somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মৃত্যুঃ বিভীষিকা নাকি উপভোগ্য মুহুর্ত? (কোরআন থেকে দেখি)

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জন্মিলে মরিতে হইবে। চিরন্তন সত্য। কিন্তু আমরা তো মরতে চাই না। এদিকে যতই না চাওয়া হোক, মরতে হবেই। আমি মৃত্যুর কথা মনে হলে খুব নিরাশ হয়ে যেতাম এক সময়। আবার ভয়ও কাজ করত।

এক ডাক্তার (Duncan MacDougall) ৬ জন মৃত্যু পথযাত্রী মানুষ নিয়ে পরিক্ষা করে দেখেছিলেন আগে/পরে মানুষের ওজনের তারতম্য কেমন হয়। এই পরিক্ষা থেকে তিনি একটি হাইপোথিসিস দাড় করান যে ২১ গ্রামের কাছাকাছি হয় মানুষের আত্মার ওজন।

মৃত্যু অভিজ্ঞতা হয়েছে এইরকম মানুষ রেডিটে(ফোরাম/টাইপ) কমেন্ট করেছিল। তাদের অধিকাংশই বলেছে এটা ঘুমের মত। ঘুমিয়ে গেলে যেমন নিজের জ্ঞান আর থাকে না সেইরকম অভিজ্ঞতা।
কিন্তু আমার কাছে তাদের অভিজ্ঞতা যুৎসই মনে হয়নি। এর কারন কোরআন এ নিয়ে আমাদের কিছু জিনিস জানিয়েছে-

এক)

“Say: ‘The Angel of Death, put in charge of you, will (duly) take your souls. Then shall you be brought back to your Lord.” (32:11)


“Every self will taste death. You will be paid your wages in full on the Day of Rising. Anyone who is distanced from the Fire and admitted to the Garden, has triumphed. The life of this world is only the enjoyment of delusion.” (Quran, 3:185)
“Wherever you are, Death will find you out, even if you are in towers built up strong and high! “(4:78)

মউত থেকে কারো নিস্তার নাই। একজন মানুষকে যেইসকল দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছিল এইগুলোর জবাব দিতে হবে। যে দোজখ থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে পারবে এবং জান্নাতে যেতে পারবে সেই হল সফল। এই পৃথিবীতে যে জীবন সে তো এক প্রকার ভ্রান্তি। (তবে উপভোগ্য আছে)

দুই)
“And spend [in the way of Allah ] from what We have provided you before death approaches one of you and he says, ‘My Lord, if only You would delay me for a brief term so I would give charity and be among the righteous’. But never will Allah delay a soul when its time has come. And Allah is Acquainted with what you do.” (Quran, 63:10-11)

মরবার আগে আগে খরচ করতে বলেছেন আল্লাহ। শুধু ধন/সম্পদ জমিয়ে রাখলে তা কোন কাজে আসবে না। এমনও হইবে যে, এক লোক আল্লাহর কাছে বলবে, আমাকে আরেকটু সময় দিলেই তো আমি দান করার সুযোগ পেতাম। কিন্তু এটা তো মানুষ, আল্লাহ বুঝেন। কখনো করত না যতক্ষণ না তার সামনে মৃত্যু কিংবা পরকাল উপস্থিত হয়। আল্লাহ প্রকৃতির নিয়ম নির্ধারণ করে দিয়েছেন এবং মানুষের আয়ুও। এক সেকেন্ডো কম/বেশি হবে না, যার মরণ এসে গেছে, তাকে অবশ্যই তুলে নেওয়া হবে।

তিন)
“When their specified time arrives, they cannot delay it for a single hour nor can they bring it forward.” (Quran, 16:61)

“Indeed, Allah [alone] has knowledge of the Hour and sends down the rain and knows what is in the wombs. And no soul perceives what it will earn tomorrow, and no soul perceives in what land it will die. Indeed, Allah is Knowing and Acquainted.” (Quran, 31:34)

হুম, কেউ জানে না তার মৃত্যু কবে কোথায় হইবে। এমনকি আগামীকাল কি ঘটবে সে সম্পর্কেও কোন লোক কিছুই জানে না। অবশ্যই আল্লাহ ভবিষ্যত জানেন।

যাইহোক, মৃত্যু পরিস্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে আমাদের সজ্ঞান অবস্থার ট্রান্সফার। আমরা যখন ঘুমিয়ে পড়ি তখন সময় কত হইল/যাচ্ছে কিছুই জানি না। তাই ঘুমিয়ে পড়লে ৮ ঘন্টা/১০ ঘন্টা/১ ঘন্টা সব পরিমান সময়ই একই ব্যাপার।
এ ত্থেকে আমি ধারণা করছি, আমাদের মৃত্যুর পর আমরা ঘুমিয়ে যাবার মত সিচুয়েশনে চলে যাব। এখানে আমাদের কোন সেন্স থাকবে না তবে সব কনসাশনেশ সংরক্ষিত থাকবে মানে আত্মা আল্লাহ বিশেষ জায়গায় রেখে দেবেন। সেখানে হাজার বছর ধরে থাকা আর ১ দিন থাকাও সমান হবে।

“You (Allah) bring the Living outof the Dead, and You bring the Dead out of the Living” (3:27)
যাইহোক, মৃত্যু নিয়ে সরাসরি কোরআন থেকে আর তথ্য পাওয়া যায় না।

একজন মানুষের মস্তিষ্ক কার্যকরী থাকার কথা যখন সে মানুষের মরণ হয়। আল্লাহই মৃতকে জীবিত করেন, এবং জীবিতকে মৃত্যু দান করেন। মেডিকেল সায়েন্স থেকেও সায় পাওয়া গেছে, মৃত্যুর সময় একজন মানুষ প্যারালাইজড হয়ে যায় কারণ তার মস্তিষ্ক তখন যথা সম্ভব অন্যান্য কাজ বাদ দিয়ে কিভাবে এসেনশিয়াল পার্টে শক্তি যোগান দেওয়া যায় সে চেস্টাই করে থাকে। যেমন সে চায় হার্ট যাতে চালু থাকে কিন্তু হার্ট থেকেও যখন সে সাপোর্ট না পায় তখন কোষ সমুহের অন্তজ শক্তি ব্যবহার করে সে নিজেকে চালানোর চেস্টা করে।
মস্তিষ্কের এই ক্রমাগত নিজেকে টিকিয়ে রাখার চেস্টার কারণে একজন মানুষ তার শেষ নিজের চোখে দেখতে পারে। মানে তার আশেপাশের অবস্থা চোখে/কানের জন্য জানতে পারে। কিন্তু কিছু বলতে পারবে না কারণ তার এই দিকটা(বাক শক্তি/ইশারা ক্ষমতা) বেশ আগেই নিস্ক্রিয় হয়ে যায়।
এই পরিস্থিতি আসার আরো আগে মানুষ জানতে পারে তার সময় শেষ হয়ে গেছে। অনেক মানুষই পরিস্কার নিজের সময় শেষ ঘোষনা দিয়ে দেয় মৃত্যুর কিছুদিন আগেই।
তবে মেডিকেলি মৃত্যুর কিছু দিন আগে থেকেই একজন মানুষের শরীরের পাতলা হালকা হতে পারে। কারণ শরীরের কোষ রি-জেনারেশন ব্যাপারটা বন্ধ হয়ে যায়। প্রত্যেক মানুষ এই কারণেই বেঁচে আছে।
এ ছাড়া ফুসফুসের কার্যকারীতা কমে যায় ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।

Physical signs that death is near include:

a sudden burst of energy
mottled and blotchy skin, especially on the hands, feet and knees.
blood pressure decreases
they cannot swallow
less urine
restlessness
difficult breathing
congested lungs


সহি হাদিসে মোটামুটি যা জানা যায় তার ভিত্তিতে বলা যায় যে আমরা অন্য একটা ডিমেনশনে প্রবেশ করব যেখান থেকে নিজের আশপাশ সম্পর্কে জ্ঞান/দেখার সুযোগ থাকবে। সেখানে মোটামুটি যথেষ্ট সময় দেওয়া হবে যাতে নিজের জানাযা/সৎকার্য দেখা যায়। এরপর কবর জগতে সিম্পল একটা ইন্টারভিউ নেয়া হবে যেখানে নিজের অতিবাহিত জীবন নিয়ে প্রশ্ন করা হবে।

ব্লগার রাজীব নুর এর মরতে চাওয়াটা আমাকে কিছুটা বিস্মিত করল। এ যে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি!
কিন্তু আমি মৃত্যু নিয়ে তেমন ভাবি না। বরং এটা আমাকে গ্রাস করলেই যেন বেঁচে যাই। মানে, এই জীবনে প্রতি মুহুর্তে এত এত কাজ, এত ভাবনা, এত দ্বায়িত্ব যে যত কম সময় থাকা যায় ততই যেন মংগল। আর প্রতি মুহুর্তেই তো পাপের বোঝা ভারি করতেছি। তাই আমিও উনার সাথে একমত। মৃত্যু মানে জীবনের চরম সুখের একটা মুহুর্ত(ঈমানদারদের) যা জানা সম্ভব। জন্মের মুহুর্তটা কিরুপ তা জানা হয়ত সম্ভব না কারণ আমরা তো ভুলে যাই।
আহঃ মৃত্যু!
কত আকাংখিত একটা মুহুর্ত।


তবে সুইসাইড করে মরে গেলে তো যা সৎ কর্ম অর্জিত হয়েছে তাতে কালিমা লেপন করা হবে। অতএব সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে, কখন আল্লাহ এটা শেষ করে দেন।

যাক, আমি আর বেশি লিখতে চাই না কারণ এইসকল বিষয়ে জানার জন্য অভাব নাই রিসোর্স এর। তারপর আমি দুইটি লিংক শেয়ার করে
রাখতেছি।


independent.co.uk//news/science/what-happens-when-you-die

healthdirect.gov.au/the-physical-process-of-dying


medium.com/@xenovandestra/human-souls-journey-after-death-in-islam
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:২০
১৩টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×