কখনো কি ভেবেছেন যে সামু ব্লগ যদি একটা জংগল হতো আর ব্লগারেরা পশু পাখি তবে কেমন হতো সেই ব্লগিং? নাহ অবশ্যই ভাবেন নি। এহেন উদ্ভট চিন্তা শুধু সামুপাগলার মাথাতেই আসতে পারে। সেই চিন্তার প্রতিফলন এই পোস্ট। আশা করি এই জংগলের এই জার্নি সবাই অনেক এনজয় করবেন।
কারো নিক নেম যদি মিলে যায় পোস্টে দেওয়া কাল্পনিক নিকগুলোর সাথে তবে তা একেবারেই কাকতালীয়।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
১) এক গরু যার নিক নেম "পাগলা গরু০২" অনেক কষ্টে, গবেষনা করে, জংগলের অলিগলি ঘুরে গরুর খাদ্য ও পুষ্টিগুণ নিয়ে কিছু তথ্য সামু জংগলের পাতায় পাতায় এঁকেছে। কিন্তু সেই পাতাগুলোকে অন্য গরুরা পাত্তাই দিলনা! সেটা দেখে হতবাক, দুঃখী চেহারায় ঘুরে বেড়াতে লাগল আমাদের পাগলা গরু০২।
পাগলা গরু০২ হতাশ হয়ে একদিন তিনটি ঘাসকে একসাথে রেখে দিল। বাব্বাহ! সকল গরু মহিষ হুমড়ি খেয়ে পড়ল। কে আগে ঘাস খেতে পারে সেটা নিয়ে যেন লেগে গেল প্রতিযোগিতা!
সেই মুহূর্তে পাগলা গরু০২ সকল দন্ত বিকশিত করে মনে মনে ঠিক করে ফেলল, মেধা ও শ্রম আর অপচয় করবেনা। এবার থেকে সবাইকে ঘাস খাওয়ানোর চেষ্টাই করবে। গরু পাঠক যা খাবে, গরু লেখক তো তাই গেলাবে!
২) অন্য দিকে "দ্যা বেংগল টাইগার০৭" ছোট্ট একটি লেখন পেশ করল "সিংহ নয় সকল প্রাণীরই হওয়া উচিৎ বনের রাজা" বিষয়ে। সেটা নিয়ে অন্য এক বাঘ যা বলল সেটা মানুষের ভাষায় অনুবাদ করলে দাড়ায়;
"বনে এক রাজা না থাকলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে, তাই এসব নিয়ে কথা বলা সিংহ রাজের অবমাননা! জংগলের প্রাচীন নীতির অপমান!"
তাতে আরেক বাঘের মন্তব্য - "সিংহও অন্যান্য প্রাণীর মতোই আরেকটি জীব। তবে কেন বাপু তারা আলাদা করে সবার ওপরে ছড়ি ঘোরাবে?"
প্রথম ও দ্বিতীয় বাঘের পক্ষে একের পর এক তর্ক হতে হতে, পুরো জংগল দু ভাগে ভাগ হয়ে গেল। "আমিই ঠিক" প্রমাণে ঝগড়া, মারামারিতে বন জংগল ধ্বংস হতে থাকল! বাঘে বাঘে শত্রুতায় অন্য প্রাণীরা হাসাহাসি করা শুরু করল।
তখন "দ্যা বেংগল টাইগার০৭" মনে মনে - দিছি প্যাঁচ লাগাইয়া!
৩) কাকদের দল একের পর এক পদ্য মধুর!! সুরে গেয়ে যাচ্ছে।
কা কা কা
খা খা খা
কা কা কা
খা খা খা!
সুর ভেসে আসা মাত্র বাকি সব কাক ঠোকর দিয়ে লাইক বাটন টিপতে দেরী করছেনা। বাহ কি একতা তাদের!
অন্যদিকে জংগলের অন্য সকল পাখির হৃদয় নিঙ্গারানো, দর্শনভিত্তিক এবং অর্থবহ কাব্য ও সুর পেছনে পরে যেতে থাকে।
ধীরে ধীরে, সেসব পদ্যের সংখ্যা জংগলের বিলুপ্ত পাখিদের মতোই হতে থাকে। রঙিন পাখিকে জংগলে এবং গুণী কবিকে লেখালেখিরর আকাশে উড়তে সাহায্য করা উচিৎ। নাহলে খাঁচাবন্দি হয়ে পড়বে কিছু সুন্দর কাব্যিক লাইন!
৪) সামু জংগলের অন্য দিকে "প্রহর জেব্রার" নামক এক ব্লগার ১০ মিনিট কঠোর!!?? পরিশ্রম করে ছেড়া দুটো পাতা জোগাড় করল। সাথে সাথে অন্য জেব্রারা তাকে জানিয়ে দিল এটা ফেবু নয় সামু জংগল। এখানে পরিচ্ছন্ন, সতেজ পাতা জোগাড় করতে হয়। কোথায় ফেবু জংগলে তার দুটো পাতায় ২০০ জেব্রা হুমড়ি খেয়ে ভীড় করত আর কোথায় এই নতুন জংগলে সবার বকা পাচ্ছে!
ফেবু জংগলে -
সামু জংগলে -
"জেব্রার প্রহর" ভাবল নিজের জংগলে তো সবাই রাজা বন্ধুদের মাঝে কিন্তু নিজেরে তো জানা যায় অজানার মাঝে! প্রথম দিন সে দুই পাতা জোগাড় করলেও কিছু মাস পরে পুরো এক মাঠ ঘাস ও পাতা খুঁজে বের করে ফেলল। সময়ের সাথে সাথে বানিয়ে ফেলল প্রচুর বন্ধু সামু জংগলে। আহা! সেদিন "গঠনমূলক" বকা না পেলে কি সে এতকিছু শিখতে পারত?
৫) এক নিরীহ মহিষ যাক নিক - "মহিষের ছেঁড়া ডায়েরী" ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যায় করে, মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে নিজের ব্যক্তব্য পেশ করল।
তাকে এক হিংস্র নেকড়ে এসে বলল; "এমন ফাউল কথা কেউ কয়? যত্তসব আউল ফাউল বকবক।"
ওমা মজার ব্যাপার! সাথে সাথে আরো তিন চারজন নেকড়ে একই রকম কথা বলতে থাকল! কেউ কেউ একের পর এক বাজে ছবি আঁকা পাথর ছুড়ে দিতে থাকল মহিষের দিকে! নিন্দুকেরা বলে "মাল্টি" এটাক একের ওপর! বেশ কিছু নেকড়ের এটাকে কিছু সরল মহিষ মত দিলেন সমালোচনা জংগলের অংশ! সবার মাঝে পিষতে থাকে বেচারা "মহিষের ছেঁড়া ডায়েরী"!"
কিন্তু গল্প এখনো শেষ হয়নি। সামু জংগলের বিজ্ঞ মহিষেরা ব্যক্তিগত আক্রমণ ও সমালোচনার পার্থক্য বোঝাতে বসলেন। বনের রাজা "কাভা!" সচেতন হলেন এবং যুদ্ধ বাঁধাতে আসা নেকড়েগুলোকে জংগল থেকে বিতাড়িত করতে লাগলেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় জয়ী হলো। সামু জংগলে আবারো সবাই সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগল।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
শেষ কথা: বাব্বাহ! ভাগ্য ভালো আমরা মানুষ এবং সামু ব্লগ কোন জংগল না। আমাদের সামুতে তো ওপরের ঘটনাগুলো ঘটেই না।
ছবিসূত্র - অন্তর্জাল!
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:১৫