দেখতে দেখতে একটা বছর কেটে গেল । অথচ মনে হয় এই সেদিন । ঠিক একবছর আগে, এই অক্টোবরের ৯ তারিখে আব্বা মারা গেল । মুসলমানদের মধ্যে কারও মৃত্যুবার্ষিকী পালনের নানা রীতি আছে । কেউ কোরআন খতম দেয় , কেউ মিলাদ পড়ায় । এদের frequency টাই বেশী । বাসায় চিন্তা ভাবনা করে decide করলাম , এবার আব্বার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে এতিমখানায় একবেলা খাওয়াবো । এক বিশেষ কারনে বেছে নিলাম, ঢাকার আজিমপুরে অবস্থিত, “স্যার সলিমুল্লাহ এতিমখানা ” কে ।
প্রস্তুতিপর্ব শুরু হল এক সপ্তাহ আগে থেকে । ৪ তারিখে এতিম খানায় গিয়ে কথা বলে আসলাম । শুক্রবার হওয়ায় ৯ তারিখের বদলে ৮ তারিখে খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিলাম । মোট কতজন ছাত্র-ছাত্রী, কতজনের খাবার লাগবে, কি কি কেনা লাগবে সব জেনে আসলাম । আমার আত্মীয়স্বজনদেরও সেদিন আসতে বলা হবে । মহিলা আর বাচ্চারা বাসায় , আর ছেলেরা যাবে এতিমখানায় । বাসায় এক মহিলা হুজুরকে ডেকে মিলাদ পড়ানো হবে । ঠিক করলাম ৭ তারিখে চাল, ডাল যা লাগবে সব কিনে দিয়ে আসব । এসব ব্যপারে আমার মাসুম মামা অনেক সাহায্য করেছে । তাঁকে ছাড়া এসব একা arrange করতে আসলেই অনেক কষ্ট হত । আগের দুইটা দিন গেল বাজার-সদাই করতেই । ৭ তারিখ রাত ৯ টায় আমি আর মাসুম মামা গিয়ে এতিমখানায় গিয়ে দিয়ে আসলাম মালপত্র । শুধু মুরগি আর কাঁচামরিচ দেই ৮ তারিখ ভোরে ।
মুরগি দিয়ে এসে পরে ১২ টার দিকে আমি, দুলাভাই, চাচাতো ভাই সোহাগ, ছোট ফুপা, কামাল খালু এতিমখানায় গেলাম । ওখানে গিয়ে রান্নার অবস্থা দেখতে গেলাম । ভালোই রান্না করেছিল । ছেলে ও মেয়েদের দু’জায়গাতেই গেলাম । কিছু ছেলে- মেয়েদের সাথে কথাও বললাম । ওখানে ৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী ছেলে মেয়ে আছে । চিন্তা করে মনটা কেমন জানি করে উঠল যে এদের একজনেরও বাবা বেঁচে নেই । কারো কারো বাবা- মা দু’জনই নেই ।
দুপুরে জুম্মার নামাজ পড়ে ওখানেই ভাত খেলাম । খেয়ে ওখানকার superintendent এর সাথে কিছুখন কথা বলে বের হয়ে গেলাম । ফেরার পথে আজিমপুর গোরস্তানে আব্বার কবর জিয়ারত করে বাসায় ফিরলাম ।
প্রচন্ড ব্যস্ত একটা দিন গেল । তারপরও মনটা খুবই ভাল লাগছিল কোন এক অদ্ভুৎ কারনে । যদি আল্লাহর রহমত থাকে, তাহলে ইচ্ছা আছে এইখানে আবারও যাওয়ার, ওদের জন্য কিছু করার । দেখা যাক কি আছে কপালে আছে । এতিমখানার কিছু ছবি নীচে দেয়া হল ।



























































অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



