somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Plagiarism লেখাচুরি কাহাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি ? [উদাহরণ সহ]

৩০ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ১২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কপি পেস্ট নিয়ে ব্লগে যে হইচই চলতেছে তাহা নিয়ে ব্লগে এক অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করতেছে। তাই আমি এই প্লাগিয়ারিজম নিয়ে খানিক পন্ডিতি করতে সাহস করে ফেললাম। যেহেতু বিজ্ঞ ব্লগারদের অনেকেই এই দরকারি বিষয় নিয়ে লিখতেছেন না।

তো প্লাগিয়ারিজম/প্লেজিয়রিজম কি?
আপনে গুগলে যদি plagiarism অনুবাদ করেন তবে দেখবেন সরাসরি 'চুরি' হিসাবেই ইহা অর্থ উত্তর করছে। কিন্তু একাডেমিক ভিত্তিতে গেলে-

১। অন্যের লেখা/আইডিয়া নিজের হিসাবে উপস্থাপনের চেস্টা। (আংশিক হলেও)
২। অন্যের লেখার সুত্র না দেওয়া
৩। লেখা চুরি
৪। অন্যের আইডিয়া/লেখা'কে এমনভাবে উপস্থাপন করা যে পাঠক/দর্শকেরা মনে করুক ইহা আমার নিজের লেখা অথচ সোর্স নিজের কাছেই ছিল।
সহজ বাক্যে প্লাগিয়ারিজম হচ্ছে এক প্রকার ধান্দামি(an act of fraud) যেখানে অন্যের কাজ নিজের হিসাবে চালিয়ে দেওয়া আংশিক/সম্পুর্ণরুপে নিয়ে নিজের কাজ হিসাবে জাহির করা।

এই গেল Merriam-Webster থেকে পাওয়া ডেফিনেশন।

আসলে এই প্লাগিয়ারিজম নিয়ে কথা বলার উদ্দেশ্য নয় এমন যে, আপনে অন্যের লেখা/কাজ নিয়ে কথা বলতেই পারবেন না। বরং অন্যের কাজ'কে উদৃত করে দিলেই আপনি মোটামুটি দোষমুক্ত থেকে যেতে পারবেন। বৈদেশিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যদি কেহ প্লাগিয়ারিজম ধরা পরে তবে কিন্তু ছাত্রত্ব বাতিল হইবার রেকর্ড আছে। এটা সিরিয়াস একটা ইস্যু যা সাধারণ বাঙালিরা একদম বেখেয়াল হয়ে আছে।
সিম্পলি আপনে যদি কোটেশন দিয়ে আলাদা করেন তবে লেখাচুরির অভিযোগ থেকে আপনে সামান্য অব্যাহতি পাইবেন। এরপরে, যদি সোর্স উল্লেখ করে দেন তবে আপনে মোটামুটি পরিস্কার হইয়া গেলেন।
শতভাগ দায়মুক্তি/পরিস্কার হইবার জন্য আপনার লাইসেন্স/অনুমতি লাগবে। তার মানে বুঝতেই পারছেন, এই লেখাচুরি'র ব্যাপারটা কতখানি ভয়ানক।

আমি মূলত ৫ প্রকারের লেখাচুরি/প্লাগিয়ারিজম সম্পর্কে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করতেছি-

সোজাসুজি কপি করা (Direct Plagiarism)
উৎস থেকে বরাবর কপি পেস্ট করা এই প্রকারের অন্তুর্ভুক্ত। উদাহরণ হিসাবে যেমন সোর্সঃ সোর্স থেকে জুয়েল সাহেব সামুতে লেখাচুরি করেছেন।


সম্পাদনার নামে লেখাচুরি (Paraphrasing Plagiarism)
এই সহজ জিনিসটা আমাদের অনেক ব্লগারই মানতে চাহেন না। তারা দাবি করেন যে সম্পাদনা করতেছেন অথচ এটা হচ্ছে জটিল পথের আশ্র‍য় নিয়ে লেখাচুরি। তবে এই জিনিসটা করতে কিছুটা খাটনিও লাগে কারন ফ্রেইজ গুলাকে নতুন করে সাজাতে হয়। নতুন করে সাজানো হলেও মোদ্দাকথা যেটা অন্যের কাজ দেখে দেখে নিজের মত সাজিয়ে নিলেও এটা অসৎ কর্ম এবং Plagiarism।

যেমন দেখেন এই নিউজ থেকে আমাদের নুরু সাহেব মেরে দিয়েছেন নিজের পোস্টে। তিনি দাবী করতেছেন ইহা সম্পাদনা। কিন্তু এটা আসলে Paraphrasing টেকনিকের লেখাচুরি। আশা করি এখন তিনি বুঝতে পারবেন, ভুলটা কোথায়।

আংশিক কপি করা (Verbatim Plagiarism)
উৎস থেকে কপি পেস্ট করে নিজের লেখায় অন্তর্ভুক্ত করা। উদাহরণ হিসাবে যেমন
সোর্স থেকে নতুন নকিব সাহেব মেরে দিয়েছেন তার
পোস্টে

জটিলভাবে সংযুক্তকরণ (Patchwork Plagiarism)
এক বা একাধিক উৎস থেকে জোড়াতালি দেওয়াকেই এই প্রকারের অন্তর্ভুক্ত গণ্য করা যায়। নিজের কিছু অংশ থাক বা না থাক আপনে যদি কয়েক জায়গা থেকে এনে নিজের হিসাবে চালিয়ে দিতে চান তবে অবশ্যি এটা Patchwork টেকনিকের চুরি।

যেমন রাজিব নুর সাহেব আনন্দবাজার থেকে চুরি করেছেন এই পোস্টে


নিজের লেখাকে নতুন দেখানো (Self Plagiarism)
এটা ক্ষেত্রভেদে ভাল/খারাপ। যেমন আপনার একটা কাজ বিক্রি করতে দিলেন এডোবি স্টকে তারপরে আপনে করলেন কি শাটারস্টকেও আপনে স্বত্ব বিক্রি করলেন। অথচ এডোবি স্টকে আপনে স্বত্ব অলরেডি সেল করে দিয়েছেন, এই কাজ আর কোথাও আপনে বিক্রি করতে পারবেন না। অতএব এই যে Plagiarism করলেন এটা খুব খারাপ একটা কাজ।
আবার সামুতে যদি নিজের পুরনো কোন লেখা আপনে দেন, সেটা খারাপ হবে না। কারণ এখানে সেল/পারচেজ এর কিছু নাই।

আশা করি আমি বোঝাতে পেরেছি প্লাগিয়ারিজম এর প্রধান প্রকারভেদ গুলো কি কি। সম্পাদনার নাম করে হোক, ধর্মের প্রচারের নামে হোক যে কোন কাজেই আপনে যদি অন্যের লেখা/কাজ নিজের হিসাবে জাহির করতে চাইবেন তখনই সমস্যা। আরা ভাই একটু উদৃতি দিতে সমস্যা কোথায়?
আরেকটা কথা এত হৈল-চৈল এর মধ্যেও এখন পর্যন্ত কোন সুপরিচিত ব্লগার প্লাগিয়ারিজম নিয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে লিখছেন না দেখে আমি অবাক। আজ(আসলে কালকে) ব্লগার নুরু সাহেব'র সংগে বাক-বিতন্ডায় সিদ্বান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম যে এই নিয়ে লিখব। আমার আবার লিখতে মন চায় না। তাই লিখতে বসে কয়েক বারে লিখে ফেললাম। এখন মাত্র একবার চোখ বুলিয়ে পোস্ট করে দেব। আমার আবার প্রুফরিডিং অসহ্য লাগে।

সুত্রঃ
Merriam-Webster
Lindsey Wilson College
scribbr
ছবি
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ১২:১৪
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×