somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘লাবণ্য দাশের সাথে দেখা হওয়ার পর’ পাণ্ডুলিপির অব্যক্ত কথা...

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিক্রিকে মূখ্য বিষয় ধরে আমি বই প্রকাশ করি না। আমি চাই না কোনো রকম পাঠপ্রস্তুতি নেই এমন পাঠকরা আমার বই পড়ে তাদের সময় নষ্ট করুক। আমি চাই আমার লেখাগুলো এমন কিছু মানুষ পড়বে যাদের অন্তত কিছুটা পাঠ প্রস্তুতি আছে। আমি বিশ্বাস করি একেক লেখকের লেখা পড়ার জন্য পাঠকের পাঠ প্রস্তুতি থাকতে হয়। কারণ স্বচ্ছ ইমেজের লেখা পড়ার প্রস্তুতি নিয়ে কখনো কেউ নীরিক্ষাধর্মী লেখা হজম করতে পারবে না। শুধু শুধু তার সময় নষ্ট করবে। এবং বলবে এ লেখকের লেখা কিচ্ছু হয় না। হাবিজাবি লেখে। আমি কোনো লেখককে অসম্মান করতে চাই না। কারণ আমি এটা বিশ্বাস করি যে, প্রত্যেকে তার মতো। সবাই নিজের মতো করে ইমেজ তৈরি চেষ্টা করে।

কারো ইমেজ পাঠক কানেকশন তৈরি করতে পারে আবার কারোটা পারে না। তাই বলে আমরা সে লেখককে অস্বীকার করতে পারি না। কিংবা সাইট করে রাখতে পারি না। আর নীরিক্ষায় সব সময়ই একটা রিস্ক থাকে। তারপরও প্রতিটি লেখায় নিজেকে আলাদাভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা থাকে আমার। কখনো আবার উপস্থাপন শৈলীর চেয়ে ভাবনার জায়গাটা বড় করে দেখার চেষ্টা করি। নিজের ভেতরের নিজেকে ভেঙে আবার নিজেকে তৈরি করি। কিন্তু মঙ্গল গ্রহ কিংবা শুক্র-শনির গল্প আমি বলতে পারি না। আমি নিজস্ব ডুব-সাঁতার কিংবা চিন্তার দৌড় নিয়ে ছুটতে পারি। যতদূর মন যায়। যতদূর চিন্তা যায়। তবে সেটা অবশ্যই বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে। আমি মানুষের জীবন আঁকতে চাই। কিংবা কেবলই আমার জীবন! যা দেখা যায় কিন্তু আবার দেখা যায় না। আবছা আলোর গহীনে।

কোনো লেখার গল্প কিংবা থিম আমাকে ধারাবাহিকভাবে পেইন না দিলে সেটা নিয়ে আমার বসা হয় না। মানে সেটা কলম থেকে কাগজে আসে না। যদিও এই বিশ্বায়নের সময় কাগজে কলমে খুব রাইটাররাই লিখেন। মাঝে মাঝে আমিও লেখার জন্য কম্পিউটারকেই বেছে নিই। তবে লাবণ্য দাশের সাথে দেখা হওয়ার পর গল্পের বইয়ে সংকলিত হওয়া দশটি গল্পই হাতে লেখা। কম্পোজ করার আগেই একাধিকবার সম্পাদনা করা হয়েছে। কিন্তু সম্পাদনার কি কোনো শেষ আছে? না নেই। তেমন শিল্পিরও তৃপ্তির শেষ নেই। তবে একটা সময় তো থাকতেই হয়। তারপরও প্রকাশকের কাছে পাণ্ডুলিপি দেয়ার আগে অন্তত এই আত্মবিশ্বাসটার জন্য আমি অপেক্ষা করি যে এই লেখা নিয়ে যেন আমি নিজের পাঠরূচির সামনে দাঁড়াতে পারে। অন্তত এইটুকু না হলে আমি কোনো লেখা প্রকাশকের টেবিলে পাঠাই না। আবার আমি এও চাই যে প্রকাশকের যদি সম্পাদনা পরিষদ থাকে তারা এটাকে সম্পাদনা করুক। যদিও বাংলাদেশে এরকম প্রকাশনীর সংখ্যা কম যাদের সম্পাদনা পরিষদ আছে। আবার অনেক লেখকরা চান না তাদের লেখা সম্পাদনা করা হোক। কিন্তু আমি চাই।

আমি মূলত কবিতার মানুষ। কিন্তু গদ্য লেখার তাড়না যখন থেকে নিজের উপর চাপ তৈরি করেছে তখন থেকেই মনে মনে খসড়া করেছি। কাগজে করেছি। লিখেছি। কেটেছি। ‘লাবণ্য দাশের সাথে দেকা হওয়ার পর’ বইয়ের গল্পগুলো গত তিন বছরে লেখা হয়েছে। বিভিন্ন সময়। বিভিন্ন স্থানে। যদিও প্রথম গল্প লিখেছিলাম ২০০৪/৫ সালের দিকে। কিছুদিন পর মনে হলো পুরো লেখায় আমার থেকে শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায় বেশি উপস্থিত। সে কারণে লেখাগুলো কোথাও প্রকাশ করিনি, সংরক্ষণও করিনি।

এরপর আবার কয়েকটি গল্প লেখি ২০১৩ সালের দিকে। দু’টি গল্প পত্রিকায় ছাপাও হয়। গল্প পড়ে এক কবি বন্ধু বলেন , ‘কি লেখছো এসব! এগুলো ছোট কালে লিখছি .. ’ যদিও কেউ কেউ প্রশংসাও করলেন। কিন্তু আমার মনে খটকা লেগেই থাকলো। আবার বিরতি। আবার বিরতি ভেঙে ২০১৭ সালে গল্প লেখা শুরু করলাম। একটি- দুটি করে বেশ কিছু গল্প লেখা হলো। ছাপাও হলো গুরুত্বপূর্ণ কিছু পত্র-পত্রিকায়। তারপর এই পান্ডুলিপি গুছানো। তারপরও ভরসা পাচ্ছিলাম না। ‘লাভন্য দাশের সাথে দেখা হওয়ার পর’ পাণ্ডুলিপিটি কয়েকজন প্রকাশকের হাত ঘুরলো। তার পাণ্ডুলিপির উপর আস্থা রাখতে পারলেন না।

অবশেষে ‘অনুপ্রাণন প্রকাশন’র আবু মোহাম্মদ ইউসুফ ভাইকে পাঠালাম। বললাম আপনার সম্পাদনা পর্ষদ মত দিলেই বইটি প্রকাশের ব্যাপারে উৎসহ পাবো। আসলে কেন জানি বিশ্বাস পাচ্ছিলাম না। একদিন সম্পাদনা পর্ষদ থেকে ছাপানোর জন্য সুপারিশ করা হলো। ছোট ভাই আল নোমান সুন্দর এই প্রচ্ছদটিও করে দিলো। বাকীটা যারা পড়বেন তাদের কাছ থেকে শুনবো।

[ ‘দৈনিক অধিকার ’ পত্রিকায় প্রকাশিত ]

বইয়ের নাম: লাবণ্য দাশের সাথে দেখা হওয়ার পর
বইয়ের ধরন: গল্পের বই
প্রকাশক: অনুপ্রাণন প্রকাশন
প্রকাশকাল: জানুয়ারি ২০২০ খ্রি.
প্রচ্ছদ: আল নোমান
মলাট মূল্যঃ ২০০ টাকা
স্টল নং ২৩১-২৩২
অনলাইনে সংগ্রহের উপায় ঃ rokomari.com অথবা boibazar.com
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:১০
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×