কোরআন ব্যতীত অন্য কিছু মানলেই সে কাফের। দেখুন কোরআন কি বলছে- কোরআন মোতাবেক যারা নির্দেশ দেয় না, বিচার মীমাংসা করে না, তারাই কাফের, ফাছেক ও জালেম। (৫: ৪৪-৪৯)। রাসুল স্বয়ং কোরআন মেনে চলেছেন, কোরআন মানার নির্দেশ দিয়েছেন। কোরানের বাহিরে তিল পরিমাণ কথা কাজ করেননি; করলে স্বয়ং আল্লাহ তাঁর জীবন ধমনী কেটে ফেলতেন। [৬৯: ৪৪-৪৭] এই সেই কিতাব, যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য হিদায়াত। [২:২] ‘কিতাবে কিছুই আমি বাদ দেইনি। [৬:৩৮] কোরআনের পরে আর কোন হাদিছে তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে? [৭৭:৫০] সুরা আল-মোরসালাত-এর এ আয়াত তো একেবারেই সুষ্পষ্ট, এখানে কোরআনের বাইরে আর কোন কথায় (হাদিছে) বিশ্বাস স্থাপন না করার জন্যে আল্লাহর নির্দেশ রয়েছে। বুখারী সহ প্রচলিত হাদিসগুলো আল্লাহর নির্দেশকে অমান্য করে রাসূলের বরাদ্দ দিয়ে মিথ্যা হুকুম সমাজে চালু করে মানুষকে মুশরেক বানাচ্ছে। অথচ আল্লাহ বলেছেন, (সুরা কাহফ ১৮, আয়াত ২৬)-‘‘তিনি তাঁর হুকুমে কাউকে অংশীদার করেন না।" কোরআনের একটি আয়াতও নির্দেশ করে না, প্রচলিত হাদিস মানতে বরং অসংখ্য আয়াত নির্দেশ করে, প্রচলিত ধর্ম ব্যবসায়ীদের হাদিস/কথা বর্জন করতে। [আল-কোরআন, ৪৫/৬, ৭৭/৫০] কোরান পূর্ণ সহজ সরল (১৮/১, ৩৯/২৭-২৮, ১৭/৯, ১৭/৪১, ৫৪/১৭ ২২ ৩২ ৪০, ২/২২১, ৩/১১৮, ৬/৩৮, ৬/৫৯, ১০/৬১, ১৬/৮৯, ১৭/৮৯, ২৭/৭৪-৭৫) আল্লাহ বলেছেন কোরআন সহজ সরল। আর শয়তানরা বলছে, কোরআন কঠিন। কোরআন বুঝা নাকি ভীষন কঠিন। তাই তারা ব্যাখ্যার নামে নিজেদের মনগড়া তফসির লিখে বাহবা কুড়াতে গিয়ে মানুষকে চিরকালের জন্য বিভ্রান্ত করে গেছেন। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘কোরান ব্যাখ্যা সহ অবতীর্ণ ’ (আয়াত গুলো দেখে নিন। ১৮/১, ১৮/৫৪, ৬/১২৬, ২৪/১৮ ৪৬ ৫৮ ৬১, ১২/১১১, ৬/৬৫, ৭/৫৮, ১৭/৪১) [তাহলে কোরআনের ব্যাখ্যার নামে মনুষ্য রচিত লক্ষ লক্ষ হাদিছ আর তফসির কেন মানবেন? আল্লাহর কথা বিশ্বাস করবেন, নাকি মানুষের কথা? বর্ণনাকারী হিসাবে আল্লাহর চাইতে আর কে বেশী উত্তম?]
আসমানী কিতাব ছাড়া আর কোন আয়াত মানা তো দুরের কথা, বিশ্বাসই করা যাবে না। আল-আ‘রাফ ৭:৩ ٱتَّبِعُوا۟ مَآ أُنزِلَ إِلَيْكُم مِّن رَّبِّكُمْ وَلَا تَتَّبِعُوا۟ مِن دُونِهِۦٓ أَوْلِيَآءَۗ قَلِيلًا مَّا تَذَكَّرُونَ তোমরা অনুসরণ কর, যা তোমাদের প্রতি পালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য সাথীদের অনুসরণ করো না।
মোল্লা বলে কোরআনে সব নাই, কিন্তু আল্লাহ বলেন কোরআনে সব আছে !! মোল্লা না আল্লাহ, কে মিথ্যা বলে? সূরা ৬:৩৮: আর যত প্রকার প্রাণী পৃথিবীতে বিচরণশীল রয়েছে এবং যত প্রকার পাখী দু’ ডানা যোগে উড়ে বেড়ায় তারা সবাই তোমাদের মতই একেকটি শ্রেণী। আমি কোন কিছু লিখতে ছাড়িনি। অতঃপর সবাই স্বীয় প্রতিপালকের কাছে সমবেত হবে।
"কোরআন" বিশ্বাসীদেরকে একাধিকবার এটা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে, পূর্ববর্তী জাতিসমূহ ধ্বংস হয়েছিল সৎপথ বিচ্যূত ও মুল কিতাব ত্যাগ করার কারণে। আর তাদের এই বিচ্যূতি ঘটেছিল অন্ধভাবে আলেম ও ইমামদের হাদিসসমূহ অনুসরণ এবং আল্লাহর গ্রন্থকে পিছনে ফেলে রাখার কারণে।
আর আমাদের পূর্বপুরুষগণ ইহুদি ও খৃষ্টানদের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে আবিস্কার করেছেন এক গাদা ধর্মীয় ধারণা, লিখেছেন বহু সংখ্যক কিতাব এবং সেগুলিকে নিজেদের ধর্মের ভিত্তি করে নিয়েছেন।
তারা "আল্লাহর ধর্ম"-কে পরিবর্ধন করে তৈরী করেছেন একটা জয়েন্ট স্টক ধর্ম, যা মূলত: প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আল্লাহ, রাসূলুল্লাহ সঃ, রাসূলুল্লাহর পরিবার, সাহাবী, সাহাবীগণের উত্তরসূরী, ঈমাম ও আলেমগণের দ্বারা।
কোরআনের ২নং সুরার ২নং আয়াতে বলা হয়েছে, এ গ্রন্থে কোন সন্দেহ নেই। সন্দেহ রাখলে ঈমান থাকবে না
কোরআনের ৭৫ নং সুরার ১৯ নং আয়াতে বলা হয়েছে, কোরআন ব্যাখ্যা করার দায়িত্ব আল্লাহ নিজে নিয়েছেন। প্রশ্ন আসে বুখারি গং-কে কে দায়িত্ব দিয়েছে?
১২ নং সুরার ১নং আয়াতে ১৮ নং সুরার ১নং আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহ ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা বলেন না। যদি বলেন যে কোরআন থেকে কোন কথা পরিস্কার হয় না, তাহলে আপনি বলতে চাইছেন, আল্লাহ মিথ্যা কথা বলেছেন (নাউজুবিল্লাহ)।
১৫ নং সুরার ১৯ নং আয়াতে বলা হয়েছে, কোরআনকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আল্লাহ স্বয়ং নিয়েছেন।
৬ নং সুরার ১৯ নং আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহ রাসুলকে যা দিয়েছেন, তা কোরআনেই দিয়েছেন।
৭ নং সুরার ৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে, রাসুলের প্রতি নাজিল হওয়া কোরআনকেই মানতে বলেছেন।
আল্লাহ রাসুলকে বলেছেন, আমি যা দিচ্ছি তা আপনি অনুসরন করুন।
১০ নং সুরার ১০৯ নং আয়াতে বলা হয়েছে, আয়াত যা এসেছে তা আল্লাহর থেকেই এসেছে।
৭৫ নং সুরার ১৮ নং আয়াত, কোরআনকে অনুসরন করার কথা বলা হয়েছে।
৬ নং সুরার ১৫৫ নং আয়াত, রাসুলকে বলেছেন, কোরআন অনুসরন করুন।
৫ নং সুরার ৪৮ নং আয়াত, আল্লাহর কাছ থেকে যা আসে তা দিয়ে বিচার কাজ করার জন্যে বলা হয়েছে।
৫ নং সুরার ৪৪ নং আয়াত, আল্লাহর কাছ থেকে যা আসে তা অনুসরন করার জন্যে বলা হয়েছে।
৬ নং সুরার ৩৪ নং আয়াত এবং ১১৫ নং আয়াতে, এ গ্রন্থ পরিপূর্ণ। কেউ সন্দেহ করলে তার ঈমান থাকবে না।
কিন্তু কথিত সিহাহ সিত্তাহ কোরআনের ব্যাপারে ঘোরতর সন্দেহের সৃষ্টি করে। সিহা সিত্তাহ তথা ৬টি হাদিসের গ্রন্থ লেখা হয়েছে মহানবীর মৃত্যুর ২০০-৩০০ বছর পরে অমুক তমুক থেকে, সেই তমুক আরেক তমুক থেকে কিম্বা অমুকের বাপের থেকে তমুকের বাপের শুনা কান কথায় নির্ভর করে। উমাইয়া-আব্বাসীয় শাসকেরা তাদের নিজেদের ক্ষমতার স্বার্থে রাসুলের নামে অনেক মিথ্যা হাদিছের জন্ম দিয়েছেন। উমাইয়ারা ইসলামের আবরনে মুসলিম বিশ্ব শাসন করলেও তারা মুলতঃ আহলে বাইত বিদ্বেষী ছিলেন। উমাইয়া সমর্থক আলেমরা ‘ইজতেহাদী ভুল’ সীমা লঙ্ঘন হয়ে যায়’ মর্মে নানা কথামালা দিয়ে উমাইয়াদের দায়মুক্তি দেয়ার চেষ্টা করে আসছেন। রাসুলের শানে অপমানমূলক যেসব হাদিছ সৃষ্টি করা হয়েছে, সেগুলোকেও তারা সহীহ মর্মে ছড়িয়ে দিয়েছেন। অথচ এসব হাদিছ সম্পূর্ণভা্বেই কোরআন বিরুদ্ধ। বুখারির ৫২৫৫ নং হাদিছে রাসুলকে ধর্ষক প্রমানের চেষ্টা করা হয়েছে। বুখারিতে মহানবীকে শিশুকামী প্রমানের চেষ্টাও রয়েছে। এছাড়াও ৩৪৭১, ৩৬৬৩, ৩৬৯০, মুসলিম ৪৪/১, হাঃ ২৩৮৮, আহমাদ ৭৩৫৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২১৭৩), বুখারি, বই -৮, হাদিস-৩৬৭, সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী), হাদিস নম্বরঃ [3298] অধ্যায়ঃ ১৭, বিবাহ, পাবলিশারঃ হাদিস একাডেমি, হাদিস নং ২৯৮৫, ২৯৮৭, সুনানে আবু দাউদ (ইফা), অধ্যায়-১৪ (কর,খাজনা, প্রশাসন), হাদিস নং ১৭১৪, সহীহ মুসলিম, (ইফা), অধ্যায় ৭ (ফাজাইলুল কোরান) হাদিস গুলো সহ মুসলিম শরীফের ও ইবনে মাজার ‘কোরআনের আয়াত ছাগলে খেয়ে ফেলার’ কথিত সহীহ হাদিসগুলো বিশ্বাস করলে কেউ আর মুসলিম থাকে?
কোরআনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টাও হয়েছে। হাদিস নং ৫৮৯৬। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে মসজিদে কুরআন তিলাওয়াত করতে বললেন। তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহ তার উপর রহমত করুন। সে আমাকে অমুক অমুক আয়াত স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, যা আমি অমুক অমুক সূরা থেকে ভুলে গিয়েছিলাম। [সহীহ বুখারি, ৫৮৯৬]
আল্লাহর কোরআনকে অশুদ্ধ প্রমাণে সিহাহ সিত্তায় প্রচুর হাদিছ রয়েছে। অসংখ্য সহিহ হাদিসে খলিফা উমরের বরাতে বর্ণিত হয়েছে যে, বর্তমান কোরানে ব্যভিচারের শাস্তিস্বরূপ পাথর মেরে হত্যা করা সংশ্লিষ্ট রজমের আয়াত উল্লেখ করা হয়নি। রেফারেন্স-
০১) সহিহ মুসলিম ৪২৬৯ ও ৪২৭১ নং হাদিস। ০২) সুনানে আবু দাউদ ৪৩৬৫ নং হাদিস।
০৩) সুনানে ইবনে মাজাহ ২৫৫৩ নং হাদিস। ০৪) আল ইতকান ২য় খণ্ড ১৬ পৃষ্ঠা।
ইবন মাজাহ এর রেওয়ায়েতটি হচ্ছেঃ আয়িশা(রা) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, “রজমের ও বয়স্কদের দশ ঢোক দুধপানের আয়াত নাযিল হয়েছিল এবং সেগুলো একটি সহীফায় (লিখিত) আমার খাটের নিচে সংরক্ষিত ছিল। যখন রাসুলুল্লাহ(ﷺ) ইন্তিকাল করেন এবং আমরা তাঁর ইন্তিকালে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়লাম, তখন একটি বকরী এসে তা খেয়ে ফেলে।” সুনান ইবন মাজাহ, হাদিস নং ১৯৪৪
অর্থাৎ রজমের শাস্তির বিধানটি কোরআনে আসেনি। তাই বুখারি গং-সেটা তাদের হাদিসে ঢুকিয়েছে।
সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ১০৫০, (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২২৯০) এখানে বলা হয়েছে, সুরা তওবার মত বড় একটি সুরা ছিল, যা কোরআনে সংকলিত হয়নি। (নাউজুবিল্লাহ) সহীহ, বুখারি ৪৯৮৭, ৪৯৮৮, মাকতু, তিরমিজী হাদিস ৩১০৪ হাদিসেও কোরআনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা হয়েছে।
আছে চরম অবৈজ্ঞানিক ও হাস্যকর হাদিছও। জিব্রাইলের ৬০০ ডানা। আসমানের দরজা এবং দারোয়ান থাকা। মেরাজ-এর সহিহ হাদিছ তো ঠাকুরমার ঝুলিকেও হার মানায়।
কথিত হাদিস দ্বারা কোরআন বুঝতে গেলে সেটা আর নিজের মত করে বুঝবেন না। বুঝবেন, উমাইয়া-আব্বাসীয়দের মত করে। রাজতন্ত্রের মোল্লারা হাদিছকে ঠিক রাখার জন্যে কোরআনের অনুবাদেও নানা কারসাজি করেছে। সুরা লোকমানের ৬ নং আয়াতে অপ্রয়োজনীয় হাদিস খরিদ করতে নিষেধ করা হয়েছে। অনুবাদে হাদিস-এর স্থলে গানবাজনা ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। এইরকম জোচ্চুরী তার অনেক জায়গায় করেছে।
রাজতন্ত্র টিকাতে হাদিসের প্রয়োজন। সৌদির বাদশাহ হাদিসভিত্তির সালাফি মতাবলম্বীদের আমিরুল মুমেনীন। হাদিসের প্রচারে সৌদিরা প্রতি বছর কোটি কোটি ডলার খরচ করেন। তার ফলও তারা হাতেনাতে পাচ্ছেন। সৌদি আরব তৃতীয় বিশ্বের চরম অনুন্নত ও সভ্যতা থেকে পিছিয়ে থাকা দেশ হওয়া সত্বেও প্রচার-যন্ত্রের কারনে গোটা বিশ্বে তারা প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে। সালাফি এবং আহলে হাদিসরা কোরআনকে নির্বাহী ক্ষমতাহীন রাষ্ট্রপতির মত উচ্চ ক্ষমতায় বসালেও জীবনের সবক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিতা পালন করে কেবলমাত্র বুখারি-মুসলিম-এর হাদিছ। তাদের সর্বোচ্চ ডিগ্রির নাম দাওরা হাদিস, নিজেদের টাইটেল শায়খুল হাদিস, দলের নাম আহলে হাদিস। হাদিছেই হাদিস তাদের গোটা জীবন। হাদিছের সাথে মিলিয়ে তারা কিছু কোরআনের আয়াত মানে মাত্র। মুলতঃ তাদের পুরো জীবনই হাদিস ভিত্তিক।
এবার হাদিসের মুল লেখক বুখারির একটা দাবী নিয়ে বিশ্লেষন করি। দাবী করা হয় যে , বুখারী ১০০০ শিক্ষকের তত্বাবধানে থেকে ১৬ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে ৬ লক্ষ হাদীস সংগ্রহ , যাচাই বাছাই ও শ্রেনীভূক্ত করেন , যার ভিতরে ১ লক্ষেরও বেশি হাদীস তার মুখস্ত ছিল। তিনি হাদীস সংগ্রহ , যাচাই বাছাই ও শ্রেনীভূক্ত করার কাজটি অতি সতর্কতার সাথে করেছিলেন। যাতে কোন ভুল হাদিস তার সঙ্কলনে ঢুকে পড়তে না পারে। ফলশ্রুতিতে তিনি ৯৯% হাদীস বাদ দিয়ে মাত্র ৭ হাজারের মতো হাদীসকে সহীহ আখ্যা দিয়ে তার গ্রন্থে স্থান দিয়েছেন। তার এই অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য মুসলিম উম্মাহ ৫ লক্ষ ৯৩হাজার মিথ্যা হাদীসের প্রভাব থেকে রক্ষা পেয়েছে , এ জন্য তিনি অবশ্যই প্রশংসা পাওয়ার দাবীদার।
তিনি যে কত সতর্ক ছিলেন এবং কি পরিমান কষ্ট স্বীকার করেছেন তা বলে শেষ করা যাবে না। তিনি নিজে প্রতিটি হাদীসের বর্ননাকারীর বাড়িতে গিয়ে খোজ নিয়েছেন , বর্ননাকারী মদ খেতো কিনা , জীবনে কখনো মিথ্যা কথা বলেছে কিনা , তার চরিত্র কেমন , স্মরনশক্তি কেমন ইত্যাদি ইত্যাদি। এর কোন কিছুতে এতটুকু ব্যাত্যয় পেলেই তিনি সেই হাদীস ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন। এই সকল বর্ননাকারী আবার আরবের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলেন। প্রতিটি বর্ননাকারীর বাড়িতে যাওয়া এত সহজ ছিল না। তখনকার দিনে প্রাইভেট প্লেন বা পাজেরো বা road sign দেয়া রাজপথ ছিলনা যে নিমেশেই তিনি পৌছে যাবেন। ফলে তাকে শত শত মাইল উট বা ঘোড়ার পিঠে করে যেতে হয়েছে। সঙ্গে নিতে হয়েছে রসদ , রাস্তার গাইড , চোর দস্যু মোকাবেলার জন্য পাইক বরকন্দাজ আরো কত কি। হয়তো বা দেখা গেছে একজনের বাড়িতে যেয়ে ফিরে আসতেই বছর শেষ।
বুখারী হয়তো করিৎকর্মা লোক ছিলেন , তার এতো সময় নাও লাগতে পারে। ধরে নিলাম প্রতিটি হাদীস সংগ্রহ , যাচাই বাছাই ও মুখস্ত করতে তার ১ ঘন্টা সময় লেগেছে। এই হিসাবে দিনে ২৪ ঘন্টা ঘুম খাওয়া দাওয়া বাদ দিয়ে তিনি এক নাগাড়ে কাজ করলেও ৬৮ বছর লাগার কথা। তারপরেও না হয় প্রতিটি সহীহ হাদীস (৭০০০) লিপিবদ্ধ করার পরে তার ওজু করে ২ রাকাত করে নফল নামাজ পড়ার কথা বাদই দিলাম। তার আয়ুষ্কালই ছিল ৬২ বছর।
এতোকাল মানুষ বুখারি কথায় অন্ধভাবে বিশ্বাস করে এসেছে। খতিয়ে দেখেনি। এখন তথ্য প্রবাহের যুগ। কোন তথ্যই আর লুকিয়ে রাখার উপায় নেই। শিক্ষিত মানুষেরা ধর্ম নিয়ে পড়াশুনা এবং গবেষনা করছেন। কাজেই মূর্খ মোল্লাদের দাবী এখন হাস্যরসে পরিণত হতে চলেছে।