীর বক্তব্যকে সমর্থন করে ইমরান এইচ সরকার যেই পোষ্টটা দিছে তাতে প্রায় ১৩ হাজার লাইক পড়ছে। কিছুক্ষণ ধৈর্য নিয়ে লাইক লিস্টটা চেক করলাম। ইমরানের পোষ্ট
তার আগে অন্য একটা কাহিনী বলি, টাইমস অব ইন্ডিয়ার ফেসবুক পেজ দিন দুয়েক আগে রাঁচির এক অন্ধ মেয়ের গানের একটা ভিডিও আপলোড করেছে। প্রথম দুইশ কমেন্টের মাঝে একটাই মুসলমানের কমেন্ট পেলাম, যে প্রাণ ভরে মেয়েটার জন্য ইসলাম সম্মতভাবে দোয়া করেছে। বীর হিন্দু যুব সংঘ বা ইন্ডিয়ার ভোট ফর মোদী পেজেও এতোটা মুসলমানদের উপস্থিতি দেখিনি।
আমার কথা হচ্ছে, তোমরা আল্লাহর ৯৯টা নাম সম্পর্কেই জানো না, কখনো কেউ তোমাদের হজ্জের তাওয়াফ সম্পর্কে জ্ঞান দেয়নি। বছরের এক মাস বা বিশেষ কয়েকটা দিন ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা মসজিদে বসে 'ইয়া রাহমানু, ইয়া খালিকু' বলে জিকির করে, এমন তো না যে সুধীরের দাবী মতে তোমাদের কানের পাশে এসে চিৎকার করেছে।
সৌম্য মুশফিকের সাথে বসে ইফতার করেছে সেখানেও মুসলমানেরাই সৌম্যর পক্ষে বলেছে। আমি বলেছিলাম, পুজার নাড়ু খায়নি এমন লোক এই দেশে কমই আছে। এমন কি সেখানে ধর্মীয় ব্যাখ্যাও দেখেছি তোমাদের পক্ষে।
আমার প্রশ্নগুলো হচ্ছে,
১। কেন তোমরা যেই বিষয়টা নিয়ে জানোই না, সেটা নিয়ে এতো চুলকানি?
২। দেশভাগ হয়েছে ৪৭ সালে, কেন আমাদের ৭০০ বছর আগের লক্ষণ সেনের আমলে ফিরে যেতে হবে?? এই ৭০০ বছরের চর্চা, সংস্কৃতির কি কোন মূল্য নেই?
৩। তোমাদের বাড়িতে একটা ঢিল পড়লেও অনেকে মুসলমান পাশে এসে দাঁড়ায়, কিন্তু শাপলা চত্বরে নিরস্ত্র মুসলমানদের উপর দেড় লক্ষ টিয়ার শ্যেল, রাবার বুলেট অথবা মেটাল বুলেট চালানোর পর একজনও কি প্রতিবাদ করেছিলে??
৪। গেল সপ্তাহে মুজাফফরবাদে গরু জবাইয়ের কারণে একজনকে প্রকাশ্যে মেরে রক্তাক্ত করলো, পুজা করার কারণে বাংলাদেশের কোন জেলা শহরে এমনটা কি কেউ করবে?
৫। তোমরা ঢাকা শহরের কেন্দ্রে বসে ইসলামের বিরুদ্ধে বলো, এমন কিছু কি বেনারসে সম্ভব?
ব্যাপারটা রাজনৈতিকও নয়, অনলাইনের একটা জাতীয়তাবাদী গ্রুপেও হিন্দু বিরোধী কোন পোষ্ট করা করা হয় না। বিগত ৬ বছরে তোমরা লীগের হাতে নির্যাতিত হয়েছ, যা হাতে কলমে প্রমাণিত।
তবুও কেন আমার ধর্ম নিয়ে তোমাদের এতো ক্ষোভ? কারা প্রতিক্রিয়াশীল আসলে তোমরা নাকি আমরা?? খ্রিস্টান ধর্মের নবী আমাদেরও নবী, তোমাদের দেবতারা আমাদের কিছু না হলেও তোমাদের বিশ্বাসকে আমরা শ্রদ্ধা করি। তোমাদের অনেকে অমল বোসকে চিনোও না, আমরা বিটিভিতে বিএনপি আমলে তার অভিনয় দেখেই মহিশাসুরকে চিনেছি।
আমার ধর্মের একটা বেজন্মা সেলিব্রেটি ইসলাম বিরোধী পোষ্ট দিলেই কি তোমাদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে?? সত্যিই ফেড আপ। তোমাদের ধর্মের অনেক উদারমনাকে বাস্তবিক জীবনে পেয়েছি, অনলাইনে এদের খুব প্রয়োজন এই মুহূর্তে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




