গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে সব সময়ই মনের মধ্যে কিছু প্রশ্ন উঁকিঝুঁকি মারে। গাড়ির যন্ত্রপাতি, পার্টস ঠিক আছে তো? ইঞ্জিন কন্ডিশন ভালো তো? বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় ব্রেক ফেল করবে না তো? এ ছাড়াও কাগজপত্রের বিড়ম্বনা তো আছেই-এমন ভয় একদমই অমূলক নয়। বহু লোক আছেন, যারা সামান্য অসাবধানতার কারণে চরম দুর্ভাগ্যে পরিণত হয়েছেন। কেউ হয়তো বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পর ইঞ্জিনের সমস্যা বুঝতে পেরেছেন। কেউ হয়তো এক সপ্তাহ পর আবিষ্কার করেছেন গাড়ি এক লিটারে এক কিলোমিটার যায়। আবার কারও হয়তো সব কাগজপত্রই জাল। এসব ঝামেলার কারণে অনেকে পুরনো গাড়ি কেনার ঝুঁকি নিতে চান না। কিন্তু একটু সাবধান আর একটু ভাগ্য সহায় হলে নতুন গাড়ির চেয়ে অনেক কমদামেই নতুনের মতো গাড়ি পেয়ে যেতে পারেন সহজেই।
খোলা মাঠে সারি সারি গাড়ি সাজানো রয়েছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের, বিভিন্ন মডেলের, বিভিন্ন রংয়ের হাজারো গাড়ির পসরা। শত শত ক্রেতা-বিক্রেতার আগমন। কেউ এসেছেন গাড়ি কিনতে, আবার কেউ এসেছেন নিজের গাড়িটি বিক্রি করতে। আবার হয়তো অনেকেই এসেছেন ঘুরে ঘুরে দেখতে। কোথাও দরকষাকষি চলছে, আবার কোথাও চলছে কাগজপত্র তৈরি। কেউবা পছন্দের গাড়িটি ঘুরে ঘুরে দেখছেন ভেতর কিংবা বাইরে থেকে। কেউ গাড়িটি চালিয়ে দেখছেন, এ যেন ক্রেতা-বিক্রেতার এক বিরাট মিলনমেলা।
যাদের শৈশব কিংবা জীবনের কোনো একটা সময় গ্রামের সংস্পর্শে কেটেছে, ‘হাট’ তাদের কাছে খুবই পরিচিত একটি শব্দ। সপ্তাহের কোনো বিশেষ একটি দিনে, কোনো নির্দিষ্ট স্থানে, সকাল থেকে সন্ধ্যা রাত পর্যন্ত হাট বসে। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ চলে আসে এসব হাটে বেচাকেনা করতে। কেননা সূলভ মূল্যে প্রয়োজনীয় সব জিনিস পাওয়া যায় শুধু এই হাটগুলোতেই। শহরের ব্যস্ত জীবনে শপিংমলগুলো দখল করে নিয়েছে হাটের জায়গা। কিন্তু তারপরও সেই হাটের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে ‘কার হাট’। সুলভ মূল্যে পছন্দের গাড়িটি খুঁজে নেওয়ার মোক্ষম জায়গা। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার সারা দিন চলে হাটের বেচাকেনা। পুরনো গাড়ি কিনতে চান, কিংবা বিক্রি করতে চান? সেক্ষেত্রে বেছে নিতে পারেন ‘কার হাট’।
কার হাটের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৯ সালের ১৩ আগস্ট। মূলত গাড়ির প্রদর্শনী, ক্রয় ও বিক্রয়ের জন্য এখন এটি বেশ বিখ্যাত। তা ছাড়া ক্রেতার প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী পছন্দের গাড়িটি বেছে নিতে পারেন কার হাটের বিশাল বেঞ্চের কালেকশন থেকে। একই প্ল্যাটফর্মে এত বৈচিত্র্যময় অপশন আর কোনো শোরুমই দিতে পারবে না। তাই কার হাট এখন এত জনপ্রিয়।
কার হাট বসে প্রতি শুক্রবার ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে সংসদ ভবনের বিপরীত দিকে রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। আসাদগেট সংলগ্ন আড়ংয়ের পেছনে খেলার মাঠে। টিঅ্যান্ডটি স্কুল ও কলেজ মাঠে। সকাল থেকেই শুরু হয়ে যায় ডিসপ্লে। খুব পুরনো মডেল থেকে শুরু করে খুব রিসেন্ট মডেল পর্যন্ত সব ধরনের গাড়িই এখানে পাওয়া যাবে। গাড়ির গায়ে চেকলিস্ট দেখেই জেনে নিতে পারবেন মডেল নম্বর, রেজিস্ট্রেশনের সাল, ইঞ্জিন সাইজ, দামসহ যাবতীয় তথ্য। তবে অবশ্যই দামাদামি করার সুযোগ রয়েছে। প্রতিটি গাড়ির সঙ্গেই কার হাটের নিজস্ব, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও দক্ষ সেলস এক্সিকিউটিভ নিয়োজিত আছেন কাস্টমারদের সেবায়। সেলস এক্সিকিউটিভদের কাছ থেকে গাড়ি সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় যাবতীয় তথ্য নিতে পারবেন। এ ছাড়াও সেলস এক্সিকিউটিভকে সঙ্গে নিয়ে টেস্ট ড্রাইভ করেও পরখ করে দেখতে পারেন গাড়ির বর্তমান কন্ডিশন। গাড়ি পছন্দ হয়ে গেলে এক্সিকিউটিভের মাধ্যমে কার হাট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। সব কাগজপত্র ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব কার হাটের যথাযথ ইনস্পেকশনের মাধ্যমে কার হাট আপনাকে রিপোর্ট করবে গাড়ির কন্ডিশন সম্পর্কে। কার হাটের তত্ত্বাবধানেই মূল্য পরিশোধ করা যায় বলে ট্র্যানজ্যাকশন প্রসেস অনেক নিরাপদ। আর এসব কিছুর জন্য কার হাটকে দিতে হবে মোট মূল্যের ২.৫% কমিশন।
যোগাযোগ:
হক চেম্বার, লেভেল ১২/, (শমরিতা হাসপাতালের পাশে) ৮৯/২ পশ্চিম পান্থপথ, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ।
ফোন : ৮১৫৭৪১৬, ৮১৫২২৬৫
হাট সম্পর্কে তথ্য জানতে : ০১৯১৯৭৭৭৯৯৯
ওয়েবসাইট : http://www.carhat.com.bd
গাড়ি বিক্রেতাদের করণীয়
গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ফিটনেস সার্টিফিকেট, ট্যাক্স টোকেন, ইন্স্যুরেন্স প্রভৃতি কাগজপত্রের মূল কপি কার হাটের কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে।
ডিসপ্লে চার্জ ৪০০ টাকা প্রদান করতে হবে।
গাড়ির দাম উল্লেখ করতে হবে এবং সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত গাড়ি ডিসপ্লে করতে হবে।
গাড়ির চাবি কার হাটের কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে, যা সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রাখতে হবে।
কোনো অবস্থাতেই কোনো ক্রেতাকে কোনো প্রকার ফোন নম্বর কিংবা ঠিকানা আদান-প্রদান করা যাবে না। অন্যথায় জরিমানা
করা হবে।
ক্রেতারা যেসব সেবা পাবেন
গাড়ির কাগজপত্রের সত্যতা প্রমাণের ১০০% গ্যারান্টি।
বহু ব্র্যান্ড আর মডেলের মধ্য থেকে পছন্দের মডেলটি বেছে নেওয়ার সুযোগ।
দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত সেলস এক্সিকিউটিভদের সহযোগিতায় সঠিকভাবে গাড়ির পরীক্ষাকরণ।
মূল দামের মাত্র ৫% অগ্রিম দিয়েই গাড়ি বুকিংয়ের সুযোগ।
শনি থেকে বুধবার যে কোনো দিন সুবিধামতো সময়ে গাড়ি ডেলিভারি।
কার হাটের তত্ত্বাবধানে নিরাপদ ট্র্যানজ্যাকশন ও মালিকানা পরিবর্তন।
ট্যাক্স টোকেন, ফিটনেস আর ইন্স্যুরেন্স প্রভৃতি কাগজপত্রের সত্যতা যাচাইয়ের সুযোগ।
গাড়ি হস্তান্তরের পলিসি
গাড়ি পছন্দ হলে তা কেনার জন্য ৫% অ্যাডভান্স পেমেন্ট করতে হবে, যা হবে ক্যাশে।
ক্রেতাকে নিজে এসে অ্যাডভান্স পরিশোধ করে রসিদ সংগ্রহ করতে হবে।
গাড়ির বাকি মূল্য ক্যাশ টাকা দিয়ে অথবা ঢাকার ভেতরে পে-অর্ডারের মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে।
ক্রেতা স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের যে কোনো শাখায় বাকি টাকা পরিশোধ করতে পারবেন।
কার হাট বর্তমানে গাড়ি কেনার একটি নির্ভরযোগ্য স্থান হিসেবে কাস্টমারদের কাছে জনপ্রিয়। সাধ ও সাধ্যের মধ্যে সমন্বয় করে কাস্টমারদের দক্ষ সার্ভিস দেওয়ার মাধ্যমে কার হাট এই বিশ্বাস অর্জন করে নিয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




