মোবাইলের এলার্ম কতবার বাজিয়া ছিল জানি না । উঠিয়া দেখি ক্লাসের আর মাত্র ১০ মিনিট বাকি । দৌড়ের উপর কি কি প্রাতঃকর্ম করিয়া ছিলাম তাহা স্পষ্ট বলিতে পারিব না । যতটুকু মনে পড়ে তাহা বলিতেছি , তখন দ্রত পদব্রজে একাডেমিক ভবনের সম্মূখে নীল-কমল প্রান্তে পৌছাতে না পৌছাতেই আমার দৃষ্টি থামিয়া গেল । চলার গতিও শ্লথ হইয়া গেল । এমন সুন্দর রমণী কখনও দেখিয়াছি বলিয়া স্মরণ হইল না । ঠিক যেন সকালে ঝরে পড়া শিউলী ফুলের মত , সারা রাত সুগন্ধ বিলিয়ে সকালে পূজার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করিয়া দিয়েছে । চোখাচোখি হওয়া মাত্রই সে মৃদু নিঃশব্দ হাসিল । সে হাসির অর্থ বোধ করি অর্ন্তযামীই জানে । আমি কোন সুন্দরীর চোখের দিকে তাকাতে পারি না , আমার মুখটা আপনিই নিচে নামিয়া গেল । আমার সলজ চোখের দুষ্ট চাহনি নীলকমলের শৈবাল মিশ্রিত জলের কণাগুলো ছলাৎ ছলাৎ শব্দে হাসিতেছিল । আমি আর একবার তাহার পায়ের দিকে চাহিয়া ছিলাম । শুনেছি সুন্দরী মেয়েদের পা নাকি অনেক সুন্দর হয় । তারপর সেও চলিল আমিও চলিলাম । খানিক যাওয়ার পর পিছন ফিরে চাহিয়াছিলাম , কিন্ত আর দেখিতে পাইলাম না । ধুমকেতুর মত সে ক্ষণিক উদিত হইয়া হারিয়া গেল , শেষ চিহ্নটুকুও রাখিয়া গেল না । ক্ষুন্ন মনে ক্লাসে চলিয়া গেলাম । ইহার পর যখন আবিষ্কার করিলাম যে , আমি বাথরুমের স্যান্ডেল আর মাথা না আচড়ানো এলোমেলো চুলে ক্লাশে গেছি , তখন ঐ হাসির অর্থ উদ্ধার করিতে পারিয়া ছিলাম । কিন্তু সেই হাসির সৌন্দর্য আজও ভুলিতে পারি না ।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৫৫