[স্পিনোজা রোমো নামের সদ্য কৈশরোত্তীর্ণ এই কলম্বিয়ান স্কুলছাত্রী ইসলাম গ্রহণ করেছেন গত ২৭ই জুন ২০১০৷ ইসলাম গ্রহণের অপরাধে তাকে বাড়ি-ঘর ছাড়া হতে হয়৷ কিছুদিন চাচার বাড়িতে অবস্থানের পর এ বছর জানুয়ারী মাসে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার পরিবার তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে৷ নিম্নে তার লিখিত ইসলাম গ্রহণের কাহিনী সংক্ষেপায়িতভাবে অনূদিত হল]
১. কলম্বিয়ার কালি শহরের এক ক্যাথলিক খৃষ্টান পরিবারে আমার জন্ম৷ ধার্মিক পরিবেশে বেড়ে উঠা সত্ত্বেও ক্যাথলিকদের পৌত্তলিক ধাঁচের পূজা-অর্চনা আমাকে সবসময়ই অপ্রতিভ করে রাখত৷ সবসময় আমার ভাবনায় এটা ছিল যে, উপাসনার এ পদ্ধতিতে কোথাও ভুল রয়েছে৷ অতঃপর একদিন আমি প্রটেস্ট্যান্ট খৃষ্টানদের এক গীর্জায় গেলাম৷ সেখানে আমি বেশ স্বস্তি বোধ করলাম৷ কেননা তারা ছবির পূঁজা করে না৷ ছবির ব্যাপারে পূর্ব থেকেই আমার এ সংশয় অক্ষুণ্ন ছিল যে, 'এরা তো কিছুই শোনে না বোঝে না'৷ যা হোক আমি প্রটেস্ট্যান্ট উপাসনারীতিতে সন্তুষ্ট হলাম৷ যদিও আমি তাদের হাতে ব্যাপটাইজ্ড হইনি৷ আমি তাদের সাথে দূরত্ব বজায় রাখতাম৷ সেজন্য আমার প্রটেস্ট্যান্ট বন্ধুরা আমার বাড়িতে আসত এবং অনুযোগ করত যে, আমি যিশুর চার্চ থেকে দূরে থাকি কেন? আমি তাদের সাথে না যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ওজর-আপত্তি দেখাতাম৷ কেননা আমি তাদের বিশ্বাসের যথার্থতা নিয়ে সন্দিগ্ধ ছিলাম৷ কেননা তারা বারবার 'হলি স্পিরিট' (পবিত্র আত্মা)-এর নাম করত যা নাকি খৃষ্টবিশ্বাসী আত্মায় মিশে থাকে৷ এ বিশ্বাসটি আমার কাছে অলৌকিক মনে হল৷ তাই তাদের কাছ থেকে দূরে থাকাটাই ভাল মনে করলাম৷ অন্যদিকে আমার প্রটেস্ট্যান্ট ধর্মীয় রীতির অনুসারী হওয়াকে আমার পরিবার মোটেও গ্রহণ করে নি৷ তাই আমি যখন তাদেরকে পরিত্যাগ করলাম তখন আমার পরিবার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল৷
২. অতঃপর আমি আবার গভীরভাবে ভাবা শুরু করলাম ঐ বিষয়ে যা আমি ইতিপূর্বে খুঁজে ফিরছিলাম৷ কেননা আমি সারাজীবনই ক্যাথলিক গীর্জার কর্মকাণ্ডে অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছি, তারপর একটি বছর প্রটেস্ট্যান্ট রীতিতে এসে স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে পেলাম; কিন্তু অচিরেই আবার অপূর্ণতার মুখোমুখি দাঁড়ালাম৷ আমি বুঝতে পারি না কেন যেই মাত্র আমি আমার প্রটেস্ট্যান্ট বন্ধুদের সাথে খুব সুখী বোধ করছিলাম তখনই হঠাত্ একই অনুভূতি হাজির হল যা আমার ক্যাথলিক পরিবেশে থাকা অবস্থায় বর্তমান ছিল৷ কেন এরূপ হচ্ছে যদি সবই ঠিক থাকে? আমি যেন নিঃশেষিত হয়ে গেলাম৷ তারপরও ঈশ্বরের আরাধনা ও বিশ্বাসের মৌলিক বিষয় জানা ব্যতিরিকেই আমি নিজের ভিতরে তাঁকে বিশ্বাসের বাধ্যবাধকতা অনুভব করলাম৷
৩. আমি একদিন ইন্টারনেটের এক সামাজিক সাইটে একটি এ্যকাউন্ট খুললাম৷ সেখানে আমার অবস্থান লিখলাম 'চীন'৷ ফলে শীঘ্রই চীনারা আমাকে এ্যাড করা শুরু করল৷ তারা ছিল সুন্দর মনের মানুষ৷ কিন্তু তারা অধিকাংশই ছিল বৌদ্ধ৷ পূর্বেই আমার জানা ছিল যে তারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না, কাজেই তারা সবকিছু আরও দুর্বোধ্য করে তুলল৷ হা-হা-হা...৷ বিরক্ত হয়ে আমি এ্যাকাউন্ট চেক করা বন্ধ করে দিলাম৷ একদিন কি মনে করে এ্যাকাউন্ট চেক করতে যেয়ে এক মেয়ের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দেখলাম৷ যার নাম ছিল 'হালা' যা কাকতালীয়ভাবে আমার নামের (আউরা) আরবী অনুবাদ৷ সে ছিল ১৪ বছরের এক মুসলিম বালিকা৷ আমি ততদিন ১৫ পার করেছি৷ আমি ভাবলাম, হোক না সে মুসলিম, সে তো কমপক্ষে একজন মানুষ (যেহেতু মিডিয়ায় আমি ইসলাম ও মুসলমান সম্পর্কে সবসময়ই খারাপ সংবাদ পেতাম৷ তাতে ইসলামের সঠিক তথ্যও প্রকাশিত হত না৷ তাই মুসলমানদের সম্পর্কে ভাল ধারণা রাখতাম না)৷ যা হোক তার রিকুয়েস্ট কনফার্ম করলাম৷ অতঃপর সে আমাকে ইসলাম সম্পর্কে কিছু ব্যাখ্যা দিল৷ কিন্তু আমি সন্তুষ্ট হতে পারলাম না৷ পরে তার বোন সারাও আমাকে এ্যাড করে নিল এবং আরো ভালভাবে ইসলাম সম্পর্কে বুঝাল৷ কিন্তু তাতেও আমার ভিতর থেকে সন্দেহ দূর হল না৷ আমার মনে হল এটা খৃষ্টান ধর্ম থেকে পৃথক তেমন কিছু নয়৷ কেননা খৃষ্টানরাও বিশ্বাস করে যীশুখৃষ্টই পরকালীন মুক্তি লাভের একমাত্র পথ৷
৪. আমি মুসলিমদের সাথে আরও কথা বলতে চাইলাম৷ যাতে জ্ঞানের উত্সসমূহের কাছাকাছি হতে পারি৷ তিউনিসিয়ার ফাতিমা নাম্নী এক মেয়ে আমাকে এ্যাড করেছিল৷ সে ছিল ফেসবুকে ইসলাম বিষয়ক একটি ফ্যান পেজের এডমিন৷ তার সাথে পরিচয় ইসলাম সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে আমার জন্য খুব সহায়ক হয়েছিল৷ আমার একবছর লেগেছিল পূর্ণভাবে জানতে যে, যীশুখৃষ্ট ক্রসবিদ্ধ হয়ে মারা যাননি৷ এটা নিশ্চিত হওয়ার পর আমি বিষয়টি আরো যুক্তি দিয়ে ভাবার চেষ্টা করলাম৷ যেমন-
ক. কুরআন আমাদেরকে বলে, 'কেউ কারো পাপের জন্য দায়ী নয়'৷ এটা খুবই সুস্পষ্ট বক্তব্য৷
খ. কুরআনও বলছে যে, যীশু হলেন কুমারী মেরী (মরিয়ম)-এর বৈধ গর্ভজাত সন্তান ও ঈশ্বরের প্রেরিত নবী৷ সুতরাং খৃষ্টানদের আপত্তি করার সুযোগ নেই যে, মুসলমানরা যীশুকে অস্বীকার করে৷ বরং মুসলমানরা আরো ঊর্ধ্বে মনে করে যে যীশু দ্বিতীয়বার পৃথিবীতে আসবেন৷
গ. যদি ঈশ্বর প্রথম মানুষ আদম (আঃ)-কে পিতামাতা ছাড়াই জন্ম দিতে পারেন তবে স্বভাবতই মেরীর গর্ভে যীশুর জন্মদান কি আরো সহজ নয়, যেন যীশু স্বাভাবিকভাবে সৌহার্দ্যের পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারেন? ঈশ্বরের তো কেবল এতটুকু বলার অবসর যে, 'হও'৷ তখনই সবকিছু হয়ে যায়৷
ঘ. খৃষ্টানরা শতভাগ অস্বীকার করে যে, মুহাম্মাদ (ছাঃ) হলেন আল্লাহ্র নবী৷ যদিও তারা জানে যে, মুহাম্মাদ ইসমাঈলের বংশধর (ইবরাহীম (আঃ)-এর সন্তান)৷ অপরপক্ষে আমরা মুসলমানরা যীশুকে ঠিক সেভাবেই গ্রহণ করি যেভাবে মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে গ্রহণ করি৷ আর মুহাম্মাদ (ছাঃ)-ই সর্বশেষ নবী৷ তার পরে আর কেউ যদি নবুয়ত দাবী করে তবে সে একজন ডাহা মিথু্যক৷ ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে তিনি পরিস্কার করে দিয়েছেন গসপেলের দুরবস্থা৷ পুরো বাইবেলই পরস্পরবিরোধী কথাবার্তায় ভর্তি৷ কোন ঐশ্বরিক বার্তা এমন ভুলে পূর্ণ হতে পারে না৷ আমি নিশ্চিত যে, বাইবেল মানুষেরই রচিত কিছু জ্ঞানী মানুষের কাহিনী সম্বলিত গ্রন্থ৷ তাই বাইবেল কোন নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ নয়৷
মোটা দাগে আমি বলতে চাই, আমরা এ্যান্টি ক্রাইস্ট বা যীশুবিরোধী নই বরং আমরা তারাই যারা যীশুর প্রকৃত পরিচয় জানে৷
অবশেষে মুসলিম বন্ধুদের সাথে কথা বলে আমি লক্ষ্য করেছিলাম, একজন নারী ইসলামে কত গুরুত্বপূর্ণ৷ আমি এ ব্যাপারে আগে যা শুনেছিলাম সবই মিথ্যা গাল-গল্প৷ যেমন- মুসলিম নারীদের কোন অধিকার নেই, মুসলিম পুরুষরা বহু স্ত্রী রাখে, তারা স্ত্রীকে মারধর করার অধিকার রাখে, মুসলিম নারী কথা বলতে পারে না, স্বামীর কাছে ডিভোর্স চাইতে পারে না...ইত্যাদি৷ যে সব লোক এসব প্রচার করে তারা প্রকৃতপক্ষে ইসলাম ও মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর সুন্নাতের ব্যাপারে ১% ধারণাও রাখে না৷ অতঃপর আমি ইসলাম গ্রহণ করলাম সচেতনভাবেই, প্রায় দুই বছর যাবত্ এ সুন্দর ধর্ম সম্পর্কে অধ্যয়নের পর৷
৫. ইতিপূর্বে আমার পরিবার আমার উপর বিরক্ত ছিল প্রটেস্ট্যান্ট ধর্মীয় রীতি গ্রহণ করার কারণে৷ আর এখন তারা ক্রোধের সমুদ্রে ভাসছে আমি ইসলাম গ্রহণ করায়...হাহা৷ এর কারণ হল ইসলাম সম্পর্কে তাদের জ্ঞানের স্বল্পতা৷ আমি আল্লাহকে ধন্যবাদ জানাই যে, তিনি আমার প্রতি দয়া প্রদর্শন করেছেন এবং তাকে আরাধনার সঠিক পথ দেখিয়েছেন৷ তিনি জন্মিত নন বা কেউ তাকে জন্ম দেয়নি৷ তিনি সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী এবং সর্বজ্ঞ৷ তার কোন ত্রয়ীর প্রয়োজন নেই৷ কেননা তিনি তার আপন অস্তিত্বে অদ্বিতীয়৷ আমাদের প্রত্যক্ষ, অপ্রত্যক্ষ সকল কিছুকেই তিনি সৃষ্টি করেছেন৷ আমি দুই বছর আগে যখন ইসলাম সম্পর্কে পড়াশোনা শুরু করি তখন আমার পরিবার ও আমার বন্ধুরা এটাকে নিতান্তই ছেলেমানুষী কৌতুহল বলে মনে করত৷ তারা কৌতুক করে আমাকে জিজ্ঞাসা করত_ বলত কিভাবে বোমা তৈরী করতে হয়? ইত্যাদি নানা বাজে মন্তব্য৷ অতঃপর যখন আমি সত্যিই ইসলাম গ্রহণ করলাম তখন তারা আমার উপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল৷ তারা বুঝতেই চাইল না আমার এ কাজ মোটেও কৌতুক নয় এটা বাস্তব৷ অতঃপর আমি সবচেয়ে কষ্ট পেয়েছিলাম যখন ডিসেম্বর মাসে আমার পিতা আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিলেন এবং আমাকে চাচার বাড়িতে যেয়ে আশ্রয় নিতে হল৷ এ বছর ৩১ জানুয়ারী আমি আবার বাড়ি ফিরতে পেরেছি আমার অসুস্থতার কারণে৷ আলহামদুলিল্লাহ৷
এবার খৃষ্টধর্ম সম্পর্কে আমার কিছু বক্তব্য :
খৃষ্টানরা বিশ্বাস করে যে, প্রাণীরা সবসময় একইরূপ ছিল৷ এ সকল প্রাণী ছাড়া আর কোন প্রাণের অস্তিত্ব কোথাও নেই৷ এখন ডাইনোসর, এলিয়েনদের ব্যাখ্যা তারা কি দেবে? অপরদিকে এ ব্যাপারে কুরআনের সুস্পষ্ট বক্তব্য যে, আল্লাহ্ এমনও জিনিস সৃষ্টি করেছেন যেসব সম্পর্কে আমাদের সামান্যতম জ্ঞানও নেই৷ আর তিনি দৃশ্যমান, অদৃশ্য সকল কিছুরই স্রষ্টা৷ সুতরাং খৃষ্টানদের মৌলিক বিষয়ের দিকে নজর দিয়ে অযথা ধারণা করা থেকে বিরত থাকা উচিত্৷ আর সত্যের মোকাবিলা করা উচিত্ যেভাবে আমি করেছি৷ এটা আক্রমণ নয়৷ হ্যা মানুষ হিসাবে আমরা ক্রটিহীন নই৷ কিন্তু আমরা অনেক উঁচুতে উত্তীর্ণ হই যখন আমরা সত্যের মোকাবিলা করি৷
খৃষ্টান অর্থ যীশুখৃষ্টের অনুসারী৷ এটা একটা মতবাদ যা মানুষের নিজেদের সুবিধা মত তৈরী করে নেয়া৷ কিন্তু মুসলিম অর্থ ঈশ্বরের কাছে আত্মসমর্পণকারী এবং ইসলাম অর্থ ঈশ্বরের কাছে আত্মসমর্পণ৷ আমরা সঠিক পথেই ঈশ্বরের উপাসনা করি৷ ঈসা (আঃ) যেমন এসেছিলেন তাওরাতের ব্যাখ্যা করার জন্য, মুহাম্মাদ (ছাঃ)ও ঠিক তেমনি এসেছিলেন গসপেলসহ সমগ্র বাইবেলের ব্যাখ্যা করার জন্য৷ এর মাঝে কোন বৈপরিত্য নেই৷ ইসলামে আমরা নির্দেশিত হয়েছি সকল নবীদেরকে সমানভাবে বিশ্বাস করতে৷ যদি তা না করি তাহলে আমাদের বিশ্বাস থাকবে অপূর্ণ; বরং তা হবে পূর্ণাঙ্গ অবিশ্বাসীর পরিচায়ক৷
নিম্নে বাইবেলের কিছু বৈপরিত্য উল্লেখ করে আমার কথা শেষ করব৷
১. ঈশ্বর আলোর মাঝে বাস করেন (টিম ৬:১৬)৷ ঈশ্বর অন্ধকারে বাস করেন (কিংস ৮:১২/পিএস, ১৮:১১/পিএস, ৯৭:২)৷
২. ঈশ্বরকে দেখা যায় ও শোনা যায় (এক্সোডাস ৩৩:২৩ ও ৩৩:১১, জেনেসিস ৩২:৩০)৷ ঈশ্বর হলেন অদৃশ্য এবং তাঁকে শোনা যায় না (জন ১:১৮ ও ৫:৩৭, এক্সোডাস ৩০:২০/১)৷
৩. ঈশ্বর সর্বত্র বিরাজমান, সবকিছু দেখেন, জানেন (প্রোভ ১৫:৩, জব ৩৪:২২,২১)৷ ইশ্বর সর্বত্র বিরাজমান নন, তিনি সবকিছু দেখেন না, সবকিছু জানেন না (জেনেসিস ১১:৫, ১৮:২০,২১ ও ৩:৮)৷
৪. ঈশ্বর হলেন ন্যায়বিচারক, নিরপেক্ষ (জেনেসিস ১৮:২৫, ইজেয়িা ১৮:২৫)৷ ঈশ্বর হলেন অবিচারক ও একদেশদর্শী (জেনেসিস ৯:২৫, ম্যাথু্য ১৩:১২)৷
৫. ঈশ্বর হলেন পাপের নিয়ন্ত্রক (ইজেকায়া ২০:২৫)৷ ঈশ্বর পাপের উপর কোন ভূমিকা রাখেন না (জেমস ১:১৩)৷
৬. ঈশ্বর হলেন যুদ্ধন্মত্ত (এক্সােডাস ১৫:৩)৷ ঈশ্বর হলেন শান্তিকামী (রোম:১৫:৩৩/১)৷
৭. ঈশ্বর একক (ডেউট ৬:৪)৷ ঈশ্বর একক নন তার সত্তায় অংশীদারিত্ব রয়েছে (জেনেসিস ১:২৬,৩:২২,১৮:১-৩/১, জন ৫:৭)৷
৮. ছবি বা প্রতিকৃতি নির্মাণ নিষিদ্ধ (এক্সোডাস ২০:৪)৷ ছবি বা প্রতিকৃতি নির্মাণ বৈধ ও নির্দেশিত (এক্সোডাস ২৫:১৮,২০)৷
৯. যীশু আক্রমণ প্রতিরোধ না করার শিক্ষা দিয়েছেন (ম্যাথু ৫/৩৯, ২৬:৫২)৷ যীশু শারিরীক আক্রমণ করার শিক্ষা দিয়েছেন এবং নিজেও আক্রমণ করেছেন (লুক ২২:৩৬, জন ২:১৫)৷
১০. ব্যভিচার নিষিদ্ধ (এক্সোডাস ২০:১৪, হেব ১৩:৪)৷ ব্যভিচার সিদ্ধ (নাম ৩১:১৮, হস ১:২,২:১-৩)৷
১১. মহিলাদের কোন অধিকার নেই (জেনেসিস ৩:১৬/১, টিম ২:১২, পেট ৩:৬)৷ মহিলাদের অধিকার রয়েছে (জাজ ৪:৪,১৪,১৫ ও ৫:৭, এ্যাক্টস ২:১৮, ২১:৯)৷
১২. মানুষ সকল প্রাণীর পরে সৃষ্টি হয়েছে (জেনেসিস ১:২৫,২৬,২৭)৷ মানুষ সকল প্রাণীর পূর্বে সৃষ্টি হয়েছে (জেনেসিস ২:১৮,১৯)৷
১৩. আব্রাহাম থেকে ডেভিডের ব্যবধান ছিল ১৪ প্রজন্ম (ম্যাথু্য ১:১৭)৷ আব্রাহাম থেকে ডেভিডের ব্যাবধান ছিল ১৩ প্রজন্ম (ম্যাথু্য ১:২-৬)৷
১৪. শৈশবে যিশুকে মিসরে নিয়ে যাওয়া হয় (ম্যাথু্য ২:১৪,১৫,১৯,২১,২৩)৷ শৈশবে যিশুকে মিসরে নিয়ে যাওয়া হয় নি (লুক ২:২২,৩৯)৷
১৫. যীশুকে ক্রসবিদ্ধ করা হয় ৩য় ঘণ্টায় (মার্ক ১৫:২৫)৷ যীশুকে ৬ষ্ঠ ঘণ্টার পূর্বে ক্রসবিদ্ধ করা হয়নি (জন ১৯:১৪-১৫)৷
১৬. জুডাস ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন (ম্যাথু্য ২৭:৫)৷ জুডাস ফাঁসিতে ঝুলেননি বরং অন্য কোনভাবে মারা যান (এ্যক্টস ১:১৮)৷
১৭. যীশু ঈশ্বরের সমতুল্য (জন ১০:৩০, ফিল ২:৫)৷ যীশু ঈশ্বরের সমতুল্য নন (জন ১৪:২৮, ম্যাথু্য ২৪:৩৬)৷
১৮. কোন মানুষই পাপমুক্ত নয় (কিংস ৮:৪৬, রোম ৩:১০), খৃষ্টানরা পাপমুক্ত (জন ৩:৯,৬,৮)৷
১৯. এই পৃথিবী ধ্বংস হবে (পেট ৩:১০, হেব ১:১১, রেভ ২০:১১)৷ এই পৃথিবী কখনই ধ্বংস হবে না (পিএস ১০৪:৫, ইসিসিএল ১:৪)৷
২০. দীর্ঘজীবন লাভ করে খারাপ লোকেরা (জব ২১:৭,৮)৷ দীর্ঘজীবন থেকে বঞ্চিত হয় খারাপ লোকেরা (পিএস ৫৫:২৩, ইসিসিএল ৮:১২)৷
এভাবেই বাইবেল শত-সহস্র বৈপরিত্যে ভরপুর যা কখনো ক্রটিমুক্ত হিসাবে আখ্যা দেয়া সম্ভব নয়৷ তাই এটা সুনিশ্চিত যে, বাইবেল একটি বিকৃত গ্রন্থ৷ এর অনুসরণ করার বাধ্যবাধকতা আর নেই৷ ইসলামের আগমনের পর আর কোন ধর্ম ঈশ্বরের নিকট গ্রহণযোগ্য নয়৷ আমি ঘোষণা করছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা'বুদ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাঃ) তার নবী ও রাসূল৷
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০১১ রাত ১২:২০