somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুধই বন্ধুত্ব কিংবা তার চেয়েও বেশী কিছু...

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাত ১টা বাজে।আবারো এত রাতে ফোন করেছে রাজ্য।ছেলেটাকে এত করে বলা হয় যে ১২টার পর যাতে আর কল না দেয় তারপরও সে দিবেই।রাতে ভালো ঘুম না হলে সারাদিনই মাথা ঝিম মেরে থাকে।এত বলার পরও নাছোরবান্দাটা ফোন করবেই।এবার আচ্ছামত বকাঝকা করতে হবে ভাবছিল রিম্মি।

কিন্তু ফোন রিসিভ করা মাত্রই রিম্মিকে কথা বলার কোন সুযোগ না দিয়ে রাজ্য অনর্গল বলা শুরু করে....
-জানিস গতকাল বিকালে লামিহাকে নিয়ে বিএফসি তে গিয়েছলাম।ওমা একটু পর দেখি পুনমও ওখানে এসে হাজির।ওর সাথে অবশ্য ওর ছোট বোনও ছিল।পুনম আমার সাথে লামিহাকে দেখে কি করসিলো শোন।প্রথমে ভূত দেখার মত চমকে উঠসিল।এরপর আমার দিকে কিছুক্ষন কটমট করে তাকিয়ে থেকে সোজা ওখান থেকে চলে গেল।জানিস ও না এমন ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল মনে হচ্ছিল আমাকে এখনি গিলে খাবে।ভাগ্যিস খায়নি।হা হা হা..

-তুই এমন কেন বলত?এসব ফাজলামি আর কত জনের সাথে করবি?

-আরে আমি আবার কি করলাম?

-লামিহাকে নিয়ে কয়টা হল দয়া করে একটু বলবি???

-ওকে বলছি।সবার কথা তো আর মনে নাই।এই ধর ২০/২৫ জন তো হবেই।হা হা হা...

-চুপ থাক।কথায় কথায় হাসবিনা।তোর হাসি শুনলে গা জ্বলে যায়।

-ঠিক আছে আর হাসবোনা।শোন লামিহাসহ মাত্র ৫/৬ জনের সাথে প্রেম করেছি।এরা সবাই কিন্তু আমাকে প্রপোজ করেছিল।আমি তো আর এদের কাওকেই পটাইনাই।আর তুই তো জানিসই আমার মন অনেক নরম।কাওকেই না করতে পারিনা,হা হা হা হা

রাজ্য তার ভাব মারা কথা বলেই যাচ্ছে।কিছুক্ষন পর......

-কিরে কোন কথা বলছিস না যে?লামিহার কথা বলায় তোর কি জেলাস হচ্ছে?

-শোন এত রাতে তোর এই লামিহা ফামিহার কথা শুনতে মোটেই ভালো লাগছেনা।আমার অনেক মাথা ধরেছে।এখন রাখি বলেই লাইন কেটে মোবাইলের সুইচ অফ করে দেয় রিম্মি।ফোন রেখেই সে বুঝতে পারে তার মন যে অসম্ভব খারাপ হয়ে গেছে।সে ভাবতে থাকে রাজ্য ছেলেটা কেন এমন?তার এইসব ফালতু প্রেমের কাহিনী শুনতে যে একটুও ভালো লাগেনা রাজ্য কেন যে বুঝতে পারেনা? নাকি বুঝতে পেরেও আরো বেশী এমন করে!!!করলে করুক তারপরও আমি কোনদিনই বলবনা যে তোকে আমি কতটা পছন্দ করি।হয়তোবা ভালওবাসি!!

চুপচাপ শান্ত স্বভাবের কারনে রিম্মি ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পর কারো সাথে তেমন একটা কথা বলত না।কারো সাথে তেমন একটা মিশতোনা।আসলে সে মিশতেই পারতোনা।কখনও একা একা হেটে বেড়াত আবার কখনও বা সেমিনারে এই বই ওই বই নাড়াচাড়া করে সে তার টাইম পাস করতো। সবসময়ই নিজের মত করেই একা একা থাকতো।তার একটাই কাজ ছিল বাসা থেকে ভার্সিটি আবার ভার্সিটি শেষ হলে সেখান থেকে সোজা বাসা।ব্যস বাইরে যাওয়ার মধ্যে এটুকুই ছিল রিম্মির বাইরের জগত।


এভাবে করেই রিম্মির দিন কেটে যাচ্ছিল।একদিন রিম্মি সেমিনারে বসে বই পড়ছিল।আর কি মনে করে সে জানালার বাইরে তাকায়।দেখে যে সেমিনারের পাশে তাদের ডিপার্টমেন্টেরই একটা গ্রুপ গল্প করছে আর কিছুক্ষন পর পর হাসতে হাসতে একজন আরেকজনের গায়ে পড়ছে।রাজ্য দিকে তাকানো মাত্রই রিম্মির চোখ আটকে যায়।এক দেখাতেই অদ্ভুত রকমের ভালো লাগা শুরু করে এই ছেলেটাকে।কথা বলার স্টাইল, কথার বলার মাঝে রাজ্যর বারবার চুল ঠিক করা আর এত সুন্দর হাসি সবকিছুই যেন রিম্মির কাছে এক মুহুর্তেই ভালো লাগতে শুরু করে।এভাবে সে কতদিন যে রাজ্যকে দেখেছে সেটা হয়তো রিম্মি নিজেও জানেনা।


একদিনের কথা।ফার্স্ট ইয়ারের টার্মিনাল পরীক্ষা চলছিল।১টা পরীক্ষা হয়ে গেছে কিন্তু সেকেন্ড পরীক্ষার সময় ক্লাসে গিয়ে রিম্মি জানতে পারে সে যে সাবজেক্টটা পড়ে এসেছে সেই সাবজেক্ট নাকি অন্য তারিখে ছিল।সে ভুল বিষয় পড়ে এসেছে।কি করবে ভেবেই পাচ্ছিলনা।পরীক্ষার খাতা নিয়ে বসে বসে ভাবতে থাকে কি করবে ,কি করা উচিত।বানিয়ে বানিয়ে লিখবে নাকি পরীক্ষা দিবেনা।তার পাশেই বসেছিল রাজ্য।একেতো ভুল বিষয় পড়ে এসেছে তার উপর রাজ্য দেখছে যে সে কিছুই লিখছেনা।লজ্জায় আর রাগে চোখের পানি চলে আসার উপক্রম হল।রিম্মির এই চুপচাপ হয়ে বসে থাকা দেখে রাজ্য না লিখার কারন জিগেস করে।অনেক লজ্জা নিয়ে বলে সে অন্য বিষয় পড়ে এসেছে।এরপর রাজ্য যে এমন কিছু বলবে রিম্মি ভাবতেই পারেনি।সে রিম্মি কে বলল যে ঠিক আছে তুমি আমারটা দেখে দেখে যতটা সম্ভব পারো লিখ।আমি তোমাকে হেল্প করবো।আর রিম্মিও যেন কোন কিছু চিন্তা না করেই রাজ্যরটা দেখে লেখা শুরু করে।

এভাবেই তাদের মধ্যে একটা বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে উঠে।সব থেকে কাছের বন্ধু বলতে গেলে এই রাজ্যই।আগ বাড়িয়ে রিম্মিকে সব ব্যাপারে হেল্প করা,কোন সাজেশন পেলে সবার আগে তার দেয়া,নোট করে দেয়া আর তাছাড়া সবছেয়ে যেটা ভালো লাগে সেটা হচ্ছে রিম্মির যখন মন অনেক খারাপ থাকে এই রাজ্যই কিভাবে যেন মনটা ভালো করে দেয়।রাজ্যর এসব ব্যাপারগুলো রিম্মির কাছে অসম্ভব ভালো লাগে।

রাজ্যকে নিয়ে রিম্মি কল্পনা করতে শুরু করে।সে বুঝতে পারে রাজ্যকে নিয়ে কল্পনা করলে তার হৃদয়টা ভালো লাগায় ভরে যায়।তাই তো সে প্রতিদিনই কল্পনা কল্পনা খেলা করে।তার কল্পনার রাজ্যে শুধু রাজ্যরই বিচরন।সে ভাবে তারা দুজন একসাথে হাত ধরে হেটে যাবে অনেক দূর।ভালোবাসায় মিশে থাকবে তাদের প্রতিটি মুহূর্ত।ফোনে কথা বলে সারা রাত কাটিয়ে দেবে।এক সময় তাদের বিয়ে হবে।তাদের গোছানো একটা সংসার হবে। বিয়ের পর রাজ্যর সাথে দু দিন পর পরই মধুর ঝগড়া হবে।রাজ্য তার রাগ ভাঙ্গানোর জন্য অনেকগুলা রজনীগন্ধ্যা ফুল নিয়ে আসবে।এরপর তারা এক সাথে ছাদে গিয়ে জ্যোস্না দেখবে।সারাটি রাত রাজ্যর বুকে মাথা রেখে গল্প করবে।রিম্মি নিজেও বুঝতে পারেনা এসব ভাবনা কেন রাজ্যকে ঘিরে!কেন রাজ্য তার প্রতিদিনের ভাবনার একটা অংশ হয়ে গেছে!

সে ঠিক করেছে কখনই তার ভালো লাগার কথা রাজ্যকে বলবেনা।রাজ্যকে অনেক ভালোবাসলেও কয়েকদিন পর পরই তার কোন না কোন মেয়ের সাথে রিলেশনে জরানোটা রিম্মিকে অনেক কষ্ট দেয়।এসব ব্যাপারে প্রথম প্রথম রিম্মি অনেক বকা ঝকা করত।কিন্তু রাজ্য কোনও পরোওয়া করতনা।কিছু দিন পর পর ফোন করে সে রিম্মিকে তার নতুন জিএফ এর গল্প করতো।আর রিম্মিও নীরব দির্শকের মত তার গল্প শুনতো আর চোখের পানি ফেলতো।

রিম্মি ভালো করেই জানে মুখের উপর ফোন রেখে দেয়ার কারনে ভার্সিটি যাওয়া মাত্রই তাকে হাজারো প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে।কেন মাথা ধরেছিল,ওষুধ খেয়েছে কিনা,জ্বর এসেছিল কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি।হয়েছেও তাই।রিম্মিকে দেখা মাত্রই একটার পর একটা প্রশ্ন করেই যাচ্ছে রাজ্য।আর রিম্মিও ভাবতে থাকে 'এত্ত কেয়ারিং তুই..কেন এত কেয়ার করিস?তোকে যে অনেক ভালো বাসতে ইচ্ছা করে...'পরোক্ষনেই আবার ভাবে রাজ্য তো এভাবে আরো ৮/১০ টা মেয়েরও খোজ নেয় কেয়ার করে।এতে এত ভালো লাগার কী আছে?মন থেকে এসব ভাবনা ঝেড়ে ফেলে রাজ্যর প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে তারা ক্লাসের দিকে এগিয়ে যায়।

সময় যেতে থাকে।ভার্সিটি লাইফের একদম শেষ প্রান্তে এসে উপস্থিত হয়।এর মাঝে তারা কত রকমের হাসি ঠাট্টা ঝগড়া ঘুরতে যাওয়া সব কিছুই যেন চাওয়া মাত্রই হত।কল্পনার মত করেই দিনগুলো কেটে যাচ্ছিল।

১১ই সেপ্টেম্বর রিম্মির জন্মদিন।১০ তারিখ ঠিক রাত ১২টায় রাজ্য রিম্মিকে ফোন দিয়ে সবার আগে উইশ করে।অবশ্য রিম্মিও মনে মনে চাচ্ছিল অন্য বছরগুলার মত এই বছরও রাজ্যই যেন সবার আগে তাকে উইশ করে।তাই তো রাজ্যর ফোন দেখেই খুশিতে ফোন রিসিভ করে
বলে যেঃ -জানতাম সবার আগে তুই ই ফোন করবি।
রাজ্য -তুই না সবসময়ই আমার গান শুনতে চাইতি।কখনই তো শোনাই নি।আজ শুনবি?
রিম্মি-সত্যি শোনাবি?
রাজ্য-ওকে শোন...
অবাক চাঁদের আলোয় দেখ,ভেসে যায় আমাদের পৃথিবী
আড়াল হতে দেখেছি তোমার নিষ্পাপ মুখখানি
ডুবেছি আমি তোমার চোখের অনন্ত মায়ায়
বুঝিনি কভু সেই মায়া তো আমার তরে নয়।
ভুলগুলো জমিয়ে রেখে বুকের মনি কোঠায়
আপন মনের আড়াল থেকে
ভালোবাসবো তোমায়.............

গান শেষ করে রাজ্য বেশ কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে -রিম্মি তুই কি আমার হবি?একান্তই আমার?তোকে অনেক বেশী ভালোবাসি।প্লিজ ফিরিয়ে দিসনা......

নিজের কানকে যেন বিশ্বাস করতে পারেনা রিম্মি।প্রচন্ড রাগ উঠে যায়।আজকের এই দিনে সে আমাকে তার ভালোবাসার কথা বলতে আসে?তাও আবার কত তম কে জানে?ভাবতে থাকে।রাজ্যর ডাকে বাস্তবে ফিরে আসে।

রাজ্য -আমি কি ফোন রেখে দেব?
রিম্মি -না না ফোন রাখবি কেন?তুই তো তোর কথা বলসিশ আমারটা শুনবিনা?কি ভাবিস নিজেকে?১০০ টা মেয়েকে নিজের পেছনে ঘুরিয়ে এক সময় যখন দেখলি যে কেও তো আর তোর পেছনে ঘুরছেনা।শেষে কাওকে না পেয়ে আমাকে ধরলি না?তোর মত এমন ছেলে আমি কোথাও দেখিনি।শোন তোর একটা সমস্যা আছে।কি জানিস?১টা মেয়েকে তোর ১ সপ্তাহ কিংবা ২ সপ্তাহ ভালো লাগে।এরপর তাকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে নতুন আরেকটাকে ধরিস।

এক নিঃশ্বাসে কথা গুলো বলে রিম্মি।এরপর দুজনই চুপ।

কিছুক্ষন পর রিম্মি নীরবতা ভেঙ্গে বলে -স্যরি রাজ্য।তোকে কখনই এমন কথা বলতে চাইনি।যাই হোক তোর সাথে আমার ফ্রেন্ডশীপ এখানেই শেষ।আর কখনও ফোন না করলে খুশি হব।এই বলে ফোন রেখে দেয় রিম্মি।সে বুঝতে পারে তার গাল বেয়ে যে এতদিনের জমে থাকা কষ্টগুলো অঝরে ঝরে পড়ছে।

সকালে ঘুম থেকে উঠে রিম্মি বুঝতে পারে তার হৃদয়টা কেমন খালি খালি লাগছে।নিজেকে খুব একা মনে হতে থাকে।অনেক অনুশোচনা করতে থাকে।এভাবে এত কড়া কথা না বললেই তো হত।সরাসরি না করে দিলে এমন কিছুই তো হতনা।হয়ত তোকে অনেক ভালোবাসি বলেই এতটা কষ্ট পেয়ে এভাবে কথাগুলা বলেছি।নিজেকে শান্তনা দেয় রিম্মি।

ভার্সিটির বাসে উঠে সেল ফোনটার দিকে তাকিয়ে থাকে রিম্মি।এতক্ষনে রাজ্যর ৪/৫টা মেসেজ দেয়া হয়ে যেত।বাস ধরতে পেরেছি কিনা,ঠিকমত উঠেছি কিনা,বসতে পেরেছি কিনা।অথচ আজ.....

ক্লাসে গিয়ে দেখে রাজ্য আসেনি অথচ আজ তাদের খুব গুরুত্বপূর্ন ল্যাব আছে।কেন আসলোনা কি হয়েছে তার ভাবতে থাকে রিম্মি।পরোক্ষনেই আবার ভাবে রাজ্য আসলেই কি আর না আসলেই বা কি।তার চিন্তা পুরাটাই মাথা থেকে ঝেরে ফেলার বৃথা চেষ্টা করে ক্লাসে মন দেয়।

এভাবে বেশ কিছু দিন কেটে যায়।কেও কারোও সাথে কথা বলেনা।রিম্মি খেয়াল করে রাজ্য কেমন যেন হয়ে গেছে।আগের মত আর কারো সাথে ফাজলামী করেনা,কথায় কথায় হাসেনা।কেমন ওগোছালো হয়ে গেছে।দু দিন ক্লাস করে তো চার দিন আসেনা।প্রয়োজনীয় কথা ছাড়া তেমন কোনই কথাও বলেনা এতটাই চুপচাপ হয়ে গেছে।রাজ্যর জন্য রিম্মির খুব মায়া হয়।মনে মনে ভাবে কেন যে সেদিন এতটা রাগ দেখাতে গেলাম!সুন্দর করে বললেও হয়তো সে এখন এতটা কষ্ট পেতনা।এত ভাবছি কেন?যা হবার তো হয়েই গেছে।সময়কে তো আর ঘুরানো যাবেনা।নিজেকেই নিজে সান্তনা দেয় রিম্মি।

আজ রিম্মিদের ডিপার্টমেন্টের র‍্যাগ ডে।প্ল্যান আনুযায়ী সব মেয়েরা পড়েছে নীল শারী আর ছেলেরা সাদা পাঞ্জাবী।কি যে অপূর্ব লাগছে সবাইকে।মনে হচ্ছে যেন সারা নীল আকাশ জুড়ে মাঝে সাদা মেঘের বিচরন।

রিম্মির চোখ জোড়া রাজ্যকেই খুজছে।সে জানে আজ সবচাইতে সুন্দর লাগবে রাজ্যকে।কোন একদিন রাজ্য রিম্মিকে বলেছিল শাড়ি পড়লে নাকি তাকে অপ্সরার মত লাগে।তাই তো সে মাথায় বেলী ফুল,নীল টিপ পড়ে অনেক সুন্দর করে সেজে এসেছে।সে ঠিক করে রেখেছে আজ রাজ্যকে তার ভালোবাসার কথা বলবে।রাজ্যর অতীতের সবকিছু ভুলে রাজ্যকে সে শুধরে নেবে।

অনুষ্ঠান প্রায় শেষ হতে চলল।কিন্তু রাজ্যকে কোথাও দেখা যাচ্ছেনা।যাকেই জিগেস করছে সেই বলছে রাজ্যকে দেখেনি।রিম্মির কেমন যেন অস্থির লাগতে শুরু করলো।
রাজ্যকে ফোন দেয়।রাজ্যর ফোন বন্ধ দেখে রিম্মি যেন আরো চিন্তিত হয়ে পড়ে।

ভার্সিটি থেকে রিম্মি সোজা রাজ্যদের বাসায় গিয়ে হাজির হয়।বেল দেয়া মাত্রই রাজ্যর মা দরজা খুলে এমন ভাব করলো যে যেন উনি জানতেন যে রিম্মি আসবে।কিন্তু উনার বিবর্ণ মুখ দেখে রিম্মি অজানা আশংকায় শংকিত হয়ে পড়ে।কিছুক্ষন পর রাজ্যর মা রিম্মি হাতে একটা চিঠি দিয়ে যা বলল তা শুনে রিম্মি আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারলোনা।রাজ্য নাকি কাল রাতের ফ্লাইটে অস্ট্রোলিয়া বোনের কাছে চলে গেছে।সে নাকি ওখানেই থাকবে দেশে আর ফিরে আসবেনা।

রিক্সায় বসে ভাবতে থাকে তুই কি করে পারলি না বলে এভাবে চলে যেতে?বললে কি আমি তোকে আটকে রাখতাম ?হয়তো আটকে রাখতাম,সত্যি তোকে যেতে দিতামনা!রিম্মির চোখ বেয়ে অনবরত অশ্রু পড়তে থাকে।

বাসায় এসেই রিম্মি চিঠি পড়া শুরু করে

আমি জানতাম আমার খোজে তুই বাসায় আসবি।তোকে না বলে আসায় প্লিজ রাগ করিসনা।এভাবে চলে যাওয়ায় আমারও যে অসম্ভব খারাপ লেগেছে।তোকে ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা মনে করে কত যে কান্না করেছিলাম সেটা আমি ছাড়া কেও জানেনা।জানিস তোকে হারানোর কষ্টটা যে এত তীব্রভাবে আঘাত করবে আমাকে বুঝতেই পারিনি।যদি বুঝতাম তাহলে কখনই মিথ্যার পর মিথ্যা বলে তোকে ধোকা দিতামনা না কষ্ট দিতামনা।

তোর সেই প্রথম পরিচিয় থেকেই তোকে অসম্ভব ভালোবেসেছিলাম।সবসময়ই ভাবতাম তোকে আমার ভালোবাসার কথা বলি কিন্তু তুই হয়তো মেনে নিবিনা এই শংকায় আর কিছু বলা হয়ে উঠত না।তাই তো একেক সময় একেক মেয়ের নামে তোর কাছে কত রকমের কাহিনী বলতাম।শুধু তুই যেন জেলাস হয়ে আমাকে তোর মনের কথাটা বলিস।চিন্তাও করতে পারিনি যে আমি কত বড় ভুল করেছি।এই ভুলের কারনে তোর সামনে গিয়ে দাড়ানোর মত সেই আমিত্ব হয়তো আমি হারিয়ে ফেলেছি।

জানিনা এই ভুলের বোঝা আমাকে কতকাল বয়ে বেড়াতে হবে।কিন্তু সত্যি বলছি তোকে অনেক বেশি ভালোবাসতাম,আজীবন ভালোবেসেই যাব।

ভালো থাকিস।

চিঠিটা বুকে জড়িয়ে রিম্মি যেন কাঁদতে ভুলে যায়।অস্ফুট স্বরে শুধু বলতে থাকে আমাকে একা রেখে কেন চলে গেলে?



v=DFY1C1LkgKA
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:২৯
৫৩টি মন্তব্য ৫২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×