somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাম না জানা সেই মেয়েটি (গল্প বলা যেতে পারে)

০৭ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দীর্ঘ একমাসের ছুটি শেষে বাসা থেকে ক্যাম্পাসে আসতে এমনিতেই মন সায় দিচ্ছিল না, তার উপর ভ্যান/রিক্সা কিছুই পাচ্ছিলাম না।ঘন্টাখানেক অপেক্ষার পর কোন রকমে যখন ভ্যানে উঠলাম তখন বিরক্তিতে মন ভরপুর। মরার উপর খারার ঘা স্বরুপ ভ্যানগাড়ীটি আমাকে পাওয়ার পর গতিসীমা এত কমিয়ে দিল যে তার থেকে হেটে গেলেও আগে যেতে পারতাম। তারপরও মনটিকে শান্তনা দিলাম, অন্ধকার রাত্রে কিছু না থাকার চেয়ে একটা লাঠি থাকা ভাল, যদিও লাঠি কোন কাজে আসবে তথাপি তা আশার সঞ্চার করবে।
অনেক ধৈর্যের পরিক্ষা শেষে, ১০মিনিটের রাস্তা ৩০মিনিট ব্যয় করে সিএনজি ষ্টেশনে পৌছে মনে শান্তি পেলাম। আমি যাওয়ার সাথে সাথে যাত্রী পূর্ন হল। হঠাত সিএনজি চালক বলল, ভাইজান আপনে একটু পেছনের মাঝখানে বসুন। যথা আজ্ঞা মনে করে বসে পরলাম।
আমার একপাশে মধ্য-বয়স্ক এক ভদ্রলোক, সামনে একজন ভদ্রলোক, উনারা একই চাকুরী করেন বলে তাদের কথা-বার্তায় মনে হল। আর আমার বামপাশে একজন মেয়ে, বোরকা পরিহিত বলে তখন চেহাড়া বুঝা যাচ্ছিল না। সিএনজি চালক আমাকে কেন মেয়ের সাথে বসালেন তা বুঝলাম না। যদিও একটু রহস্যের গন্ধ পেলাম, এডভ্যাঞ্চারের ভাব এল মনে করে বসে পরলাম।
গাড়ী ছাড়তেই বোরকা পরিহিতা মেয়েটির বোরকা আংশিক সরে গেল আর আমি মুগ্ধ নয়নে দেখলাম অপূর্ব সুন্দরী এক মেয়ে যার হাসির জন্য হয়ত অনেক কিছু করা সম্ভব, যাকে পাওয়ার জন্য ট্রয়ের থেকেও বড় নগরী ধংশ করা সম্ভব, যার চোখে অনন্তকাল তাকিয়ে থাকা যায়, ঠিক সেই রকম এক মেয়ে আমার পাশে বসা।
মেয়েটির চোখের ভ্রু প্লাক করা, মুক্ত দানার মত ঝকঝকে দাতের সাথে পরীর মত মুখশ্রী যে কাউকে পাগল করার জন্য যথেষ্ট। আমাদের আসে-পাসের গ্রামে এত সুন্দরী মেয়ে আছে ভাবা-ই যায় না।
আমি মেয়েটির দিকে কতক্ষন তাকিয়ে ছিলাম মনে নেই। গাড়ীর ঝাকুনীতে মুগ্ধতা কাটতেই ভাবলাম, ধুর! কি করছি , একটি একা অসহায় কিন্তু সুন্দরী মেয়ের দিকে তাকিয়ে তাকে লজ্জা দেওয়ার কোন মানে হয় না। তাই অন্যদিকে মন ও চোখ সরাতে চাইলাম, কিন্তু শয়তান বাবাজীর ধোকায় পরে আবারও তাকালাম। সত্যি বলতে কি, এটা যে ঠিক না, তা বুঝতে পারছিলাম কিন্তু তার থেকে চোখ সরানোর ক্ষমতা ছিল না। তার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে অন্য রকম ভাল লাগছিল।
আমার সেই ভাল লাগা মুহুর্তেই দূর হয়ে গেল। কারন আমার পেটের কাছে তার হাতের স্পর্শ লাগছিল। যদিও এটা তার দোষ না, ছোট্ট সিএনজিতে পেছনেই ৩জন বসলে এমন হওয়াই স্বাভাবিক। তবুও সেই স্পর্শ কোন এক অজানা কারনে ভীষন ভাল লাগছিল। তাকে কিছু বলতেও পারছিলাম না।তাছাড়া ঐ মেয়েটি ইতস্ততবোধ করতে পারে ভেবে তাকে বলা থেকে বিরত থাকাই শ্রেয় মনে করলাম।
তার স্মিত হাসি বারবার আমার চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগল। কিছুতেই কিছু করতে পারছিলাম না, বারবার তারই কথা ভাবতে ভাল লাগছিল।মনের গহিন কোণে মেয়েটির জন্য মুহুর্তেই জায়গা হয়ে গেল। এভাবে কারও জন্য ভাললাগা তৈরি হবে তা কস্মিনকালেও ভাবিনি।
ভাবলাম ওর সাথে কথা বলে মোবাইল নাম্বার নেয়া যায় কিনা দেখব। আর যদি সম্ভব হয় একটা বন্ধুত্বও করা যাবে। এভাবে কল্পনার রাজত্ব্যে বিচরণ করতে করতে আর তার মুখশ্রী দেখতে দেখতে কখন যে গন্তব্যে পৌছে গেলাম বুঝতেই পারলাম না।
সিএনজি থেকে নেমেই মেয়েটি কাকে যেন ফোনে বলল, ওগো আমি স্টেশনে, আমাকে নিয়ে যাও।
আমিতো হতবাক। ব্যাপার কি!! বলে কি মেয়েটা!! তারপর এক ভদ্রলোক এশে সেই অসম্ভব সুন্দরীকে নিয়ে চলে গেল। আমার আর বুঝতে বাকি রইল না, সেই ভদ্রলোক ঐ মেয়ের কি হয়…

পিছন ফিরে একটি মিষ্টি হাসি দিয়ে চলে গেল। আমি বুঝলাম বুকের বামপাশে সেই নাম না জানা মেয়েটির জন্য চিনচিন ব্যথা অনুভুত হচ্ছে……

আর আমার ভাল লাগা আমার মনের কোনেই পরে রইল, নাম জানা মেয়েটিকে আর বলা হল না…
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×