১) যারা হাদিছ মানে না তারা এক সময় কোরআনও মানে না।
জবাব: যুগে যুগে যারা হাদিছ মানেনি, তারা কি কখনো কোরআন অস্বীকার করেছে? করেনি। বরং তারা কোরআনেই আমল করেছে। অনেক পীরই বলে থাকে, যারা পীর মানে না তারা এক সময় কোরআন হাদিছ কিছুই মানবে না। এটা এরকমই একটা কুযুক্তি।
২) যারা হাদিস মানে না তারা কোরআনের আয়াত নিজের মত করে বুঝে। নিজ নফসের পুঁজা করে।
আল্লাহ তো বলেই দিয়েছেন, তিনি কোরআন ব্যাখ্যা করেই নাজিল করেছেন এবং কোরআন একেক জন একেক রকম বুঝবে। হাদিসওয়ালারা তো কোরআন নিজের মত বুঝে না। তারা বুঝে উমাইয়া শাসকদের মত করে হাদিস অনুযায়ী। কোরআন নিজের মত বুঝলে কোন অসুবিধা হবে এমনটা কি আল্লাহপাক বা তার রাসুল কখনো বলেছেন? পীরেরা সব সময় একটা কুযুক্তি দেয় তা হলো, যার পীর নাই তার পীর শয়তান। এটাও অনেকটা সেই রকম কুযুক্তি। আল্লাহপাক তো কোরআনে ৭০ বারেরও অধিক বলেছেন, তোমরা কি চিন্তা/ গবেষনা কর না?’ কেউ যদি তার গবেষনা মতে কোরআন বুঝে তাতে কোন সমস্যা হবে এমন কথা তো আল্লাহপাক কোথাও বলেননি।
৩) কোরআনে নামাজ কিভাবে পড়বো তা নাই। ওয়াক্ত নাই। নিয়ম নাই।
কোরআনের ২:১১৫ আয়াতে ধৈয্য এবং নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে বলা হয়েছে। সকালে এবং রাতে নামাজ তথা আল্লাহর প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে। সুরা মুযাম্মিল এর ২ নং আয়াতে বলা হয়েছে রাতে নামাজ পড়তে। ৭৩: ৭ আয়াতে বলা হয়েছে, দিনে তো ব্যস্ততার সময়। আর নামাজ পড়ার নিয়ম রুকু, সেজদার কথা কোরআনে অবশ্যই আছে। উমাইয়ারা যে ফরমেটে নামাজ পড়া শিখিয়েছে, সে ফরমেটে পড়তেও দোষ নেই। তবে বুঝে পড়তে হবে। না বুঝে নামাজের কাছেও যাওয়া যাবে না। নামাজের পূর্ণাঙ্গ নিয়ম বা ফরমেটে হাদিছেও নাই। আপনার নিজের নিয়মে পড়লে তথা আল্লাহর সাহায়্য চাইলে সেই নামাজ হবে না তা কে বলেছে?
৪) কোরআনে চোরের হাত কাটার কথা বলা আছে। কতটুকু কাটতে হবে তা বলা নাই।
আঙ্গুল থেকে শুরু করে কব্জি পর্যন্ত পুরাটাই তো হাত। অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী হাত কাটতে হবে। সেটা তো বিচারকের কাজ। সাধারন মানুষের জন্যে নয়। বিচারকের তো সে বুদ্ধি আছে। ৫ টাকা চুরি করা আর ৫ হাজার কোটি চুরি করা কি এক কথা? আর সে জন্যে আল্লাহপাক ৭০ বাবেরও বেশী বলেছেন চিন্তা এবং গবেষনা করতে।
৫) কোরআনে মৃত প্রাণী হারাম। তাহলে আমরা মৃত মাছ কেমনে খাই?
জবাব:
আল্লাহপাক মৃত পশু হারাম করেছেন। কিন্তু মৃত মাছ হারাম করেননি।
দেখুন কোরআন কি বলছে-
তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত পশু - সূরা মায়েদাহঃ (৫:৩)
তোমাদের জন্য সমুদ্র শিকার ও তা খাওয়া হালাল করা হয়েছে - সূরা মায়েদাহ (৫:৯৬)
আল্লাহপাক কোরআনে ৭০ বারেরও অধিক বলেছেন, তোমরা কি চিন্তা (গবেষনা) করো না?
স্থলভাগের সব প্রাণীই বাতাস থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং শারীরিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগ করে। যখন কোনো প্রাণীকে জবাই করা হয়, তখন তার বিষাক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড রক্তের সাথে বের হয়ে যায়। কিন্তু যখন ওই প্রাণীকে শ্বাসরোধ করে মারা হয় বা তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়ে যায় তখন ওইসব প্রাণীর বিষাক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড ও রক্ত দেহের ভেতরেই মাংসের সাথে মিশে যায়। যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। সেকারণেই এসব মৃত প্রাণীর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ।
অন্যদিকে মাছ পানি থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে, যা কার্বন ডাই অক্সাইড মুক্ত। কেননা মাছ পানি (H2O) থেকে শুধু অক্সিজেন বিশ্লিষ্ট করে গ্রহণ করে এতে কোন কার্বন থাকেনা, এবং শারীরিক প্রক্রিয়ার পরেও কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয়না। সুতরাং স্বাভাবিকভাবে মাছের মৃত্যু হলেও তার ভেতর ক্ষতিকর কোন উপাদান থাকে না। তাই মৃত মাছ খাওয়া স্বাস্থ্যের ক্ষতিকর নয়।
৬) হাদিস মানার কথা কোরআনে আছে। তাই কোরআন বর্হিভূত হাদিছ মানা যাবে
জবাব:
দেখুন কোরআন কি বলছে- কোরআন মোতাবেক যারা নির্দেশ দেয় না, বিচার মীমাংসা করে না, তারাই কাফের, ফাছেক ও জালেম। (৫: ৪৪-৪৯)। রাসুল স্বয়ং কোরআন মেনে চলেছেন, কোরআন মানার নির্দেশ দিয়েছেন। কোরানের বাহিরে তিল পরিমাণ কথা কাজ করেননি; করলে স্বয়ং আল্লাহ তাঁর জীবন ধমনী কেটে ফেলতেন। [৬৯: ৪৪-৪৭]
৭) কোরআনে রক্ত খাওয়া নিষিদ্ধ। তাহলে আমরা রক্তপিন্ডের কলিজা কেন খাই?
জবাব:
রক্ত খাওয়া নিষিদ্ধ। কিন্তু কলিজা তো রক্ত নয়। রক্ত তো মাংসেও মিশে থাকে। কলিজা রক্ত দিয়ে তৈরী হলেও কলিজা রক্ত নয়। এটা বুঝতে কি রকেট সাইন্স বুঝা লাগে। কলিজা রান্না করলে কি রক্ত হয়ে যায়?
৮) কোরআনে যাকাতের হিসাব নাই। যাকাত কেমনে দিবো?
জবাব:
যাকাত অর্থ পরিশুদ্ধ করা। সদকা দেয়া। তা সারা বছরই দেয়া যায়। শতে আড়াই টাকার হাদিছি হিসাব কোরআনে নাই। তবে হ্যা, রাষ্ট্র প্রধান ইচ্ছা করলে যাকাতের হার নির্ধারন করে দিতে পারেন। যাকাত রাষ্ট্রীয় ফান্ডে নিতে পারেন। গরীবের জন্যে খরচ করতে পারেন।
৯) ‘‘কোরআনকে মা-বাপ বিহীন ছেড়ে দেয়া যায় না’’
সালাফি ধর্মাবলম্বী এই পিচ্চি মোল্লা ফেইজ দ্য পিপল-এর এক ডিবেটে বলেছেন, হাদিছ বিহীন কোরআন তথা মা-বাপ বিহীন কোরআন কারো উপর ছেড়ে দেয়া যায় না। তার এই বক্তব্য সরাসরি শির্ক। কেননা স্বয়ং আল্লাহ বলেছেন, কোরআন স্পষ্ট, পরিপূর্ণ এবং ব্যাখ্যাকৃত। কোরআন নিজেই স্বয়ংসম্পূর্ণ। তা অন্য কোন বানী বা কিতাবের মূখাপেক্ষী নয়। অথচ সালাফি মোল্লারা ফতোয়া দিচ্ছেন, হাদিসই হলো কোরআনের মা-বাপ (নাউজুবিল্লাহ)। তাদের বক্তব্য হলো, হাদিছ ছাড়া কোরআন ছেড়ে দিলে প্রত্যেকে কোরআন তাদের নিজেদের মত করেই বুঝবে। (প্রশ্ন হলো, কোরআন কি বুখারি গং-এর মত করে বুঝতে হবে? বুখারি গং কি সাহাবী? তারা কি হাদিছ লেখার অথেনটিক পারসন? সরাসরি নবী এবং তার সাহাবী ব্যতীত আর কেউ তো কোরআন হাদিছ লিখে রাখার অথেনটিক পারনস হতে পারেন না। উপরন্তু মহানবীর মৃত্যুর ২০০-২৫০ বছর পর বুখারি গং এর লেখা তো অমুক তমুক থেকে, সেই তমুক আরেক তমুক থেকে শুনে শুনে রাসুলের নামে শোনামিয়া গল্পগাথা, যা অনেকটাই তৎকালীন প্রচলিত কল্পিত গল্প ও বাইবেল-এর কপি মাত্র।) কোন বিশ্বাস, বিবেক বা যুক্তিফুক্তি কিছুই নয়, কেবলমাত্র রাজতন্ত্রের আলেমরা সহীহ মর্মে ঘোষনা দিয়েছেন বলেই বুখারি মুসলিম সালাফিদের কাছে এতো এতো সহীহ। অথচ কোরআন অনুযায়ী, আসমানী কিতাব ছাড়া আর কোন আয়াত মানা তো দুরের কথা, বিশ্বাসই করা যাবে না। (আল-আ‘রাফ ৭:৩) কোরআন কে কিভাবে বুঝবে এটি সম্পূর্ণ আল্লাহর বিষয়। কোরআনে তিনি এমন উদাহরণও দিয়েছেন যে একই আয়াত একেকজন একেক রকম অর্থ বুঝবে (৭৪:৩১)।
১০) কোরআন যে মুখ দিয়ে বেরিয়েছে, হাদিসও সে মুখ দিয়ে বেরিয়েছে?? ?
কোরআন যে মুখ দিয়ে বেরিয়েছে, সেই মুখই কোরআন লিখে রাখতে বলেছেন, বুকে ধারন করতে বলেছেন। সেই মুখই কোন হাদিস লিখতে নিষেধ করেছেন। এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারও করেননি। হাদিসওয়ালারা যুক্তি দেন যে, রাসুলের মুখ দিয়েই তো হাদিস বেরিয়েছে। কিন্তু প্রমাণ কই? কেউ একজন এসে বলল, এটা রাসুল বলেছেন, এটা মানা ফরজ। ব্যস, হয়ে গেল? কেউ বললেই তো সেটা আর রাসুলের কথা হয়ে যায় না। বিশেষতঃ কোরআন বিরুদ্ধ এবং রাসুলের অবমাননাকারী হাদিসগুলো তো নয়ই। যদু মধু রাম শাম কেউ লিখলেই কি তা রাসুলের বলে বিশ্বাস করতে হবে? এমন কোন ইশারা ইঙ্গিত কি কোরআনের কোথাও আছে? কোরআন লিখার নিদের্শ রাসুল দিয়েছেন। লিখেছেন তার সাহাবীরা। কিন্তু সংকলন তো আর যে কেউ করলে হবে না। মুসলিম জাহানের অথেনটিক পারসন খলিফার উপরই বর্তায় সে দায়িত্ব। খলিফা উসমান বোর্ড গঠন করে সে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন। কোন সাধারন বা অসাধারন সাহাবী সেটা করেননি। করেছেন অথেনটিক পারসন তথা কেবল সাহাবিই নন, বরং পুরা মুসলিম জাহানের খলিফা। অথেনটিক পারসন ছাড়া রাম শাম যদু মধুর গ্রন্থিত হাদিস মানতে কি আমরা বাধ্য?
১১) ৭৩ দলের মধ্যে ১ দল জান্নাতে যাবে
কোরান বলছে, তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধর। পরস্পরে বিচ্ছিন্ন হয়ো না। হাদিছ বলছে, মুসলমানেরা ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। ১ দল জান্নাতে যাবে। ব্যস, সেই ১ দলের খোঁজে মানহাজের নামে মুসলমানেরা দলে দলে বিভক্ত হওয়া শুরু করলো।
১২) রাসুলকে কিভাবে ভালবাসবো?
"শীয়া-সুন্নী-পন্নী-কাদিয়ানী-রাফেজী, সাদিয়ানী-মাদানী- হানাফি, সালাফি, মালেকি, হাম্বলি, খারিজি, আটরশি, কাদিয়ানী, চন্দ্রপুরি, ওলিপুরি, দেওবন্দী, নকশাবন্দী, তরিকতী, মারফতি, উজানি, হেফাজতী, চর্মনাই, ছারছিনা, নেছারাবাদী, ফুরফুরা, কুরকুরা, দেওয়ানবাগী, মাদখালী, মাইজভান্ডরিী, সুফিবাদী, আহলে হাদীস, আহলে কোরআন, আহলে সুন্নত, সহীহ আকীদা, জৈনপুরী, চিশতিয়া, কাদেরিয়া, সাবেরিয়া, মুতাজিলা-ফতাজিলা, মর্জিয়া, হেফাজতী-জামাতী-ইখোয়ানী- ইত্যাদি"এরা মুসলীম নয়| মূলত এরা সবাই কোরআণুল কারীম পরিত্যাগী (২৫:৩০), ও মুশরিক। যা কোরআণুল কারীমের আয়াতে হুবহু বা সরাসরি নাই,তা দ্বীন তথা ইসলামের অংশ নয়। দ্বীন তথা ইসলামের ক্ষেত্রে কোরআণুল হাকীম বাদে দুনিয়াতে যত কিতাবাদি আছে তার সবই লাহুয়াল হাদিস বা অসার বাণী বা মিথ্যা কেচ্ছাকাহিনী (৩১:৬)। আয়াত মানলেই সকল নবী রসুলকে বিশেষ করে রসুল,সালামুন আলা মুহাম্মদ,খাতামূন নাবিয়্যিনকে মানা হয়,ভালবাসা হয়|
১৩) কোরআনে তো প্রাত্যাহিক জীবনের অনেক কিছুই নাই? কেমনে মানবো?
কোরআন পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা, কিন্তু তা স্পিরিচুয়াল অনুপ্রেরণা হিসেবে। কিভাবে হাগু করে পানি নিতে হবে সেটা ধর্মের বইয়ে খুঁজতে গিয়ে মোল্লাদের ভিত্তিহীন মাসলা আর ভুয়া হাদিসে খোঁজা বোকামি ছাড়া আর কিছুই না। আল্লাহ আমাদের জ্ঞান বুদ্ধি দিয়েছেন। সেটি খাটিয়ে দৈনন্দিন জীবনে চলুন। আমরা যন্ত্র নই যে আল্লাহ আমাদের এতটুকু স্বাধীনতা দেবেন না। প্রতি পদক্ষেপে হাদিস খুঁজলে আপনি অবিশ্বাসী হয়ে যাবেন যা ইমাম আহমেদ ইবনে হান্বল বলে গিয়েছিলেন বারো শত বছর আগেই !! সূরা ১২ আয়াত ১১১: لَقَدْ كَانَ فِي قَصَصِهِمْ عِبْرَةٌ لِّأُوْلِي الأَلْبَابِ مَا كَانَ حَدِيثًا يُفْتَرَى وَلَـكِن تَصْدِيقَ الَّذِي بَيْنَ يَدَيْهِ وَتَفْصِيلَ كُلَّ شَيْءٍ وَهُدًى وَرَحْمَةً لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ তাদের কাহিনীতে বুদ্ধিমানদের জন্য রয়েছে প্রচুর শিক্ষণীয় বিষয়, এটা কোন মনগড়া হাদিস নয়, কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করে তাদের জন্যে পূর্বেকার কালামের সমর্থন এবং প্রত্যেক বস্তুর বিবরণ রহমত ও হেদায়েত।
১৪) হাদিস না মানলে নবীকে কিভাবে অনুসরন করবো?
মুহাম্মদকে অনুসরন করতে যদি ৬টি কিতাব লাগে , তাহলে হযরত ইব্রাহীম নবী কি অপরাধ করছে? আল্লাহ তো নাম উল্লেখ করে বলছেন ইব্রাহীমকে অনুসরন করতে। তাহলে হযরত ইব্রাহীমকে কিভাবে অনুসরন করবো? হযরত ইব্রাহীমের বিশুদ্ধ ধর্ম ইসলাম। ৬:১৬১ মতে।
ইব্রাহীমের ধর্ম অনুসরন করতে বলছেন। ৩:৯৫,৪:১২৫,১৬:১২৩,২২:৭৮ মতে।
ইব্রাহীমের মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের নাম রাখেছেনে মুসলিম। ২২:৭৮মতে।
ইব্রাহীমের ধর্ম থেকে কে মুখ ফেরায়? কিন্তু সে ব্যক্তি, যে নিজেকে বোকা প্রতিপন্ন করে। ২:১৩০মতে।
১৫) কোরআনে তো রাসুলকে অনুসরনের নির্দেশ আছে। হাদিস না মানলে তা কিভাবে সম্ভব?
আল্লাহ বলেছেন, রসুল তোমাদের যা দেন তা তোমরা গ্রহণ করো,আর যা থেকে নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাকো। [সূরা হাশর আয়াত ০৭] আর রসুলের কাজ,কথা ও মৌনসম্মতির জীবন্ত রাসুলকে যদি পেতে চান, তাহলে কোরআনেই তালাশ করতে হবে। রাসুলের ওফাতের ২০০-৩০০ বছর পরে নানা শুনা কথা কথনো রাসুলের হাদিছ নয়।
১৬) বিদায় হজ্জের ভাষনে নবী আসলে কি বলেছেন? দুইটা জিনিস রেখে যাচ্ছি, নাকি একটি??
ক। কোরআন এবং আহলে বায়াত (মুসলিম ৪৪/৪, হাদিস ২৪০৮, ইবেন হাম্বল ৪/৩৬৬)
খ। শুধুমাত্র কোরআন (মুসলিম ১৫/১৯, হাদীস ১২১৮, ইবনে মাজা ২৫/৮৪, আবু দাউদ ১১/৫৬)
এখন বলেন, আপনি কোন হাদিসটা বিশ্বাস করবেন? নবী কি এক মুখে দুইরকম কথা বলতে পারেন?
১৭) শুধু কোরআন মানলে সুন্নাহ কোথায় পাবো?
কোরআন হচ্ছে উত্তম হাদিস- 》কোরআনে দেখুন- 39:23/77:50 /45:6
আর আল্লাহর আইন হলো সুন্নাত- 》কোরআনে দেখুন- 35:43/48:23/33:62
নবী রাসূলদের নামে কোন হাদিস বা সুন্নাত নেই ।
নবী রাসূলদের দায়িত্ব ছিলো শুধুমাত্র আল্লাহ্র বাণী প্রচার করা/ পৌঁছে দেওয়া - 》কোরআনে দেখুন-36:37/64:12/29:18/3:20/16:35/13:40/24:54/5:99...
সূরা নাহল:104 - যারা আল্লাহর কথায় বিশ্বাস করে না, তাদেরকে আল্লাহ পথ প্রদর্শন করেন না এবং তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
১৮) সৌদির আলেমরা কোরআন-হাদিস দুটোই মানেন
যারা সৌদি থেকে উমাইয়া উদ্ভাবিত সালাফি ধর্মের শিক্ষা নিয়ে এসেছেন, তারা তো কোরআনের কিছু মানেন আর কিছু মানেন না। কিন্তু আজেবাজে অবান্তর হাদিসসহ সহীহ তকমা দেয়া সকল হাদিসই মানেন। কোরআনের যেসব আয়াত আপনারা মানেন না তা হলো, এই সেই কিতাব, যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য হিদায়াত। [২:২] ‘কিতাবে কিছুই আমি বাদ দেইনি। [৬:৩৮]
কোরআনের পরে আর কোন হাদিছে তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে? [৭৭:৫০] সুরা আল-মোরসালাত। কোরান পূর্ণ সহজ সরল (১৮/১, ৩৯/২৭-২৮, ১৭/৯, ১৭/৪১, ৫৪/১৭ ২২ ৩২ ৪০, ২/২২১, ৩/১১৮, ৬/৩৮, ৬/৫৯, ১০/৬১, ১৬/৮৯, ১৭/৮৯, ২৭/৭৪-৭৫) কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘কোরান ব্যাখ্যা সহ অবতীর্ণ ’ (আয়াত গুলো দেখে নিন। ১৮/১, ১৮/৫৪, ৬/১২৬, ২৪/১৮ ৪৬ ৫৮ ৬১, ১২/১১১, ৬/৬৫, ৭/৫৮, ১৭/৪১) [তাহলে কোরআনের ব্যাখ্যার নামে মনুষ্য রচিত লক্ষ লক্ষ হাদিছ আর তফসির কেন মানবেন?
১৯) সাহাবী আলী এবং মু’আবিয়া উভয়কে ভালবাসতে হবে
সহীহ হাদিছ হলো, আলী এবং মুয়াবিয়া উভয়ের জন্যে কোন এক হৃদয়ে ভালবাসা থাকতে পারে না। যারা উভয়কে ভালবাসার কথা বলেন, তারা মুনাফিক। মুয়াবিয়া এবং আমর ইবনুল আস এর আহলে বাইতের বিরোধী সমস্ত কর্মকান্ড এবং আকাম কুকামকে রাজতন্ত্রীরা ‘ইজতিহাদ’ আখ্যা দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। রাজতন্ত্রী উমাইয়ারা চিরকালই আহলে বাইতের বিরুধী। যারা মুয়াবিয়াকে ভালবাসে, তারা কোনভাবেই আলীকে ভালবাসতে পারে না। বরং তারা মুখে আহলে বাইতের ভালবাসার কথা বললেও মুলতঃ তারা মুনাফিক।
আর মুয়াবিয়াকে সাহাবীর মর্যাদা দেয়া তো দুরের কথা তাকে মুসলমান প্রমাণ করাই কষ্টসাধ্য। তিনি তার ৪১ বছরের শাসনামলে একটি মসজিদও নির্মাণ করেননি। তার রাজকোষের প্রধান ছিলেন একজন খৃষ্টান যাজক। তার মুদ্রায় ছিল খৃষ্টানদের ক্রশচিহ্ন। তার অধিকাংশ সেনাপতি ছিল খৃষ্টান। তিনি বদরী সাহাবীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছেন। আজন্ম আহলে বাইতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন। উসমান হত্যার অজুহাতে আলীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরলেও, ক্ষমতা পাওয়ার পর কস্মিনকালেও তিনি উসমান হত্যার ব্যাপারে টু শব্দটিও করেননি। ইতিহাসের জঘন্য প্রতারক আমর ইবনুল আস। নবী মৃত্যুর পর তিনি সম্ভবতঃ ধর্ম ত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু ইসলামী বিশ্ব শাসন করেছিলেন বিধায় তা প্রকাশ্যে স্বীকার করেননি। মৃত্যুকালে তিনি নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন যে, তার দুনিয়া তৈরী হয়েছে, কিন্তু আখেরাত ধ্বংস হয়ে গেছে। সুতরাং সীরাত না জেনে রাজতন্ত্রী আলেমদের মত মনগড়া মন্তব্য করে নিজের ইমান নষ্ট করবেন না। মনের ভেতর সামান্যতম ঈমান থাকলেও আলীর শত্রুদের কখনো ভালবাসতে পারেন না।
২০) বুখারি-মুসলিমে কোরআন বিরুদ্ধ কোন হাদিস নাই।
বুখারি, ৫২৫৫. আবূ উসায়দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে বের হয়ে শাওত নামক বাগানের নিকট দিয়ে চলতে চলতে দু’টি বাগান পর্যন্ত পৌছলাম এবং এ দু’টির মাঝে বসলাম। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা এখানে বসে থাক। তিনি ভিতরে) প্রবেশ করলেন। তখন নু’মান ইব্ন শারাহীলের কন্যা উমাইমার খেজুর বাগানস্থিত ঘরে জাওনিয়াকে আনা হয়। আর তাঁর খিদমতের জন্য ধাত্রীও ছিল। নবী যখন তার কাছে গিয়ে বললেন, তুমি নিজেকে আমার কাছে সমর্পণ কর। তখন সে বললঃ কোন রাজকুমারী কি কোন বাজারিয়া ব্যক্তির কাছে নিজেকে সমর্পণ করে? রাবী বলেনঃ এরপর তিনি তাঁর হাত প্রসারিত করলেন তার শরীরে রাখার জন্য, যাতে সে শান্ত হয়। সে বললঃ আমি আপনার থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাই। তিনি বললেনঃ তুমি উপযুক্ত সত্তারই আশ্রয় নিয়েছ। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের নিকট বেরিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ হে আবূ উসায়দ! তাকে দু’খানা কাতান কাপড় পরিয়ে দাও এবং তাকে তার পরিবারের নিকট পৌঁছিয়ে দাও।[৫২৫৭] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৫)
মহানবীকে ধর্ষক প্রমানের নিমিত্তে উমাইয়া ষড়যন্ত্রে রচিত এ ‘সহীহ’ হাদিস বিশ্বাস করেন ?
এছাড়াও ৩৪৭১, ৩৬৬৩, ৩৬৯০, মুসলিম ৪৪/১, হাঃ ২৩৮৮, আহমাদ ৭৩৫৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২১৭৩), বুখারি, বই -৮, হাদিস-৩৬৭, সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী), হাদিস নম্বরঃ [3298] অধ্যায়ঃ ১৭, বিবাহ, পাবলিশারঃ হাদিস একাডেমি, হাদিস নং ২৯৮৫, ২৯৮৭, সুনানে আবু দাউদ (ইফা), অধ্যায়-১৪ (কর,খাজনা, প্রশাসন), হাদিস নং ১৭১৪, সহীহ মুসলিম, (ইফা), অধ্যায় ৭ (ফাজাইলুল কোরান) হাদিস গুলো সহ মুসলিম শরীফের ও ইবনে মাজার ‘কোরআনের আয়াত ছাগলে খেয়ে ফেলার’ কথিত সহীহ হাদিসগুলো বিশ্বাস করে কোরআন অনুযায়ী হাদিছপ্রেমীরা অনেক আগেই কাফের হয়ে গেছেন। তাদের আবার কিসের মানহাজ?
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৪৪